নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মানুষ মরে গেলে পচে যায়, বেঁচে থাকলে বদলায়, কারণে বদলায়, অকারণেও বদলায় । তবে আমি মনে হয় আগের মতই আছি , কখনও বদলাবওনা মনে হয় ! !
নবম অধ্যায়
“এখন কেমন লাগছে মহামান্য নিউক?” ধাতব গলায় জিজ্ঞেস করল ন্যানি রোবট।
নিউক জানালার ফাক দিয়ে বাহির তাকিয়ে ছিল। মাথাটা পঁয়তাল্লিশ ডিগ্রী এঙ্গেলে ঘুরিয়ে ন্যানি রোবটের দিকে তাকাল।
ন্যানি রোবট বুদ্ধিমত্তার দিক দিয়ে বেশ নিচু স্তরের, বুদ্ধি-ভিত্তিক কোন আলোচনা চালিয়ে যাবার এর বিশেষ ক্ষমতা নেই। এই ধরণের রোবট তৈরি করা হয়েছে সাধারণত মানুষের দেখাশুনা করার জন্য, যেমন খাবার দাবার তৈরি এবং পরিবেশন করা, টুকটাক খোশ-গল্প করা, খবরা-খবর দেয়া এবং বিশেষ প্রয়োজন হলে প্রাথমিক চিকিৎসাও করতে পারে। মহামান্য নিকোলাই থাকার জন্য এই এপার্টমেন্টটি দিয়েছে নিউককে সাথে দিয়েছে ন্যানি নামক সাহায্যকারী এই রোবটকে। আজকাল নাকি সবারই একটি করে এই রকম রোবট থাকে।
“মোটামুটি!” একটি দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলল নিউক। আশ্চর্য একটি জিনিষ লক্ষ করেছে সে, শরীরের সেই অস্বস্তিটা নেই তেমন, নিশ্বাস নিতে কষ্ট হত, ঠিকমত ঘুমাতে পারত না সেটা প্রায় চলে গিয়েছে।
থেমে নিউক বলল “আমি কতক্ষণ ঘুমিয়েছি ন্যানি রোবট?”
“আপনি তিন দিন ধরে গভীর ঘুমে অচেতন ছিলেন। এই তিন দিন আপনাকে স্যালাইনের মাধ্যমে খাওয়ানো হয়েছে তাছাড়া আপনার বায়োলজিক্যাল বডি এনালাইসিস করে অদ্ভুত ভাবে লক্ষ করেছি আপনার শারীরিক স্ট্রাকচার, ব্রেন ইত্যাদি বর্তমান আবহাওয়ার সাথে মানান সই নয়, তাই রুমের গ্রাভিটি, তাপ এবং চাপ এমনভাবে নির্ধারণ করা হয়েছে যাতে আপনি আরাম বোধ করে।”
গত তিন দিন ধরে ঘুমিয়ে ছিল শুনে বেশ চমকে উঠল নিউক। হাতে লাগানো কমিউনিকেশন প্রোগ্রামটিতে দেখতে পেলে প্লেরা এরই মাঝে বেশ কয়েকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছে।
“আপনার আর কোন কিছু লাগবে মহামান্য নিউক?” যান্ত্রিক গলায় বলল ন্যানি রোবট।
ন্যানি রোবটটিকে কেন জানি কোন কারণ ছাড়াই বিরক্তিকর লাগছে নিউকের কাছে। মনটা বেশ বিষণ্ণ তার, এমন একটি সময়ে এসে পৌছবে সে ভাবতে পারেনি, এখন তার কি করা উচিৎ, কোথায় যাওয়া উচিৎ কিছুই বুঝতে পারছে না। ফেলে আশা অতীতের কথা মনে পরছে বেশ।
বিনা কারণে ন্যানি রোবটকে একটি ঝাড়ি দিতে গিয়েও চুপ করে গেল নিউক। স্বভাবের বাইরে গিয়ে বলল “ন্যানি এখনকার মানুষ মন খারাপ থাকলে কি করে?”
“মহামান্য নিউক আপনার কি মন খারাপ? আপনি চাইলে আমি কৌতুক বলে আপনার মনকে ভাল করতে পারি, তাছাড়া নাচতেও পারি………।” আরো কিছু বলতে যাচ্ছিল ন্যানি রোবট।
নিউক তাকে থামিয়ে বলল “একটি রোমান্টিক বা স্যাড গান ছাড়তে পার।”
ন্যানি রোবট একটু চুপ থেকে বলল “মহামান্য নিউক এই পৃথিবীতে কোন রোমান্টিক গান হয় না। এখানে বিপরীত লিঙ্গের মানুষ না থাকার এই অনুভূতির সাথে সবাই অপরিচিত।”
কথাটা শুনে মেরুদণ্ড সোজা করে বসল নিউক। ন্যানি রোবটের দিকে দৃষ্টি নিবদ্ধ করে বলল “তাহলে রোমান্টিক গল্প বা উপন্যাস পড়ে না কেউ এই জগতে?”
“না মহামান্য নিউক। এগুলোর কোন প্রয়োজন নাই এই জগতে। বললামতো প্রাচীন পৃথিবীর সাথে অনেক কিছুই মিলবে না এখনকার পৃথিবীর।” ধাতব গলায় বলে ন্যানি রোবট।
নিউক কপালে ভাজ একে ন্যানি রোবটের দিকে অনুসন্ধিৎসু দৃষ্টিতে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করল “কি ধরণের পরিবর্তন হয়েছে প্রাচীন পৃথিবীর মানুষদের তুলনায়? বলবে?”
