নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মানুষ মরে গেলে পচে যায়, বেঁচে থাকলে বদলায়, কারণে বদলায়, অকারণেও বদলায় । তবে আমি মনে হয় আগের মতই আছি , কখনও বদলাবওনা মনে হয় ! !
ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ ধরে বেজে চলছে, রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে হাফিজ ভাইয়ের গলা, বলল “শুক্রবারে আমার বিয়ে, ভাবিসহ আসবা ! আমাদের টার্গেট সকাল সকাল ঢাকা থেকে রওনা দিব, ঠিক সাড়ে দশটা নাগাদ বগুড়া পৌঁছবো !”
হাফিজ ভাই সম্পর্কে বলে নেই, আমি আর হাফিজ ভাই একই ইউনিভার্সিটিতে পড়াশুনা করেছি কোরিয়াতে। আমরা বেশ কয়েকজন থাকতামও একই বাসায়। আমি মাস্টার্স করে চলে এসেছিলাম দেশে আর তিনি তখনও পি.এইচ.ডি করছিলেন কোরিয়াতে। তিনি দেশে এসেছিলেন দিল্লি-কা-লাড্ডু খেতে মানে শুভ বিবাহ করতে । হাফিজ ভাই ‘জীবিত থেকে উজ্জীবিত হতে যাচ্ছে’ ,এটা যতটানা আনন্দের তার চেয়ে বেশী আনন্দের বিয়ের অনুষ্ঠানটা হবে ঢাকার বাইরে বগুড়াতে । একে-তো ঢাকার বাইরে ধুমছে ঘুরাঘুরি করতে পারব তার উপর বিয়েতে মুরগির রান টানব অনেক দিন পর। কোরিয়াতে লম্বা সময় থেকে এসে দেশে ফিরেছি, বিয়ে-শাদি বা অন্যান্য অনুষ্ঠানের খানা-দানায় উপর বাড়তি আগ্রহ ছিল বেশ। তাছাড়া বিদেশী মুরগী অনেক চিবিয়েছি, দেশি মুরগীকে মিস করছি অনেকদিন ধরে। তার উপর বাঙ্গালীদের নাকি এমনিতেই দেশী মুরগির প্রতি দেশ প্রেমটা একটু বেশীই থাকে, যেমন, ফুলপেনের বেলায় চাই আমেরিকান ছিরা হেছরাইনা পেন, লেহেঙ্গার বেলায় ভারতীয়, পায়জামার বেলায় চাই পাকিস্তানি কিন্তু একমাত্র মুরগীর বেলাই চাই খাটি দেশী মুরগী রোষ্ট! দেশী মুরগি চিবিয়ে ভক্ষণ করতে হেভি আরাম, আমি মুরগীর রান চাবাচ্ছি আর মনে মনে মুরগীকে বলছি “কিছু মনে কইরেন না মিস মুরগী ম্যাডাম, আপনাকে দেশী পাইয়া অনেক দিন পর নির্দয়ের মত চাবাচ্ছি” ব্যাপারটা কল্পনা করতেই খুশীতে মনটা ভরে উঠল ।
ঢাকার বাইরে যাচ্ছি শুনে আমার বউ আনন্দে আত্তহারা, কারণ বিয়ের পর এই প্রথম আমাদের একসাথে ঢাকার বাইরে যাওয়া হবে। আমি অতি উৎসাহে খাজা ভাইকেও ফোন দিয়ে রাজি করালাম বগুড়ায় যাওয়ার জন্য। খাজা ভাইও কোরিয়াতে আমাদের সাথে পড়াশুনা শেষ করে দেশে এসেছেন। তিনি ব্যস্ত মানুষ, পেশায় ডাক্তার, সাথে একটি মেডিকেলে পড়ায়ও, তবে অনুষ্ঠানটি শুক্রবার হবে বিদায় তিনি রাজি হলে। অবশ্য আমার আগেই হাফিজ ভাইও তাকে ফোন দিয়েছিল যাওয়ার জন্য । আমাদের আরেক সৈনিক ভোলার পোলা মুসফিক ভাই দেশে তসরিফ এনেছেন কিছুদিন হল অথচ বিয়েতে নাকি থাকতে পারবেন না কারণ তিনি বরিশালে গিয়ে আটকে গেছেন। রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে রাস্তায় গাড়িঘোড়া খুব একটা নেই বলেই চলে, বেচারার দেশে এসে লাইফটা তামা তামা হয়ে গেছে, গাড়ি-গোরার অভাবে ঢাকায় পদধূলি রাখতে পারছেন না!
