নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

https://www.facebook.com/mahimul.islamakash

হারব বলে আসিনি,কাঁদব বলে হাসিনি

অন্ধকারের আলোকিত বাসিন্দা

আসেন দুইটা কথা কই ।

অন্ধকারের আলোকিত বাসিন্দা › বিস্তারিত পোস্টঃ

সাধারণ একটি পরিবারের গল্প (কাল্পনিক)

২৪ শে এপ্রিল, ২০১৩ বিকাল ৫:২৭

পিঠাপিঠি ভাই বোন । টগর আর পলাশ । কাউকে যদি বলা হয় এদের ভেতর কোনটা ছেলের নাম আর কোনটা মেয়ের নাম বের করতে তাহলে বাজি ধরতে পারি পারবে না । কারণ দুইটা নামই ছেলেদের হয় । যাই হোক আমি টগর । আমার বোনের নাম পলাশ ।পলাশের নামটা আমাদের শ্রদ্ধেয় আব্বাজান রেখেছেন ।এ থেকেই বুঝা যায় যে আমাদের আব্বাজানের মাথাটা একটু খারাপের দিকে । এই ''মাথা খারাপ '' কথাটা খালি আমি আর পলাশই বলতে পারব । আর কেউ যদি বলে আমার আব্বার মাথা খারাপ তাহলে আমার দুইজন মিলেই তাকে ''সাইজ'' করব ।সরাসরি অবশ্য করব না । পরোক্ষ ভাবে এমন টাইট দিব যে নিজের বাপের নামও ভুলে যেতে পারে । অবশ্য আমাদের দুইজনের কারোরই এ কথা বিশ্বাস হয় না যে কাউকে মাইর দিয়ে তার বাপের নাম ভুলিয়ে দেয়া যায় । এ বিষয়ে আমাদের দুইজন প্রায়ই একটা চুক্তিতে আসি । চুক্তিটা হইল আমাদের দুইজনের ভিতর লটারি হবে ।লটারিতে যার নাম উঠবে সেই বিজয়ী । তো চুক্তি অনুযায়ী সে অপরজনকে ইচ্ছামত পিটাইতে পারবে ,যতক্ষন না সে বাবার নাম ভুলে যায় ।আর আমাদের বাবা থাকবে রেফারি ।বাবার নাম ভুলে গেলে কিন্তু বাবাকে আর জিজ্ঞেস করা যাবে না ।তখন আবার নতুন নিয়ম । যতক্ষন পর্যন্ত বাবার নাম তুমি মনে করতে পারবে না ততক্ষন মার খেতে হবে ।পলাশের খবর জানি না তবে পরে যাতে বাবার নাম মনে করা যায় এ জন্য আমি বাবার নাম আমার ড্রয়ারএ একটা সাদা কাগজে লেখে রেখেছি । চুক্তি টুক্তি সবই করা শেষ । কিন্তু লটারিই এখন পর্যন্ত করতে পারলাম না । ভয় লাগে তো !আমরা দুই ভাই বোন অনেক খেলা খেলি । শুধু মাত্র স্কুলের টাইম বাদে সারাদিন আমাদের একসাথেই থাকা হয় । তবে আমরা সব খেলা খেলতে পারি না । যেসব খেলায় অনেক অনেক মানুষ দরকার সেগুলো আমরা খেলতে পারি না । আমরা চোর ডাকাত বাবু পুলিশ খেলতে পারি না ,কুমির তোর জলে নেমেছি খেলতে পারি না । আরো অনেক খেলাই খেলতে পারি না । এ নিয়ে অবশ্য আমাদের দুঃখ নেই । কারণ একমাত্র আমাদের খেলাতেই অনেক বড় একজন খেলতে আসে ।তিনি আর কেউ না,আমাদের আব্বাজান । আব্বাজানের বয়স বেশি হইলে ৩০ হবে । এর মধ্যেই মনে হয় যেন ৪০ বছর হয়ে গেছে তেনার । হুহ ! আমি বুঝি না আমাদের কে নিয়ে এত এত চিন্তা করার কি আছে?? আমরা বড় হইসি না?? কত বার বলি ,শুনলে তো! আমাদের কথা শুনতে তো ওনার বয়েই গেছে ! তবে যতই বয়স্ক লাগুক না কেন তার মত সুন্দর পুরুষকে বাবা হিসেবে পাওয়াও ভাগ্যের মত ব্যাপার । একবার বাসায় এক মেহমান এসেছিল । বাবার ফ্রেন্ড । আমি আর টগর খুব খুব ছোট ছিলাম তখন ।