“প্রাচীন পৃথিবীতে নাকি নারীরা সাজুগুজু করত, হাই হিল জুতো এবং রংবেরঙের কসমেটিকের দিকে তাদের বিশেষ আকর্ষণ ছিল। যেহেতু আমাদের এই পৃথিবীতে পুরুষ মানুষ নেই তাই এই জিনিষগুলোর প্রতি নারীদের আকর্ষণ হারিয়ে গেছে। নারীরা এখন আর প্রাচীন পৃথিবীর নারীদের মত এই অর্থহীন কাজগুলো করে না, তাছাড়া এখন নারীরা সব ধরণের কাজ করে তাই তারা দৈনিকভাবেও পেশীবহুল প্রাচীন পৃথিবীর নারীদের তুলনায় ……।” আরো কিছু বলতে যাচ্ছিল ন্যানি রোবট।
নিউক তাকে থামিয়ে দিয়ে বলে “যাক হয়েছে, আর বলতে হবে না। এপার্টমেন্টে থাকতে আর ভাল লাগছে না। এখন মানুষ কোথায় ঘুরতে যায়? এটা বল।”
“আপনি সমুদ্রে যেতে পারেন, জাদুঘরে যেতে পারেন সেখানে ডাইনোসর এবং পুরুষ মানুষের অস্থি-হাড় প্রদর্শনী করা হয়…!” আরো বলতে যাচ্ছিল ন্যানি রোবট।
ডাইনোসর এবং পুরুষ মানুষের অস্থি-হাড় প্রদর্শনীর কথা শুনে বিব্রত হয় নিউক। ন্যানি রোবটকে থামিয়ে দেয়, কাশি দিয়ে গলা পরিষ্কার করে বলে “পৃথিবীর বাহিরে কি কোথাও যায় না ঘুরতে?”
ন্যানি রোবট একটু চিন্তা করে ধাতব গলায় বলল “আমাদের বিজ্ঞানীরা মানুষের বসবাসের উপযোগী কৃত্রিম গ্রহ বানাচ্ছে। সেখানেও কেউ কেউ যায়।” বলেই থেমে যায় ন্যানি রোবট।
“কেউ কেউ যায় মানে?” কপালে ভাজ একে বলে নিউক
“আসলে সেখানে সহজে কেউ যেতে চায় না। কারণ সেই যাত্রা হয় একমুখী, কেউ গেলে আর আসতে পারবে না এই শর্তে যেতে দেয়া হয়। সেই কৃত্রিম গ্রহ এখনও পুরোপুরি মানুষ থাকার উপযোগী নয়। কৃত্রিম গ্রহে তাপ, চাপ এবং গ্রাভিটি মানুষের জন্য মানানসই কিনা সেটা যাচাইয়ের জন্য বিজ্ঞানীদের ভলান্টিয়ার দরকার, তাই যারা একেবারে যেতে চায় সেখানে তাদের যেতে দেয়া হয়, যাতে সেখানে গিয়ে যেন বিজ্ঞানীদের সাহায্য করতে পারে।”
“যে কেউ ওখানে যেতে পারবে?” বলে নিউক।
ধাতব কণ্ঠে ন্যানি রোবট বলে “হুম, তবে যারা যায় সেখানে তাদেরকে গিনিপিগ হিসেবে ব্যাবহার করা হয়, যদিও প্রাণ নাসের সম্ভাবনা তেমন নেই। অবশ্য সেখানে চিকিৎসা এবং খাদ্যও ফ্রি। সাধারণত কেউ যেতে রাজি হয়না। তাই যারা সমাজে অপরাধী তাদেরও যেতে উৎসাহিত করে বিজ্ঞান পরিষদ, ওখানে যেতে চাইলে কারোই কোন কাগজপত্র দেখা হয় না। সেই সুযোগে কেউ কেউ যেতে চায় তবে যারা যায় তারা বেশীর ভাগই সমাজের চিহ্নিত অপরাধী।”
আর ন্যানি রোবটের সাথে কথা বলতে ইচ্ছে করছে না। আপাতত খুদায় পেট চো চো করছে। এবার বেশ মোলায়েম ভাবে বলল নিউক “টেবিলে খাবার দাও আমি আসছি। এগুলো শুনতে আর ইচ্ছে করছে না।”
ন্যানি রোবট খাবার ব্যবস্থা করার সময়টাতে নিউক কমিউনিকেটর প্রোগ্রামের মাধ্যমে প্লেরার সাথে যোগাযোগ করল কোথায় এবং কখন দেখা করবে। কিছুক্ষণ পর খাবার খেয়ে বেরিয়ে পরল এপার্টমেন্ট থেকে। হাতের কমিউনিকেটর প্রোগ্রামের বেশ কাজের যে কোন অপরিচিত জায়গায় রাস্তা চিনিয়ে নিয়ে যেতে পারে বেশ নিখুঁত ভাবে।
যথাসময়ে গন্তব্যে পৌঁছে নিউক। প্লেরা রাস্তায় দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছিল ছিল নিউকের জন্য।
প্লেরা নিউকের সামনে এগিয়ে গিয়ে বলল “কেমন আছ নিউক? শরীরটা এখন কেমন তোমার?”