শুক্রবার খুব ভোরে আরামের ঘুম হারাম করে যাবার প্রস্তুতি নিচ্ছি সাথে বউকেও তাড়া দিচ্ছি তাড়াতাড়ি প্রস্তুত হবার জন্য। এর মাঝেই হাফিজ ভাই এবং খাজা ভাইয়ের সাথে বেশ কয়েক দফা কথা হয়েছে মুঠোফোনে । হাফিজ ভাইয়ের কড়া নির্দেশ, দুনিয়ায় আজ রোজ কেয়ামত হয়ে যাক তবুও সকাল আটটার মধ্যে থাকতে হবে খাজা ভাইয়ের বাসার সামনে, আমাদেরকে সেখান থেকে মাইক্রোতে নেয়া হবে । হাফিজ ভাই জীবনের প্রথম বিয়ে করতে যাচ্ছে তাই মনের খুশী চেপে রাখতে পারছে না, পারেতো উড়াল দিয়ে বগুড়া চলে যায় তিন কবুল বলার জন্য । যথারীতি ফোন রাখার সময় বলল “আমাদের টার্গেট সাড়ে দশটা না হলেও এগারটা নাগাদ বগুড়া পৌঁছে আমরা সকালের নাস্তা করব!” সকাল আটটা বাজার অনেক আগেই চলে গেলাম খাজা ভাইয়ের ইস্কাটনের বাসায়, তিনি কচ্ছপ গতিতে রেডি হচ্ছেন দেখে আমি কিছুটা তাড়া দিলাম যেন তাড়াতাড়ি রেডি হয় সাথে ভাবিকেও নিয়ে নেয় । কিন্তু ভাবি নাছর বান্ধা খাজা ভাই আজকে গিয়ে আজই চলে আসবে শুনে তিনি এই ভ্রমণে যেতে নারাজ । অবশেষে ভাবিকে রেখেই খাজা ভাইয়ের বাসা থেকে কিছুটা পেট পুজো করে বের হলাম হাফিজ ভাইয়ের হবু শ্বশুর বাড়ি বগুড়ার উদ্দেশ্যে ।
“আমাদের টার্গেট হল দেরি হলেও অন্তত দুপুরের অনেক আগেই বগুড়ায় পৌঁছবো এবং জুম্মার নামাজটা সেখানেই আদায় করব” অতি আত্মবিশ্বাসের সাথে বলল হাফিজ ভাই । আমরা তখনও বুঝতে পারি নাই আমাদের ভাগ্যে কি ঘটতে যাচ্ছে ! মাইক্রোর সামনের সীটে বসেছে হাফিজ ভাই, পিছনের সীটে আমি এবং আমার বউ। আমাদের পিছনে সারিতে বসেছে খাজা ভাই সাথে এবং হাফিজ ভাই-এর কিছু বন্ধু বান্ধব। ঢাকার কুরিল ফ্লাই ওভারের নীচ দিয়ে যাবার সময় ব্রিজের সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে উৎফুল্ল হাফিজ ভাই বলল “ফ্লাই ওভারটা-তো খুব সুন্দর!” হাফিজ ভাইয়ের মনে সুখ তাই যা দেখে তাই ভাল লাগছে চোখে । হাফিজ ভাইয়ের কথা শুনে দেশ-প্রেমিক খাজা ভাই গর্ব করে জোর গলায় বলে উঠল “দেখছেন হাফিজ ভাই, বলছিলাম না দেশ এগিয়ে যাচ্ছে ? খালি বিদেশ বিদেশ করেন! দেখছেন কি সুন্দর ফ্লাই ওভার! ” এরকম বিভিন্ন ধরনের মিষ্টি মধুর গল্প-গুজব করতে করতেই যাচ্ছি বগুড়ার দিকে।
ভ্রমণ করে হেভি আরাম পাচ্ছিলাম কিন্তু কথায় আছে না “সবার কপালে সুখ সয় না!” আমাদের কপালেও সইলো না ,বিপত্তি ঘটল সাভারে গিয়ে । সকাল সাড়ে নয়টার মত বাজে , হঠাৎ দেখি গাড়ি জ্যামে পরছে ! আমরা ভাবলাম এটা মামুলি জ্যাম, একটু পরেই ছেড়ে যাবে ! সকাল সাড়ে নয়টা থেকে এগারটার মত বাজে অথচ গাড়ি এক চুলও আগে বাড়ছে না, মনে হয় সুপার গ্লুর আঠার মত লেগে আছে ! তখন আর আমাদের বুঝতে বাকি রইল না যে এটা মামুলি কোন জ্যাম না। এমনিতেই গরমের দিন, ভ্যাপসা গরমে শরীরের অবস্থা হালুয়া টাইট হয়ে যাচ্ছে ! এদিকে খাজা ভাই খুবই চিন্তিত কারণ পরদিন সকালে তার ক্লাস নিতে হবে কলেজে , সময়মত বাসায় ফিরতে পারবে কিনা এই ভেবে সে বেশ শঙ্কায় আছে । আমি তাকে কিছুটা অভয় দেয়ার চেষ্টা করলাম । আশাবাদী হাফিজ ভাই আবারো ঝাঁঝালো ভাষায় বলে উঠল “কোন ব্যাপার না! আমাদের টার্গেট সেখানে গিয়ে জুম্মার নামাজটা না পরতে পারলেও, বিকাল তিনটার মধ্যে নিশ্চয়ই পৌঁছব !”
