নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

প্রতিবাদ তো পজিটিভ ও হতে পারে।

ডাব্বা

জোছনা রাত। হট চকলেট। লেক এর পাড়। ছোট ছোট চুমুক। ভেজা রাস্তায় চেনা মুখ। আলিঙ্গন। হট চুমুক। ছোট ছোট জোছনা রাত। চকলেট লেক এর পাড়।

ডাব্বা › বিস্তারিত পোস্টঃ

মাসুদ রানা - কাজী আনোয়ার হোসেন বনাম আবদুল হাকিম

০৯ ই জুলাই, ২০২০ রাত ১:৪০

লেখার উদ্দেশ্য কাউকে জিতিয়ে দেয়া না বরং সংক্ষেপে ঘটমান বর্তমানের একটি তুলনামূলক আলোচনা করা। আমরা সবাই জেনে এসেছি কাজীদা ই মাসুদ রানার লেখক তাহলে আবদুল হাকিম গ্রন্থ স্বত্ব পেয়ে যান কী যাদুমন্ত্রে সেদিকে একটু দৃষ্টিপাত করা।

খুব কষ্ট হয়েছে এই লেখাটি গোছাতে।

কাজীদার রানা'র সাথে আমাদের বেড়ে উঠার সম্পর্ক, চড় থাপ্পড়ের ও সম্পর্ক।

রাত জেগে মাসুদ রানা পড়? খাও আম্মার চড়। পাঠ্য বইয়ের আড়ালে মাসুদ রানা? খাও আব্বার থাপ্পড়। ক্লাসের মধ্যেও রানা? কান তো আছেই - স্যারদের সম্পত্তি। বেঞ্চের উপর দাঁড়িয়ে থাক। মোড়ের বুকস্টল এ নানা বাহানায় একটু করে পড়া। তাচ্ছিল্যের থাবা মেরে নিয়ে যেত হাত থেকে তা ও গায়ে লাগত না।

নেশাটা যে ছিল মারাত্মক।

কিনে পড়তাম, চুরি করে পড়তাম, ধার করে পড়তাম, ভাড়া করে পড়তাম, খেতে খেতে পড়তাম, বাথরুমে পড়তাম, পড়তে বসে পড়তাম, ট্রেইনে পড়তাম, বাসে-লঞ্চে-স্টীমারে পড়তাম। লাইব্রেরিতে পড়তাম।

সেই রানাকে নিয়ে এই টানা হ্যাচড়া সহ্য হয়?

কাজীদার রানা আবদুল হাকিমের রানা হবে, এটাও দেখতে হবে? যদি মেনেও নেই, আত্মা তো বিদ্রোহ করবে।

শুধু মাসুদ রানা ফ্যান না আমরা ছিলাম রানা ফ্যানাটিক। তাই হালের এই সমস্যা সংকুল পরিস্থিতিতে একটু ডুব দিয়ে দেখে নিতে চাচ্ছি কোথাকার পানি কার গ্লাসে উঠে।

ঘটনার সুত্রপাত
২০১৯ সালের ২৯ জুলাই শেখ আব্দুল হাকিম ‘মাসুদ রানা’ সিরিজের ২৬০টি এবং ‘কুয়াশা’ সিরিজের ৫০টি বইয়ের লেখক হিসেবে মালিকানা স্বত্ব দাবি করে সেবা প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী কাজী আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ কপিরাইট অফিসে বাংলাদেশ কপিরাইট আইনের ৭১ ও ৮৯ ধারা লঙ্ঘনের অভিযোগ দায়ের করেন। এরই প্রেক্ষিতে প্রাপ্ত রায়ে 'মাসুদ রানা' সিরিজের ২৬০টি এবং 'কুয়াশা' সিরিজের ৫০টি বইয়ের 'লেখক' হিসেবে স্বত্ব পাবার অধিকারী হতে যাচ্ছেন আবদুল হাকিম।