“শরীরটা তেমন ভাল নেই, এপার্টমেন্টের ভিতরে ঠিক থাকলেও বাহিরে নিশ্বাস নিতে এখনও বেশ সমস্যা হয়।”
নিউককে দেখতে বেশ বিধ্বস্ত লাগছে।
“হুম, তোমাকে দেখতে তেমনই লাগছে। তবে চার হাজার বছরে অনেক কিছু পরিবর্তন হয়েছে, তোমার মানিয়ে নিতে একটু নিজেকে সময় দিতে হবে।”
“হুম! হয়তবা! মহামান্য নিকোলাই এবং বাকি সবাই কোথায়?” জিজ্ঞেস করে নিউক।
“আমরা এক এক জন এক এক জায়গায় থাকি। কেউ জানে না কে কোথায় থাকে। এই ব্যাপারটা গোপনীয় কারণ গত বছর থেকে জেনারেল গ্রাটিয়ার হাতে আমাদের অনেক বিদ্রোহী ধরা পরেছে তাই আমরা বাড়তি সতর্কতার অংশ হিসেবে কেউ কাউকেই নিজেদের ঠিকানা বলি না। শুধু কমিউনিকেটর প্রোগ্রামের মাধ্যমে যোগাযোগ করি, এবং কোন অপারেশন পরিচালনার আগে গোপন আস্তানায় মিলিত হই। আজ মহামান্য নিকোলাই সেই গোপন আস্তানায় আসবে সেখানে তার সাথে দেখা করতে পারবে।”
থেমে জিজ্ঞেস করে “নিকোলাই এর দেখা করতে চাও কেন?”
নিউক প্লেরাকে যেই কথাটি বলতে এসেছে সেটা বলতে পারে না। তার মনে হচ্ছে মহামান্য নিকোলাই এবং প্লেরাকে একসাথে কথাটা বলাই ভাল কাজ হবে! ছোট করে বলে “এমনি, যখন দেখা হবে তখন একসাথে বলব।”
প্লেরা আর কিছু জিজ্ঞেস করে না। তারপর দুজন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাকি দিয়ে ঘুরে বেরায় পুরো শহরটাতে। প্লেরার নিউকের সাথে কাটানো সময়গুলো বেশ উপভোগ করে, বুকের মাঝে বেড়ে উঠা অনুভূতিটা একেবারেই নতুন তার কাছে, বাস্তবতা মাড়িয়ে এই সময়টাকে যদি থমকে দেয়া যেত চিরতরে ভাবে প্লেরা।
“মানুষগুলোর মাঝে কেমন জানি কোন প্রাণ নেই, সবাই অনেকটা রোবটের মত জীবন যাপন করে। এমন কেন?” বলে নিউক।
নিউকের কথায় ভাবনায় ছেদ পরে প্লেরার। একটি দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলে “আমি সেন্ট্রাল লাইব্রেরীতে পুরনো বই ঘেঁটে জেনেছি প্রাচীন কালে মানে তোমাদের সময় নারী এবং পুরুষ উভয়েই এক সাথে ছিল, তাই তোমাদের সময়ে পারিবারিক বন্ধন অনেক শক্ত ছিল, ছেলে মেয়ে মানুষ করত পুরুষ এবং নারী দুজনে মিলে। কিন্তু আমাদের এখানে পারিবারিক বন্ধন এতটা শক্ত নয়!”
দম নিয়ে ফের বলে “মানুষ যখন একটি নিদিষ্ট বয়সে পৌঁছে তখন তাকে ল্যাবরেটরি থেকে নিজের স্টেম সেল দিয়ে বেবি তৈরি করে নিয়ে আসতে হয়। তবে একজন মানুষ একটির বেশী বেবি নিতে পারে না। এই বেবিকে সিঙ্গেল মাদার হিসেবে লালন পালন করে বড় করতে হয়। বাচ্চাটি যখন বড় হয়ে যায় তখন নিজের প্রয়োজনে আলাদা হয়ে অন্যত্র চলে যায়, তাই ফের একা হয়ে যায় মা, একটি নিঃসঙ্গতায় ডুবে যায়, হতাশায় ভুগে! এর জন্যই মানুষগুলো একটি বয়সে পৌঁছানোর পর কেমন জানি পাল্টে যায়।” হতাশা ঝরে পরে প্লেরার গলায়।
নিউক বলে “একাধিক বাচ্চা নেয়া যায় না কেন?”
