![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ঐ দূর থেকে দূরে, যেতে চাই অজানাতে...........। খুঁজে ফিরি তোমায়। কখনো পাই, কখনো হারাই........... তবুও আকাশ ছোঁয়া স্বপ্ন বুনে যাই............... ফেবুতে আমি, www.facebook.com/bonolota.sen.7923
পর্ব- ১
পর্ব- ২
পর্ব- ৩
পর্ব- ৪
পর্ব- ৫
পর্ব- ৬
পর্ব- ৭
পর্ব- ৮
পর্ব- ৯
পর্ব- ১০
পর্ব- ১১
পর্ব- ১২
ক্লাস শেষে কিছু টুকটাক কাজ শেষ করে টিএসসি তে গেলো তিতলি। ভীষন টায়ার্ড লাগছে। ক্যাফেটেরিয়ার সামনে দেয়ালে হেলান দিয়ে বসে আছে।
হঠাৎ কে যেন পাশ থেকে ডেকে উঠলো, "এইযে মিস তিতলি"
তিতলি ঘুরে তাঁকাতেই দেখে সেদিনের সেই ছেলেটা দাঁড়িয়ে, যে তাকে লিফট দিয়েছিলো।
> আরে কি ব্যাপার! আপনি এখানে? আজকে অফিসে যাননি?
> নাহ্, ফাঁকি মারলাম। প্রত্যেক দিন কি আর অফিসে যেতে ভালো লাগে! আচ্ছা যদি কিছু মনে না করেন, আমি কি আপনার পাশে বসতে পারি?
> হ্যা শিওর, বসুন।
> আপনার ডিপার্টমেন্টে গিয়ে কিছুক্ষন ঘুরঘুর করছিলাম, ভেবেছিলাম আপনার সাথে দেখা হবে। তারপর এমনি টিএসসিতে আসলাম। ওমা! এসে দেখি আপনি এখানে বসে আছেন!
[তিতলি ভ্রু কুচকে তাঁকালো]
> আপনি কিভাবে জানেন আমি কোন ডিপার্টমেন্টে পড়ি? আর আমি যে ঢাকা ইউনিভার্সিটির স্টুডেন্ট এটাই বা কিভাবে জানেন?
> কিছু কথা থাক না গোপন...... [রহস্যময় মুচকি হাসি]
তিতলি আর মিথুন বসে বসে বেশ কিছুক্ষন গল্প করলো......
> চলেন বের হই। আমার চা খেতে ইচ্ছা করছে। আপনি খাবেন?
> হুম খাওয়া যায়।
> চলেন কনার দোকানে যাই।
> নাহ্, কনার দোকানে যাব না। আমার চা রুবেল ভালো বানাতে পারে, চলেন রুবেলের দোকানে যাই।
> আচ্ছা চলেন যাই....
ওরা দুজন রুবেলের দোকানের পাশে দেয়ালের ওপর বসে বসে চা খাচ্ছে....
> তারপর তিতলি, এখন কোথায় যাবেন?
> বাসায় যাব।
> হুম। এক কাজ করি, আপনাকে বাসায় নামিয়ে দিয়ে আসি।
> আজকেও?
> কেন, আপনার কি কোনো অসুবিধা হবে?
> না ঠিক তা না....
> তাহলে আর কি! চলেন যাই।
যেতে যেতে তারা টুকটাক অনেক কথা বললো। গল্প করতে করতেই একসময় তিতলিদের বাসার গেটের সামনে চলে এলো তারা।
> মিস্টার ইরফান.....
> জি বলুন।
> আজকে কিন্তু আপনার বাসায় আসতে হবে।
> আসতেই হবে? [মুচকি হেসে]
> জি আসতেই হবে। ঘরের দরজা পর্যন্ত এনে আপনাকে চলে যেতে দিবো, এতোটা অভদ্র আমি না।
> ঠিক আছে ভদ্র বালিকা, চলেন আপনার বাসায় যাই.....
তিতলিদের বাসাটা অসম্ভব ভালো লাগলো মিথুনের। চারপাশে বাগান আর গাছপালা দিয়ে ঘেরা পুরনো আমলের বিশাল তিনতলা বাড়ি।
তিতলির বাবার সাথে অনেক গল্প করলো মিথুন। তিতলির বাবাকেও তার খুব ভালো লাগলো, ভীষন মিশুক মানুষ।
সন্ধ্যায় মিথুন যাবার সময় তিতলি তাকে গেট পর্যন্ত এগিয়ে দিলো।
> ইরফান, আবার আসবেন কিন্তু।
> তিতলি, আমার ডাকনাম মিথুন। আমাকে প্লিজ মিথুন বলে ডাকবেন, সারাদিন অফিসে "ইরফান, ইরফান" শুনতে শুনতে কান ঝালাপালা!