লেখক বুলবুল চৌধুরী ও শওকত হোসেন, শিল্পী হাসেম খান এবং সেবা প্রকাশনীর প্রাক্তন ব্যবস্থাপক ইসরাইল হোসেন খানের লিখিত মতামতের ওপর ভিত্তি করে রবিবার (১৪ জুন, ২০২০) বাংলাদেশ কপিরাইট অফিস আবদুল হাকিমের পক্ষে এই রায় প্রদান করেন।

সমস্যাটি কি নিয়ে?
বইয়ের রয়্যালটি (royalty) পাওয়াকে কেন্দ্র করে মূলত শেখ আবদুল হাকিম ও কাজী আনোয়ার হোসেনের মধ্যে বিরোধের জন্ম। বর্তমানে রয়্যালটির পাশাপাশি বইয়ের মালিকানা স্বত্বও দাবি করছেন আবদুল হাকিম।

কিসের রয়্যালটি?
আবদুল হাকিম বলছেন 'মাসুদ রানা' ও 'কুয়াশা'র লেখক হিসেবে উনি বই বিক্রি বাবদ সেবা প্রকাশনীর কাছে চার কোটি টাকা পাবেন।

কাজী আনোয়ার হোসেন(কাজীদা) কি বলছেন?
'চুক্তি অনুযায়ী সব দিয়েছি'। তিনি আরও বলেন যে রয়্যালটি না এককালীন অর্থ দিয়েছেন। চুক্তির কোনও কপি যদিও তিনি দেখাতে পারেন নি।

আবদুল হাকিম কে?
আবদুল হাকিম একজন স্বশিক্ষিত ও স্বনামধন্য লেখক/অনুবাদক যিনি ১৮ বছর বয়স থেকে লিখছেন। সেবা প্রকাশনীতে দীর্ঘ ৪৫ বছর লিখেছেন।

আবদুল হাকিমের সাথে কাজীদার পরিচয় কি করে?
মাসুদ রানার প্রথম কয়েকটি বইয়েই পাঠক পাগল করা সাফল্যের পর উদ্ভুত বানিজ্যিক চাহিদা সামাল দিতে কাজী আনোয়ার হোসেনের সাহায্যের দরকার হয়ে পড়াতে উনি গৌস্ট রাইটার/অদৃশ্য লেখকের (ghost writer) এর সন্ধানে নামলেন। পরেরটা উনার জবানীতেই শুনি।

"তখন আমি শেখ আবদুল হাকিমকে বললাম, আপনি লিখতে চান এটা? আমি বলে দেব, ঠিক কীভাবে লিখতে হবে। কীভাবে চরিত্র হবে। সে অনুযায়ী যদি লিখে দেন, তাহলে আপনাকে এককালীন টাকা দেব এবং এটার ওপর আপনার কোনো রাইট (right) থাকবে না। আমার সিরিজ “মাসুদ রানা” লিখে অন্য কোনো জায়গায় ছাপতে পারবেন না। এটাতে উনি (শেখ আবদুল হাকিম) রাজি হলেন। লিখে আনার পর টাকা দিয়ে দিয়েছি। তারপর সেটা আবার সম্পাদনা করে ছাপার উপযোগী করেছি।"

এ ব্যাপারে আবদুল হাকিম কি বলেন?
"ওনার নামে বই ছাপা হোক, তাতে আমার সম্মতি ছিল। আমি তো একা না। অনেকেই তো এভাবে লিখেছেন"।

ঘটনার এখানেই সমাপ্তি হতে পারত যেহেতু এই উক্তির মাধ্যমেই আবদুল হাকিম গৌস্ট রাইটার/অদৃশ্য লেখক হিসেবে সেবা'র সাথে যুক্ত থাকার স্বীকারোক্তি দিলেন। প্রাপ্ত রায়েও উল্লেখ আছে, 'সেবা প্রকাশনীর অন্যান্য লেখকের মতো আবদুল হাকিম পাণ্ডুলিপি জমা দিয়ে টাকা নিতেন। বই বিক্রির পর আরও টাকা পেতেন'।