“আমাদের এই পৃথিবী সাতটি বিশ্বযুদ্ধের ভারে নুয়ে পরেছে। ক্ষতিকর তেজস্কিয়া রশ্মি, অস্বাভাবিক তাপমাত্রায় বৃদ্ধি ইত্যাদি কারণে পৃথিবীর আয়তন ছোট হয়ে আসছে মানুষের বসবাসের জন্য। তাই জনসংখ্যার কথা বিবেচনা করে একটির বেশী বাচ্চা কাউকে দেয়া হয় না। তবে সরকারি চাকরিজীবী এবং ক্ষমতাবানরা নিজের ক্ষমতা কাজে লাগিয়ে এই নিয়মের ব্যত্যয় ঘটিয়ে একাধিক বাচ্চা নেয়। তবে এই নিয়ে সাধারণ মানুষের মাঝে ক্ষোভ আছে।”
যোগ করে বলে “তোমাদের সময়ে শুনেছি পৃথিবী বিভিন্ন মহাদেশ এবং দেশে বিভক্ত ছিল কিন্তু জান আমাদের এই বর্তমান পৃথিবীতে মানব জাতী একটি দেশই হিসেবেই এগিয়ে চলছে।”
তথ্যটি শুনে বেশ অবাক হল নিউক।
সারাদিন ঘুরাঘুরি করে সন্ধ্যায় সেই বারের নিচের গোপন আস্তানায় গেল মহামান্য নিকোলাইয়ের সাথে দেখা করতে। মহামান্য নিকোলাই সন্ধ্যায় সেখানে আসবে বলেছিল। মহামান্য নিকোলাই চেয়ারে কাত হয়ে চোখ বন্ধ করে বসে আছে। নিউক এবং প্লেরা সেখানে উপস্থিত হয়।
“কেমন আছেন মহামান্য নিকোলাই?” জিজ্ঞেস করে নিউক।
মহামান্য নিকোলাই শুনতে পেল বলে মনে হল না। তিনি চোখ বদ্ধ করলে প্রায় ঘুমিয়ে পরে।
পুনরায় ডাকল নিউক। এবার উঁচু গলায় বলল “মহামান্য নিকোলাই শুনতে পাচ্ছে?”
মহামান্য নিকোলাই চোখ খুলে। চেয়ারে চেহারা কাত করে নিউকের দিকে দৃষ্টি স্থির করে বলে “কেমন আছ নিউক? তোমার এপার্টমেন্টে পছন্দ হয়েছে?”
“হ্যা। এর সমস্ত কিছুর জন্য আপনাকে ধন্যবাদ মহামান্য নিকোলাই।”
“আমাদের তোমাকে ধন্যবাদ দেয়া উচিৎ। তুমি প্রকৃতির বিশেষ উপহার। তোমাকে প্রকৃতি পাঠিয়েছে নিউক।”
নিউক একটি লম্বা দম নেয় প্রসঙ্গের বাইরে গিয়ে বলে “মহামান্য নিকোলাই আমার ধারণা আপনার কোথাও ভুল হচ্ছে, আমি একজন সাধারণ মানুষ। তাছাড়া পদার্থ বিজ্ঞানে প্রকৃতি বলতে কেউ নেই, এই মহাবিশ্বে অণু পরমাণু এবং শূন্যতা ছাড়া কারো কোন অস্তিত্ব নেই।” বলেই দম নেয় নিউক।
একটু চুপ থেকে পুনরায় বলে “আমাকে প্রকৃতি পাঠায়নি, আমার নিয়তি আমাকে আপনাদের এই জগতে নিয়ে এসেছে। আমি একটি জিনিষ আপনাকে জানাতে এসেছি।” বলেই প্লেরা এবং মহামান্য নিকোলাইয়ের দিকে দৃষ্টি দিয়ে প্রতিক্রিয়া দেখার চেষ্টা করে।
মহামান্য নিকোলাই মেরুদণ্ড সোজা করে নড়েচড়ে বসল। প্লেরা দৃষ্টি ঘুরিয়ে নিউকের দিকে তাকিয়ে আছে।
নিউক থেমে বলে “মহামান্য নিকোলাই আমি কোন যোদ্ধা নই। আমি সাধারণ একজন মানুষ, আপনাদের যুদ্ধে আমি নেই। আমি একটি স্বাভাবিক জীবন চাই, আপনাদের যুদ্ধ আপনাদের একাই করতে হবে। আমি জানি আপনারা হয়ত হতাশ হবেন তবে আমি আপনাদের সাথে জড়াতে চাই না।”
প্লেরা বলে “নিউক আমি বুঝতে পারছি না কি বলছ তুমি!”
