![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সুখের আশায় ছুটতে ছুটতে মানুষ অসুখে পড়ছে। আর আমি তখন সত্যের সন্ধানে ছুটছি।
"তোর স্ত্রীর কি খবর? সংসার কেমন চলে? বাচ্চাকাচ্চা হয়েছে কোন? "
প্রশ্নটা করতেই আমার বন্ধু সুজনের মুখটা অন্ধকার হয়ে গেলো। বুঝতে পারলাম প্রশ্নগুলো করে তাঁকে বেশ বিব্রতকর অবস্থায় তাঁকে ফেলে দিয়েছি।
---- সকালে বাসা হতে বেড়িয়ে আমার সেই চির চেনা পার্কটিতে যাচ্ছিলাম। এমন সময় পিছন হতে হুট করে কে যেন আমার মাথায় বেশ সজোরে থাপ্পড় মারলো! ব্যাথায় ককিয়ে থাকা নীলাভ মুখটা আমার পিছনে ফিরিয়ে তাকাতেই দেখি আঘাতকারী আর কেউ না। সে আমার বন্ধু সুজন। ওর দিকে ফিরে তাকাতেই আমাকে জড়িয়ে ধরে বললো -
- "কত বছর পর দেখা মনে আছে"?
মুহুর্তেই আঘাতকারীর আঘাতের কথা ভুলে গিয়ে বেশ শক্ত করে জড়িয়ে ধরলাম বন্ধুটিকে । প্রায় চার বছর পর দেখা। তারপর কুশল বিনিময় করতে করতে তাঁকে টেনে নিয়ে গেলাম। আমার সেই প্রিয় চিরচেনা পার্কটাতে। সেখানেই একটা খালি বেঞ্চিতে দুজনে বসে পড়লাম।
- তারপর কি খবর তোর? চেহারার একি হাল বানিয়েছিস তুই? বাউন্ডুলে ভবঘুরের মত মুখভর্তি জঞ্জাল আর লম্বা লম্বা চুল।
- হা হা হা! তোদের মত তো আর আমার এখন সুসময় যাচ্ছে নারে দোস্ত। তাই তোদের মত প্রতিদিন জিলেট ব্লেডের স্পর্শ আমার গালে লাগেনা। [হেসে বললাম আমি]
- হুম! এখনও হেয়ালী মার্কা কথা বার্তা বলা ছাড়স নাই বুঝতে পেরেছি।
- বাদ দে! তোর স্ত্রীর কি খবর? সংসার কেমন চলে? বাচ্চা কাচ্চা হয়েছে কোন?
প্রশ্নটা করতেই আমার বন্ধু সুজনের মুখটা অন্ধকার হয়ে গেলো। বুঝতে পারলাম প্রশ্নটা করে তাঁকে বেশ বিব্রতকর অবস্থায় তাঁকে ফেলে দিয়েছি। একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে সুজন বলতে লাগলো -
- তুইতো জানিস সুমনাকে আমি কতটা ভালোবাসতাম। সেই ইন্টারমেডিয়েট সময় হতে আমাদের সম্পর্ক। একে অপরকে পাগলের মত ভালোবাসতাম আমরা দুজন।
অনার্স ২য় বর্ষের প্রথম পরীক্ষার দিন আমি পরীক্ষা দিতে যাবো। এমন সময় সুমনাকে দেখি আমার বাসার সামনে এসে হাজির। হুট করে তাঁর বাবা-মা আজ রাতেই তাঁর বিয়ে দিবে এক প্রবাসী ছেলের সাথে। তাই সে বাসা হতে পালিয়ে এসেছে এবং আমি যেন তাঁকে এক্ষুনি এই মুহুর্তেই বিয়ে করি। পুরো আকাশ যেন আমার মাথার উপর ভেঙ্গে পড়লো। তাঁকে ফিরিয়ে দেবার ক্ষমতা আমার ছিলোনা। কারন আমি তাঁকে জীবনের চেয়ে ভালোবাসি। আপাতত আমি ওকে আমার এক কাজিনের বাসায় লুকিয়ে রেখে পরীক্ষার হলে গেলাম। পরীক্ষা দিয়ে বাসার রোডে আসতেই দেখি বাসার সামনে পুলিশের গাড়ি, সুমনার পরিবার পুলিশসহ বাবার সাথে তর্ক করছে। বুঝতে পারলাম সব জানাজানি হয়ে গেছে। কাজিনকে ফোন দিয়ে বললাম সুমনাকে রেডি থাকতে বলো আমি এসে তাঁকে নিয়ে যাবো। আমার প্রিয় মানুষটিকে হারানোর ভয়ে আমি তাঁকে নিয়ে বলতে পারিস একদম খালি হাতে পালিয়ে গেলাম কুমিল্লায়। সেটাই ছিলো আমার জীবনের সবচেয়ে বড় ভুল।
- তারপর? ওখানে কার কাছে উঠেছিলি?
