নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি? প্রচুর মুভি দেখি, পজিটিভ ক্যারেক্টারকে সাপোর্ট করি, ভূল করলে স্বীকার করি, তথ্য জানতে ভালবাসি, সবকিছুতেই ইন্টারেস্ট আছে, নিউট্রাল ওপিনিওন দেই। কিন্তু ৯৯% চান্স আপনি আমার লজিকে অফেন্ডেড হবেন!

BM Khalid Hasan

পৃথিবীটা সার্ভাইবারদের জন্য, তাই বুলিং ও হিউমিলিয়েশন ওভারকাম করলাম। গ্রাজুয়েশন করে ক্রিয়েটিভ রাইটার, ইনডিপেন্ডেন্ট ডিরেক্টর-সিনেমাটোগ্রাফার এবং শো উপস্থাপক হিসেবে কাজ করেছি। পারকৌর ও ফাইট করা হবি।

BM Khalid Hasan › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাংলাদেশি অনুবাদকদের গল্প প্রাঞ্জল হয়না কেন? ঘাটতি কি?

২২ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:২৫



বন্ধুরা বইমেলা থেকে কয়েকটা অনুবাদ করা বই পড়তে দিয়েছিল। গল্প ভাল হলেও পড়তে বিরক্তি লেগেছে। লেখকেরা এমনভাবে অনুবাদ করেছে যা শুনতে খুব ‘রোবোটিক’ মনে হচ্ছিলো। একসময় বেশি মেকি লাগার জন্য পড়াই বাদ দেওয়া লেগেছে।

আমি তরুণ লেখক বা অনুবাদকদের ছোট করছি না। যারা বই পড়ে ও লিখে তাদের মননশীলতা খুব ভালো হয়। কেন তাদের অনুবাদ প্রাণ হারায় এই পোস্টে সেটা নিয়েই কথা বলবো।

নতুন লেখকদের অনুবাদ প্রাঞ্জল হয়না কেন?

একটা সময় অনেকদিন পড়াশোনা ও গবেষণা করা মানুষেরাই লেখক হতো। কিন্তু এখন ফিল্টারিং বা কোয়ালিটি চেক নেই বললেই চলে। যে-কেউ চাইলে বই বের করতে পারে। অনেক কিশোর ও তরুণ তাদের পছন্দের বিদেশী গল্প অনুবাদ করে লেখা শুরু করে। কিন্তু তারা অনুবাদের ধরণ সহ বেশ কিছু বিষয় খেয়াল রাখেনা

অনুবাদের ধরণ কি কি?

অনুবাদের বেশ কয়েকটি ধরণ আছে। এর মাঝে স্কুলের ব্যাকরণে সবাই পড়েছি অনুবাদ মূলত ২ প্রকারঃ ভাবানুবাদ ও আক্ষরিক অনুবাদ। মূল ভাষার সকল শব্দের প্রতিশব্দ ব্যবহার করে অনুবাদ করাকে আক্ষরিক অনুবাদ বলে। আর মূল ভাষার বার্তা ঠিক রেখে নিজের মত অনুবাদ করাকে ভাবানুবাদ বলে।

অনুবাদকদের যে সমস্যাগুলো হয়ঃ
* কেমন অনুবাদ হলে পাঠক স্বস্তি পাবে তারা বুঝতে পারেনা
* অনুবাদের ধরণ নিয়ে তারা পড়াশোনা করেনা
* পর্যাপ্ত চর্চার অভাবে তারা বাস্তবিক অনুবাদ করতে পারেনা
* ভাষাগত পার্থক্য না জানার কারণে তারা ভাবানুবাদ করতে পারেনা
* অনেকে মূল গল্পের আবহ নষ্ট হবে এই ভয়ে ভাবানুবাদ করেনা

কেন অনুবাদের ঘাটতি তৈরি হয়?

গল্প, নাটক, সিনেমা-তে আমাদের জীবনের ঘটনাই দেখানো হয় । প্রতিদিনকার জীবনে আমরা ‘ক্যজুয়ালি’ কথা বলি। কিন্তু আক্ষরিক অনুবাদ করার সময় লেখা বেশ গোছানো ও শুদ্ধ মনে হয়। তাই পরিস্থিতির সাথে মিল না থাকায় পড়তে অস্বস্তি লাগে।
আবার সব অনুবাদকের ‘স্কিলসেট’ ও ‘স্টাইল’ একরকম না। অনেকে পর্যাপ্ত ‘রিসার্চ ম্যাটেরিয়েল’ না পেয়ে চর্চা করতে পারেনা। এসব বিভিন্নরকম কারনে অনুবাদকের অনুবাদ খারাপ হয়।

কিভাবে অনুবাদ প্রাঞ্জল করা যায়?