নিউক প্লেরার দিকে তাকিয়ে বলে “আমি দুঃখিত প্লেরা। আজ সারাদিন তোমাকে এই কথাটা বলার চেষ্টা করেছি কিন্তু পারিনি। আমি এই পৃথিবী ছেড়ে পালাতে চাই, এই যুদ্ধ, মারামারি আমার পছন্দ নয়। ন্যানি রোবট বলছিলে কৃত্রিম গ্রহে নাকি যে কেউ চাইলেই যেতে পারে, তুমি কি আমাকে সেখানে যাবার কোন ভাবে ব্যবস্থা করে দিতে পার?” অনুসন্ধিৎসু চোখে তাকিয়ে বলে নিউক। তবে উত্তরের অপেক্ষা না করে বেরিয়ে যায় এখান থেকে।
প্লেরা তাকিয়ে থাকে নিউকের চলে যাবার দিকে। তার চোখদুটি ছলছল করে উঠে। নিউকের কাছ থেকে এমন ব্যাবহার আশা আশ করেনি।
নিউকের মাথায় একটাই চিন্তা ঘুরপাক খায়, তাকে বাচতে হবে। হাতে বেশী দিন সময় নেই, বড়জোর তিন মাস বা তার আর কিছু বেশী সময় আছে, তবে সে এত তাড়াতাড়ি মরতে চায়না। সে নিজেকে সান্ত্বনা দিয়ে মনে মনে বলে সে কোন সুপার হিরো নয় যে জগতের সমস্ত অন্যায়ের বিরুদ্ধে তাকে লড়াই করতে হবে, তাকে আগে বাচতে হবে, সে বাচতে চায়।
দশম অধ্যায়
কনফারেন্স টেবিলটার চারদিকে গোল হয়ে বসে আছে সবাই। সবার দেহেই বিচিত্র ধরণের সব পোশাক, চেহারায় একটি কঠিন ভাব। গোলাকার মুখ এবং বাদামী বর্ণের মধ্যবয়স্ক যেই লোকটি বসে আছেন তার নাম মহামান্য রেচেল, তিনি শাসক উথারের একজন উপদেষ্টা। তিনি দৃঢ় ব্যক্তিত্বের অধিকারিণী, শাসক উথারের উপদেষ্টা হওয়াতে সবাই তাকে বেশ সমীহ করে, এমনকি জেনারেল গ্রাটিয়ার মত বদরাগী লোক যাকে সবাই জমের মত ভয় পায় সেও রেচেলকে বেশ তেল দিয়ে চলে।
উপদেষ্টা রেচেল চেহারায় যথাসম্ভব ভাব গাম্ভীর্য ফুটিয়ে তুলে বললেন “আমাদের গোপন প্রজেক্টের অগ্রগতি কতদূর? মহান শাসক উথার এই প্রজেক্টের দ্রুত বাস্তবায়ন দেখতে চান। মানুষের আবেগ নিয়ন্ত্রণের ড্রাগ এবার প্রায় সতের শতাংশ শিশুর ক্ষেত্রে অকেজো হয়ে গেছে, এভাবে চলতে থাকলে অবস্থা ভয়াবহ হবে।”
“উপদেষ্টা রেচেল আমরা এই প্রজেক্ট খুবই আন্তরিকতার সাথে দেখছি। যেই শিশুদের ক্ষেত্রে ড্রাগ কাজ করছে না সেই শিশুদের উপর আমাদের গবেষণে করছি বললেন ড. লেথরিন।”
ড. লেথরিন বিজ্ঞান পরিষদের জ্যৈষ্ঠ বিজ্ঞানী, তিনি ধূসর চোখ এবং বাদামী রঙের চুলের অধিকারী, তিনি বিজ্ঞান পরিষদের একজন সম্মানিত বিজ্ঞানী, তার বুকের মাঝে সম্মান সূচক পাঁচ তারকা সোভা পাচ্ছে। তাকে নিউরো-সাইন্সের মস্তান লোক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তিনিই সবচেয়ে কম বয়সে মানুষের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিরূপণের সমীকরণটি আবিষ্কার করে চারদিকে হইচই ফেলে দিয়েছিলেন, মানুষের বুদ্ধিমত্তা নিরূপণ করা হয় তার উদ্ভাবিত পদ্ধতি দিয়ে যাকে সংক্ষেপে লেথরিন স্কেল বলা হয়।
“সেটাতো অনেকদিন ধরেই শুনছি। আপনি একটু বিস্তারিত বলবেন কতদূর হয়েছে প্রজেক্টের কাজ?” গম্ভীর ভাবে জিজ্ঞেস করলেন উপদেষ্টা রেচেল।
ড. লেথরিন একটু বাচাল প্রকৃতির, বিস্তারিত বলার সুযোগ পেয়ে খুশিতে তার চোখ চকচক করে উঠল। “আমাদের এই জগতে পুরুষের অস্তিত্ব নেই প্রায় দু হাজার বছর হল, মানব জাতী বলতে একসময় পুরুষ এবং নারী উভয়কেই বুঝানো হত কিন্তু এখন শুধু নারীদেরই বুঝানো হয়। যেহেতু নারী এবং পুরুষ এক সাথে অস্তিত্বে এসেছে তাই একজন আগে বিলুপ্তি হওয়াতে প্রকৃতিতে একটি ভারসাম্যহীনতা দেখা দিয়েছে। মানুষের বিপরীত লিঙ্গের প্রতি আবেগ নিয়ন্ত্রণের ড্রাগটি কাজ না করার পিছনে প্রকৃতির একটি ভূমিকা আছে। যদি পুরুষ জাতী বিলুপ্তি হয় তাহলে নারীকেও বিলুপ্তি হবে, কোন একজন বিলুপ্তি হবে আরেকজন টিকে থাকবে এটা হতে পারে না।” বলেই সবার প্রতিক্রিয়া দেখার জন্য অপেক্ষা করলেন ড. লেথরিন।
একটু থেমে বললেন “আমরা গোপন প্রজেক্টে অংশ হিসেবে এক ধরণের গবেষণে করছি যেখানে কৃত্রিম উপায়ে হিউম্যান ইভোলিউশন ঘটাব, হিউম্যান থেকে আমরা এপসিলন হিউম্যান তৈরি করব। সেটা কিভাবে করছি ব্যাখ্যা করছি।”
