![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
An average person, always lack of perfection
কেমন আছো তোমার চারপাশের জীবাণুদের নিয়ে?
ভালো থাকারই কথা। কারণ, ক্ষতিকর জীবাণুগুলো তো তোমার কোনো ক্ষতিই করতে পারছে না। তিন স্তর বিশিষ্ট নিরাপত্তা বেষ্টনী ভেদ করার সাধ্যই বা কার আছে বলো? তুমি ইতোমধ্যে প্রথম স্তরের সাথে পরিচিত হয়েছো। আজকে আমি তোমাকে দ্বিতীয় স্তরের সাথে পরিচয় করিয়ে দিবো। প্রথম স্তর ভেদ করে দেহের অভ্যন্তরে প্রবেশকারী যেকোনো অণুজীব বা কণার বিরুদ্ধে সক্রিয় প্রতিরক্ষা গড়ে তোলে ২য় প্রতিরক্ষা স্তর।
তুমি কি জানো, তোমার রক্তে ৩ ধরনের কণিকা রয়েছে? তারা হচ্ছে লোহিত রক্ত কণিকা, শ্বেত রক্তকণিকা এবিং অণুচক্রিকা। এদের মধ্যে শ্বেত রক্ত কণিকা প্রতিরক্ষা কাজে ভূমিকা রাখে। এরকম বড় আকারের শ্বেত কণিকাকে ফ্যাগোসাইট বলে। তোমার প্রধান দুটি ফ্যাগোসাইট হচ্ছে ম্যাক্রোফেজ এবং নিউট্রোফিল। তোমার দেহে যখন বহিরাগত জীবাণুর অনুপ্রবেশ ঘটে তখন এরা সাথে সাথেই রক্তের মাধ্যমে প্রবাহিত হয়ে ঐ জীবাণুকে ভক্ষণ করে ফেলে। একটি নিউট্রোফিল ৩-২০ টি এবং একটি ম্যাক্রোফেজ ১০০ টি পর্যন্ত অণুজীব গ্রাস করতে পারে। তোমার দেহে এরকম লক্ষ ফ্যাগোসাইট আছে যারা জীবাণু ভক্ষণ করে চলেছে। একটি নির্দিষ্ট সময় পর এরা মারা যায়, তখন আবার নতুন ফ্যাগোসাইট সৃষ্টি হয়।
তুমি নিশ্চয়ই প্রায়শই জ্বরে আক্রান্ত হও? এই ম্যাক্রোফেজ যখন বহিরাগত কণাকে শনাক্ত ও আক্রমণ করে তখনই কিন্তু তোমার জ্বর হয়। জ্বর মানে হচ্ছে দেহের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাওয়া। সুতরাং জ্বর মাত্রই ক্ষতিকর নয়। তবে হ্যা, জ্বর যদি দু দিনের বেশী স্থায়ী হয় এবং তাপমাত্রা ১০০ ডিগ্রি ফারেনহাইট ছাড়িয়ে যায়, তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিবে।
এবার আসো তোমাকে পরিচয় করিয়ে দিই NK(Natural Killer) কোষের সাথে। এই NK কোষ তোমার দেহের টিউমার কোষ ও ভাইরাস আক্রান্ত কোষকে ধ্বংস করে দেয়। NK কোষের আক্রমণে ভাইরাস আক্রান্ত কোষটি ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়।
এখন নিশ্চয়ই তোমার মনে প্রশ্ন জাগছে যে, ম্যাক্রোফেজ এবং NK কোষ এই বহিরাগত ক্ণা প্রবেশ করেছে জানে কিভাবে? তাদেরকে জানানোর এই কাজটা করে কমপ্লিমেন্ট সিস্টেম। তোমার দেহে যখন জীবাণু প্রবেশ করে, তখন এই কমপ্লিমেন্ট সিস্টেম ঐ জীবাণুর গায়ে আটকে থেকে ফ্যাগোসাইট কণা এবং NK কোষকে চিনিয়ে দেয় যে, "এটাই বাইরে থেকে ঢুকেছে, একে ধ্বংস করো"। তখন ম্যাক্রোফেজ দ্রুত ক্ষতস্থানে গিয়ে ওটাকে ভক্ষন করে এবং NK কোষ দক্ষতার সাথে টিউমার কোষ ধ্বংস করে।
এখন আসো পরিচিত হই ইন্টারফেরনের সাথে। ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার প্রতিক্রিয়া হিসেবে, আক্রান্ত কোষ থেকে যে প্রতিরোধ গড়ে তোলা হয় তাকে বলে ইন্টারফেরন। ভাইরাস যখন একটি কোষকে আক্রমণ করে তখন সে ঐ কোষের মধ্যে তার বংশবৃদ্ধি করে। আর ঠিক এই কাজেই বাধা দেয় ইন্টারফেরন। অর্থাৎ ভাইরাসকে বংশবৃদ্ধি করতে দেয়না। ফলে তারা সংখ্যাবৃদ্ধি করতে পারেনা এবং NK কোষ সহজেই তাদেরকে ধংস করতে পারে। শুধু ভাইরাস আক্রান্ত কোষই না, তার আশেপাশের সকল সূস্থ কোষও তখন ইন্টারফেরণের সুরক্ষা প্রাচীর গড়ে তোলে।
এই ছিলো তোমার দ্বিতীয় স্তরের প্রতিরক্ষা ব্যাবস্থা। এই পুরো কার্যক্রমই প্রতিনিয়ত ঘটে চলেছে আমাদের দেহাভ্যন্তরে। কতো সুন্দর, কার্যকরী একটা ব্যাবস্থা আল্লাহ তায়ালা আমাদের করে দিয়েছেন। সুবহানআল্লাহ!!
আমদের আরো একটি স্তর কিন্তু জানা বাকি। প্রথম ও দ্বিতীয় স্তর কিন্তু ক্ষতিকর বা অক্ষতিকর বিবেচনা না করেই সব বহিরাগত কণাকেই ধ্বংস করে। কিন্তু তৃতীয় স্তর হচ্ছে স্পেসিফাইড, সর্বোত্তম, সক্রিয়, শক্তিশালী এবং স্থায়ী স্তর। তৃতীয় স্তর কিভাবে কাজ করে তা নাহয় আমরা আগামী দিন জানলাম!! ততোক্ষণ পর্যন্ত ভালো থাকো। আল্লাহ হাফিয!!
©somewhere in net ltd.