- ওখানে এক বন্ধুর আত্মীয়ের বাসায় উঠি। উনারাই বিয়ে দিয়ে দেয়। ঢাকায় ফোন দিয়ে শুনি বাবাকে পুলিশ এরেস্ট করে নিয়ে গিয়েছিল। পরে জামিনে ছাড়া পায়। এটা শোনার পর লজ্জায় আমার মাথা হেট হয়ে আসছিলো। ক্ষমা চাওয়ার জন্য বাসাতে বাবাকে একবার ফোন দেই কিন্তু আমার কোন কথা না শুনেই তিনি অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে আমাকে ত্যাজ্যপুত্র ঘোষনা করেন এবং জানায় যেন আমি জীবনেও তাঁদের কাছে না ফিরে যাই। ঐদিকে সুমনার পরিবারও কয়েকদিন আইনিভাবে বেশ লাফালাফি করলেও পরে চুপচাপ হয়ে যায় এবং সুমনার সাথে সব সম্পর্ক শেষ করে দেয়।
যাইহোক, এরপর কুমিল্লায় শুরু হয় আমাদের নতুন সংসার, নতুন জীবন। ওরাই আমাদের একটা টিনশেডের বাসা ভাড়া নিয়ে দেয়। সেখানে একটা চৌকী আর একটা আলনা আর কিছু হাড়িপাতিল দিয়ে শুরু হয় আমাদের সংসার। ওরা আমাদের বেশ সাহায্য করেছিলো। প্রথমে আমরা দুজনেই কয়েকটা টিউশনি শুরু করি। সেই টাকা দিয়েই বেশ কষ্টে হলেও ভালোই চলছিলো আমাদের সংসার। এরপর একদিন সুমনা আমাকে জানালো সে প্রেগন্যান্ট। উফ! দোস্ত! কথাটা শোনার পর মনে হচ্ছিলো জগতের সকল সুখ আমার এই ভাঙ্গা টিনশেডে এসেছিলো। আমি বাবা হচ্ছি। তবে সুমনাকে বেশ চিন্তিত দেখাচ্ছিলো। চিন্তিত আমি কম ছিলাম না। তবে যেভাবেই হোক এই সন্তানকে আমাদের দুনিয়ায় আনতেই হবে এটাই ছিলো আমার একমাত্র লক্ষ্য। নতুন সন্তানের আগমনে ভাগ্য যেন সুপ্রসন্ন হলো। আমার একটা কোম্পানীতে সেলস রিপ্রেসেন্টিভ পদে জব হয়ে গেলো। প্রায় সব মিলিয়ে ১০,০০০ টাকা সেলারি। এই শরীরে সুমনার টিউশনি করানো বন্ধ করিয়ে দিলাম। ধীরে ধীরে আমাদের টিনশেডের আশ্রয়টুকু থেকে একটা বিশাল ফ্ল্যাটে উঠলাম। দিন গড়াতে লাগলো।
আসলো সেই বিশেষ দিন ২১ ফেব্রুয়ারী। যেদিন আমার 'মা ' এই দুনিয়ায় জন্মগ্রহন করলো। বিশেষ দিনে বিশেষ মানুষ তাই তাঁর নাম রাখলাম ভাষা।
দোস্ত! ওর জন্মের পরের দিন আমার পদোন্নতি হয়। ওরা আমার কাজে খুশি হয়ে আমাকে এরিয়া ম্যানেজার বানায়। আমাকে মোটর সাইকেল দেয়। সেই সাথে মোটা বেতন। আমাদের খুশি আর আনন্দ কে দেখে। মেয়ের বয়স যখন দুই। মা আমার ধীরে ধীরে কথা বলতে শিখেছে। ও বলে রাখা ভালো বাবাকে শেষ ফোন দেওয়ার পর হতে আমার পরিবার বা সুমনার পরিবার কারো সাথেই কখনও আমাদের আর যোগাযোগ হয়নি।
