নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অন্তর মাশঊদ

সুখের পিছনে ছুটতে ছুটতে মানুষ অসুখে আক্রান্ত হচ্ছে। সেখানে আমি সত্যের সন্ধানে ছুটছি

অন্তর মাশঊদ

সুখের আশায় ছুটতে ছুটতে মানুষ অসুখে পড়ছে। আর আমি তখন সত্যের সন্ধানে ছুটছি।

অন্তর মাশঊদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

সংকল্প

২৮ শে মে, ২০১৫ দুপুর ২:৪৯

মোটা লোকটা আমার সামনে মেয়েদের বেশ মোটা একটা ছবির এ্যালবাম এগিয়ে দিয়ে বললো-
– “দেখুন এর ভিতর আপনার কাকে পছন্দ হয়। পছন্দ হলে পিয়ন যেয়ে তাকে ডেকে আনবে এখানে।

ছবিগুলো দেখতে দেখতে ৪ নাম্বার পাতায় এসে চোখ আটকে গেলো আমার। বেশ সাধাসিধে চেহারা। মেয়েটির বড় বড় চোখদুটোয় কেমন যেন একটা আকর্ষন কাজ করল আমায়। আমি আর অন্য কোন ছবির দিকে তাকাতে সাহস পেলাম না। ইশারায় লোকটাকে মেয়েটির ছবি দেখিয়ে বললাম। লোকটি বাহিরে গিয়ে পিয়নকে নিয়ে আসতে বললো মেয়েটাকে। কিচ্ছুক্ষন পর –
দরজা খুলে একটি পিচ্চি মেয়ে ভয়ার্ত চোখে রুমে প্রবেশ করলো। বয়স কত হবে? ৮ কি ৯ বছর। মাথায় বেশ লম্বাচুল। তবে যত্ন না নেওয়াতে তাতে জট ধরেছে। মেয়েটি ধীরে ধীরে মাথা নিচু করে এগিয়ে আসছে আমার সামনে আর আমারও এক অচেনা অনুভূতিতে হার্ট বিট বেড়ে যাচ্ছে। মেয়েটি মাথা নিচু করে ঠিক টেবিলের সামনে এসে দাঁড়ালো। মোটা লোকটা বেশ ধমকের সুরেই তাকে মাথা তুলতে বললো। আমার ভীষন ইচ্ছে করলো মোটা লোকটার টুটি চেপে ধরি। এমন মেয়েকে কেউ কিভাবে ধমক দিতে পারে? আমি তাকে ইশারায় চোখ রাঙ্গালাম।
এবার মোটা নরম সুরে বলতে করলো –
“আদ্রিতা! এদিকে তাকাও! ইনি জিসান। ইনি তোমাকে তাঁর বাসায় নিয়ে যেতে চান।”

মেয়েটি চোখ তুলে আমার দিকে তাকালো। আমি দেখলাম মেয়েটির চোখ দিয়ে পানি পড়ছে। আমাদের দুজনের চোখাচোখি হলো। আমি বিশ্বাস করি এই দৃষ্টিবিনিময়ে আমাদের মাঝে লক্ষ লক্ষ ভাবের বিনিময় হয়ে গেছে।

মেয়েটি হঠাৎ মেয়েটি দুপা আমার সামনে এগিয়ে এসে বললো-
“তোমাদের বাসায় বিড়াল আছে”?
– হ্যা! দুইটা! [আমি মৃদু হাসলাম]
” তাহলে চলো তোমাদের বাসায় গিয়ে দেখি! তুমি আমার বাবা হতে পারো কিনা! [উৎফুল্ল কন্ঠে]

আমি বাচ্চা দত্তক নেওয়ার সকল ফর্মালিটি পূরণ করে এতিমখানা হতে বিদায় নিলাম। আদ্রিতাকে নিয়ে গাড়ীতে উঠে ড্রাইভারকে বললাম গাড়ী ছাড়তে বললাম। আদ্রিতা আমার বুকের উপর মাথা রেখে মাথা রেখে বললো-
“বাবা! বাসায় আর কে কে আছে?
– শুধু তোমার মা!
“মা দেখতে কেমন বাবা?
– অবিকল তোমার মত! দেখবে? [বলেই আমি ফোন থেকে রোদেলার ছবি দেখাই]

আদ্রিতার চোখে আনন্দের অশ্রু পড়ছে। বুঝলাম তাঁর রোদেলাকে পছন্দ হয়েছে।

“তোমরা আমাকে ছেড়ে কোনদিনও যাবেনা তো বাবা?” [কান্না ভেজা কন্ঠে]
– না মা! কোনদিনও যাবোনা।
মোবাইলের স্ক্রিনে রোদেলার নাম্বার ভেসে উঠলো। রিসিভ করলাম।
– আর কতদূর জিসান? নিয়ে আসছো তো?
“এইতো চলে এসেছি। হ্যাঁ! তোমার আমার জন্য আমাদের মাকে নিয়ে আসছি।
– সত্যি! [ আনন্দে রোদেলার কান্না শুনতে পেলাম]

[ এতিমখানায় বড় হওয়া জিসান আর রোদেলা বিয়ের আগে সংকল্প করেছিল নিজেদের সন্তান জন্ম দেওয়ার আগে একটি সন্তান দত্তক নিবে। কারন তাঁরা জানে এতিম শিশুদের বেড়ে উঠার পিছনে কত সংগ্রাম লুকিয়ে থাকে। সমাজের প্রতিটি বিত্তবান যদি একটি করে শিশু দত্তক নেয় তাহলে অবহেলায় আর অযত্নে কোন শিশুকে এতিম খানা কিংবা রাস্তাঘাটে পথশিশু হয়ে বেড়ে উঠত না।

#অন্তর_মাশঊদ

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে মে, ২০১৫ বিকাল ৩:৫৩

হাসান মাহবুব বলেছেন: সুন্দর একটা সংকল্প।

২৮ শে মে, ২০১৫ বিকাল ৩:৫৬

অন্তর মাশঊদ বলেছেন: ধন্যবাদ

২| ২৮ শে মে, ২০১৫ বিকাল ৩:৫৮

মোঃমোজাম হক বলেছেন: বাহ সুন্দর আইডিয়া

২৮ শে মে, ২০১৫ রাত ১০:৫৭

অন্তর মাশঊদ বলেছেন: ধন্যবাদ

৩| ২৮ শে মে, ২০১৫ বিকাল ৫:১৪

নুর ইসলাম রফিক বলেছেন: আমিও জিসান হতে চাই কিন্তু রোদেলা কোথায় পাই?

যদি আমি একজন রোদেলা পেতাম তবে আমি ও সংকল্প করতাম।

দারুন সংকল্প ভাইয়া।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.