![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সুখের আশায় ছুটতে ছুটতে মানুষ অসুখে পড়ছে। আর আমি তখন সত্যের সন্ধানে ছুটছি।
মিরপুর ১০ হতে বিকালে হেঁটে হেঁটে মিরপুর ১ বাসায় ফিরছি। রাস্তাঘাটে যেখানে সেখানে নাম না জানা বিভিন্ন নির্বাচনী প্রার্থীর পোষ্টার ব্যানার ফেস্টুন দেখলেই বুঝা যায় যে, এই শহরে নির্বাচন উৎসব উপলক্ষে প্রার্থীরা নিজের পরিচিতি বাড়াতে কোন কমতি রাখেনি। বাড়ি-গাড়ি, বাস-গাছ, সব জায়গায় তাঁদের বাংলার পাঁচ মার্কা বিভিন্ন পোজের ছবি।
তো বাসার কাছাকাছি ওয়েস্টার্ন গ্রীলের কাছে আসতেই থমকে দাঁড়াতে হলো। কানে কিছু অস্পষ্ট বাক্য আসছিল।
“দ্যাশের ভালো হইব……’
শব্দের উৎপত্তির দিকে আপনা আপনি নজর চলে গেলো আমার। এক পাগল। রাস্তার উপর চিৎ হয়ে শুয়ে আছে। পুরো শরীর উদোম। নিম্নাংশে এক নির্বাচনী প্রার্থীর ওয়াটার প্রুফ পোষ্টার টারজানের মতো বেঁধে শুয়ে আছে। হাতে অন্য আরেক প্রার্থীর পোষ্টার। মুখে দাঁড়ী গোঁফের জঙ্গল। জটাধারী চুল, লাল চোখ। বিজ্ঞের মত মাথা নাড়ছে আর পোষ্টারের দিকে তাকিয়ে বিড়বিড় করে কী যেন বলছে।
বিস্মিত হয়ে সেখানেই দাঁড়ালাম। আমাকে অবাক করে দিয়ে আচমকা হু হু করে কেঁদে উঠে পাগলটা।
“দ্যাশের দিকে তাকাইলে দুঃখে জানডা উথাল পাথাল কইরা ওঠেরে! হায়রে সোনার দ্যাশ ” ছারখার কইরা ফালাইতাছে গো! ক্যামনে এমনডা হইলো? আমার ছাওয়ালরা বাঁচব ক্যামনে? তোরা ক দেহি?
তারপর আচমকা হুঙ্কার দিয়ে লাফ দিয়ে ওঠে, “খবরদার পাগলরে খেপাইবার চেষ্টা করবি না! তাহলে খবর আছে!’
পাগলের মন আজকে ভালা! পাগলের কাছে ১০০ টাকার নোট আছে”।
বলেই চকচকে ১০০ টাকার নোটটা বের করল। বুঝতে পারলাম কোন নির্বাচনী প্রার্থী প্রচারনার সময় টাকাটা তাকে দিয়েছে। এরপর হাতে সেই মার্কা নিয়ে চিল্লাতে চিল্লাতে স্লোগান দিচ্ছিল “অমুক ভাইয়ের চরিত্র গু এর মত পবিত্র” “অমুক ভাইয়ের মার্কা গু মার্কা”। এই বলে নিজেই স্লোগান দেয় আর নিজেই হাসতে গড়িয়ে পড়ে।
মনে মনে ভাবছিলাম যে প্রার্থীকে নিয়ে স্লোগান দিচ্ছিল বেচারা নিজ চোখে তাঁর এমন প্রচারনা দেখলে নির্গাত স্ট্রক করত।
এরপর দেখলাম পাগলটা একটা দোকানে গিয়ে সিংগারা চাইলো। দোকানদার সিংগারা কেনার টাকা আছে কিনা জিজ্ঞেস করতেই; ১০০ টাকা বের করে দেখালো। দোকানদার দুইটা সিংগারা হাতে দিতে চাইলে সে হাতে নয় প্যাকেটে দিতে বললো। কিন্তু সিংগারার প্যাকেট হাতে পাবার পর টাকা না দিয়েই ভোঁ দৌড়ে পালিয়ে গেলো।
আমিও পাগলের পাগলামী আর না দেখে বাসায় চলে এলাম।
আগামীকাল সিটি নির্বাচন। জীবনে প্রথম ভোট দিব। কাকে ভোট দেব তা নির্ধারন করা হয়ে গেছে। জানিনা তিনি নির্বাচিত হলে কতটুকু উন্নয়ন করতে পারবেন এই শহরের। নাকি অন্য নির্বাচিতদের মত জয়ী হওয়ার পর সাধারন জনগনকে জনগন মনে করবেন না। নিজের আখের গোটাতে ব্যস্ত হয়ে যাবে। এর জবাব ইহকালে না হোক পরকালে এই সকল অসৎ দের দিতেই হবে। সেই বিচার সৃষ্টিকর্তার উপর দিয়ে দিলাম। তবে আমি আশাবাদী। আমাদের দেশের পরিবর্তন হবেই একদিন না একদিন। তবে পাগলের সেই লাইনগুলো আমার কানে এখনও বাজছে।
“দ্যাশের দিকে তাকাইলে দুঃখে জানডা উথাল পাথাল কইরা ওঠেরে! হায়রে সোনার দ্যাশ ” ছারখার কইরা ফালাইতাছে গো! ক্যামনে এমনডা হইলো? আমার ছাওয়ালরা বাঁচব ক্যামনে? তোরা ক দেহি?
#অন্তর_মাশঊদঃ এপ্রিল ২৭, ২০১৫
©somewhere in net ltd.
১|
৩১ শে মে, ২০১৫ ভোর ৬:১৩
কাঠ পাতা বলেছেন: “দ্যাশের দিকে তাকাইলে দুঃখে জানডা উথাল পাথাল কইরা ওঠেরে! হায়রে সোনার দ্যাশ ” ছারখার কইরা ফালাইতাছে গো! ক্যামনে এমনডা হইলো? আমার ছাওয়ালরা বাঁচব ক্যামনে?