নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

প্রতিবাদ তো পজিটিভ ও হতে পারে।

ডাব্বা

জোছনা রাত। হট চকলেট। লেক এর পাড়। ছোট ছোট চুমুক। ভেজা রাস্তায় চেনা মুখ। আলিঙ্গন। হট চুমুক। ছোট ছোট জোছনা রাত। চকলেট লেক এর পাড়।

ডাব্বা › বিস্তারিত পোস্টঃ

মাশরাফি বনাম ডাক্তারকূল

০২ রা মে, ২০১৯ রাত ১:৩৬

(পড়ে মন্তব্য করার অনুরোধ থাকল। ঝেড়ে দিয়ে যান বা ঝেড়ে কাশুন। মতের মিল জরুরী না, না হলেই বরং বেশি ভাল। যুক্তি, তর্কের জম্পেশ আড্ডা হোক।)

এই গল্পটা তো জানেন, দোজখ পরিভ্রমণের শেষ দিকে এসে লোকটা শেষ দোজখের সামনে দাড়িয়ে অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করল, 'সব দোজখের গেইটের সামনে বিশাল সব গার্ড দেখলাম, উঁচু দেয়াল দেখলাম, তার উপর আবার কাটাতারের বেড়া দেখলাম কিন্তু এই দোজখে সেসব নাই কেন?' গাইড বলল, 'স্যার, এটাতে বাংলাদেশীরা থাকে। গার্ডের কাজটা ওরাই করে। কয়েকবার এওয়ার্ড ও পেয়েছে মানসম্মত কাজের জন্য।'

ইন্ডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের প্রধান বার্তা সম্পাদক আশীষ সৈকত সাম্প্রতিক কালে কোথাও বলেছিলেন যে বাংলাদেশের, ‘‘নির্বাচনি সাংবাদকিতার তিনটি পর্যায় রয়েছে৷ নির্বাচনের আগে, নির্বাচনের দিন এবং নির্বাচনের পরে"৷ তিনি এটাও উল্লেখ করেছিলেন যে
"এখনকার পরিস্থিতি বিবেচনায় নির্বাচনের যে ফেসটিভ মুড, সেটা দেখা যাচ্ছে না৷ কেউ প্রচার করতে পারছেন না, কেউ পারছেন৷ কেউ পোস্টার লাগাতে পারছেন না৷ কেউ পারছেন"। অর্থাৎ আমাদের নির্বাচনী সংস্কৃতির যে আনন্দঘন মুড সেটা আর দেখা যাচ্ছে না।

সেই সংস্কৃতি তাহলে কোথায় গেল?

৩২ বছর আগে একবার সংসদ ভবনে অধিবেশন দেখতে গিয়েছিলাম। দর্শক আসনে বসে প্রানভরে সংসদ সদস্যদের কাজ দেখছি। হঠাৎ দেখি এক লোক সংসদের ভিতরে clown এর মত দৌড়াদৌড়ি করছে, এর ঘাড়ে হাত দিচ্ছে, ওকে বগলে খোঁচা দিচ্ছে। ফাজলামি করছে, লাফাঙ্গা টাইপ অঙ্গভঙ্গী ও হাসিতে তাকে দেখতে খুব অদ্ভুত লাগলো এমনকি আমার অনভ্যস্ত চোখেও। জিজ্ঞেস করলাম দুলাল কাকুকে উনি কে? কাকু জানালেন যে তিনি সংসদের সর্বকনিষ্ঠ সদস্য।

আমার কাছে খুব খারাপ লাগলো। এ রকম ফাতরা ফাজিল টাইপ কিছু দেখার আশা করিনি। আমার ধারনা ছিল সংসদ এমন একটা স্থান যেখানে হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী, মিজানুর রহমান চৌধুরী, বি চৌধুরী, তোফায়েল আহমেদ, সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত, এইসব জাদরেল বনেদী পার্লামেন্টারিয়ানদের দেখা মেলে, এটা তাদেরই জায়গা। মনটা আমার সত্যি খুব খারাপ হয়েছিল। বিষয়টি আমাকে এত টাচ করেছিল যে এরপর আমি প্রায়ই ভাবতাম যে এ রকম জোকার টাইপ লোকজন ও সংসদে আসে, আসতে পারে!

এসব ভাবতে ভাবতেই খেয়াল আসল এটা হতে পারে পাইপলাইনের সমস্যা। হয়ত গুণী, যথাযথ ব্যক্তিরা আর উঠে আসছেন না। সংসদ পর্যন্ত আসতে তো একটা প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হয়। একতলা থেকে ছতলা পর্যন্ত হেটেই আসতে হয়। লিফটে চড়ে না।

ওই ঘটনা টা আমাকে খুব পেয়ে বসেছিল। কোনওভাবেই দূর করতে পারছিলাম না। আমার চারপাশের কলেজগুলোর দিকে তাকালাম। খবরের কাগজে সজাগ দৃষ্টি রাখলাম গ্রাম বাংলার কিশোর/তরুন রাজনীতির খবর জানতে। যাদের ছাত্র সংসদ আছে, সেখানে কারা আছে, আমার এক দুই বছর আগে কারা ছিল? তো দেখলাম যে সাংস্কৃতিক সম্পাদক আর ক্রীড়া সম্পাদক বাদে সব জায়গায়ই 'road master'দের রাজ। বিশেষ করে ভিপি, জিএস পদে। এর মধ্যে ভিপিটা ছিল একটু তাত্বিক ধরনের হালকা ভদ্র আর জিএস টা ছিল জিনিস। যতবেশি তাউড়া ততবেশি জিএস। হা হা হা।