কিন্তু সমস্যা হয়ে যাচ্ছে রায়ের দ্বিতীয় বাক্যটিতে, - 'বই বিক্রির পর আরও টাকা পেতেন'। এতে বোঝা যাচ্ছে তিনি গৌস্ট রাইটার/অদৃশ্য লেখক হয়তো ছিলেন না।

আবদুল হাকিম এক সাক্ষাৎকারে নিজেও বলেছিলেন- "আমি লিখলাম, উনি কিনে নিলেন। দয়া করে আমাকে বছরের পর বছর টাকা দিয়েছেন। একবার তো দিচ্ছেন, আবার তিন মাস পরপর টাকা দিচ্ছেন। চাইলে টাকা দেন, না চাইলেও টাকা দেন। কিন্তু যা প্রাপ্য তা দেননি৷ যখন আইন জানলাম, তখন আমার চোখ খুলে গেছে।"

এই 'বই বিক্রির পর আরও টাকা পেতেন', বা 'আবার তিন মাস পরপর টাকা দিচ্ছেন' - মানে তিনি রয়্যালটি পাচ্ছেন। এমনটিতো হওয়ার কথা না। মাসুদ রানার পান্ডুলিপি রচয়িতা গৌস্ট রাইটার হিসেবে তাঁর তো শুধু এককালীন অর্থ পাওয়ার কথা। এই বাড়তি প্রাপ্তিটির উল্লেখ কি তার চুক্তিতে ছিল? বা এর কী ব্যাখ্যা ছিল? চুক্তিতে যদি থাকে তাহলে তো "চাইলে টাকা দেন, না চাইলেও টাকা দেন", এমন অনিয়মিত বিনিময় হবার কথা না।

চুক্তিটি কি লিখিত ছিল?
না। কাজীদা এবং আবদুল হাকিম দুজনেই এ নিয়ে একমত। সে আমলে হয়তো এর প্রয়োজন ও ছিল না। অন্যান্য লেখকরাও একই পদ্ধতিতে সেবাতে লেখা দিয়েছেন।

এখানে প্রশ্ন উঠতে পারে যে কোন আইনটা ৪৪ বছর পর আবদুল হাকিমের চোখ খুলে দিল? এত লম্বা সময় লাগলো কেন চোখ খুলতে?

এর উত্তর পাওয়া যায় যখন তিনি বলেন, ‘‘যখন লেখা শুরু করি, তখন আমি কপিরাইট বিষয়টি বুঝতাম না। আর আমার টাকার প্রয়োজন ছিল, তাই টাকা পেয়েছি, লিখেছি। আমি তো আমার প্রাপ্য টাকার জন্য আইনের আশ্রয় নিতেই পারি।’’

যদি গৌস্ট রাইটিং করে থাকেন তাহলে পারেন না। তিনি কপিরাইট বুঝতেন না আচ্ছা, কিন্তু চুক্তি তো বুঝতেন? নাকি মৌখিক চুক্তির (verbal agreement) এর অনৈতিক সুবিধা নিতে এসব যুক্তি তর্কের অবতারণা করছেন? Gentlemen's agreement বলেও তো একটা কথা আছে!

আর যদি চুক্তিতে উল্লেখ থেকে থাকে উনি রয়্যালটিও পাবেন এবং যদি তা না পান তাহলে আইনের আশ্রয় নিতেই পারেন। তবে এখানে শিল্পী হাশেম খানের একটি কথা প্রনিধানযোগ্য, তিনি এ বিষয়টি পর্যালোচনাকালে বলেছিলেন, 'কাজী সাহেব লোক ঠকানোর মানুষ না'।

আবদুল হাকিম সেবা'র একমাত্র গৌস্ট রাইটার/অদৃশ্য লেখক নন। এমন আরও অনেকেই আছেন। তাঁরা তো কেউ কোটি টাকার দাবি নিয়ে এগিয়ে আসছেন না। গ্রন্থ স্বত্ব চেয়ে বসছেন না।

