নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অন্তর মাশঊদ

সুখের পিছনে ছুটতে ছুটতে মানুষ অসুখে আক্রান্ত হচ্ছে। সেখানে আমি সত্যের সন্ধানে ছুটছি

অন্তর মাশঊদ

সুখের আশায় ছুটতে ছুটতে মানুষ অসুখে পড়ছে। আর আমি তখন সত্যের সন্ধানে ছুটছি।

অন্তর মাশঊদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

শবে বরাতের রাতে বিশৃঙ্খলা অতঃপর মৃত্যু (অবশ্যই পড়ুন)

০১ লা জুন, ২০১৫ রাত ১০:৫৩

# মাম্মা! কালকে শবে বরাত। আম্মুরে কইছি সারারাত নামাজ পড়ুম!
- হালার পুত নামাজ পড়বি? তাইলে মাল খাইব ক্যাডা? আমরা না আয়োজন করছি আমার ম্যাচে সারারাত আমরা মাল খাইয়া টাল হইয়া থাকুম?
- আরে বলদ! মাল খামু দেইখাই তো আম্মুরে নামাজের মিথ্যা কইছি। নাইলে রাইতে থাকতে দিব বাইরে? তা মাম্মা কি কি থাকব? স্টিক না পানি?
- দুইটাই মাম্মা! পিনিক আর পিনিকে বুদবুদ হইয়া থাকমু। তারপর সারারাত পুরা ঢাকায় ঘুরুম।

-
# দোস্ত! আমি চকবাজার থাইক্কা ৫০ টা চকলেট বোম আর ৫০ টা ডান্ডি বোম কিনেছি। কালকে শবে বরাত ফুটাইতে হবে। তুই কয়টা কিনছস?
- আমি কিনিনাই দোস্ত। আমার আব্বু কইছে শবে বরাতে এগুলো ফুটানো গুনাহ! শবে বরাতে এগুলো ফুটাইলে মানুষের নামাজ পড়তে ডিস্টার্ব হয়।
ধুর! হালা! শবে বরাতে আনন্দ করতে হয়। গুনাহ টুনাহ হইব ক্যান?
- দোস্ত! আমিতো কিনিনাই। আমারে কয়েকটা দিবি?
মাগনা দিতে পারুম না কইলাম। একটা ৫ টাকা হইলে বেচুম।
- আচ্ছা দোস্ত। টাকা দিয়াই কিনুম। আমার লাইগা রাখিস কয়েক পিস।

(১) আপনাদের ২০১১ সালের শবেবরাতে আমিন বাজারের ঘটনাটার কথা মনে আছে? সাভারের আমিনবাজারে গণপিটুনিতে নিহতরা সবাই রাজধানীর বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। শবে বরাতের রাতে ডাকাত সন্দেহে স্থানীয়দের গণপিটুনিতে ওই ৬ ছাত্র নিহত হয়। সেই ঘটনার আহত আল আমীন জানিয়েছিল, রাতে শব-ই-বরাতের নামাজ পড়তে তারা ৭ বন্ধু মিরপুর, দারুস সালাম ও শ্যামলি এলাকার বাসা থেকে বের হন। নামাজ পড়া শেষে বাসায় ফেরার পূর্বে মাদক সেবনের উদ্দেশ্যে আমিন বাজার ট্রাক স্টান্ডের পেছনের কোলার চর বালু মাঠে গিয়েছিলেন। তারা সবাই গোল হয়ে বসে গাঁজা সেবন করার সময় এলাকাবাসী তাদের ঘিরে ধরে। কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই ডাকাত বলে চিৎকার করতে করতে তাদের উপর দেশীয় অস্ত্র ও লাঠি দিয়ে হামলা শুরু করে। কিছু বোঝার আগেই তার অপর ৬ বন্ধু মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে।

(২) গত বছর শবে বরাতের মিরপুর কালসীর দুর্ঘটনার কথা মনে আছে? আতশবাজি ফোটানোকে কেন্দ্র করে বিহারীদের আর সাধারন মানুষদের দুইগ্রুপের সংঘর্ষ আর অগ্নিকান্ডে ১০জন নিহত ও পুলিশসহ আহত হয়েছিল কমপক্ষে ৩০ জন। ভোর ছয়টার দিকে সংঘর্ষের সময় অগ্নিকান্ডে কালসী বিহারী পট্টির কমপক্ষে ২০টি ঘরে আগুন দেয়া হয়।