মনে তখন একটু স্বান্তনা পেলাম যে যাক, একটু অন্ধকারের দেখা পাওয়া গেল। এটাই তাহলে পাইপলাইন। এরাই একদিন চেয়ারম্যান হবে, কমিশনার হবে, যুবলীগ, যুবদলের নেতা হবে, তারপর একদিন মহাসমারোহে জাতীয় সংসদ ভবনে শুভমুক্তি পাবে। আইন তৈরি করবে। মন্ত্রীও হবে।

সারাজীবন যাদের চলল আইন ভেঙ্গে তারা আজ আইন তৈরী করবে, দেশ চালাবে, আমাদের হুকুম দিবে। আর মেধাবী, আলোকিত, উপকারী/সাহায্যকারী, রাজনীতি না করা ছাত্রটি তাদের তাবেদার হবে।

এটাতো কোন সুস্থ সংস্কৃতি না। এটা উন্নয়ন না। সংস্কৃতি মানে সংস্কার। এভাবে সংস্কার হয় না। জঞ্জাল তৈরী হয়। আর সেই জঞ্জাল কোথায় জমা হয় সেটা আমরা দেখছি এখন প্রাণভরে।

আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতির একটি উল্লেখযোগ্য দিক হল গণ আন্দোলন। গণ আন্দোলন ব্যাতিত রাজনীতির গণতান্ত্রিক পরিবর্তন আমাদের দেশে আসেনি। গণ আন্দোলন ব্যাতিত কোন সফল নির্বাচন ও দেখিনি আমরা। বাংলাদেশে গণ আন্দোলন ব্যাতিত জনমতের সফল প্রতিফলন ঘটে না।

সংস্কৃতির এই ধারাটি এখন মৃত্যুশয্যায়। কারন আওয়ামী লীগ সরকার এটা ভালোই বুঝতে পেরেছে এবং এর উপর চমতকার নিয়ন্ত্রণ কায়েম করেছে ছলে, বলে, কৌশলে। এই যে রাজনীতি কে পড়তে পারার ক্ষমতা এবং সে অনুযায়ী কার্যকর সিদ্ধান্ত নেয়ার দক্ষতা, এটাই আওয়ামী লীগ কে অন্য দলগুলোর চাইতে আলাদা করে দিয়েছে। রাজনীতিতে এটা একটা বড় গুণ।

নির্বাচনী সংস্কৃতি পরিবর্তনের এই সুচনার কৃতিত্ব আওয়ামী লীগ সাফল্যের সাথে দাবী করতে পারে।

আমাদের এই পরিবর্তিত রাজনৈতিক সংস্কৃতিতেই মাশরাফির মতো তরুনেরা বড় হয়ে উঠেছে। মূল্যবোধ এখান থেকেই গড়ে উঠেছে। মাশরাফির প্রজন্মের তরুনদের কাছ থেকে আপনি আমি বনেদী সংসদীয় আচরন একদিনেই আশা করতে পারি না। মাশরাফি শুধু মিডিয়ার eye candy ই না মাশরাফি অন্তত দুটি প্রজন্মের চোখে হিরো। আমাদের কিন্তু তেমন কোন hero নেই।

গনতন্ত্রে নির্বাচন গনসম্পৃক্ততাবিহীন হবার সংস্কৃতিতে যে কুফল প্রাপ্তি হয় তারই একটি উদাহরণ এম পি মাশরাফি। তাই মাশরাফির পিন্ডি না চটকিয়ে এটাকে আপাতত স্বাভাবিক বলেই ধরে নিন। দোজখের বাংলাদেশী হয়ে থাকবেন না।

আমি মাশরাফির মঙ্গল কামনা করি। আমি আশা করি খেলোয়াড়ি জীবনের মত উনার রাজনৈতিক জীবন ও সাফল্যমন্ডিত হবে।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা মে, ২০১৯ ভোর ৬:০৬

বলেছেন: আপনার লেখার উপর আর কোন যুক্তি তর্ক হপে না - জোরে হাততালি হপে।

সাবাশ ছেপুদা প্রজন্ম এগিয়ে যাও এম,পি মাশরাফিদের হাতধরে।
সাবাশ প্রশ্ন ফাঁস জেনারেশনের ডাক্তাররা,
এবার কাজে গিয়ে ইনজেকশন দিয়ে রোগীদের অক্কা করে দাও।

০৩ রা মে, ২০১৯ রাত ১:৪৩

ডাব্বা বলেছেন: ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।

২| ০২ রা মে, ২০১৯ রাত ৯:১৭

মাহমুদুর রহমান বলেছেন: আমার এসব আর ভালো লাগে না।

০৩ রা মে, ২০১৯ রাত ১:৪২

ডাব্বা বলেছেন: আমি বুঝি ব্যাপারটা। আমি নিজেও ক্লান্ত।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.