গৌস্ট রাইটিং এর ব্যাপারে বাংলাদেশের কপিরাইট আইন কি বলে তা জানার জন্য আমি গত ৮/১০ দিন অক্লান্ত সময় ব্যয় করেও তেমন কিছু জানতে পারিনি। বাংলাদেশের কপিরাইট আইনের বইটি আদ্যোপান্ত পড়েও এর কোন উল্লেখ দেখতে পাইনি। তবে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ও নন্দিত এ পেশাজীবিরা কখনোই কাজের স্বত্ব দাবী করতে পারেন না, এটা by default গৌস্ট রাইটারশিপের শর্ত এবং আইন। গৌস্ট রাইটার/অদৃশ্য লেখকরা অর্থ বা অন্য কোনও বিনিময়ের বিনিময়ে তাদের লেখার স্বত্ব ত্যাগ করার চুক্তিতে আবদ্ধ হন, হোক তা মৌখিক বা লিখিত। আমি জুবায়ের যদি একটি ছড়ার বই লিখে সিঙ্গাপুরের স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কাছে ১০ হাজার টাকায় বিক্রী করে দেই এবং তিনি যদি বইটি নিজ নামে ছাপিয়ে একুশে পদক পেয়ে যান তাহলে আমি শুধু আমার মাথার অবশিষ্ট ১৭৫৮টি চুলই ছিড়তে পারব।

তবে কপিরাইট বা স্বত্ব ত্যাগের এই চুক্তি মৌখিক না হয়ে লিখিত হওয়াই বান্ছনীয়। কাজীদা এখানে দূর্বল অবস্থানে আছেন। উনাকে এখন প্রায় শুন্য থেকেই প্রমান করতে হবে যে আবদুল হাকিম গৌস্ট রাইটার/অদৃশ্য লেখক ছিলেন।

প্রসঙ্গত আপনাদের একটি তথ্য স্মরণ করিয়ে দিতে চাই। মনিরুদ্দিন ইউসুফ, যিনি 'শাহনামা' প্রথম বাংলায় অনুবাদ করেছিলেন তিনি একটি 'উর্দু-বাংলা' অভিধানও রচনা করেন। আর্থিক টানাপোড়েনে তিনি বইটির স্বত্ব বিক্রি করে দেন সিরাজ রব্বানীর কাছে। পরবর্তীতে বিভিন্ন বিদগ্ধজনের সহযোগিতায় সিরাজ রব্বানী বইটি সংকলিত করেন এবং ড. সুনীতি কুমার চট্টোপাধ্যায়ের লিখিত ভূমিকা সংযোগে “ফ” রহঙ্গ-ই-রব্বানী' নাম দিয়ে আশরাফিয়া লাইব্রেরি, চকবাজার থেকে তাঁর অভিধানটি প্রকাশ করেন। স্বত্ব ত্যাগের কারণে বইটিতে মনিরউদ্দিন ইউসুফের নাম ছাপা হয়নি।

এবার একটু অন্য প্রসঙ্গে আসি।

আবদুল হাকিম যদি আদালতেও জিতে যান তাহলে তিনি রানা'র ২৬০ টি বই নিজ নামে বের করতে পারবেন। সেক্ষেত্রে উনি ঠিক করেছেন যে চরিত্র গুলো কাজীদার সৃষ্টি তাঁদের নাম বদলে দেবেন। অর্থাৎ, মাসুদ রানা, রাহাত খান, সোহেল রানা, সোহানা, গিল্টি মিয়া এই সব নামগুলো বদলে যাবে।

থ্রিলার নামের এই অপদার্থটি তখন কে পড়বে?

আপনারা 'জাকি আজাদ' নামের একটি থ্রিলার সিরিজের নাম শুনেছেন? আজকের আগে? পড়েছেন?