যতটা আনন্দ নিয়ে ড. লেথরিন বলছিল ততটাই বিরক্তি নিয়ে শুনছিল কনফারেন্সে উপস্থিত সবাই। উপদেষ্টা রেচেল মুখ ভোতা করে শুনছে, তিনি জানেন ড. লেথরিনকে কথা সংক্ষেপে বলতে বললেও লাভ হবে না। কিছু কিছু মানুষ আছে যারা সহজ কথাও অনেক ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে বড় করে বলে, ড. লেথরিন সেই ধরণের একজন মানুষ। এর আগে কয়েকবার এই ব্যাপারগুলো একটু-আকটু বর্ণনা করেছেন ড. লেথরিন। জেনারেল গ্রাটিয়া ঘাড় কাত করে বসে বসে বিরক্তি নিয়ে শুনছে।
ড. লেথরিন চেহারাটা যথাসম্ভব আনন্দঘন করে আবার শুরু করলেন। “এপসিলন হিউম্যান এমন এক হিউম্যান হবে যে একই সাথে পুরুষ এবং আবার নারী উভয়ই হবে, অর্থাৎ তার ভিতর নারী এবং পুরুষ উভয়ের দুটি আলাদা সত্তা থাকবে। মানুষ তাহলে আর নিজেকে একা ভাববে না, নিঃসঙ্গ অনুভব করবে না।”
যোগ করে আবার বললেন “নারী এবং পুরুষ মানুষ যেমন শারীরিকভাবে আলাদা ঠিক তেমনি তাদের মস্তিষ্কের গঠন প্রণালীও আলাদা, বলা যায় মস্তিষ্কও একজন নারীকে নারী এবং পরুষকে পুরুষ হিসেবে ডিফাইন করে। যদি এই দুটি সত্তাকে একটি মস্তিষ্কে ধারণ করা যায় তাহলে একজনের অনুপস্থিতিতে আরেকজনের অবচেতন মনে কোন নিঃসঙ্গতা অনুভব করবে না। কৃত্রিম উপায়ে মস্তিষ্কে পরিবর্তন ঘটিয়ে বিপরীত মুখি একটি সত্তা তৈরি করা সম্ভব! তাছাড়া এই প্রজেক্ট সফল হলে আমাদের আর ড্রাগ দিয়ে মানুষের আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে হবে না। পর্যায়ক্রমে সব মানুষকে এপসিলন মানুষে পরিণত করতে পারব।”
উপদেষ্টা রেচেল কিছুটা কৌতূহল অনুভব করলেন, সেটা চেহারা প্রকাশ না করে গম্ভীর স্বরে বললেন “আপনি বললেন দুটি সত্তা একটি মস্তিষ্কে ধারণ করানো সম্ভব কিন্তু সেটা কিভাবে সম্ভব? দুটি সত্তা এক সাথে কিভাবে থাকবে? কনফ্লিক্ট হবে না কোন?”
ড. লেথরিন প্রশ্নগুলো শুনে বেশ আনন্দ পেল বলে মনে হল। ঠোঁট জোরা প্রসস্থ করে “বলল মানুষের শরীরের প্রতিটি অর্গানই কিন্তু এক একটি ইন্টিলিজেন্ট সত্তা। যেমন কিডনি জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত বিরামহীনভাবে নাইট্রোজেনযুক্ত বজ্র পদার্থ নিষ্কাসন করে, মস্তিষ্কের নিউরন স্মৃতিগুলোকে ধরে রাখে এবং পুরো শরীরকে নিয়ন্ত্রণ করে।”
যোগ করে আবার বললেন তাছাড়া “আপনার পাকস্থলী এইচ, সি, এল এসিড তৈরি করতে পারে, যা দিয়ে খাবার ডাইজেস্ট করে। এরকম প্রতিটি অর্গানই এক একটি ইন্টিলিজেন্ট আইডেন্টিটি যারা নিদিষ্ট কিছু জটিল কাজ করতে সক্ষম। এই ইন্টিলিজেন্ট অর্গানগুলো কিন্তু আলাদা কিছুই করতে পারে না,এবং নিজদের মধ্যে কোন কনফ্লিক্টও নেই, সব এক সাথে একটি সত্তা হিসেবে ক্রিয়াশীল এরা। তেমনি আমাদের এপসিলন হিউম্যান হবে একই সাথে পুরুষ এবং নারীর সমন্বয়ে দুটি আলাদা সত্তা কিন্তু একসাথে ক্রিয়াশীল হবে, কোন কনফ্লিক্ট হবে না এদের মাঝে।” বললেন ড. লেথরিন।
উপদেষ্টা রেচেল অধৈর্যের স্বরে বললেন “এই প্রজেক্ট কবে শেষ হবে? যেই শিশুদের উপর গবেষণা করছেন তাদের অনেকেই বিকলাঙ্গ হচ্ছে, মারা যাচ্ছে কেউ কেউ, এমনিতেই চারদিকে মহান শাসক উথারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ মাথা চারা দিচ্ছে, এই ইস্যুতে বিদ্রোহীদের দল আরো ভারী হচ্ছে।”
“আমাদের গোপন প্রজেক্ট শীঘ্রই সফল হবে মহামান্য রেচেল। বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে বলব অযোগ্য লোককে দায়িত্ব দিলে যা হয় আরকি, বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রণের মুরোদ নেই তাকে করা হয়েছে বিজ্ঞান পরিষদের প্রধান!” জেনারেল গ্রাটিয়াকে খোঁচা মেরে বললেন ড. লেথরিন।
তেলে বেগুনে জ্বলে উঠল জেনারেল গ্রাটিয়া। বিষ দৃষ্টিতে ড. লেথরিনের দিকে তাকিয়ে বললেন “সাবধানে কথা বলুন, নিজের চরকায় তৈল দিন। বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রণের জন্য আমি কাজ করে যাচ্ছি, খুব শীঘ্রই নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে।”
“কিছুদিন আগে নিউক নামের একজন পুরুষ মানুষ এবং প্লেরা নামের একজন বিদ্রোহীকে বন্ধী করা হয়েছিল।ঐ দুইজন আমাদের কঠোর নিরাপত্তা ভেঙে কিভাবে পালালো?” প্রশ্ন করলেন উপদেষ্টা রেচেল।
জেনারেল গ্রাটিয়ার উত্তর দেবার আগেই ড. লেথরিন কথা কেরে নিয়ে বললেন “ঐ বেটি বাক পটু কাজের বেলায় ঠনঠনাঠন, ছাগল দিয়ে কি আর হাল চাষ হয়!”
