নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

প্রতিবাদ তো পজিটিভ ও হতে পারে।

ডাব্বা

জোছনা রাত। হট চকলেট। লেক এর পাড়। ছোট ছোট চুমুক। ভেজা রাস্তায় চেনা মুখ। আলিঙ্গন। হট চুমুক। ছোট ছোট জোছনা রাত। চকলেট লেক এর পাড়।

ডাব্বা › বিস্তারিত পোস্টঃ

ট্রাম্পের ইরান জিঘাংসা

১৩ ই নভেম্বর, ২০২০ সকাল ৯:২৮

পাচদিন আগে, রাজত্বের এই শেষ বেলায়, মতের অমিলের কারণে পেন্টাগনের চিফ এবং প্রতিরক্ষা সচিব মার্ক এসপারকে বরখাস্ত করলেন ট্রাম্প। ট্রাম্পের হায়ার অ্যান্ড ফায়ার নীতির এটাই শেষ উদাহরণ হয়তো হবে না তবে তার একমুখী my way or highway নীতির একটি জাজ্বল্যমান উদাহরণ হয়েই তিনি ইতিহাসের অংশ হয়ে গেলেন তা একরকম নিশ্চিতই। অবশ্য এই অ্যামেরিকার ব্যাপারে কিছুই আগাম বলা যাচ্ছে না। বুশ জুনিয়রকে দেখে আমার ধারণা হয়েছিল এর চাইতে অসাড় কেউ কখনোই অ্যামেরিকার রাষ্ট্রপ্রধান অন্তত হবে না আর।

এসপারের বিদায়ের দিনই ইজরেইলি(Israel) সংবাদমাধ্যমের বরাতে Axios News জানিয়েছে যে ইরানের বিরুদ্ধে নতুন আর কী অবরোধ আরোপ করা যেতে পারে তা নিয়ে অ্যামেরিকা, ইজরেইল, এবং Gulf এর বন্ধু রাষ্ট্রদের মধ্যে চলমান আলোচনার পালে নতুন করে হাওয়া লেগেছে। গার্ডিয়ানে প্রকাশিত তথ্য অনুসারে ইরানকে আরো কোনঠাসা করার ট্রাম্প পরিকল্পনার বাস্তবায়নে কয়েকমাস আগে থেকেই হোয়াইট হাউয ভিত্তিক একটি শক্তিশালী টিম কাজ করে যাচ্ছিল।

ট্রাম্প ক্ষমতায় এসে যে কাজগুলোর মাধ্যমে বিশ্বের বিরাগভাজন হয়েছিলেন তার মধ্যে অন্যতম ছিল ইরানের সাথে বহুপাক্ষিক পারমাণবিক চুক্তি Joint Comprehensive Plan of Action(JCPOA) থেকে এককভাবে সরে আসা। বিশ্বকে কাঁচকলা দেখানো এই সিদ্ধান্ত ছিল এক অমানবিক, ক্রুর, ও নিষ্ঠুর পদক্ষেপ।

চুক্তির আগে ইরান যে পরিমান ইউরেনিয়াম মজুদ করেছিল তা দিয়ে প্রয়োজনের সময় না খেয়ে হলেও ৮-১০ টা পারমাণবিক বোমা বানানোর সক্ষমতা অর্জন করে ফেলছিল। এ সক্ষমতা ইরানকে নিয়ে শত্রুদেশের মাথাব্যথাকে মাইগ্রেনে রূপ দেয়। তাই অ্যামেরিকা সহ অন্যান্য দেশ ইরানের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অবরোধ আরোপ করে পারমাণবিক কার্যক্রম বন্ধ করতে আদেশ দেয়। অবরোধে ইরানের স্বাভাবিক জীবন ব্যবস্থা ধ্বসে পড়ে মানবিক সংকটের মুখোমুখি হয়। ২০১৫ সালের শেষের দিকে বারাক ওবামার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ইরান এ চুক্তির আওতায় ইরান ধীরে ধীরে পারমাণবিক শক্তি বর্জন করবে এবং তার বিনিময়ে চলমান তেল রপ্তানি সহ অন্যান্য বানিজ্যিক অবরোধের শাস্তি থেকে কিছুটা রেহাই দেয়া হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়। বহুজাতিক এই চুক্তিটি ছিল ইরানের জন্য মন্দের ভালো। অর্থনৈতিক ও বানিজ্যিক অবরোধে হাসফাস করতে থাকা জীবনে শান্তি ফেরাতে ইরানের এর বাইরে আর কোন পথও ছিলো না। চুক্তির প্রভাবে পারমাণবিক শক্তি অর্জন থেকে সরে আসলেও জনজীবনে সুস্থতা ফিরে আসতে শুরু করে।