কাজী আনোয়ার হোসেন ছাড়া মাসুদ রানার value বা আবেদন কি 'সেই উ সেন' এর মতই থাকবে? আপনি আমি কি 'আই লাভ ইউ ম্যান' বলতে পারব নতুন রানা কে? শেখ আবদুল হাকিম যতই মেধাবী লেখক হন না কেন মাসুদ রানার লেখক হিসেবে আমরা পাঠকরা তাকে গ্রহণ করতে পারব কি! এর উত্তর 'জাকি আজাদ' এর সাফল্যের মধ্যেই লুকিয়ে আছে। সেবা থেকে বের হয়ে আবদুল হাকিম একটি নতুন মাসুদ রানা বের করেন জাকি আজাদ নামে। ফলাফল আপনার জানা হয়ে গেছে ইতোমধ্যে।

গ্রন্থস্বত্বের এই করুন লড়াই নিশ্চিত দীর্ঘতর হবে। কাজী আনোয়ার হোসেন বলেছেন, ‘‘আমি শেষ পর্যন্ত আইনি লড়াই চালিয়ে যাব। কপিরাইট অফিস আমার যুক্তি শোনেনি, উচ্চ আদালতে আমার যুক্তি তুলে ধরব।’’ আর শেখ আবদুল হাকিম বলেন, ‘‘আইনি লড়াই বা সমঝোতা দুইটির জন্যই আমি প্রস্তুত আছি৷’’

এই লেখালেখির পুরো বিষয়টিই ছিল বিশ্বাস নির্ভর একটি মৌখিক চুক্তি (verbal agreement)। লিখিত চুক্তি (written agreement) না থাকাটা কাজী আনোয়ার হোসেনের বিপক্ষে যাচ্ছে কারন মৌখিক চুক্তিগুলো সাক্ষী, স্মরণশক্তি, এবং circumstantial evidence এর উপর গভীরভাবে নির্ভরশীল।

