নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
জোছনা রাত। হট চকলেট। লেক এর পাড়। ছোট ছোট চুমুক। ভেজা রাস্তায় চেনা মুখ। আলিঙ্গন। হট চুমুক। ছোট ছোট জোছনা রাত। চকলেট লেক এর পাড়।
উৎসর্গ: শাহবাগের তারুণ্যকে। যারা জাগিয়ে তুলেছে পুরো দেশকে
অনেক দেশেই আজকাল অপরাধ খুব গুরুতর না হলে 'ক্যাপিটাল পানিশম্যান্ট' বা মৃত্যুদন্ড দেয়ার প্রচলন নেই। যেমন, ক্যানাডা, আর্জেন্টিনা, নেপাল, স্পেইন, এল সালভেদর ইত্যাদি। আবার কিছু দেশে মৃত্যুদন্ড দেয়াই হয় না অপরাধ যাই হোক না কেন। যেমন হাইতি, নামিবিয়া, বুলগেরিয়া, অস্ট্রেলিয়া, ফ্রান্স, ক্রোয়েশিয়া, ইতালী, মেক্সিকো, টার্কী ইত্যাদি।
মৃত্যুদন্ড দেয়া হয় না প্রধানত দুটো কারনে।
১) অমানবিক মনে করা হয়।
২) মৃত্যুদন্ডের বিচার প্রক্রিয়া অত্যন্ত ব্যয়বহুল এবং সময়সাপেক্ষ। এটাই প্রধান কারন।
১ নাম্বার কারনতো সহজেই বুঝে গিয়েছেন। আসুন ২ নম্বর কারনটার আলোচনায় যাই।
মনে রাখবেন আইনি লড়াই যখন সরকারের সাথে হয় তখন সরকারের খরচের টাকাটা আপনার আমার পকেট থেকে আসে। রাজাকার বিরোধী লড়াইয়ে বাংলাদেশ সরকারের বিশাল অংকের টাকা খরচ করতে হচ্ছে আইনজীবি এবং এসংক্রান্ত অন্যান্য কাজে। অর্থের যোগানদাতা হিসেবে আমরা অবশ্যই চাইব টাকাটা যেন হালাল ভাবে খরচ হয়। ফলাফল যাতে আমাদের পক্ষে আসে। কেউ কোন খেলা যেন না খেলতে পারে।
আরেকটু খুলে বলি।
ধরুন, আমি ডাব্বা একজনকে হত্যা করলাম। সরকার আমার বিরুদ্ধে কোর্টে গেল। আমার বিচার চাইল। প্রসিকিউটর বললো যে 'মাননীয় ধর্মাবতার। রগ, আংগুল, চোখ উপড়ে, গলা কেটে নৃশংসভাবে হত্যার দায়ে ডাব্বা নামের এই ছাগুটাকে ৩০ বছরের কারাদন্ড দেয়া হোক।' সে সাক্ষী প্রমান পেশ করল। জুরী বোর্ডে কে কে থাকবে ঠিক করা হোল। সাক্ষ্য প্রমানে জুরী বোর্ড সিদ্ধান্তে আসলো যে না, এটা তো পুরোপুরি ছাগু না সিকি ছাগু। তাই রায়ও হয়ে গেল ১২ বছরের সশ্রম কারাদন্ড। সব মিলিয়ে লাগল সময় ১৪ মাস। কথার কথা।
আবার ধরুন সেই খুনের কারনেই সরকারী প্রসিকিউটর আমার মৃত্যদন্ড দাবী করল। 'ধর্মাবতার, ডাব্বা নামের এই ইন্ডিয়ান দালালটাকে মৃত্যুদন্ড না দিলে দেশে রামরাজ্য প্রতিস্ঠিত হবে। আপনার আমার কারো পুটু ই আর পুটুতে থাকবে না।'
এই যে সরকার এখন আমার মৃত্যুদন্ড দাবী করলো, এই 'মৃত্যুদন্ড' দাবী করার কারনে এই কেইসটা 'ক্যাপিটাল ট্রায়াল' হিসেবে আগাবে বা মুভ করবে যেটা আগেরটার চাইতে অনেক জটিল, সময় সাপেক্ষ এবং ব্যয়বহুল হবে। এটা কমপ্লেক্স ট্রায়াল হিসেবে গণ্য হবে। অর্ডিনারী না। সাক্ষী-প্রমান, পৃ-ট্রায়াল মোশন, হাই প্রোফাইল এক্সপার্ট, সুচারু তদন্ত, অতি সুরক্ষিত কারাগারের ব্যবস্থা, জটিল এবং দীর্ঘমেয়াদী জুরী সিলেকশন প্রক্রিয়া, ফাইল চালাচালি, কূটতর্ক, আলোচনা, ভালোচনা, সমালোচনা এবং তারিখ এর পর তারিখ ইত্যাদি সমস্ত কিছু মিলিয়ে রায় হতে লাগল সাড়ে চার বছর। ধরে নিলাম।
কোথায় ১৪ মাস আর কোথায় সাড়ে চার বছর!