স্বাভাবিকভাবেই সবমিলিয়ে এই চুক্তিটিকে বিশ্বশান্তিতে একটি মাইলফলক হিসেবে দেখা হচ্ছিলো সংশ্লিষ্ট সকল মহলে। কিন্তু ট্রাম্প ২০১৮ সালের মার্চে এই চুক্তি থেকে এককভাবে সরে আসেন তার মিত্রদেশগুলোর চোখ কপালে তুলে দিয়ে।

তিনি নির্বাচনী প্রচারাভিযান কাল থেকেই এই চুক্তির বিরোধিতা করেন এবং বলেন, এটি একটি খোড়া ও দুর্বল চুক্তি। তিনি নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি রক্ষাকল্পে চুক্তি পূর্ববর্তী অবরোধে ফেরত যান এবং ইরানের অর্থনীতিকে আবার পঙ্গুত্ব বরনের দিকে ঠেলে দেন। ইরানের আমদানি রপ্তানি, ব্যাংকিং ব্যাবস্থা, সোনা, লোহা, গ্রাফাইট, তেল, খাদ্য ইত্যাদি সমস্তটাই এই এমবার্গোর কারণে পর্যুদস্ত। ট্রাম্প সেখানেই থেমে থাকেননি। তিনি সমস্ত অ্যামেরিকান, ইয়োরোপীয় ও অন্যান্য বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানের উপর ইরানের সাথে ব্যাবসায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন।

অ্যামেরিকা JCPOA থেকে সরে আসায় ইহুদি লবি উল্লসিত হয় এবং ট্রাম্পকে একজন দুরদর্শি এবং বিশ্বনেতা হিসেবে উল্লেখ করে ইজরেইলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু বক্তব্য রাখেন।

২০২০ এর নির্বাচনকে সামনে রেখে অবরোধের মাত্রা চুড়ান্ত করার লক্ষ্যে গত কয়েকমাস ধরে ট্রাম্প ইরানের উপর চাপ প্রয়োগ করে আসছিল। উদ্দেশ্য ছিল, চাপ সামলাতে গিয়ে যদি ইরান উল্টো পাল্টা কিছু করে বা বলে বসে তাহলে ট্রাম্প তার আরোপিত অবরুদ্ধতাকে যথাযথ ছিল বলে আগামী প্রশাসন (২০২০) কে তা মেনে চলতে বাধ্য করতে পারবে। এতে ইরান কিছু গাইগুই করলেও এখনও একক ভাবেই চুক্তিটি মেনে চলার চেষ্টা করে যাচ্ছে যদিও এরই মধ্যে বেশ কয়েকবার তার সরকার চুক্তির দুটি শর্ত ভেঙ্গে ইউরেনিয়াম সম্মৃদ্ধকরন কার্যক্রম চালু করে।