কাজীদা বিশ্বাসে নিশ্বাস নিতে চেয়েছিলেন।

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৯ ই জুলাই, ২০২০ রাত ৮:২২

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: আমার মনে হয় দেশের আইন অনুযায়ী সিদ্ধান্ত শেষ পর্যন্ত হাকিম সাহেবের পক্ষে যাবে। তবে নৈতিকতার বিচারে একে অন্যের প্রতি কোনও জুলুম করেছেন কি না এটা ওনারা ভালো জানবেন। উভয়েই একে অন্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ করছেন। অনেক টাকার ব্যাপার। তাদের আগেই চুক্তি পাকা করে নেয়া উচিত ছিল। চুক্তি মৌখিক হওয়াটা কাজী সাহেবের জন্য সমস্যা সৃষ্টি করবে। ফলে দেশের আইন অনুযায়ী তখন সিদ্ধান্ত হবে। এছাড়া কাজী দা কিছু কাজ বুঝে বা না বুঝে করেছেন যা কপি রাইট আইনের পরিপন্থি। যেটা আমি পরে বলছি। আন্তর্জাতিক আইন এখানে কাজ করবে না। বাংলাদেশে দেশীয় আইন কাজ করবে। এছাড়া উনি যে এককালিন ছাড়াও যে হাকিম সাহেবকে টাকা দিয়েছেন এর প্রমান হাকিম সাহেবের কাছে আছে। এই প্রমাণের ভিত্তিতে বলা যাবে যে হাকিম সাহেব স্বত্ব ত্যাগ করেননি বলেই কাজী দা ওনাকে টাকা দিয়েছেন। কাজী দাও স্বত্ব কিনে নিলে উনি কেন হাকিম সাহেবকে পরেও টাকা দিতেন। হয়ত উনি উভয়ের সুসম্পর্কের কারণে দিতেন। কিন্তু সেটা কাজী দার হাকিম সাহেবকে পরিষ্কার করে বলা উচিত ছিল যে আমি তোমাকে পরে যে টাকা দিচ্ছি এটা আমাদের চুক্তির শর্তের অতিরিক্ত। এছাড়া হাকিম সাহেব বই বেশী ছাপলেও কম দেখানোর অভিযোগ করেছেন কারণ পরে উনি বইয়ের সংখ্যার উপর রয়্যালটি পেতেন বলে দাবি করেছেন। ঘটনা সত্যি হলে এটাও কাজী সাহেবের বিপক্ষে যাবে। কপি রাইট কর্তৃপক্ষের বক্তব্য হোল হাকিম সাহেব যদি চাকরীজীবীও হন তার পরও পাণ্ডুলিপি প্রণেতা হিসাবে রচনার মূল মালিক তিনি। প্রণোদনা, পৃষ্ঠপোষকতা কিংবা চাকরী দিয়ে কারও রচনা নিজের বলে দাবি করা যায় না। যদি হতো, তাহলে ‘আকবরনামা’ র লেখক হতেন সম্রাট আকবর, পণ্ডিত আবুল ফজল নন। মাসুদ রানার জাল নামক বইটির প্রথম মুদ্রনে হাকিম সাহেবের নাম ছিল। এ কারনে এটাকে ওনার নামে সনদ দেয়া হয়। এটার ব্যাপারে কাজী দা আপিলও করেন নাই। এই প্রমাণের কারনেও কাজী দার সমস্যা হবে অন্যান্য বই গুলির জন্য কারণ আদালত পুরো ব্যাপারটা সার্বিকভাবে দেখতে পারে। কপি রাইট কর্তৃপক্ষ বলছে কপিরাইট আইন অনুযায়ী, প্রণেতার স্বত্বের মালিকানা কোনোভাবে হস্তান্তরযোগ্য নয়। প্রণেতার সম্মতি থাকলেও তাঁর পরিবর্তে লেখক হিসেবে নিজের নাম প্রকাশ করাও নৈতিকতার পরিপন্থী। এছাড়া হাকিম সাহেবের পক্ষে কিছু প্রমান ও সাক্ষী আছে। আসলে হাকিম সাহেব ও কাজী দা উভয়েই আগে আইন নিয়ে খুব একটা মাথা ঘামাননি কারণ তাদের সম্পর্ক তখন ভালো ছিল। গোস্ট রাইটারের ব্যাপারটা আমাদের আইনে সম্ভবত নেই। ফলে ঐ প্রথা বা নিয়ম আমাদের দেশে চলবে না। তবে আমাদের দেশের কপি রাইট আইন আন্তর্জাতিক মানের করা উচিত।

০৯ ই জুলাই, ২০২০ রাত ১১:৫১

ডাব্বা বলেছেন: শেষ ফলাফল কি হবে সেটা your guess is as good as mine, তবে আমাদের দেশে কিন্তু ইন্ধন যোগানোর লোকের অভাব নেই। "আমাদের দেশের কপি রাইট আইন আন্তর্জাতিক মানের করা উচিত", আপনার সাথে আমি পুরোপুরি একমত এবং আরো বেশি কিছু।
ধন্যবাদ।

২| ০৯ ই জুলাই, ২০২০ রাত ৯:০১

সন্ধ্যা রাতের ঝিঁঝিঁ বলেছেন: Verbal agreement' এর কারণে এখন সবকিছু অন্য রকম হয়ে গেছে,কাজীদার অবস্থান খুবই দুর্বল।কিন্তু ফলাফল যাই হোক মাসুদ রানা, সেবা, কাজী আনোয়ার এই তিনটা নাম আমরা যেভাবে নিয়েছি এর জায়গায় অন্য কেউ গ্রহণযোগ্যতা পাবে না।
জাকি আজাদ এটা আমি আজকে প্রথম শুনলাম, আগে কখনো শুনিনি।
এত বছর পরে এসব ঝামেলা পাঠকদের জন্য খুবি হতাশা ব্যঞ্জক।