বিকেল তিনটার মত বাজে, গাড়ি তখন মাত্র টাঙ্গাইলের রাস্তায়। এখনো গাড়ি কচ্ছপ গতিতে এগোচ্ছে। কিছুক্ষণের মধ্যেই খবর পেলাম সামনে একশ কিলোমিটারের মত জ্যামে পরছে । ঐতিহাসিক এই জ্যামে পরে আমাদের এক এক জনের অবস্থা খুবই করুন। ফেইসবুক মারফত আমাদের এই করুন অবস্থার কথা শুনে সু-দুর কোরিয়া থেকে আমাদের ইউনিভার্সিটির আরেক নওজোয়ান নজরুল ভাই ফোন দিয়ে অত্যন্ত ব্যথিত হৃদয়ে সহ-মর্মিতা জানাচ্ছেন । হাফিজ ভাই হতাশায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে চলেছেন দেশের প্রতি। আশাহত কণ্ঠে বলছেন “এই দেশ আর উন্নত হবে না ! এত জ্যাম কি আর পৃথিবীর কোথাও আছে ?” ঐ দিকে ভোলার পোলা মুসফিক ভাই খোদার কাছে শুকরিয়া আদায় করছেন ফোনে কারণ তিনি না এসে বেচে গেছেন এই স্মরণ কালের শ্রেষ্ঠ জ্যাম থেকে। ঘড়িতে দেখি বিকেল চারটা বেজে গেছে, আমাদের ক্ষুধায় এক এক জনের পেট চো-চো করছে । আর এদিকে পাকস্থলীও খালি করা দরকার কিন্তু গাড়িতে জ্যামে বসে আছি ! অবশেষে উপায় না দেখে, আমি বউকে নিয়ে মহা সড়কের আশে পাশের গ্রামে গিয়ে আরামসে পাকস্থলী খালি করে এলাম । ঐদিকে একের পর এক ফোন আসছে হাফিজ ভাইয়ের হবু শ্বশুর বাড়ি থেকে, হাফিজ ভাইকে দেখে আমার মায়া লাগছে। বেচারা শোকে গাড়ির সামনের সীটে এতিমের মত বসে আছে, মুখ দিয়ে কোন কথা বেরোচ্ছে না । দুপুরে বর যাত্রী নিয়ে বিয়ে বাড়িতে মুরগী টানার বদলে গাড়িতেই অর্ডার দিয়ে খেয়ে নিলাম । আমি আর খাজা ভাই, হাফিজ ভাইকে সান্ত্বনা দেয়ার চেষ্টা করছি। হাফিজ ভাই আমাদের থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে আবারও হুঙ্কার দিয়ে বলে উঠল “যমুনা সেতু আর বেশী দূরে নেই, আমাদের টার্গেট সন্ধ্যা সাতটা বাজে বগুড়া পৌঁছবো!”
