নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

প্রতিবাদ তো পজিটিভ ও হতে পারে।

ডাব্বা

জোছনা রাত। হট চকলেট। লেক এর পাড়। ছোট ছোট চুমুক। ভেজা রাস্তায় চেনা মুখ। আলিঙ্গন। হট চুমুক। ছোট ছোট জোছনা রাত। চকলেট লেক এর পাড়।

ডাব্বা › বিস্তারিত পোস্টঃ

ডোনাল্ড ট্রাম্প: ঘৃণার সঙ্গে বসবাস

১৪ ই নভেম্বর, ২০২০ সকাল ১০:০৫

ক্রাইস্টচার্চ, নিউজিল্যান্ডে মসজিদে সন্ত্রাসী হামলায় ৫১ জনের মৃত্যুতে যখন সারা বিশ্ব স্তম্ভিত তখন heartless ট্রাম্প Brietbart এ প্রকাশিত একটি নিউজের লিংক শেয়ার করেন। সেই নিউজে মুসলিমদের rapefugees(refugee'র সাথে মিলিয়ে) নামে সম্বোধন করা হয়েছিল। পাশাপাশি পাশ্চাত্যের Islamophobia বা ইসলামভীতি নিয়ে ঠাট্টা মশকরায় পূর্ণ ছিল লেখাটি। সেখানে আরো লিখেছিল যে 'সন্ত্রাসবাদই ইসলামের মূল ধারার কার্যক্রম'।

Breitbart এমন একটি প্ল্যাটফর্ম যেখানে ইসলাম ও মুসলিম বিদ্বেষি প্রচারণার সমস্ত মসলা পাওয়া যায়। এই প্ল্যাটফর্মের তৎকালীন প্রধান মালিক স্টিভ ব্যানন ছিলেন ট্রাম্পের ২০১৬ সালের নির্বাচনী প্রচারণার প্রধান। পরবর্তীতে তিনি হোয়াইট হাউযে Chief Strategist পদে নিয়োগপ্রাপ্ত হন যা আক্ষরিক অর্থেই তাকে অ্যামেরিকার দ্বিতীয় শক্তিধর ব্যাক্তিতে পরিনত করে।

একজন রাষ্ট্রপতি কতখানি অবিবেচক ও অরাষ্ট্রপতিসূলভ হলে ব্যাননের মতো প্রতিষ্ঠিত বর্নবাদীকে দেশের স্পর্শকাতর গুরুত্বপূর্ণ পদে বসিয়ে সম্মানিত করেন তা ভেবে আমরা হতবাক হয়েছিলাম।

ট্রাম্প নিজে একজন বর্নবাদী ও ইসলামবিদ্বেষী প্রানী। এটাই হচ্ছে তার ব্যক্তিত্ব। তিনি এই পশুবৎ ব্যক্তিত্বটি চার বছর রাষ্ট্রপতিরূপে বয়ে বেড়িয়েছেন। বর্নবাদের প্রসার ঘটিয়েছেন সারা বিশ্ব জুড়ে। Neo Nazi দের উত্থান ঘটেছে তার আমলে এবং তারই পৃষ্ঠপোষকতায়। যার ফলশ্রুতিতে ক্রাইস্টচার্চের সন্ত্রাসী হামলাকারী ব্রেন্টন টারান্ট ট্রাম্পকে মনে করতেন, '(আমরা) একই পথের এবং (ট্রাম্প) সাদারাই শ্রেষ্ঠ(white supremacy) মতবাদের নতুন প্রতীক।'

ট্রাম্পের ইসলাম বিদ্বেষ কখনো লুকানো ছিল না। ২০১১ সালে বারাক ওবামার নির্বাচনী প্রচারণাকে বাধাগ্রস্ত করতে বারবার চেষ্টা করেছেন। 'বারাক একজন গোপন মুসলিম', এই ছিল তার ভাষ্য, তার ক্ষোভ। তার মতে মুসলিম মানেই অ্যামেরিকার শত্রু। ওবামা কোন ফেরেশতা ছিলেন না। বিভিন্ন মুসলিম রাষ্ট্রে তিনি ৮ বছরে ২৬০০০ বোমা নিক্ষেপ করিয়েছিলেন কিন্তু ট্রাম্পের কর্মকাণ্ড, কথা বার্তা, চাল চলন, চিন্তাভাবনা এত নিম্নস্তরের যে তার সামনে ওবামাকে ফেরেশতার মতোই লাগে।

