নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

প্রতিবাদ তো পজিটিভ ও হতে পারে।

ডাব্বা

জোছনা রাত। হট চকলেট। লেক এর পাড়। ছোট ছোট চুমুক। ভেজা রাস্তায় চেনা মুখ। আলিঙ্গন। হট চুমুক। ছোট ছোট জোছনা রাত। চকলেট লেক এর পাড়।

ডাব্বা › বিস্তারিত পোস্টঃ

কোভিড ১৯’ নিয়ন্ত্রণে চীনের সাফল্য

২২ শে মার্চ, ২০২০ রাত ৩:৫৫

২০১৫ সালে আগস্টে বেইজিংয়ের পাশের শহর তিয়ানজিন এ এক ফ্যাক্টরিতে ভয়াবহ বিস্ফোরণে ১৬৫ জন মারা যায়। আরও ৭ জনের কোন হদিস আজ পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। ঘটনাটা খবরে ছিল মাত্র ২ দিন। এর পর আর কোন কিছু জানা যায়নি। আমার ছাত্রদের কাছ থেকে ফিসফাস শুনেছি, ব্যাস ওই পর্যন্তই।

চীনের উহান শহরে করোনার প্রাদুর্ভাবের বিষয়ে হুইসল ব্লোয়ার, চক্ষু বিশেষজ্ঞ লি ওয়েনল্যাং জানুয়ারি মাসে চীনা কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করেছিলেন এই ভাইরাসের ভয়াবহতা নিয়ে, বিনিময়ে পেয়েছিলেন তিরস্কার। কর্তৃপক্ষ এই সতর্কবার্তাকে কোন গুরুত্বই না দিয়ে চেষ্টা চালিয়েছিলো গোপন রাখার। তারা বলেছিল যে তিনি "গুজব ছড়াচ্ছিলেন"।

'Loosing face' হচ্ছে চীনের সামাজিক চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের অবিচ্ছেদ্য অংশ। এর ঠিক বাংলা অর্থটা আমি বলতে পারছি না। কাছাকাছি হতে পারে, 'সম্মান হারানো '। পারিবারিক ও সামাজিকভাবে খারাপ কিছু অন্যের কাছ থেকে লুকিয়ে রাখা যাতে মুখ রক্ষা হয়।

যখন বড় আকারে নেতিবাচক কিছু ঘটে তখন সরকারের প্রাণান্তকর প্র‍য়াস থাকে তা জনগণ এবং বহিঃবিশ্বের কাছ থেকে লুকিয়ে রাখার। এই লুকানোর চেষ্টা করতে করতেই যখন তা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় তখন সরকার খড়গহস্ত হয় এবং নির্দয় আচরণ শুরু করে। ইংরেজিতে যাকে বলে ব্রুটাল।

যেমন নভেল করোনা ভাইরাস। একে ধামাচাপা দেবার চেষ্টা করেছে। কিন্তু ছোঁয়াচে রোগ বলে কথা। পারেনি। শেষমেষ রোগের বিস্তার রোধে করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের কেন্দ্র, উহানকে বন্ধ (lockdown) করে দেওয়ার ঘোষণা দেয়।

বেইজিংয়ের এই সিদ্ধান্ত ছিল একটি বিশাল অগ্নিপরীক্ষা। মহামারীবিদরা সতর্ক করেছিলেন এই বলে যে লকডাউনের মত বিশাল মানবিক এবং অর্থনৈতিক ব্যয়ের ফলাফল আশাব্যঞ্জক না ও হতে পারে। আধুনিক বিশ্বে এত বড় আকারে কোয়ারান্টিন কখনও চেষ্টা করা হয়নি।

সিদ্ধান্ত নেয়ার সাথে সাথে সঙ্কটের মাত্রা পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবার আগেই উহানের *১১ কোটি এবং আশেপাশের শহরগুলি মিলিয়ে আরও কয়েক মিলিয়ন লোককে অবিশ্বাস্য দ্রুততম সময়ে লকডাউনের আওতায় নিয়ে আসা হয়। কারো কোন ট্যা ফো তে কান দেয়নি শি জিন পিং এর সরকার।

মিডিয়ায় সরকারের কর্তাব্যক্তিরা অযথাই এটা সেটা বলে জনগণকে মিথ্যা প্রবোধ দেয়ার চেষ্টা করে কালক্ষেপণ করেননি।

এই সাহসী সিদ্ধান্তের ফলাফলও হয়েছে ইতিবাচক। গতপরশুই চীন জানিয়েছে যে স্থানীয়ভাবে এই রোগের আর কোনও নতুন সংক্রমণ হয়নি। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরার সংখ্যাও বাড়ছে।