জেনারেল গ্রাটিয়ে টেবিলে একটি থাবা মেরে বলল “আপনি চুপ থাকুন নয়ত!” বলেই থেমে গেল।
“নয়ত কি? বেটি মুরোদ নেই! আমি বললাম-তো এই বেটিই আমাদের ডুবাবে!” জেনারেল গ্রাটিয়াকে উদ্দেশ্য করে উপদেষ্টা রেচেলের দিকে তাকিয়ে বলল ড. লেথরিন।
এবার জেনারেল গ্রাটিয়া নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলল, চোয়াল শক্ত করে উঠে পরল, তারপর ড. লেথরিনের কলার ধরে পুতুলের মত শূন্যে উঠিয়ে কয়েকটা ঝাঁকি দিল। উপদেষ্টা রেচেল গরম চোখে তাকালে তাকে ছেড়ে দিল জেনারেল গ্রাটিয়া। ড. লেথরিন অপমানে কনফারেন্স রুম থেকে বেরিয়ে গেলেন।
“আমি দুঃখিত মহামান্য রেচেল।” বললেন জেনারেল গ্রাটিয়া।
মাথা নিচু করে উপদেষ্টা রেচেলের দিকে তাকিয়ে পুনরায় বললেন জেনারেল গ্রাটিয়া “আপনি চিন্তা করবেন না নিউক এবং প্লেরাকে শীঘ্রই ধরে ফেলব।”
“কিভাবে ধরবেন জেনারেল গ্রাটিয়া? তাছাড়া খবর পেয়েছি অনেক বিদ্রোহী ঢুকে পরেছে আমাদের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে, যারা নীরবে বিদ্রোহীদের সাহায্য করছে।”
“আমাদের নতুন আবিষ্কার সপ্তম প্রজন্মের রোবটকে কাজে নামিয়ে দেয়া হয়েছে। ৭ম প্রজন্মের রোবটকে পুরোপুরি মানুষের আকৃতিতে তৈরি করা হয়েছে, এর আগে রোবটগুলোকে মানুষের-মত করে তৈরি করা হলেও চেহারায় কৃত্রিম চামরা দেয়া হয়নি মানুষের থেকে আলাদা করা যাবে না এটা ভেবে কিন্তু বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রণের জন্য ৭ম প্রজন্মের রোবটের বেলায় সেই নিয়ম মানা হয়নি, লেথরিন স্কেলে এই রোবটগুলোর আই-কিউও মানুষের সমান।”
হুম, ঠোট জোরা সামনের দিকে ঠেলে বললেন উপদেষ্টা রেচেল। “কৈ কাউকে-তো ধরতে পারছে না আপনার এই ৭ম প্রজন্মের রোবট। তাছাড়া বিদ্রোহী নেতা নিকোলাইকেও ধরতে পারছেন না কেন আপনি?”
জেনারেল গ্রাটিয়া মুখ শক্ত করে বলল “সেই বুড়ো বামকে যে কোন সময় ধরতে পারি চাইলে, কিন্তু তাকে ধরলেই সমস্যার সমাধান হবে না কারণ ইতিমধ্যে অনেক বিদ্রোহী আমাদের লোকদের সাথে মিশে গেছে। এই বিদ্রোহীদের আগে সনাক্ত করতে হবে। ৭ম প্রজন্মের রোবট ইতিমধ্যে বিদ্রোহীদের সাথে মিশে গিয়ে আমাদের হয়ে কাজ করতে শুরু করেছে, আমাদের মধ্যে মিশে থাকা বিদ্রোহীদের ধরতে সাহায্য করছে।”
“হুম, সেটা ঠিকভাবে করলেই হয়। আমাদের গোপন প্রজেক্টের তথ্য বাহিরে গেলে কিন্তু সমস্যা আছে। মানুষের সামনে আসলে সব কিছু লণ্ডভণ্ড হয়ে যাবে। সে ব্যাপারে কি করছেন?” বললেন উপদেষ্টা রেচেল।
জেনারেল গ্রাটিয়া আত্মবিশ্বাসের সাথে বললেন “সেই ব্যাপারে চিন্তা করবেন না মহামান্য উপদেষ্টা রেচেল, এই প্রজেক্টের সমস্ত তথ্য আমাদের সেন্ট্রাল কম্পিউটার সিটিসির কাছে সংরক্ষিত আছে। সিটিসিকে পরাস্থ করা অসম্ভব, সিটিসির সামনে কেউ আসলে সিটিসি মানুষের মস্তিষ্কের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়, সে বুঝে ফেলে মানুষের পরবর্তী চাল কি হতে চলেছে। মানুষকে হিপনোটাইজড করার ক্ষমতা আছে সিটিসির।”
আগের পর্ব:
ধারাবাহিক সায়েন্স ফিকশান উপন্যাস: নিউক (পর্ব এক )