বেশ সুখেই কাটাচ্ছিলাম। একদিন কাজ শেষে আমি লাক্সাম হতে বাসায় ফিরছি আর স্থানীয় বাজারের কাছে আসতেই টেম্পুর সাথে করলাম বাইক এক্সিডেন্ট। যখন জ্ঞান ফিরলো দেখি একটা হস্পিটালে আর আমার দুপা পা প্লাস্টার করা। ভেঙ্গে একদম ভেঙ্গে গেছে। হসপিটাল হতে রিলিজ পাওয়ার পর বাসায় চলে আসি। কোম্পানীর পক্ষ হতে আমার জন্য হাসপাতালের সকল বিল চুকিয়ে দিয়েছে। শুরু হলো আমার পঙ্গুত্ব জীবন। সে এক দুর্বিষহ জীবন। পায়খানা প্রসাব সব বিছানায় করতে হতো। আমার সেবা শুশ্রুরা করতে করতে সুমনা বেশ ক্লান্ত ও বিরক্ত অনুভব করতো। নিজের তখন মরে যেতে ইচ্ছে করত। আমার এক্সিডেন্টের খবর সুমনা আমার পরিবারকে জানাতে চাইলেও আমি নিষেধ করি। এদিকে সংসারে অভাব অনটন দেখা দিলো। ব্যাংকে জমানো কিছু টাকা আমার ওষুধ কেনার পিছনেই শেষ হয়ে গেলো। অফিস হতেও কোন সাহায্য পাচ্ছিলাম না। দুমাস হয়ে গেলো তখনও দুমাসের বাড়িভাড়া জমা পড়ে আছে। আমি তখন ক্র্যাচে ভর করে চলতে পারতাম। বাড়িওয়ালা রোজ ভাড়ার জন্য আসতো।এক পর্যায়ে তাদের ব্যবহার খারাপ হতে লাগলো। বেশ অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করত। এদিকে মেয়েটার জন্য দুধ কেনারও টাকা নেই। লজ্জায় আমার মরে যাওয়ার অবস্থা। সুমনা তখন বাধ্য হয়ে আমার অফিসের বসকে ফোন দিয়ে কান্নাকাটি করে একটা চাকুরীর দেওয়ার অনুরোধ করল। উনি অনুরোধ রেখে সুমনাকে সেলস রিপ্রেজেন্টেটিভের চাকুরী দিলেন।
জবের তিন দিন পর দেখি সুমনা অনেকগুলো টাকা নিয়ে এসেছে। বললো স্যার অনেক ভালো মানুষ ২ মাসের বেতন একেবারে দিয়ে দিয়েছেন। সেই টাকা দিয়ে বাড়িভাড়া পরিশোধ করা হলো।
শুরু হলো সুমনার চাকুরী জীবন। প্রথম ১ মাস বেশ ভালোভাবলেই কাটলো। সকালে সে বাচ্চার জন্য দুধ আর রান্না বান্না করে চলে যেত আমি আর মেয়ে খেয়ে নিতাম। সন্ধায় সে ফিরে আসতো। তবে সুমনার মাঝে পরিবর্তন আসলো পরের মাস হতে।
রাত করে বাড়ি ফিরতো। মেয়েকে আগের মত আদর করেনা। আমার সাথে ভালোভাবে কথাও বলতে চায় না। দেরী করে কেন আসে প্রশ্ন করলেই বেশ রাগারাগী করত আমাকে। এক পর্যায়ে বেশ ঝগড়া।
এভাবে চললো আরও এক মাস। একদিন আমার মেয়েটা ডাল দিয়ে রুটি খাচ্ছিলো। সুমনাও অফিস যাবে। তো মেয়েটা ভুলবশত ওর মার কাপড়ে ডালের ঝোল মাখিয়ে দেয়। এখনও সেই শব্দ আমার কানে বাজে দোস্ত। আমার সামনে আমার মেয়েটাকে সুমনা শরীরের পুরো শক্তিতে একটা থাপ্পড় মারলো। মেয়েটা আমার কাঁদতে পারছিলো না দোস্ত। ফোপাচ্ছিলো আর কাঁপছিল। সুমনার