বিপদ যখন আসে তখন সব দিক দিয়েই আসে, আমাদের মাইক্রো-বাসটিও নষ্ট হয়ে গেল আর কিছুদূর যাবার পর। ড্রাইভার সাহেব করুন কণ্ঠে জানাল গাড়ি ঢাকায় নিয়ে ঠিক করতে হবে, আমরা যেন আরেকটা গাড়ির ব্যবস্থা করি। একে-তো গাড়ি নষ্ট তার উপর আসছে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি । অবশেষে আরেকটা মাইক্রো-বাস নিয়ে রওনা দিলাম গন্তব্যে । দেখতে দেখতে সন্ধ্যা সাতটা বেজে গেছে কিন্তু এখনও বগুড়া যাবতো দুরের কথা যমুনা সেতুর দারে কাছেও পৌছাতে পেলাম না । প্রত্যেকের মুখ শুঁকিয়ে আমচুর হয়ে গেছে, ইতিহাস করা এই ভ্রমণে কারো মুখ থেকেই কোন শব্দ বেরুচ্ছে না ! এর মধ্যেই নতুন আরেক মসিবত, আমাদের গাড়ির গ্যাস খতম হয়ে গেছে। আমি মনে মনে বলে খাইছে আমারে, বালা মসিবততো সঙ্গই ছাড়ছে না, জালালী খতম পড়া দরকার! যাইহোক গ্যাস নিয়ে আবারো নব উদ্যমে রওনা দিলাম । “ইনশাল্লাহ , আমাদের টার্গেট রাত বারটা বাজে আশা করি বগুড়ায় পৌছব” বলে আবারো ঘোষণা দিল আশাবাদী হাফিজ ভাই ।
দেখতে দেখতে রাত বারটা বেজে গেল কিন্তু এখনো যমুনা সেতু পার হতে পারলাম না । আমার বউ জীবনে এমন জ্যাম দেখে নাই, বেচারা নেতিয়ে পরেছে আমার উপর। কথায় আছে না অল্প শোকে কাতর অধিক শোকে পাথর , এবার হাফিজ ভাইয়ের অবস্থা হয়েছে তাই , বেচারা আহত হৃদয়ে চুপ করে বসে আছে , মুখ দিয়ে কোন কথা বেরচ্ছে না। খাজা ভাই আর আমি তাকে আবারো সাহস যোগানোর চেষ্টা করলাম, আমি বললাম “ডোন্ট ওয়ারী, বিয়ে আজ হবেই হবে!” প্রচণ্ড আশাবাদী হাফিজ ভাই এবার কিছুটা নিরাস কণ্ঠে বলল “আর বিয়ে, বগুড়া যেতে পারি কিনা কে জানে।
ঘড়িতে তখন রাত একটার মত বাজে , সকল জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে যমুনা সেতুটা পার হলাম। যমুনা সেতু পার হয়ে হাফিজ ভাই যেন নতুন জীবন ফিরে পেয়েছেন, পুরো রাস্তা ফকফকা! গাড়িতে সবাই ক্লান্ত হয়ে চিত হয়ে শুয়ে আছে আর ঐ দিকে হাফিজ ভাই খুশীতে একের পর এক, এদিক-সেদিক ফোন করা শুরু করে দিয়েছেন । আমি ক্লান্ত শরীর নিয়ে ঘুমের রাজ্যে ডুবে গেলাম, আর মনে মনে বিড়বিড় করে বললাম “আমাদের টার্গেট অনেক আগেই বগুড়া পৌছব !” কখন যে ঘুমিয়ে পরেছিলাম টেরই পাইনি, ঘুম থেকে উঠে দেখি রাত তিনটার মত বাজে, গাড়ি মাত্র হাফিজ ভাইয়ের হবু শ্বশুর বাড়ি এসে থামল । (শেষ)
আমার ভ্রমণ পোষ্ট-সমূহঃ
আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়
আমার থাই এবং লাউস ভ্রমনের গল্প
ঘুরে এলাম আমেরিকার সানফ্রানসিসকো
আমেরিকার আলাবামা থেকে ওয়াশিংটন রোড ট্রিপ
অরিগনের সর্বোচ্চ পর্বত মাউন্ট-হুড
সিলভার ফলস পার্ক যেন আমেরিকার বুকে এক টুকরো স্বর্গ
আমেরিকার গ্রামে বেরী-পিকআপে একদিন
আমেরিকার ৯০০০ ফুট উচু পাহাড় মাউন্ট লেমনে একদিন
ঘুরে এলাম আমেরিকার ইন্ডিয়ানা থেকে
অরিগণ থেকে এরিজোনায় রোড ট্রিপঃ
আমেরিকার অরিগণ থেকে এরিজোনায় রোড ট্রিপ (পর্ব পাচ এবং শেষ): পৌছে গেলাম মরুভূমি রাজ্য এরিজোনাতে
আমেরিকার অরিগণ থেকে এরিজোনায় রোড ট্রিপ (পর্ব চার): লস-এঞ্জেলেসে একদিন
আমেরিকার অরিগণ থেকে এরিজোনায় রোড ট্রিপ (পর্ব তিন): পৌছে গেলাম ক্যালিফোর্নিয়ার সান-ফ্রানসিসকো
আমেরিকার অরিগণ থেকে এরিজোনায় রোড ট্রিপ (পর্ব দুই): যাত্রা শুরুর দিন
আমেরিকার অরিগণ থেকে এরিজোনায় রোড ট্রিপ (পর্ব এক): ভ্রমনের ইতিকথা
১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৫:২৪
কাছের-মানুষ বলেছেন: সঠিক সিদ্ধান্তই নিয়েছেন!