অন্যদিকে ক্রমবর্ধমান প্রাদুর্ভাবের স্থানগুলি যেমন ইটালি, স্পেন, জার্মানি এবং ক্যালিফোর্নিয়া এখন একই ধরণের ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছে যদিও কোনওটি উহানের মতো কঠোর ও নিয়ন্ত্রিত নয়।

উহানে লকডাউন ঘোষণার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই শহর ও আন্তঃনগর পরিবহন বন্ধ করে দেয়া হয়। এমনকি ব্যক্তিগত, চিকিৎসা, ও জরুরী পরিস্থিতিতেও এর কোন ব্যতিক্রম হয়নি। স্কুল এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে অনির্দিষ্টকালের ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।

আক্রান্ত এলাকায় খাবার বা ওষুধের দোকান ছাড়া সমস্ত দোকান বন্ধ রয়েছে। বিশেষ অনুমতি ব্যাতিত ব্যক্তিগত যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বেশিরভাগ সরকারী যানবাহন চলাচলও বন্ধ, রাস্তাগুলি খালি, ও নিস্তব্ধ হয়ে আছে।

প্রথমদিকে লোকদের ঘর থেকে বাইরে বেরোনোর ​​অনুমতি দেওয়া হয়েছিল, তবে শীঘ্রই বিধিনিষেধ আরও কড়া হয়ে যায়। প্রয়োজনীয় জিনিস কেনার জন্য প্রতি দুই দিনে এক পরিবারের একজন ব্যাক্তি বাইরে গিয়ে কেনাকাটা করতে পারেন। অনেক স্থানে খাবার এবং অন্যান্য জিনিসের জন্য অনলাইনে অর্ডার করতে হয় বাইরে যাবারও অনুমতি নেই।

এর পরবর্তী পদক্ষেপ হিসেবে কর্মকর্তারা স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য ঘরে ঘরে যেতে শুরু করেন এবং অসুস্থ কাউকে পেলে তাৎক্ষণিকভাবে আলাদা করে ফেলেন ১৪ দিনের জন্য। তাঁকে পরিবারের কাছ থেকে সরিয়ে নেয়া হয়।

ক্ষেত্রবিশেষে ড্রোনের মাধ্যমেও নজরদারি করা হচ্ছে এবং সাবধান করে দেয়া হচ্ছে যদি কেউ ফেইস মাস্ক ছাড়া বাইরে বের হন।

উহানকে এভাবে তালাবদ্ধ করার পরপরই অন্যান্য এলাকায় নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হয়েছিল এই আশঙ্কায় যে কিছু লোক লকডাউন করার আগেই ভয়ে শহর থেকে পালিয়ে গিয়েছিল, তাঁদের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তে পারে করোনা। এসকল ক্ষেত্রে সরকার কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্য নিয়েছিল বলে শোনা যায়। আপনি জেনে হয়ত অবাক হবেন, চীন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সক্ষমতায় আমেরিকার চাইতে কয়েকগুণ এগিয়ে রয়েছে।

সাংহাই ও গুয়াংডং প্রদেশের মতো অন্যান্য অনেক স্থানে যুক্তরাজ্য এবং ইতালি থেকে আসা সমস্ত ভ্রমণকারীকে নিজ বাড়িতে বা সরকারী কেন্দ্রে ১৪ দিনের জন্য বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টিনের ব্যাবস্থা করা হয়েছে।

সাংহাইয়ে বিভিন্ন হোটেলে আগত সমস্ত অতিথির শরীরের তাপমাত্রা প্রতিদিন পরীক্ষা করা হচ্ছে। অনেক রেস্টোর‍্যান্টে প্রবেশের আগে তাপমাত্রা মেপে দেখা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

এ বিষয়ে উই চ্যাটে কথা হচ্ছিল আমার একসময়ের শিক্ষক ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মিস্টার চেন শি এর সাথে। তিনি এত কঠোর লকডাউনকে বাড়াবাড়ি ও অপ্রয়োজনীয় মনে করেন। তবে উনি একথাও বলেন যে শুরুতেই গুরুত্ব না দেয়ায় এই সমস্যাটি সংকটে পরিনত হয়ে হাতের বাইরে চলে যায়, তখন ব্রুটাল হওয়া ছাড়া চীনের আর কোন উপায়ও ছিল না।