> হা হা হা, আচ্ছা ঠিক আছে। মিথুন সাহেব আবার আসবেন কিন্তু।
> অবশ্যই আসবো, আসতেই হবে..... [রহস্যময় মুচকি হাসি]
.............................................
বর্ষনের সাথে আজকাল বেশ ভালোই যোগাযোগ হয় তিতলির। দেখা হয়, ফেসবুকে চ্যাট হয়, ফোনে কথা হয়...
আজকে বিকালে বর্ষনের সাথে দেখা করতে যাবে তিতলি। হালকা বেগুনী রঙের একটা ড্রেস পড়েছে সে আজকে....
ধানমন্ডি ১৫/এ রাস্তায় তারা পাশাপাশি হেঁটে যাচ্ছে, টুকটাক কথা বলছে।
> তিতলি, আজকে আমার বাসায় চলো।
> না থাক, আরেকদিন যাব।
> আরে চলো তো, এইযে কাছেই ৯/এ তে আমার বাসা।
> ঠিক আছে চলো।
বর্ষনের বাসায় আসতে না আসতেই সন্ধ্যা হয়ে গেলো। বর্ষনের বাসাটা বিশাল। ৩৫০০ স্কয়ার-ফিট এর বিশাল ফ্ল্যাট। রুম গুলো বেশ বড়। তিনটা বারান্দা, বারান্দা গুলোও বেশ সুন্দর। বাসার ভেতরটা খুব সুন্দর সাজানো, গোছানো।
বর্ষন কিচেনে গিয়ে কফি বানাচ্ছে, তিতলি ঘুরে ঘুরে পরো ফ্ল্যাটটা দেখছে।
বর্ষন কফি নিয়ে এসে দেখে তিতলি লিভিং রুমের সাথের বারান্দায় গিয়ে রেলিং ধরে দাঁড়িয়ে আছে। বর্ষন বারান্দায় গিয়ে তিতলির পাশে দাঁড়ালো।
> কেমন লাগলো বাসাটা?
> খুব সুন্দর। একাই থাকো?
> একা এসেছি তাই একাই থাকি। আব্বু, আম্মু যখন ঢাকায় আসে তখন এখানে থাকে।
কিছুক্ষন চুপচাপ থাকার পর বর্ষন তিতলির খুব কাছে গিয়ে দাঁড়ালো, একেবারে গা ঘেষে। তিতলি খানিকটা চমকে গেলো...
> তিতলি, আমার চোখের দিকে তাঁকাও। তুমি কি কিছু দেখতে পাচ্ছো?
> বর্ষন আমি কিছু বুঝতে পারছি না, তুমি কি বলতে চাচ্ছো?
বর্ষন দুহাত দিয়ে তিতলির গাল স্পর্শ করলো, তিতলির কানের কাছে মুখ নিয়ে ফিসফিস করে বললো, "I love you"
হঠাৎ করে তিতলির মনে হলো পৃথিবী ওলট-পালট হয়ে যাচ্ছে, তার কাছে সবকিছু অসম্ভব রঙিন মনে হচ্ছে। তার মনে হচ্ছে, অসংখ্য রঙ তার চোখের সামনে খেলা করছে.........
............................................
তিতলি খুব সেজেগুজে বের হয়েছে। লাল রঙের একটা শাড়ি পড়েছে, কপালে বড় একটা লাল টিপ, দুহাত ভর্তি লাল রঙের কাঁচের চুড়ি, কানে লাল রঙের কানের দুল। চোখে খুব সুন্দর করে কাজল দিয়েছে, ঠোঁটে লাল লিপস্টিক.......
বর্ষন বারান্দায় দাঁড়িয়ে দেখছিলো তিতলি রিকসায় করে তার বাসার দিকে আসছে। বর্ষন চুলায় চায়ের পানি বসিয়ে দিয়ে তিতলির জন্য অপেক্ষা করতে থাকলো.....
> Honey you are looking so beautiful...
> thank you. [মুচকি হেসে]
> আমার রুমে গিয়ে বসো, আমি চা নিয়ে আসছি।
একটু পরে চা নিয়ে বর্ষন তার রুমে গেলো। তিতলিকে ভীষন সুন্দর লাগছে, মনে হচ্ছে বিছানার ওপর লাল টুকটুকে একটা পুতুল বসে আছে.....
তারা চা খেতে খেতে কথা বলতে লাগলো...
> তিতলি তোমার বাবা কেমন আছে?
> আছে ভালো।
বর্ষন একদৃষ্টিতে তিতলির দিকে তাকিয়ে আছে।
চাটা দু, তিন চুমুক খাওয়ার পরই তিতলির কেমন যেন লাগছে। সবকিছু ঘোলা ঘোলা দেখছে। কয়েক মিনিট পরেই তিতলি সেন্সলেস হয়ে বিছানায় পড়ে গেলো.........