এমন ব্যবহারে আমি ক্ষেপে গিয়েছিলাম। একপর্যায়ে আমাদের দুজনের মাঝে তর্ক বিতর্ক হয়। সে আমাকে লুলা ল্যাংড়া বলে গালি দেয়। আমার মুরুদ নাই। বউয়ের ইনকামে বসে বসে খাই বলে। আমার মাথায় তখন রক্ত চড়ে গিয়েছিলো। ক্ষেপে গিয়ে আমি আমার স্ক্যাচ দিয়ে সুমনাকে বেশ জোরে আঘাত করি। আঘাত খেয়ে সুমনা ঠিক বিষাক্ত সাপের মত ফসফস করতেছিলো। এবং আমাকে চিৎকার করে বললো -
" কুত্তার বাচ্চা! তোর জন্য আজকে আমি পরিবার ছাড়া। তোর সাথে এখানে না আসলে আজকে আমি বিদেশে থাকতাম। প্রবাসী স্বামীর সাথে সুখে শান্তিতে থাকতাম। তোর কাছে আশার পর আমি জীবনেও সুখে থাকি নি। অভাব আর অনটনের মধ্যে বস্তি টস্তিতে রাখছিলি। তোর মত লুলার ল্যাংড়ার সাথে আমি সংসার আর একদিনও করুম না।"
আমি অবাক হয়ে তাকিয়ে ছিলাম সুমনার দিকে। এই কি সেই সুমনা? যাকে আমি ভালোবেসে আমার সব আপনজনকে ছেড়ে , বাবা মায়ের ত্যাজ্য পুত্র হয়ে পালিয়ে এসেছিলাম। আমার বিশ্বাস হচ্ছেনা। আমি বসে বসে তখন মেয়েকে জড়িয়ে কাঁদছিলাম। আমার বলার কোন ভাষা ছিলোনা। সুমনা আমাকে পাশ কাটিয়ে বাইরে চলে গেলো। ভাবলাম সে রাগ করেছে রাগ কমলেই চলে আসবে। কিন্তু সে ফিরে আসেনি। রাত পেরিয়ে সকাল হলো তবুও এলো না। আমি পঙ্গু মানুষ নিজে যেতে পারিনি। ফোনে বা মানুষকে অনুরোধ করে যেভাবে হোক সুমনার খোঁজ নেয়ার চেষ্টা করেছি তবে পাইনি।
এভাবে কেটে গেলো ৩ দিন। এদিকে না খেয়ে আমাদের দুই বাপ মেয়ের করুন অবস্থা। শেষ মেশ আমি বাধ্য হয়ে আমার বাবাকে ফোন করি। আমার নাম্বার বাবা চিনে না। তবে ফোন দিয়ে আমি "হ্যালো" বলতেই আমার বাবা আমার কন্ঠ চিনে হাউমাউ করে কাঁদতে লাগলো। সেই সাথে আমিও । এই দুনিয়ার দুই সবচেয়ে অসহায় বাবার কথোপথন শুনলে যে কেউ কেঁদে দিতো। সে যতই পাষান হোক না কেন? আমি বাবাকে সব খুলে বলি। বাবা সাথে সাথে আমাকে আর আমার মেয়েকে আনার জন্য রওয়ানা দেন।
এবং বাড়িওয়ালার সব দেনা পাওনা মিটিয়ে আমাদের নিয়ে আসেন। বাসায় ফিরে আমার পরিবারের সেকি কান্না। যেন বাসায় কেউ মারা গিয়েছে। না এই কান্না কারো মৃত্যুর জন্য নয়। এই কান্না হারানো স্বজনকে ফিরে পাওয়ার।
এদিকে আমি আমার বাবা মা বিভিন্ন মাধ্যমের দ্বারা হাসপাতাল, মর্গ, পুলিশ স্টেশনে সুমনার খোঁজ নেওয়ার চেষ্টা করলো কিন্তু কোথাও পেলোনা। সুমনার পরিবারের কাছে আমার পরিবার খোঁজ নিতে গেলো। ওরাও জানায় সুমনার সাথে তাঁদের আমরা পালিয়ে যাওয়ার পর হতে কোন যোগাযোগ নেই।