ট্রাম্পকে আমি বেশ ভালোভাবেই জানি। উনার ভাষার ব্যবহার নিয়ে আমি একটি মজার ক্লাসও নিয়েছিলাম ২০১৬ তে। ধনী ব্যবসায়ী ট্রাম্পের রাজনীতিতে আসার আগে সবচেয়ে বড় পরিচিতি ছিল The Apprentice এর হৌস্ট হিসেবে। এই রিয়েলিটি শৌ টা আমার ভালোই লাগতো। তার 'you are fired' কথাটা খুব জনপ্রিয়তা পেয়েছিল। ট্রাম্পকে আরেকটি কারণেও জানতাম, এক যৌনকাতর ধনী ব্যবসায়ী হিসেবে। তার কাতরতার খ্যাতি এমন পর্যায়ের ছিল যে মেলানিয়া তাকে নিজের ফোন নাম্বার দিতে চাননি পরিচয়ের পর। একটি সাক্ষাৎকারে দেখেছিলাম মেলানিয়া বলছেন, পরিচয়ের বেশ কদিন পর তিনি তার ফোন নাম্বার শেয়ার করেন।

২০১৫ সালে সেপ্টেম্বরে টেলিভিশনে দেখেছিলাম, ট্রাম্প সমর্থক এক মহিলা ট্রাম্পকে প্রশ্ন করছেন, 'আমাদের দেশে একটি সমস্যা আছে। সমস্যাটি হলো মুসলিম '। 'ঠিক বলেছেন', ট্রাম্প মাথা নেড়ে সায় দিলেন। এরপরই নভেম্বরে Morning Joe নামের একটা তৃতীয় শ্রেণীর টক শৌ তে বললেন, 'অ্যামেরিকায় মসজিদ গুলোকে সতর্কতার সাথে পর্যবেক্ষণে রাখতে হবে'। আরো বলেন, 'মুসলিমদের একটি ডাটাবেইজ তৈরি করতে হবে যাতে তাঁদের চলাফেরার উপর নজর রাখা যায়'। এর দুদিন পরই বলেন, 'ওয়ার্ল্ড ট্রেইড সেন্টার ভেঙ্গে পড়ার দিন হাজার হাজার মুসলিম আনন্দোৎসব করেছিল', যেটা ছিল একটি ডাহা মিথ্যা কথা। এই মিথ্যাকে হালাল করার জন্য একটি ভিডিও ছড়ানো হয় পরবর্তীতে যেটি ছিল একটি আরব রাষ্ট্রের কয়েক বছর আগের কোনও এক পারিবারিক আনন্দের সময়ে তোলা ভিডিও। এই ২০১৫ সালেরই ডিসেম্বরে ঘোষণা দেন যে অ্যামেরিকায় মুসলিমদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হবে এবং নির্বাচিত হয়ে মার্চের ৭ তারিখে সবাইকে আশ্বস্ত করেন, 'Islam hates us' বলে।

প্রেযিড্যান্টরা কি দেশে বিভক্তির জন্ম দেন না বিভক্তি জোড়া দেন? পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী রাষ্ট্রের প্রেযিড্যান্ট কি বিশ্বকে আইসোলেশ্যনে ঠেলে দিয়ে নিজেকে নিয়ে মগ্ন থাকতে পারেন? ট্রাম্প তার চারপাশে এত বর্নবাদী ও ইসলামোফোবিয়ায় আক্রান্ত পারিষদ নিয়ে কি আসলেই দেশ চালাতে চান? নাকি এটাও তার কাছে জাস্ট একটা ব্যাবসা? নিজের লাভ হলেই হলো।
আমরা যদি ট্রাম্পের নির্বাচনী অভিযানের টিমকে সামনে রাখি দেখা যাবে তার প্রতিটি সদস্যের সাথে বর্নবাদ এবং/অথবা ইসলাম বিদ্বেষী গ্রুপের সাথে যোগাযোগ আছে এবং এটা হচ্ছে মিনিমাম।

আবার হোয়াইট হাউযের টিমকে সামনে রাখুন দেখবেন একই প্রজাতির প্রাণীতে ভরা। এদের একজন FBI Agent সেবাশ্চিয়ান গোরকা Islamophobia'র কারণে চাকরি হারান, কিন্তু হোয়াইট হাউযে ট্রাম্পের উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ পেয়ে যান। মাইকেল ফ্লিন, ট্রাম্পের নিরাপত্তা উপদেষ্টা, তার ভাষায়, 'ইসলাম হচ্ছে ক্যান্সারের মতন'। ফ্লিন তো বিশ্বাসই করতেন না যে ইসলাম একটা ধর্ম। তার বিশ্বাস, 'ইসলাম ধর্মের আড়ালে লুকানো রাজনৈতিক মতবাদ'। তিনি আরো মনে করতেন যে ইসলামভীতি(Islamophobia) যুক্তিযুক্ত। মাইক পম্পেও, সেক্রেটারি অব স্টেইট আর জন বল্টন, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা - দুজনেরই ধর্ম ইসলাম বিদ্বেষ।

