![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
An average person, always lack of perfection
কেমন আছো তুমি? ভালো আছো নিশ্চয়ই?
আচ্ছা, দেখোতো, তোমার বাম হাতের একেবারে উপরে কোনো দাগ আছে কি না? ওটা নিশ্চয়ই ছোটবেলার টিকার দাগ? বলোতো, এই টিকা হিসেবে আসলে কি দেওয়া হয়? রোগ প্রতিরোধকারী ঔষধ? মোটেও না। টিকা হিসেবে তোমার দেহে রোগের জীবাণু বা জীবাণুর নির্যাস বা জীবাণুসৃষ্ট পদার্থ প্রবেশ করানো হয়। যার ফলে তোমার দেহে ঐ জীবাণুর বিরুদ্ধে একটি স্থায়ী, শক্তিশালী প্রতিরক্ষা ব্যাবস্থা তৈরী হয়। আর কখনো যদি ঐ জীবানু তোমার দেহে প্রবেশ করে তাহলে প্রতিরক্ষা ব্যাবস্থা তাকে চিনে ফেলে এবং প্রতিরোধ করে। আর এটাই হচ্ছে তৃতীয় প্রতিরক্ষা ব্যাবস্থা, যা আমরা আজকে জানবো।
তৃতীয় প্রতিরক্ষা স্তর দুটি কাজ করে থাকে।
১. জীবাণুর বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষা
২. অনুপ্রবেশকারীর কথা মনে রাখা
প্রথমে দেখি কিভাবে প্রতিরক্ষা গড়ে তোলে। একটি ক্ষতিকর বহিরাগত জীবাণুকে আমরা বলবো এন্টিজেন এবং তার বিরুদ্ধে যে আক্রমণ করবে তাকে বলবো এন্টিবডি। তোমার দেহে কিছু এন্টিবডি আগে থেকেই থাকে আর কিছু কৃত্রিম ভাবে তৈরী করা হয়। তুমি যখন মায়ের গর্ভে ছিলে তখন মায়ের দেহ থেকে কিছু এন্টিবডি তোমার দেহে চলে এসেছিলো, যারা তোমার নিজস্ব এন্টিবডি তৈরিতে সাহায্য করেছে। আর যেটা আগে বললাম, নির্দিষ্ট রোগের টিকা নেওয়ার মাধ্যমে তোমার দেহে ঐ রোগের বিরুদ্ধে এন্টিবডি তৈরী হয়েছে। এখন আসো দেখি, এই এন্টিবডি কিভাবে কাজ করে?
এন্টিবডি কাজ করে ৩ ভাবে।
১. এন্টিজেনের বিরুদ্ধে প্রত্যক্ষ আক্রমন
২. কমপ্লিমেন্ট সক্রিয়করণ
৩. সংক্রমনের বিস্তার প্রতিরোধ
তোমার দেহের প্রতিটি কোষের একটি স্বজাতি চিহ্ন আছে। অর্থাৎ, তারা যে তোমার দেহের কোষ সেটা এই চিহ্ন দেখেই বোঝা যায়। প্রত্যেক মানুষের দেহের কোষগুলোর চিহ্ন কিন্তু আলাদা। যার ফলে কমপ্লিমেন্ট সিস্টেম সহজেই বহিরাগত চিহ্নবিহীন কণা শণাক্ত করতে পারে। যা আমরা গতো পর্বে জেনেছিলাম।
এখন এই চিহ্ন বিহীন কণা যখন ১ম ও ২য় স্তর অতিক্রম করে, তখন শ্বেত রক্ত কণিকা ঐ এন্টিজেনের বিরুদ্ধে এন্টিবডি গড়ে তোলে। তোমার দেহে প্রায় ১০ কোটি ধরনের এন্টিবডি উৎপন্ন হতে পারে। এই এন্টিবডি তখন এন্টিজেনকে আক্রমণ করে নিষ্ক্রিয় করে ফেলে এবং কমপ্লিমেন্ট সিস্টেমকে সক্রিয় করে। ফলশ্রুতিতে ম্যাক্রোফেজ এসে একে ভক্ষণ করে।
পাশাপাশি, তৃতীয় স্তরে স্মৃতিকোষ নামে একধরনের কোষ আছে, যারা ঐ বহিরাগত এন্টিজেনের একটি ছবি সংরক্ষন করে রাখে। আবার কখনো ঐ ধরনের কোনো জীবাণু দেহে প্রবেশ করে তাহলে তৎক্ষণাৎ তার বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষা গড়ে তোলা হয়। এই ছিলো তোমার দেহের তৃতীয় প্রতিরক্ষা স্তরের কার্যক্রম।
আজকে তুমি তোমার দেহের পুরো প্রতিরক্ষা ব্যাবস্থার সাথে প্রাথমিকভাবে পরিচিত হলে। এটাতো শুধু প্রতিরক্ষা ব্যাবস্থা ছিলো, কিন্তু তোমার দেহে পৌষ্টিকতন্ত্র, রক্ত সংবহন তন্ত্র, শ্বসনতন্ত্র, রেচনতন্ত্র, জননতন্ত্র এরকম আরো কতো জটিল ব্যাবস্থাপনা রয়েছে যা তোমার অজানা। আমার উদ্দেশ্য ছিলো তোমাকে নিজের সম্পর্কে জানতে আগ্রহী করে তোলা। আবারো কোনো একদিন হয়তো তোমাকে অন্য কোনো বিষয়ের সাথে পরিচয় করিয়ে দিবো। ততদিন পর্যন্ত ভালো থাকো। শুভকামনা।
©somewhere in net ltd.