এর ১ মাস পর সুমনা একদিন দেখি ডিভোর্স লেটার পাঠিয়ে দিয়েছে সুমনা। বুঝলাম আমি মিথ্যেই চিন্তা করছিলাম সুমনার বিপদ হলো কিনা ভেবে। সেতো দিব্যি ভালো আছে। এবং পুরনো সম্পর্ককে ছিন্ন করে নতুন ভাবে জীবন শুরু করার স্বপ্ন দেখছে। পরে জানতে পারি আমার অফিসের সেই বিবাহিত বসকেই সুমনা বিয়ে করে। তবে তাঁকে আমি অভিশাপ দিবনা। তাঁর শাস্তি স্বয়ং আল্লাহ তায়ালা দিবেন। শুধু আমার মেয়েটার জন্য আমার খুব কষ্ট হয় দোস্ত।
-- তোর করা প্রশ্নগুলোর "তোর স্ত্রীর কি খবর? সংসার কেমন চলে? বাচ্চাকাচ্চা হয়েছে কোন? "
এগুলোই ছিলো উত্তর দোস্ত।
আমি অবাক হয়ে শুনছিলাম সুজনের পুরো গল্প। বড় বড় দীর্ঘশ্বাস ফেলেছিলো ছেলেটা তবে কাঁদে নি। হয়তো কাঁদতে কাঁদতে পাথর হয়ে গেছে। ওকে কি উত্তর দেব ভাবছি। এমন সময় সুজনের ফোনটা এলো।
- হ্যালো! জী স্যার। কোন এরিয়ায়? কাওরান বাজার? জী আচ্ছা। এখনই আমি নিজে গিয়ে মাল ডেলিভারীর ব্যবস্থা করছি।
ফোন কেটেই আমাকে সুমন বললো-
" দোস্ত আজ উঠিরে ! অফিসের কাজে যেতে হবে। তোর ফোন নাম্বারটা দে। আমি ফ্রি হলে আবার যোগাযোগ করব।"
- দোস্ত! আমিতো ফোন ইউজ করিনা রে। তুই বরং তোর নাম্বারটা আমাকে দে!
আমার কথা সুজন বিলিভ করলো কিনা জানিনা। তবে ব্যস্ততার জন্য আমাকে কোন প্রশ্ন না করেই কার্ড দিয়ে চলে যাওয়ার সময় বললো, -
"ফোন দিবি! আগামী সপ্তাহে আমার মা "ভাষার" জন্মদিন। তোকে আসতেই হবে। দেখবি আমার মেয়ে কত কত পাকনা কথা বলে। তোকে একদম জব্দ করে দিবে।আল্লাহ হাফেজ। "
বলেই আমার বন্ধু বেশ দ্রুত হেঁটে চলে যাচ্ছিলো। বেঞ্চিতে বসে তাঁর পার্ক অতিক্রম করে না চলে যাওয়ার পর্যন্ত তাকিয়ে ছিলাম। ভালো করে লক্ষ্য করলাম সুজন হাঁটার সময় ডানদিকে কাঁত হয়ে বেশ নেংড়িয়ে নেংড়িয়ে হাটে। অথচ প্রথম দেখায় আমি টেরই পাইনি
যাইহোক। সুজনের ঘটনা শুনে এতটুকুই বুঝলাম । জীবনে হুট করে নেওয়া এমন কিছু সিদ্ধান্ত মানুষের জীবনকে একেবারে তছনছ করে দেয়। ভুল করার পরে আর সেই ভুল শোধরানোর সুযোগ থাকেনা। তবে সুজন সময়ের সাথে সাথে নিজের মনের সাথে সাথে তাঁর পা কেও পাথর বানিয়ে ফেলেছে নতুন ভাবে জীবন শুরু করার জন্য। তাঁর এই নতুন জীবনের জন্য শুভ কামনা।
২| ১১ ই নভেম্বর, ২০১৫ রাত ১:২৪
মানবী বলেছেন: লেখাটা এতোটাই ভালো হয়েছে যে গল্প না বাস্তব বুঝতে পারছিনা।