ছোটবেলা হতেই আতশবাজি ফোটানোর নিয়ম ঢাকা শহরে দেখেছি। তখন বোম কিনতে পারতাম না। তবে তারাবাতি জ্বালাতাম। তখন ভাবতাম যে, শবে বরাতে বোম বা তারাবাতি ফুটাতে হয়। আস্তে আস্তে বড় হয়েছি বুঝতে শিখেছি। যে এটা ভুল। তখন হতেই তারাবাতি জ্বালানো বন্ধ করে দেই। আমাদের দেশেই শবে বরাতের দিনে আতশবাজির ফুটানোর নিয়ম বিহারীরা পালন করে থাকে। তাদের দেখা দেখি বাঙালিরাও এই আতশবাজি ফুটাতে শুরু করে। ছোট ছোট ছেলেরা সাধারনত আতশবাজি ফুটিয়ে থাকে। এই আতশবাজির জন্য শবে বরাতে ইবাদতরত মুসুল্লিদের যে কত সমস্যা হয় তা আপনারা সবাই জানেন। গত বছর এই ঘটনার জন্য ১০ জনের নির্মম মৃত্যু হতে প্রাপ্ত শিক্ষা আগামী শবেবরাতে সবাইকে এই আতশবাজি ফুটানো হতে দূরে রাখবে তো?
প্রশাসনের এত বড় ঘটনার পর টনক নড়বে তো?

২০০৯ সালে প্রথম জানতে পারি যে, শবে বরাত আর শবে কদরে ঢাকা শহরের ছেলেরা মদ বা বিভিন্ন মাদক সেবন করে। এরা বাসায় সারারাত মসজিদে নামাজ পড়ার অজুহাত দেখিয়ে বাসা হতে বের হয়। আর এই সুযোগে এই কাজ করে থাকে। অনেকে আছে সারারাত পুরো ঢাকায় পিক ভ্যানের পিছনে চড়ে এক স্থান হতে আরেক স্থানে ঘুরাঘুরি করে আর হৈ হুল্লোড় করে। ২০১১ সালে এই ঘটনার জের ধরে আমিনবাজারে ৬ জন ছাত্রের নির্মম মৃত্যু ঘটে।

এতক্ষন ধরে এতকিছু বলার উদ্দেশ্য একটাই ছিল; উপরোক্তিও ঘটনার আর পুরনাবৃত্তি যেন না ঘটে এই কামনা করছি। আপনার সন্তান শবে বরাতের রাতে কোন বাজে কাজে না জড়িয়ে পড়ে সেদিকে খেয়াল রাখুন।
আসুন পবিত্র শবে বরাতের পবিত্রতা বজায় রাখি। ভালো থাকবেন। ধন্যবাদ।
#অন্তর_মাশঊদ

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ০১ লা জুন, ২০১৫ রাত ১১:০৬

মুহাম্মদ রেজাউল হাসান বলেছেন: গুড

২| ০২ রা জুন, ২০১৫ রাত ১:৫৯

আল-শাহ্‌রিয়ার বলেছেন: ভাল পোস্ট

৩| ০২ রা জুন, ২০১৫ সকাল ৯:১৯

আহমেদ রশীদ বলেছেন: প্রত্যেক রাত-ই- আল্লাহর কাছে সমান। সারা বছর যদি আল্লাহ সোবহানা তাআলাকে পাওয়ার জন্য রাতের মধ্যভাগ জাগ্রত হই তাহলে সমস্যা কিসের? আাজ পর্যন্ত কোন আলেম উলামা শবে বরাতের কোন সঠিক হাদিস দিতে পারে নাই। আর যারা শবে বরাতের হাদিস বা উক্তি পেশ করেছে তা কিতাবুল মফিজের অন্তর্ভুক্ত। তবে হ্যাঁ শবে মিরাজের কথা আল্লাহ কোরআনে সুন্দর ভাবে বর্ণনা করেছেন। এটা অস্বিকার করার কিছুই নেই। কিন্তু আজ এই শবে বরাতের ওছিলা করে যুব সমাজ খারাপের দিকে পা বাড়াচ্ছে। সারা রাত জেগে থেকে মাজারে মাজারে হুক্কা টানছে। আর আতশ বাজির কথা নাই বল্লাম। অথচ অনেকেই এই সব অনৈসলামিক কর্ম করে ফজরের নামাজ না পড়েই ঘুমিয়ে পড়ে। অথচ ফরজ নামাজ কতই না মর্তবা। নফলের পিছে ছুটতে যেয়ে ফরজকে ধ্বংস করছে। হাই আফসোস এই সব ফালতু হাদিসের মাধ্যমে মানুষ আজ ধ্বংসের দিকে যাচ্ছে। অথচ মধ্যপ্রাচ্যে এই সবের কোন বালাই নেই। শবে বরাত সম্বন্ধে তারা কোন কিছু জানেই না! আল্লাহ মাফ করুন! আমীন!!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.