এখন আমার বয়স ১২,পলাশের ১১,তখন আমার বয়স ছিল ৬,তো ওই আঙ্কেল্টা বলল আমি নাকি দেখতে পুরাই বাবার মত হয়েছি । শুনে আমি তো খুব খুশি । কিন্তু আমার খুশি কি আর মহারাণীর সহ্য হয়? উনি সুন্দর করে আঙ্কেলকে গিয়ে কামড়ে দিয়ে আসলেন । আমাদের বাসাটা আমাদের তিনজনের জন্য অনেক বড় । আমার একটা রুম,বাবার একটা রুম আর পলাশের একটা রুম । এতগুলা রুম থাকলে কি হবে আমরা তো থাকি বাবার রুমেই । বাবা এত যে ভান করতে পারে না! হুহ ! আমরা থাকলে যেন উনার কাজের মস্ত বড় ক্ষতি হয়ে যাবে । অথচ মনে মনে যে উনি খুশি হন তা কি আমরা বুঝি না???যাই হোক অনেক কথা বলে ফেললাম । এই তিনজন মিলেই আমাদের পরিবার । অনেকেই হয়ত ভাবছেন আরেকজন কোথায় গেলেন ? আমাদের কারোরই মাকে নিয়ে কথা বলতে ভাল লাগে না । এই তিনজনই তো বেশ আছি । অনেক আগেই মা আমাদের ছেড়ে চলে যান বাবার ওই বন্ধুটির সাথে । তাই এ বাসায় কখনো মায়ের কথা তোলা হয় না । তবে মাকে ছাড়া আমরা যে খুব একটা খারাপ আছি তাও কিন্তু না ।ভালই তো আছি আমরা তিন জন ।যাই হোক যা বলছিলাম কয়দিন ধরে বাবাকে বলছি আমাকে একটা মোবাইল কিনে দিতে , না তা তো উনি দিবে না । বলে তোমার মোবাইলের দরকার কি? কত দরকার থাকতে পারে না???আমাদের ক্লাসের সবারই তো মোবাইল আছে। আমার থাকলে সমস্যা কই? তখন বাবা এমন একটা হাস্যকর কথা বলল সেটা লেখতেও ইচ্ছা করে না ।তবে ভাল লেখক হইতে হলে কোন শব্দই পরিহার করা যাবে না ।তবে আমি ওই শব্দটার পরিবর্তে ''ইয়ে'' ব্যবহার করব । আপনারা যা বুঝার বুঝে নিন । বাবা তখন আমাকে বলল সবাই যদি ইয়ে খায় তাহলে কি তুমিও খাবে ??তখন আমি চুপ হয়ে গেলাম । তখনকার মত ।ভাগ্য ভাল ওইদিন আমার স্কুল বন্ধ ছিল আর মহারাণী স্কুলে ছিলেন । নাহলে তো মনে হয় সারাদিন খেপাইত । এজন্য আল্লাহকে একটা ধন্যবাদ দিলাম । উনার ইস্টিশান নাই । কখন কি বলে ফেলে কে জানে? সেইদিন ওনার তিনটা বান্ধবীর সামনে(বিশেষ করে নীলার সামনে)আমাকে বাঁদর বলেছেন ! এরকম করলে চলে বলেন??আপন ভাইয়ের সাথে কেউ এমন করতে পারে? মাঝে মাঝে তো মনে হয় ও আমার বোন ই না । সে একবারও ভাবল না নীলার সামনে আমার মান ইজ্জত কোথায় গেল! বাকিদের কথা তো বাদই দিলাম ! প্রেস্টিজ বলে তো আমারো কিছু আছে নাকি?এই কথাটা একবার বাবার কাছে বিচার দিচ্ছিলাম , উনি কোত্থেকে এসে পন্ডিতের মত বলেন তোর তো কোন পার্সোনালিটী নাই ।নতুন নতুন শব্দ শিখে আর আমার উপর ঝাড়ে , শব্দটার মানে জানি না । জানা থাকলে হইত । তবে মনে হয় খুব একটা খারাপ কিছু বলে নাই । নাহলে কি বাবা আর হো হো করে হাসতে পারতেন বলেন ?? যাই হোক মোবাইলের প্রয়োজনীয়তা আমি আজকে ওদের বুঝাব । স্কুল থেকে টিফিন টাইমে বের হয়ে যাব ঠিক করলাম ।অবশেষে টিফিনের ঘন্টা পড়ল । কয়েকটা বড় ভাইয়া দেখলাম ওয়াল টপকে পালিয়ে যাচ্ছেন । আমি তাদের অনুসরণ করলাম । হাঁটতে হাঁটতে আমি অনেক কিছু ভাবছি । কোথায় যাব কি করব?অনেক কিছু ভাবতে ভাবতে আপন মনে হাঁটতে লাগলাম। পকেটে বিশটা টাকা ছিল । এর বেশি দিলে কি হইত?? এখন আমি বিশ টাকা দিয়ে খাব কি???সেসব তো উনি ভাববেন না । বেশি টাকা