পুত্রের প্রেমের কারনে পইতার কারাবাস সত্যি ভীষণ গ্লানিকর! সেই সাথে স্ত্রী ন্যায় অন্যায় যেভাবেই নিজ সন্তানকে চড় মেরেছে দেখে তাঁকে মারার(তারপর আবার ক্রাচ দিয়ে) বিষয়টা নিন্দনীয় ও ঘৃন্য মনে হলো।
পোস্টের জন্য ধন্যবাদ অণ্তর মাশউদ।
৩| ১১ ই নভেম্বর, ২০১৫ রাত ২:০৫
ফেরদৌসা রুহী বলেছেন: আবেগের সময় সিদ্ধান্ত নিলে বেশির ভাগ পরিণতি এমনি হয়।
শুভকামনা আপনার বন্ধুর জন্য।
৪| ১১ ই নভেম্বর, ২০১৫ ভোর ৪:১২
শওকত সমুদ্র বলেছেন: একজন সত্য প্রেমিককে লুলা ল্যাংড়া বলা , নিজ সন্তানকে চড় মারা যদি নিন্দনীয় ও ঘৃণ্য না হয়, তবে, তাঁকে মারার(তারপর আবার ক্রাচ দিয়ে) বিষয়টা নিন্দনীয় ও ঘৃন্য কিভাবে হলো, বুঝলাম না "মানবী"।
ছেলে বলে কি আবেগটাও বিসর্জন দিতে হবে!!
লেখার গাথুঁনী কিন্তু সত্যিই দারুণ হয়েছে।
৫| ১১ ই নভেম্বর, ২০১৫ ভোর ৪:১২
শওকত সমুদ্র বলেছেন: একজন সত্য প্রেমিককে লুলা ল্যাংড়া বলা , নিজ সন্তানকে চড় মারা যদি নিন্দনীয় ও ঘৃণ্য না হয়, তবে, তাঁকে মারার(তারপর আবার ক্রাচ দিয়ে) বিষয়টা নিন্দনীয় ও ঘৃন্য কিভাবে হলো, বুঝলাম না "মানবী"।
ছেলে বলে কি আবেগটাও বিসর্জন দিতে হবে!!
লেখার গাথুঁনী কিন্তু সত্যিই দারুণ হয়েছে।
৬| ১১ ই নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:১১
বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: বাবা মা'র সিদ্ধান্তের বাইরে গেলে এমনই হয়। আপনি ফোন নম্বর দিলেন না কেন?
৭| ১১ ই নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:৪৯
মানবী বলেছেন: শওকত সমুদ্র, একজন মা তাঁর নিজের শরীরের নির্যাস দিয়ে তিল তিল করে সন্তানকে জঠরে গড়ে তুলেন.. আপনার আমার মায়েরাও তাই করেছেন। তাই সন্তানকে শাসন করার অধিকার যদি একজনেরও থাকে তাহলে তা মায়েরই আছে।
অবশ্যই শিশুদের প্রতি নির্দয় আচরন অন্যায় তবে এই মা কিন্তু প্রথম এমন করেন। আর একজন অসুস্থ মানুষকে গালাগাল করাটা দুঃখজনক তবে ভেবে দেখুন আপনি কাউকে কটূ কথা বললেন আর সে আপনাকে মেরে বসলো! নাহ্! শুধু চড় থাপ্পর নয়, ক্র্যাচ দিয়ে মেরে বসলো।
এখানে নারী পুরুষ বিষয় নয়। স্থান পরিবর্তন করে মেয়েটি যদি স্বামীর স্থানে হতো, আমার মন্তব্য অভীন্ন হতো। তর্কাতর্কির কারনে এভাবে শারীতি আঘাত করা অন্যায় ও ঘৃন্য!
©somewhere in net ltd.
১|
১১ ই নভেম্বর, ২০১৫ রাত ১:০৯
আরণ্যক রাখাল বলেছেন: কী অবস্থা! দূর্বিসহ অবস্থাতেও ভাষা নামটা মাধুর্য্য বয়ে এনেছে