ঘটনাটি অনেক আগের, দেশে সেই সময় সেটেল হবার জন্য চলে গিয়েছিলাম!
২| ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৪৪
রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: খুবই দুঃখজনক ঘটনা।
১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:২২
কাছের-মানুষ বলেছেন: আমাদের দূর্ভাগ্যই ছিল বলতে হয়! তবে এখন মনে পরলে খারাপ লাগে না, ভাল অভিজ্ঞতাই হয়েছিল!
৩| ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:১৯
করুণাধারা বলেছেন: দারুন গল্প! রুদ্ধশ্বাসে পড়লাম দীর্ঘ কাহিনী কিন্তু শেষে এসে হতাশ হলাম, কারণ রাত তিনটায় বর এবং বরযাত্রী এসে পৌঁছাবার পর বিয়েটা কেমন করে হলো তার একটু বর্ণনা থাকলে ভালো হতো। আরেকটা জিনিস বুঝতে পারছি না, শুধু কয়েকজন বন্ধু-বান্ধব নিয়ে বিয়ে হয়ে গেল! আত্মীয়-স্বজন কেউ ছিল না, নাকি তারা বগুড়াতেই থাকতো?
১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৪৮
কাছের-মানুষ বলেছেন: আমরা আসলে দুইটা মাইক্রোবাস করে গিয়েছিলাম, আরেকটাতে হাফিজ ভাইয়ের ফ্যামিলির কিছু সদস্য ছিল, তার ফ্যামলির সবাই গ্রামে থাকে, পরে অনুষ্টান করার কথা ছিল।৷
আসলে রাত তিনটায় গিয়ে আমরা খাওয়া দাওয়া করতে করতে দেখি রাত ৪ টার মত বাজে, কাজি যখন বিয়ে পড়াচ্ছিল আমি তখন ঘুমের রাজ্যে, আবছা আবছা দেখছিলাম কাজী বয়ে পড়াচ্ছে।
৪| ১৮ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:০১
প্রামানিক বলেছেন: এরকম মছিবতে আমিও অনেক ভুগেছি তবে কোন বিয়ের অনুষ্ঠানের এরকম অভিজ্ঞতা নাই।
১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৫০
কাছের-মানুষ বলেছেন: এই রকম অভিজ্ঞতাও এক সময় মধুর স্মৃতি হিসেবে মানসপটে রয়ে যায়! এখন মনে পরলে ভালই লাগে!
৫| ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৯
ঢাবিয়ান বলেছেন: আপনার এই অভিজ্ঞতা যদি গরমকালে হয়ে থাকে তবে তা ভয়াবহ। এইরকম দুরপাল্লার এক এক যাত্রায় জ্যমের অভিজ্ঞতা হয়েছিল। তবে তা শীতকালে হওয়ায় কষ্ট একটু কম হয়েছিল।
১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৩
কাছের-মানুষ বলেছেন: আমাদের এই অভিজ্ঞতা গরম কালেই হয়েছিল, তাই তখন কষ্টটা আরো বেশী হয়েছিল। তার উপর অনেক বছর পর দেশে ফিরে এরকম অভিজ্ঞতা ভয়াবহ ছিল আমাদের জন্য। তবে এখন সেই অভিজ্ঞতা মনে পরলে ভালই লাগে।
৬| ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১১:৫১
জ্যাক স্মিথ বলেছেন: বগুড়া পৌঁছানোর কথা সকাল ১০ টায় আর সেখানে পৌঁছুলেন রাত ৩ টায়, এ তো এক মহাকব্যিক ভ্রমণ কথা। সাধে কি আর আমি বলি- বাংলাদেশের জ্যাম হচ্ছে বিশ্ব বিখ্যাত জ্যাম।
অনেকেই বলে দেশীয় মুরগীর স্বাদ নাকি বিদেশী মুরগীতে পাওয়া যায় না।
১৯ শে মে, ২০২৪ রাত ১২:১৭
কাছের-মানুষ বলেছেন: সেই জ্যাম ছিল আমাদের জন্য ইতিহাস সৃষ্টি করা জ্যাম! এবং আমাদের কপাল খারাপ আমরা সে সময় সেই অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছিলাম! এখন পরিস্থিতি যে খুব একটা পাল্টেছে তেমন না! ক্রমাগত জনসংখ্যা বৃদ্ধি, রাস্তা সরু হওয়া, রাস্তায় গাড়ির সংখ্যা বৃদ্ধি সমস্যাকে আরও ঝটিল করছে!