মিস্টার চেন এর মতে বাংলাদেশ সহ অন্যান্য আক্রান্ত দেশগুলি যে সফল পদক্ষেপগুলি অনুসরণ করতে পারে সেগুলো হোল:
"সামাজিক সঙ্গ বর্জন করা, প্রাথমিক রোগ নির্ণয়, Early quarantine, এবং প্রাথমিক চিকিৎসা নিশ্চিত করা।"

চীনে এখন যদিও পরিস্থিতির দৃশ্যমান উন্নতি হয়েছে তবুও উহান এখনও লকডাউনেই রয়েছে। কিছু লোককে আবারও বাইরে কাজ করার সীমিত অনুমতি দেওয়া হচ্ছে কিন্তু দেশব্যাপী সামগ্রিক পরিস্থিতির উপর নজর ও নিয়ন্ত্রণে কর্তৃপক্ষ এখনো ব্রুটাল

সংশোধনঃ
* ১ কোটি১০ লক্ষ

মন্তব্য ১৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২২ শে মার্চ, ২০২০ ভোর ৪:১৪

চাঁদগাজী বলেছেন:


উহানের লোকসংখ্যা কত বললেন?

২২ শে মার্চ, ২০২০ সকাল ১০:২৭

ডাব্বা বলেছেন: ১১ কোটি। ভুল বলেছি। সংশোধন করা হয়েছে।

২| ২২ শে মার্চ, ২০২০ ভোর ৫:১৬

স্বামী বিশুদ্ধানন্দ বলেছেন: আপনার তথ্যে ভুল রয়েছে | উহানের জনসংখ্যা ১ কোটি ১০ লক্ষ |

উহানে লকডাউন তুলে নেয়া হয়েছে |

২২ শে মার্চ, ২০২০ সকাল ১০:২১

ডাব্বা বলেছেন: কিছু অংশে তুলে নেয়া হয়েছে। এই মুহুর্তের খবর যেটা আমি পেয়েছি তাতে উহান কার্যত লকডাউনে।

৩| ২২ শে মার্চ, ২০২০ সকাল ৭:৫৮

সোহানী বলেছেন: চীন কখনই সত্য বলে না। এবং মিডিয়া ততটুকুই জানে যতটুকু চীন সরকার শিখিয়ে দেয়। আর আমরা ততটুকুই জানি যতটুকু মিডিয়া আমাদের বলে..............।

২২ শে মার্চ, ২০২০ সকাল ১০:২২

ডাব্বা বলেছেন: একদম ঠিক।

৪| ২২ শে মার্চ, ২০২০ সকাল ৯:২৭

রাজীব নুর বলেছেন: উহান তো এখন নিরাপদ তাই তো শুনলাম।

২২ শে মার্চ, ২০২০ সকাল ১০:২৫

ডাব্বা বলেছেন: এখন অনেক কন্ট্রোলড্। নিরাপদ, এই ঘোষণা আসেনি এখনো। দ্বিতীয় বার আক্রান্ত হবার সম্ভাবনাও আছে।

৫| ২২ শে মার্চ, ২০২০ সকাল ৯:৪৫

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: কমিউনিস্ট ভাবাদর্শ ব্রুটাল মানসিকতা লালন করে। এই কারণে চীনের সব কিছুতেই এক্সট্রিমিটি এবং রাখ ঢাক লক্ষ্য করা যায়। চীনা জনগন ঐতিহ্যগতভাবে এতে অভ্যস্ত। কারণ তারা গনতান্ত্রিক রীতিনীতিতে অভ্যস্ত নয়।

২২ শে মার্চ, ২০২০ সকাল ১০:২৫

ডাব্বা বলেছেন: ইগজ্যাক্টলী।

৬| ২২ শে মার্চ, ২০২০ সকাল ১১:০৪

বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: প্রথমে সংক্রমণের পর চীনাদের গালি দিলাম বাজে খাদ্যাভ্যাসের জন্য। এখন উহানে পরপর তিন দিন কোন 'কোভিড-১৯'এর রোগী না পাওয়ার পর চীনাদের সুনাম করছি। আমরা পারিও বটে...

২২ শে মার্চ, ২০২০ দুপুর ১২:৪৩

ডাব্বা বলেছেন: যখন যার যেটা পাওনা।

৭| ২২ শে মার্চ, ২০২০ বিকাল ৩:০৬

ব্লগার_প্রান্ত বলেছেন: এই ভাইরাসের একটা সেকেন্ড ওয়েভ আছে।

২২ শে মার্চ, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:০১

ডাব্বা বলেছেন: জী, সায়েন্টিস্টরা বলছেন third wave এর কথা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.