বর্ণনা প্রাঞ্জল করতে আপনাকে নিজেরে দেশের পাঠকের প্রত্যাশা অনুযায়ী বাক্য বানাতে হবে। গল্পের চরিত্র, ডায়ালেক্ট ও জার্গন বুঝে নিজের ভাষায় পরিবর্তন করতে হবে। এতে লেখা ন্যাচারাল মনে হবে।

চরিত্র অনুযায়ী অনুবাদ করার উদাহরণ

অনুবাদ করার সময় কে কে কথা বলছে সেটা দেখতে হবে। ধরুন, আপনার গল্পে দুটো চরিত্র আছে। তাদের সংলাপ এরকমঃ
:Let’s have a walk.
:Let me have some food first.

সংলাপটাকে সাধারণ আক্ষরিক অনুবাদ করলে এরকম হয়ঃ
:একবার হেঁটে নেওয়া যাক।
:আমাকে কিছু খাবার পেতে দাও।

ধরুণ দু বন্ধু বিকেলবেলা ড্রয়িং রুমে বসে কথা বলছে। তখন অনুবাদ এরকম হয়ঃ
:চল, হেঁটে আসি।
:দাড়া, কিছু খেয়ে নিই

আবার একই কথা কিন্তু রাস্তায় একজন লোক আর ভিখারির মাঝে হতে পারে। যেখানে লোকটা ভিখারিটাকে হিউমারাস ভাবে চলে যেতে বলছেঃ
:চলো হাঁটা যাক (ভদ্রভাবে ‘হাঁটো এখান থেকে’ বুঝিয়েছে)
:আগে কিছু খাইতে দেন

ডায়ালেক্ট ও জার্গন-অনুযায়ী অনুবাদ করার উদাহরণ

দুটো জিনিস বুঝে অনুবাদ করতে হবে, তা হলো ‘ডায়ালেক্ট’ ও ‘জার্গন’। প্রত্যেকটা ভাষার একটা ডায়ালেক্ট থাকে। অঞ্চল বিশেষে একই কথা ভিন্ন ভাবে বলা হয়। আবার সব দেশের কিছু নিজস্ব ‘জার্গন’ থাকে। আপনার কাছে যেটা গালি মনে হবে, সেটা বিশেষ সময়ে গালি হিসেবে ব্যবহার নাও হতে পারে। তাই আক্ষরিক অনুবাদ করলে জার্গন না মিলে সৌন্দর্য্য নষ্ট হবে আর অতিরঞ্জিত মনে হবে।

যেমনঃ ইংরেজিতে লেখক বলছেঃ
:I see a bird sitting on my window, every night. I mirror myself to that son of a bitch!

সাধারণ কেউ এর অনুবাদ করবে এরকমঃ
:আমি জানালায় একটা পাখি বসা দেখি, প্রতি রাতে। কুকুরের বাচ্চাকে যেন আমি আয়নাতে দেখি!

এটা কোনো সেন্স মেক করবে না, পাঠক বিরক্ত হবে। কিন্তু ভালো অনুবাদকারী অনুবাদ করবে এরকমঃ
:প্রতি রাতেই পাখিটাকে জানালায় দেখি। বেচারা আমার মতই একা হয়তো।

পরিশেষ

গল্পের পরিস্থিতি, চরিত্র ও অনুভূতি অনুযায়ী সহজভাবে ভাবানুবাদ করলে পড়তে সুবিধা হয়। হুমায়ুন আহমেদকে সকলে পছন্দ করতো কারণ উনি সহজ ভাষায় লিখতেন। অনুবাদ ও এক ধরনের সৃজনশীল লেখা। তাই কোনো তথ্য ভূল হবেনা এমন করে ভাবানুবাদ করলে পাঠক ও লেখক দুজনেরই উপকার হবে।

For Work and Consultation
BM Khalid Hasan
Creative Writer | Director | Presenter
Call: +8801768512038
Mail: [email protected]

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ২২ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:০৮

রাজীব নুর বলেছেন: আমাদের দেশে দারুন অনুবাদ করতেন হুমায়ূন আহমেদ।
তার 'অমানুষ' অথবা ''দ্য এক্সরসিস্ট' বইটা পড়লেই বুঝা যায়।