ধারাবাহিক সায়েন্স ফিকশান উপন্যাস: নিউক (পর্ব দুই)
ধারাবাহিক সায়েন্স ফিকশান উপন্যাস: নিউক (পর্ব তিন)
ধারাবাহিক সায়েন্স ফিকশান উপন্যাস: নিউক (পর্ব চার)
০৫ ই জুন, ২০২০ দুপুর ১২:১২
কাছের-মানুষ বলেছেন: আপনি মনযোগী পাঠক। আপনি ঠিক বলেছেন, এইচ, সি,এল হবে। আমি আপডেট করে দিয়েছি।
না, না, ছোট করে নয়। বরং আগেরগুলোর মতই আছে সাইজে, শব্দ সংখ্যা প্রায় আগের গুলোর সমানই আছে ।
প্রতিটি পর্বে দুটো করে অধ্যায় দিচ্ছি।
২| ০৫ ই জুন, ২০২০ দুপুর ১২:৪৯
নেওয়াজ আলি বলেছেন: অনন্য লেখা।ভালো লাগলো।
০৫ ই জুন, ২০২০ দুপুর ১:০৫
কাছের-মানুষ বলেছেন: আপনাকে প্রথম থেকেই পেয়ে আসছি।
পাঠ ও মন্তব্যের জন্য কৃতজ্ঞতা রইল অনেক।
৩| ০৫ ই জুন, ২০২০ দুপুর ১২:৫৯
ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন:
আপনার পোস্টের বাইরে জানতে চাচ্ছি, আপনি কি হুমায়ূন আহমেদের ফিহা সমগ্র ও সেবা প্রকাশনীর সন্ধানী পড়েছেন? মুভি গ্র্যাভিটি দেখেছেন? যদি তাই হয় তাহলে নিসন্দেহে আশা করতে পারি ভবিষ্যতে আরো মজাদার লেখা পাবো আপনার কাছে। শুভ কামনা রইলো।
০৫ ই জুন, ২০২০ দুপুর ১:১৩
কাছের-মানুষ বলেছেন: সন্ধ্যানী ছাড়া বাকিগুলো পড়া এবং দেখা হয়েছে।
আমার পছন্দের বিষয় সাইফাই, তাই বাংলা সাহিত্যের হুমায়ুন আহমেদ, জাফর ইকবাল, অর্দিশ বর্মন, সত্যজিত রায় এদের সাইফাইগুলো মিস করি না সাধারনত। বিদেশীদের মধ্যে আইজেক আসিমোভ এর সাইন্স ফিকশন সবচেয়ে বেশী পড়েছি।
ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।
৪| ০৫ ই জুন, ২০২০ দুপুর ১:২৮
রাজীব নুর বলেছেন: ভবিষ্যত পৃথিবী রোবটদের দখলে চলে যাবে- এটা ভাবতেই বুক কেপে উঠে।
মাঝে মাঝে আমি এরকম স্বপ্নও দেখি।
কেউ যখন খুব যত্ন দিয়ে মায়া দিয়ে লিখে- আমার ভালো লাগে। এরকম লেখা পড়লেই বুঝা যায়। নিউক, রেচেল, প্লেরা চরিত্র গুলোকে যেন চোখের সামনে দেখতে পাচ্ছি!
০৫ ই জুন, ২০২০ দুপুর ১:৩৮
কাছের-মানুষ বলেছেন: আপনার মন্তব্য আমাকে অনুপ্রাণিত করল।
আমার প্রতিটি চরিত্রের প্রতিই ভালবাসা থাকে। কোন ভিলেনও যদি থাকে গল্পে তাকেও আমি একটা কারন দেই, অন্তত চরিত্রটি নিজের কাছে নিজেকে যেন জাস্টিফাই করতে পারে। এর কারন কোন জঘন্য খারাপ মানুষও ভাবে সে যা করছে তা রাইট, তার নিজের কিছু যুক্তি থাকে খারাপ কাজটা করার।
৫| ০৫ ই জুন, ২০২০ দুপুর ২:২১
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: দারুন গতিতেে এগিয়ে চলছে কাহিনী. . .
মুগ্ধ পাঠ....
এবং অপেক্ষা
+++
০৫ ই জুন, ২০২০ রাত ১১:০৪
কাছের-মানুষ বলেছেন: আমি চেষ্টা করেছি আপনার ভাল লেগেছে জেনে ভাল লাগল।
প্রতিদিন একই সময়ে আসবে পরের পর্ব।
প্লাস এবং মন্তব্যে কৃতজ্ঞতা রইল।
৬| ০৬ ই জুন, ২০২০ সকাল ১১:২১
কাছের-মানুষ বলেছেন: পরের পর্ব
©somewhere in net ltd.
১| ০৫ ই জুন, ২০২০ সকাল ১১:৫৯
কল্পদ্রুম বলেছেন: আজকের পর্বটা সাইজে ছোট।না কি আমিই দ্রুত পড়লাম!লেখক কি গল্পের খাতিরে এইচ.সি.আই লিখেছেন?বাস্তবে এইচ.সি.এল. হয়।