ট্রাম্প এই সুযোগের অপেক্ষাতেই ছিলেন। গত রবিবার-সোমবার (নভেম্বর ৮-৯) ট্রাম্পের ইরান বিষয়ক মুখপাত্র ইলিয়ট অ্যাব্রামস ইজরেইল ভ্রমণ করেন প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর সাথে তাদের নতুন অবরোধের বিষয়ে আলোচনা করতে। প্রশাসনের উর্ধতন কর্মকর্তারাও আবুধাবি ও রিয়াদে যাচ্ছেন এ বিষয়ে শলাপরামর্শ করতে। সাম্প্রতিককালে মুসলিম আবুধাবির সাথে ইহুদি ইজরেইলের কুটনৈতিক, অর্থনৈতিক, ও সামাজিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এবং মুসলিম ইরানের সাথে মুসলিম সৌদি আরবের শত্রুতাতো যথেষ্টই পুরনো।

তবে এই নতুন অবরোধ আলোচনাকে পারমাণবিক বোমার সাথে সম্পৃক্ত না করে ব্যালিস্টিক মিসাইল তৈরি, সন্ত্রাসবাদে ইরানের কথিত মদদ দান, এবং দেশে মানবাধিকারের নড়বড়ে অবস্থানের সাথে সুচতুরভাবে সম্পর্কিত করা হচ্ছে যাতে বাইডেন প্রশাসন এইসব বহুল প্রচারিত ও প্রচলিত মতের বিরুদ্ধে গিয়ে পদক্ষেপ নিতে রাজনৈতিকভাবে দুর্বল থাকে। মানবাধিকার, সন্ত্রাস, এবং শত্রুদেশ অভিমূখী ক্ষেপণাস্ত্র - সবই স্পর্শকাতর ইস্যু এবং সহজে বাজারজাত করা যায়।

ট্রাম্প প্রশাসনের এই কৌশলের ব্যাপারে International Crisis Group এর ইরান বিষয়ক বিশেষজ্ঞ ন্যায়সান রাফাতির মতামতটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে আমার মনে হয়েছে। রাফাতি বলেন, "ট্রাম্প চাচ্ছেন ইরানের বিরুদ্ধে বাকি দশ সপ্তাহে অবরোধের আঙ্গিক এমনভাবে বাড়িয়ে তোলা যাতে আগামী প্রশাসন চাইলেও ইরানের প্রতি নমনীয় হতে না পারে"।

প্রশ্ন হলো, ট্রাম্প ইরানকে নিয়ে এতো তৎপর বা তটস্থ কেন?











মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৩ ই নভেম্বর, ২০২০ সকাল ১০:০৭

অনন্য দায়িত্বশীল আমি বলেছেন: আমেরিকা সবমসয়ই ইজরাইল ফাস্ট এই নীতিতে বিশ্বাসী তাই যে সরকারই আসুকনা কেন তাতে ওদের ইজরাইল নীতি পরিবর্তন হবেনা। মুসলিমরাও কখনো ঐক্য গড়ে তুলতে পারবেনা।

১৪ ই নভেম্বর, ২০২০ ভোর ৫:২৮

ডাব্বা বলেছেন: ভাবার ব্যাপার হলো, ট্টাম্পের সময়ে ইহুদিদের বিরুদ্ধে হেইট ক্রাইম কমেনি, বরং বেড়েছে। নব্য নাৎসিবাদও হালে পানি পেয়েছে।

২| ১৪ ই নভেম্বর, ২০২০ দুপুর ১:৫৬

রাজীব নুর বলেছেন: ট্রাম্প বোকা মানুষ। উনি আবেগ দিয়ে কাজ করেন, বুদ্ধি দিয়ে না।

১৪ ই নভেম্বর, ২০২০ রাত ৮:৩০

ডাব্বা বলেছেন: আবেগ দিয়ে মিলিয়ন ডলার ব্যবসায়ী হওয়া সম্ভব না ব্রাদার। নমিনেয়শ্যন পাওয়াও সম্ভব না। তবে ইলেকশ্যনে জেতা সম্ভব। ট্রাম্প কে নিয়ে কোন একদিন গবেষণা হবে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.