২২ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:১৭

BM Khalid Hasan বলেছেন: সঠিক বলেছেন। ওনাদের সমসাময়িক সবার অনুবাদই কমবেশি ভাল লাগতো। কিন্তু সেবা প্রকাশনী আর বাতিঘরের জনপ্রিয়তা বাড়ার পর কিশোর/নব্য অনুবাদকদের সংখ্যাটা বেড়ে যায়। এই সময়টাতে বেস্ট সেলার গল্পের মোটামুটি অনুবাদ হলেই পাবলিশাররা প্রকাশ করে দিতো।

২| ২২ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫০

নিমো বলেছেন: আমরা শিল্পকলাকে নিছক শিল্পে পরিণত করেছি। এখন সাহিত্য অর্থ কামানোর পণ্য মাত্র।

২৩ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:২৭

BM Khalid Hasan বলেছেন: দুঃখজনক সত্য। যখন ডিজিটাল মিডিয়ার চাহিদা বেড়েছে তখন বিজনেস টিকিয়ে রাখতে অনেকে ‘লিট ভ্যালু’ কমিয়ে রসালো করে লিখে। কিন্তু এতে সাহিত্যের ক্ষতি হচ্ছে। অনিয়মিত মানুষ ওই রসালো জিনিস ইনস্ট্যান্ট কিনলেও তারা সিজনাল ক্রেতা। এদিকে নিয়মিত পড়া মানুষগুলো ভাল কনটেন্ট না পেয়ে পড়া কমিয়ে দিবে বা ভিন্ন মাধ্যম বেছে নেবে। এতে সাহিত্য ও বিজনেস একসাথেই ক্ষতির মুখে পড়ছে।

৩| ২২ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১০:১১

কামাল১৮ বলেছেন: ভালো সাহিত্যিক না হলে ভালো অনুবাদক হওয়া যায় না।

২৩ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:২৯

BM Khalid Hasan বলেছেন: ঠিক বলেছেন। সাহিত্যিক মাইন্ডসেট থাকলেই নিজের পার্সপেক্টিভ ছাড়াও অন্যের পার্সপেক্টিভ বুঝে অনুবাদ করা যায়। এতে সার্বজনীনভাবে লেখা ভাল লাগে ও সহজ হয়।

৪| ২২ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১০:৩৭

জ্যাক স্মিথ বলেছেন: অনুবাদ করতে হলে উক্ত বিষয়, চরিত্র, উক্ত সমাজের চিত্র ইত্যাদি বিষয়ে যথেষ্ট ধারণা থাকতে হবে। অক্ষরিক অনুবাদ অখাদ্য হয় তাই ভাবার্থই হচ্ছে আসল বিষয়। লেখক কি বুঝাতে চেয়েছেন তা হবহু অনুবাদ নয় বরং তা নিজ ভাষায় যথাযথ শব্দমালা ব্যবহার করে, সঠিক আবেগ ঠিক রেখে উপস্থাপন করাটাই হচ্ছে ভাবার্থের মুনশিয়ানা।

আপনি ভালো কিছু উদাহরণ দিয়েছেন।

২৩ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৩১

BM Khalid Hasan বলেছেন: ‘সমাজের চিত্র’, এটা খুব ভাল একটা ডেফিনিশন বলেছেন। প্রত্যেকটা সোসাইটি, কমুনিটি ও গ্রুপের কিছু ভিন্নতা থাকে। তাই সামাজিক চিত্রপট না বুঝলে চরিত্রের ভূল জায়গাতে ভূল বিহেভিয়ার দেখানো হয়ে যাবে।

৫| ২৩ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৪৯

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: শুধু পেশাগতভাবে না দেখে, বিষয়টাকে দরদের জায়গা থেকেও দেখতে হবে। স্থান-কালও বিবেচনা করতে হবে।

২৩ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৯

BM Khalid Hasan বলেছেন: খুবই সুন্দর একটা পয়েন্ট বলেছেন। মোটামুটি কাজ চলে যাবে ভেবে অনেকসময় অনুবাদে নিজের লেখার মত ‘টাচ’ দেওয়া হয়না। কিন্তু ওভাবে ভাবলে সারাজীবন পাবলিশারের এমপ্লয়ি হয়ে থাকতে হবে। নিজের লেখক স্বত্ত্বার বিকাশে সবধরনের কাজে দরদ থাকা আবশ্যিক।

৬| ২৪ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ১০:১১

ভগবান গণেশ বলেছেন: লেখাটি ভালো লাগলো।

২৪ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১২:০৩

BM Khalid Hasan বলেছেন: ধন্যবাদ। খুব ছোট পযায়ে থেকে মেইনস্ট্রিম লেখকদের বিষয়ে মতামত দিয়ে উল্টো অসন্তুষ্টির কারণ হবো কিনা এই আশংকা করছিলাম!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.