তো হিসেবে দেখা গেছে, এই সাড়ে চার বছরে মামলার পেছনে যে খরচ হল তা দিয়ে আমাকে সারাজীবন জেলে একটা রুম দিয়ে রেখে দেয়া যেত এবং তারপরও খরচ বাঁচত সরকারের। একটা উদাহরন দেই, ক্যালিফোর্নিয়ার। (বাংলাদেশের তথ্য মুক্তবাজারে পাওয়া যায় না)
ক্যালিফোর্নিয়াতে একটা সাধারন মার্ডার ট্রায়ালে খরচ হয় $১৬০০০-২০০০০। আর একটা ক্যাপিটাল ট্রায়াল এ খরচ $১১৬০০০-১২০০০০ হাজার। কমবেশী আছে। আর যদি সরকার হেরে যায় তাহলেতো আম ছালা দুটোই গেল। $১২০ হাজার তো গেলই এখন আবার তাকে সারাজীবন জেলে রাখার খরচ যোগাও, আরো $১০০ হাজার!! প্রায় সময়েই এই খরচ মিলিয়ন ডলারে গিয়ে ঠেকে। একটা Capital Punishment এর তদন্তে খরচ হতে পারে হাফ মিলিয়ন ডলার। যেখানে non Capital Punishment এর তদন্ত $৩২,০০০ এর মধ্যে করে ফেলা সম্ভব।
অনেক বড় একটা খরচ আর হ্যাসল্।
কিছু কিছু দেশে আবার যাবজ্জীবন কারাদন্ড অনেক বেশী খরচের। যেমন বাংলাদেশ, আফগানিস্তান, মিশর, প্যালেস্টাইন, ইরান, চীন, ইন্ডিয়া ইত্যাদি। অবশ্য এটাও ডিপেন্ড করে ভিকটিমের বয়স, মামলার জটিলতা সহ আরো নানান রাজনৈতিক ও সামাজিক ফ্যাক্টর এর উপর।
এত কথার ভীড়ে ভুলে যাননি আশা করি যে সরকারের টাকা মানে আপনার আমার ট্যাক্স দেয়া টাকা।এই টাকার হিসেব জনগনকে দেয়া লাগে। তাই সরকার চেস্টা করে নানা ভাবে খরচ কমাতে যাতে অন্য কোন বেশী দরকারী কাজে টাকাটা ব্যয় করা যায়। সেজন্যে উন্নতবিশ্বের সরকারগুলো করে কি নানা ধরনের ডাইভারশন প্রোগ্রামস হাতে নেয়। বিশেষ করে এ্যামেরিকা।
এজন্যে অনেক দেশের সরকার সহজে ক্যাপিটাল ট্রায়ালে জড়িত হতে চায় না যদি না এতে (ক) সরকারের বা সরকার প্রধানের কোন খাস আগ্রহ থাকে, অথবা (খ) দেশের স্বার্থ চরম ভাবে জড়িত থাকে এবং জনগন সচেতন ভাবে তাকিয়ে আছে সেদিকে [এবং সরকার সেটা জানে]।
বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে, শাহবাগের গনজাগরন টা যদি কোনও ভাবে War Crimes Tribunal গঠিত হবার আগে হোত এবং/অথবা গঠিত হতে কোন ভূমিকা রাখত তাহলে সরকার এবং সরকারী প্রসিকিউশন আরো দক্ষ এবং সুচারুভাবে তাঁদের কাজ সম্পাদন করত। কারন তাঁরা জানত যে এর পেছনে শুধু সরকারের রাজনৈতিক/সামাজিক ইচ্ছাই না বরং সাধারন মানুষ যারা সরাসরি রাজনীতি করে না তাঁরা জড়িত। তাহলে আজকে বিচার নিয়ে এত কথা উঠত না। এত হাইকোর্ট জজকোর্টও আমাদের দেখা লাগত না। রাজীবেরও খুন হতে হোত না। আস্তিক-নাস্তিক নিয়ে বিভাজন সৃস্টির প্রয়াস হালে পানি পেত না। রাজাকারের পক্ষে যায় এমন কিছু কেউ লিখতে পারত না বা বলার সুযোগ থাকত না টক-ঝাল-মিস্টি টিভি শো গুলোতে।
সাধারন মানুষের চাপ সহ্য করার ক্ষমতা খুব কম প্রতিস্ঠানের আছে।
