![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সুখের আশায় ছুটতে ছুটতে মানুষ অসুখে পড়ছে। আর আমি তখন সত্যের সন্ধানে ছুটছি।
নেড়ি কুত্তাটা এই গরমে বেশ হাঁপাচ্ছে। জিহ্বা বের করে এদিক সেদিক তাকিয়ে অনেক ভেবেচিন্তে একটা ছায়ার নিচে গিয়ে বসলো। তবে তাতেও রক্ষা নেই। কোথা হতে এক মাঝ বয়সী যুবক দৌড়ে এসে অর্ধেক একটা ইটের টুকরো কুত্তাটার উপর ছুঁড়ে মারলো। ইটের আঘাত খেয়ে ব্যাথায় ককিয়ে ঘেউ ঘেউ করতে করতে চোখের নিমিষেই অন্য রোডে চলে গেলো। ইট ছুঁড়ে মারা যুবকটি তখনও নির্লজ্জের মত হাসছে। যেন কোন যুদ্ধে সে জয়লাভ করেছে। আমি অনেক বুড়ো মানুষকেও দেখেছি কুত্তা দেখলেই তাদের হাত নিসপিস করে মারার জন্য।
গত পরশু আম্মুর হতে নেওয়া ১০০ টাকা থেকে অবশিষ্ট ১০ টাকা দিয়ে কেনা সিগারেটটা চায়ের দোকানে বসে ফুঁকছি আর এই দৃশ্যটি দেখছি। খবিশটার হাসি দেখে আমার পিত্তি জ্বলে উঠছিলো। ইচ্ছে করছিল ওর পুরো শরীরে সিগারেটের ছ্যাকা দিয়ে দেই। তবে আমার ইচ্ছেগুলো ইচ্ছেই থেকে যায়।
সিগারেট খাওয়া শেষে বাসার দিকে হাঁটছি। একটি দৃশ্য দেখে থমকে দাঁড়ালাম। একটি লোক গাড়ী নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে! আর কিছুক্ষন পরপর "এয়! আইসক্রিম! আইসক্রিম! বলে ঘন্টা বাজিয়ে চিৎকার করছে। আর কিছু শিশু আইসক্রিম কিনতে ছুটে আসছে গাড়ির কাছে । যেমনটা আমি করতাম। সবাই আইসক্রিম কিনছে তবে খালি গায়ে দাঁড়ানো একটি শিশু, বয়স ৬-৭, গাড়ী ধরে দাঁড়িয়ে আছে তবে সে কিনছে না। অন্যদের খাওয়া মনযোগ সহকারে দেখছে। পিচ্চিটাকে আইসক্রিমওয়ালা বললো-
"কি? কি চাও"?
- আইসক্রিম!
"টাকা আছে"?
- না!
"বাসায় যাইয়া মায়ের কাছ থাইক্কা ১০ টাকা নিয়া আসো।
- মায়তো বাসায় নাই। গার্মেন্টেসে গেছে।
লোকটা আর কিছু না বলে গাড়ী টানতে টানতে সামনে এগিয়ে যাচ্ছে। আর সেই সাথে পিচ্চি শিশুটিও।
আমি এটা দেখে ঠিক থাকতে পারলাম না। বাসায় গিয়ে সোজা আম্মুর মুখের কাছে গিয়ে বললাম
- " ১০ টাকা দাওতো! "
আম্মু আমার গালে ঠাস করে একটা চড় বসিয়ে দিলো। আমি তখনও বুঝতে পারিনি। হতভম্ব হয়ে দাঁড়িয়ে আছি।
"তুই সিগারেট খেয়েছিস"? ছিঃ! দূর হ আমার সামনে থেকে! [আম্মু বিস্ফোরিত চোখে বললো। ]
তাড়াহুড়োর জন্য পারফিউম লাগিয়ে তাঁর কাছে যাওয়ার কথা ভুলেই গিয়েছিলাম। আম্মু টের পেয়ে গেছেন। এখন সত্য বললেও এক পয়সাও সে দিবে না। নিজের উপর খুব রাগ হচ্ছিল। কেন আমি সিগারেটটা খেয়ে টাকাটা নষ্ট করলাম। নয়তো এই টাকা দিয়ে পিচ্চিটাকে আইসক্রিম কিনে দিতে পারতাম।
মন খারাপ করে সোফায় বসে আছি। ১৫ মিনিট পর বাসায় খালামনি ঢুকলো। উনাকে আম্মুর কাছে যাওয়ার আগেই সব বললাম। উনি ২০ টাকা দিয়ে বললো-
"১ টা তুই খাবি আরেকটা পিচ্চিটাকে দিবি"। যদিও আমি আইসক্রিম খাইনা ঠান্ডার জন্য। তবে আজ আমি খাবো একসাথে খাবো। ছোট বেলার মত খাওয়া শেষে কাঠিটাকে চিবিয়েও খাবো।
বের হয়ে বাসার বাহিরে ওদের পেলাম না। লোকজনকে জিজ্ঞেস করে সেই খুঁজতে লাগলাম আইসক্রিম ওয়ালাকে।
পরিশিষ্টঃ মিরপুর স্টোডিয়ামের সামনে হতে খালি গায়ে আর পাঞ্জাবী পড়া দুজন শিশু আইসক্রিম খেতে মিরপুর ১ এর দিকে যাচ্ছে।
- ভাইয়া! আমার জিব্বা কমলা রঙ হইছে?
"হ্যা হয়েছে"! আমারটা?
- আম্নের টাও। "ভাইয়া খাওয়া শেষে কাঠিটা ফেলাইয়া দিয়েন না। কাঠিটা চাবাইলেও অনেক মজা লাগে।
- আচ্ছা ঠিক আছে!
#অন্তর_মাশঊদ
©somewhere in net ltd.
১|
২৩ শে মে, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:০৮
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: জিব্বা কমলা রঙ হোক না হোক... পাটখের হৃদয় ঙ্গিন হয়েছে নিঃসন্দেহ!
লাল নীল কমলা +++++++++++++++++