দিলে তো ছেলেমেয়ে খারাপ হয়ে যাবে! যত্তসব ফালতু চিন্তা ভাবনা। এখন তো খুব খিদা লাগসে । সামনে দেখি আনারস বেচতেসে ।দশ টাকা প্লেট । দুই প্লেট খেয়ে ফেললাম । তারপরও খুব খিদা লাগছে । একবার বাসায় ফিরে যাওয়ার চিন্তা মাথায় আসল । কঠোর ভাবে নিজেকে কন্ট্রোল করলাম । কি হবে যেয়ে? ওরা তোমার কে ? ওরা তোমাকে কিছু দেয় যে ওদের কাছে যাবা ? তখন কার মত নিজেকে প্রতিহত করলাম । করে গেলাম রমনা পার্ক এ । কত লোক এখানে হাঁটাহাঁটি করছে। ভাল লাগল এসব দেখে ।বাবার উপর আরেকবার

মেজাজ খারাপ হল । এত সুন্দর একটা জায়গায় কখনো আনে নি কেন ? একটা জায়গায় দেখলাম কত গুলো ছেলে মিলে ক্রিকেট

খেলছে । ওদের খেলা দেখলাম কিছুক্ষন । তারপর আস্তে আস্তে সন্ধ্যা হয়ে এল । ছেলেরাও যার যার বাড়ি চলে যেতে লাগল ।

একসময় নিজেকে সম্পুর্ন একা আবিষ্কার করলাম । এদিকে অন্ধকারো হয়ে এল । আপনারা আবার ভাববেন না আমি অন্ধকার ভয় পাই

বলে ফিরে যাচ্ছি । আমি যাচ্ছি এটুকু দেখতে যে ওরা আমাকে হারিয়ে কি করে । তাও দূর থেকে দেখে আবার চলে আসব । ভিতরে ঢুকার

প্রশ্নই আসে না । বাসার কাছাকাছি গেলাম । কই কোন কান্নাকাটির আওয়াজ তো পাচ্ছি না । মানে কি এসবের? যাই একটু দেখেই আসি ।

যেয়ে দেখলাম দরজায় তালা দেওয়া । আর দরজার উপর একটা কাগজে লেখা আছে,

''মি... টগর। আপনাকে ছাড়াই চাইনিজে যেতে হচ্ছে বলে দুঃখিত । আর আপনার মোবাইল আনা হবে । তবে এবারো যদি আপনি পরীক্ষায়

ডাব্বা মারেন তাহলে আপনার মোবাইল নিয়ে নেওয়া হবে । এখন আমরা না আসা পর্যন্ত এখানে দাঁড়িয়ে থাকেন । ''

আপনারাই বলেন,এসবের কোন মানে হয়?

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৫ শে এপ্রিল, ২০১৩ সকাল ১০:৩৮

স্পাইসিস্পাই001 বলেছেন: ভাল লাগলো .....+++

উপস্থাপনা প্রশংসনীয় .....

এটা কি গল্প না কি আপনার নিজের কাহিনী.....???

যদি বাস্তব হয় তবে আপনি খুব ভাগ্যবান এমন একটি বাবা আর বোন পেয়েছেন....।

"Life Is Beautiful" মুভিটা অবশ্যই দেখবেন আশা করছি....আর দেখলে তো কথাই নেই ....

আপনার পরিবারের জন্য শুভকামনা রইলো.... ভাল থাকবেন... :)

২৫ শে এপ্রিল, ২০১৩ সকাল ১০:৪০

অন্ধকারের আলোকিত বাসিন্দা বলেছেন: নাহ ভাই নিজের কাহিনী না । আমার আম্মাজান অসাধারণ এক মানুষ । তবে বাকিদের চরিত্র আগের মতই আছে । শুধু আমরা তিন ভাই বোন । আর আপনাকে ধন্যবাদ । আপনার পরিবারের জন্যও শুভকামনা রইলো.... ভাল থাকবেন...আর হুম মুভিটা দেখেছি

২| ২৫ শে এপ্রিল, ২০১৩ সকাল ১১:০০

স্পাইসিস্পাই001 বলেছেন: মন্তব্য করার পর খেয়াল করেছি যে হেডিং এ লেখা আছে কাল্পনিক .....।

ধন্যবাদ.... ভাল থাকবেন....।

২৫ শে এপ্রিল, ২০১৩ সকাল ১১:০৩

অন্ধকারের আলোকিত বাসিন্দা বলেছেন: :-B B-) ;)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.