০৯ ই জুলাই, ২০২০ রাত ১১:৫৫

ডাব্বা বলেছেন: আবদুল হাকিমের নামে চলে যাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। কাজীদার আইনি লড়াইয়ে অনেক ভুল আছে। আবদুল হাকিম প্রাপ্ত সুযোগের ব্যবহার করছেন। হয়তো অনৈতিকভাবেই।
ধন্যবাদ।

৩| ১০ ই জুলাই, ২০২০ রাত ১২:২১

বিপ্লব06 বলেছেন: ধন্যবাদ একটা সুন্দর পোস্টের জন্য। বেশ ইনফরমেটিভ। যদিও, মাসুদ রানা পাঠকরা অধিকাংশ ফ্যাক্টগুলা অলরেডি জানে

আগে থেকেই বইলা রাখলাম, আপনার এই পোস্টে ব্লগের কিছু দুষ্ট প্রকৃতির লোকজন আইসা ল্যাদানোর ধান্দায় থাকবে।

ভালো থাকবেন।

১০ ই জুলাই, ২০২০ ভোর ৬:৩৭

ডাব্বা বলেছেন: হাসি পেয়ে গেল কথা শুনে। দেখি কি হয়। ভাল থাকবেন। :)

৪| ১০ ই জুলাই, ২০২০ ভোর ৬:৫৩

স্বামী বিশুদ্ধানন্দ বলেছেন: কুয়াশার সাথে আমার পরিচয় ক্লাস ফোর থেকে এবং মাসুদ রানার সাথে ক্লাস সেভেনে। আমার কাছে রানা, সেবা ও কাজীদা অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। যদিও মৌলিক নয় রানার বইগুলো কিন্তু এর দুর্দান্ত আকর্ষণ আমাদের অনেককেই বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে সাহায্য করেছে । আরেকটি বিষয় না বললেই নয়, রানার প্রথম দিকের বইগুলো (যা কাজীদার লেখা) দুর্দান্ত - প্রচন্ড নস্টালজিক করার মতো। সুতরাং রানার উদ্ভাবক কাজী আনোয়ার হোসেনই। কাজীদা ও হাকিম সাহেবের মধ্যে সম্মানজনক সমঝোতা আশা করি।

১২ ই জুলাই, ২০২০ সকাল ৭:৩২

ডাব্বা বলেছেন: আমার মনে হয় আদালতের বাইরেই এর সম্মানজনক সমাধান। আমি ও তাই আশা করি।

৫| ১২ ই জুলাই, ২০২০ সকাল ১১:১১

আমি সাজিদ বলেছেন: হাকিম যদি রায় তার পক্ষে পেয়ে ক্যারেকটারের নাম চেঞ্জ করে তাহলে তারে অনেক মানুষই রাস্তায় বের হলে জুতা মারবে। সুযোগসন্ধানী শুয়োর একটা।

১৪ ই জুলাই, ২০২০ রাত ৩:১৩

ডাব্বা বলেছেন: হাকিম বলছেন গল্পটা তার, আর যে চরিত্রগুলো তার না সে নামগুলো বদলে দেবেন। মাসুদ রানার আদলে উনি 'জাকি আজাদ' বের করেছিলেন, কেউ পড়েনি। নাম শুনেছেন কখনো?

৬| ০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ৯:১৪

ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন:




আমি এ বিষয়ে মোটামোটি জানি। শেখ আবদুল হাকিম অন্যলোক দ্বারা প্রভাবিত হয়ে মামলা করেছেন। মূল ঘটনা কাজী আনোয়ার হোসেন বলে গেছেন আর শেখ আবদুল হাকিম লিখে গেছেন। - সহজ হিসাব। কাজীদার বয়স হয়েছে এখন এই ঝামেলা কাজীদার জন্য সত্যি সত্যি কষ্টকর।

যাইহোক শেখ আবদুল হাকিম প্রমাণ করেছেন অর্থলোভ বড় লোভ।

০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ভোর ৪:৫১

ডাব্বা বলেছেন: আপনার মন্তব্য শুনে ভালো লাগলো। মনটা নিজের অজান্তেই কেমন হালকা হয়ে গেল।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.