বিয়ে বাড়িতে দেশী মুরগির রোষ্ট সত্যিই মজাদার হয়।
৭| ১১ ই জুন, ২০২৪ সকাল ১০:৩০
খায়রুল আহসান বলেছেন: মনে হয়, দেশে সেই সময় সেটল করার সিদ্ধান্তটা পাল্টিয়ে ভালই করেছিলেন।
একেকটা ফ্লাইওভার হয়েছে, আর বছরের পর বছর ধরে জনগণকে অবর্ণনীয় কষ্ট ও যন্ত্রণা ভোগ করতে হয়েছে। তারপরে শুরু হলো মেট্রোরেল আর এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের কাজ, যা এখনো সম্পূর্ণ হয় নাই। কিয়দংশ শেষ করে জনগণের ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়েছে। এই সবগুলো প্রকল্পের মধ্যে মেট্রোরেল দ্বারা জনগণের প্রভূত উপকার হয়েছে। বাকিগুলো দিয়েও হয়েছে, তবে তাতে জ্যামের কোন ইতর বিশেষ হয় নাই।
আপনারা যে জ্যামে আটকে পড়েছিলেন, সেই জ্যামে যেসব এম্বুল্যান্স আটকা পড়েছিল তাদের রোগী ও পরিচর্যাকারীদের কী অবস্থা হয়েছিল, তা কল্পনাও করতে পারি না। আটকে পড়া শিশুযাত্রীদেরও নিদারুণ কষ্ট পাবার কথা।
ইতিহাস হয়ে থাকার মতই একটা ভ্রমণ ছিল বটে!
১৩ ই জুন, ২০২৪ ভোর ৫:০৪
কাছের-মানুষ বলেছেন: সেই সময় আমার অনেক ইচ্ছে ছিল দেশে সেটেল হবার, এবং সেজন্যই দেশে একেবারে চলে গিয়েছিলাম, আমি লিখেছিলাম এ বিষয়ে আমার অন্য একটি পোষ্টে, আপনি পড়েছিলেন।
আসলে অ-পরিকল্পিতভাবে দেশে ফ্লাইওভার হয়েছে, উপরে ফ্লাইওভার হয়েছে আর নীচের রাস্তা আরও সংকুচিত হয়েছে, কাজের কাজ তেমন কিছু হয়নি। তবে মেট্রো-রেল কিছুটা কাজে দেবার কথা যদি পরিকল্পিতভাবে আরও করা যায়। আসলে অ-পরিকল্পনা এবং অসৎ উদ্দেশ্য থাকলে কোন কিছুই সফল হয়না!
হ্যাঁ এই ধরনের জ্যামে রোগী, শিশুদের অবস্থা কেমন হয় কল্পনা করাও কঠিন। আমাদের এলাকার একটি ছবি দেখলাম, কিছুদিন আগে বৃষ্টিতে পানি জমাট বেধে আছে রাস্তায়, পানি সরতে পারছে না, মানুষজন দারুণ কষ্ট করে চলছে! ভাল রাস্তা, ভাল সার্ভিস, যে যার কাজ ঠিকঠাক মত করবে, আইনশৃঙ্খলা সুন্দর হবে এটুকু-ইতো প্রতিটি নাগরিকের অধিকার!
সুন্দর এবং আন্তরিক মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ অনেক।
©somewhere in net ltd.
১| ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৫:২২
কামাল১৮ বলেছেন: মন্তব্য করে আর কষ্ট না বাড়ীই।