বল্টন মুসলিম বিরোধী থিংক ট্যাংক Gatestone Institute এর সভাপতি ছিলেন ২০১৮ সাল পর্যন্ত। Gatestone Institute এর প্রচারিত কয়েকটি নিউজের নাম দিচ্ছি, আগ্রহী হলে পড়ে দেখতে পারেন। (লেখার সাথে লিংক দিতে সমস্যা হচ্ছে)- ১) France: Toward Total Submission to Islam, ২) Is the United Kingdom an Islamist Colony?,৩) Germany submits to Sharia Law, ৪) Destruction of Free Speech.

প্যামেলা গেলার ও রবার্ট স্পেন্সার নামে দুজন কুখ্যাত বুদ্ধিবৃত্তিক মুসলিম বিরোধী অ্যাকটিভিস্টের একটি বইয়ের মুখপত্র লিখে দেন বল্টন। সে বইয়ের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল বারাক ওবামাকে মুসলিম প্রমান করা ও ওবামা যে অ্যামেরিকার জন্য ক্ষতিকর তা প্রচার করা। তাদের কথা ছিল, 'মুসলিম বারাক ওবামার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে অ্যামেরিকার বিরুদ্ধে যুদ্ধ'।

মাইক পম্পেও, মুসলিম বিরোধী মতবাদ ও conspiracy theory উসকানো সংগঠন ACT for America'র একজন কট্টর সমর্থক। এই সংগঠন থেকে তিনি award ও গ্রহণ করেছেন। সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা ব্রিজিট গ্যাব্রিয়েল এর একটি উক্তি শুনুন, 'হিজাব পড়া মুসলিম মহিলারা অবশ্যই সন্ত্রাসী'।

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই নভেম্বর, ২০২০ সকাল ১০:৪৫

নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: ট্রাম্প অধ্যায় শেষ,এখন নতুন করে চিন্তা করুন।মুসলমানরা যে অধ্যায় শুরু করেছে সেটা কোথায় যেয়ে শেষ হয়,সেখানে ভাবার আছে অনেক কিছু।
মুসলমানরা বিরাট বড় একটা যুদ্ধে যয়লাভ করলো,পরাজিত শক্তি এটা মেনে নিতে পারছে না।পশ্চিমাদের কপালে চিন্তার রেখা।উত্তপ্ত হয়ে উঠছে পৃথীবি।

১৪ ই নভেম্বর, ২০২০ রাত ৮:২৫

ডাব্বা বলেছেন: ধন্যবাদ।

২| ১৪ ই নভেম্বর, ২০২০ দুপুর ১২:৩২

এমেরিকা বলেছেন: আমেরিকায় মুসলিমের সংখ্যা ইহুদীদের চেয়েও কম। সংখ্যার বিচারে মুসলিমরা সেখানে চতুর্থ। বিশ্ব রাজনীতিতেই মুসলিম জাতির তেমন একটা প্রভাব প্রতিপত্তি দেখা যায়না। মুসলিম জাতি নানা মত ও পথে বিভক্ত। একপক্ষ আক্রমণের শিকার হলে আরেকপক্ষ তালিয়া বাজায় নয়তো গায়ে বাতাস লাগিয়ে ঘুরে বেড়ায়। তারপরেও আমেরিকান নীতি নির্ধারকরা মুসলিম সেন্টিমেন্টকে এতবড় সমস্যা হিসেবে দেখে কেন? তারা মুসলিমদের ব্যাপারে এতটা সিরিয়াসই বা কেন?

১৪ ই নভেম্বর, ২০২০ রাত ৮:২৫

ডাব্বা বলেছেন: এর ব্যাখ্যা দেয়ার মেধা আমার নেই।

৩| ১৪ ই নভেম্বর, ২০২০ দুপুর ১:২৩

রাজীব নুর বলেছেন: ট্রাম্প মানুষের কাছ থেকে খুব অবহেলা পেয়েছে ।

১৪ ই নভেম্বর, ২০২০ রাত ৮:২৩

ডাব্বা বলেছেন: মোট ভোটের ডিফরেন্স কিন্তু তা বলে না। অ্যামেরিকার হাফ ভৌট কিন্তু উনি পেয়েছেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.