পরবর্তীএবং শেষ পর্ব: মৃত্যুদন্ডের ঐতিহাসিক প্রেক্ষিত এবং পদ্ধতি
১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১২:১৬
ডাব্বা বলেছেন: ধন্যবাদ। কালকের মধ্যে চলে আসবে, ইনশাল্লাহ।
২| ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১২:১৮
দিশার বলেছেন: রাজাকার পোসট
১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১২:২০
ডাব্বা বলেছেন: ব্যাখ্যা দিন।
৩| ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১২:৩৪
রওনকআলিম বলেছেন: Good news, for the sake of current movement, Samu has Blocked me. Ha Ha Ha!!!
১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১:০৮
ডাব্বা বলেছেন: গুড লাক্।
৪| ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১২:৪২
বাংলার এয়ানা বলেছেন: শাহবাগের মূল আন্দোলনের সাথে আমি ও একাত্বতা প্রকাশ করি, কিন্তু এই আন্দোলন কেউ যেন তাদের হিন স্বাথে ব্যাবহার না করতে পারে,জাতীয় আবেগকে যেন ভুল পথে ধাবিত করতে না পারে।
যারা যুক্তি তক্ক মানতে চায় না তদের কমন বুলি রাজাকার বা ফাসি চাই, সদাকে সাদা আর কালোকে কাল বলতে দ্বিধা কোথায়। জয় বাংলা, জয় মানবতা,
১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১:১০
ডাব্বা বলেছেন: শাহবাগের জাগরনের সাথে একাত্বতা প্রকাশ না করা নব্য রাজাকারি বলে মনে করি। বাট, সাবধান থাকতে হবে।
ধন্যবাদ।
৫| ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১:৫৪
বলাক০৪ বলেছেন: পয়সার চিন্তা কইরেন না। হলমার্কের মারা কিছু পয়সা দিয়াই হইয়া যাইবো। যখন এইরকম পরিবর্তনের সূচনা হয়েছে, যেসময়ই বা যে দেশে, কিছু লোক অনিবার্য ভাবেই বলেছে এইরকম না হয়ে ওইরকম হলে ভালো হত। এটা না হয়ে ওটা হলে ভালো হত........ ইত্যাদি ইত্যাদি।
১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ২:১৪
ডাব্বা বলেছেন: ব্রাদার এই লেখাটা কিন্তু রাজনৈতিক না।
আপনার অনুভূতির সাথে একাত্বতা পোষণ করি।
৬| ২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সকাল ৮:০২
অপূর্ণ রায়হান বলেছেন: ৪র্থ ভালোলাগা । ভালো লিখেছেন ভ্রাতা । +
২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সকাল ৮:২১
ডাব্বা বলেছেন: ভাল লাগল। ধন্যবাদ ব্রাদার।
৭| ২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ ভোর ৬:২৭
রিফাত হোসেন বলেছেন: +++
২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সকাল ১০:৩২
ডাব্বা বলেছেন: থ্যান্কস্ রিফাত।
©somewhere in net ltd.
১| ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১২:১০
আব্দুর রহ্মান বলেছেন: ভাল লাগলো। পরের পর্বের অপেক্খায় থাকলাম।