তিতলির ঘুম ভাঙলো অনেকক্ষন পরে। সে চোখ খুলতেই দেখে সে বর্ষনের রুমে একা, আশেপাশে কেউ নেই। ডান হাতটা একটু নাড়াতেই এক টুকরো কাগজ পাওয়া গেলো, তাতে লেখা---
"তিতলি, তুমি যখন এটা পড়ছো তখন আমি আর বাংলাদেশের মাটিতে নেই। আমি এখন অ্যামেরিকার পথে...
তুমি যে আমাকে ভালোবাসো তা আমি অনেক আগেই টের পেয়েছিলাম। কিন্তু তোমার জন্য অপ্রিয় সত্য হলো আমি তোমাকে কখনোই ভালোবাসিনি। আমি তোমাকে নিয়ে খেলতে চেয়েছিলাম। I just love to play with girls....
তোমার সাথে অনেক কিছুই করতে পারতাম। আজকে ভেবেছিলাম তোমাকে নিয়ে খুব খেলবো...
কিন্তু হঠাৎ তোমার চেহারার দিকে তাঁকাতেই কি যেন মনে হলো....
যাকগে, ভালো থেকো। sorry sweetheart..."
তিতলি কি করবে বুঝতে পারছে না। তার মাথাটা খুব ঝিমঝিম করছে। সে ব্যাগ খুলে মোবাইল বের করতে নিবে তখন হাতে একটা কার্ডের খোঁচা লাগলো। পরে দেখলো ঐটা মিথুনের কার্ড। সে কি করবে কিছু বুঝতে পারছে না। মিথুনের নাম্বারে ফোন করলো...
> হ্যালো মিস্টার ইরফান, আমি তিতলি। I need help. আমাকে বাঁচান প্লিজ, আমার ভীষন বিপদ...
> তিতলি কি হয়েছে তোমার? কোথায় তুমি?
> আপনি একটু ধানমন্ডিতে আসেন, ৯/এ..........
ঠিকানাটা বলে শেষ করতে না করতেই তিতলি আবার সেন্সলেস হয়ে পড়ে গেলো.........
.......................................
জ্ঞান ফেরার পর তিতলি দেখলো সে তার বাসায় তার বিছানায় শুয়ে আছে। তার পাশে মিথুন বসে আছে। বাবা চেয়ারে বসে আছে। মিথুন ব্যাকুল ভাবে তিতলিকে জিজ্ঞেস করছে,
> are you ok now? তোমার কোনো ক্ষতি হয়নি তো? তুমি ঠিক আছো তো?
> আমি কিছু জানি না। আমি একটু পানি খাবো.....
তিতলি কিছুটা স্বাভাবিক হওয়ার পর জানতে পারলো গতরাত সাড়ে ১১টায় মিথুন তাকে বর্ষনের বাসা থেকে উদ্ধার করেছে। তিতলির অনেক বড় ক্ষতি হতে পারতো। বর্ষন তিতলির চায়ে বেশ কড়া কিছু ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে দিয়েছিলো.....
তিতলি চুপচাপ বারান্দায় বসে আছে, তার পাশে মিথুন বসে আছে। তিতলির চোখ-মুখ ফোলা, লাল হয়ে আছে। কাঁদতে কাঁদতে এই অবস্থা...
> দেখো তিতলি, মানুষের জীবনে অনেক কিছুই ঘটে। অনেক খারাপ কিছু ঘটে আবার অনেক ভালো কিছু ঘটে। তাই বলে ভেঙে পড়লে হয় না, life goes on. তোমার সাথে অনেক খারাপ কিছু ঘটতে পারতো, তোমার অনেক বড় ক্ষতি হতে পারতো। তোমার ভাগ্য ভালো যে তোমার তেমন কোনো ক্ষতি হয়নি। মানলাম তুমি তাকে অনেক ভালোবেসেছো। একটাবার ভেবে দেখো তো ঐ ছেলেটা যদি তোমার লাইফে আসতো বা তোমাকে বিয়ে করতো তাহলে তোমার কি অবস্থা হত....
প্লিজ তোমার স্বাভাবিক লাইফে ফিরে এসো....
মিথুন কখন যে তিতলিকে ''আপনি আপনি'' থেকে ''তুমি তুমি'' বলা শুরু করেছে, তার খেয়ালই নেই...........
...................................................................
পাঁচ বছর পর, কোনো এক ছুটির সকালে---
মিথুন ডাইনিং রুমে নাশতা করছিলো। হঠাৎ চিৎকার শুনে বেডরুমে ছুটে গেলো....
> কি হয়েছে প্রিন্সেস?
> দেখো না, আমার এ্যাঙ্কলেটটা ছিড়ে গিয়েছে [কাঁদো কাঁদো আহ্লাদি সুরে]
> এদিকে দাও তো দেখি
মিথুন ওটা জোড়া লাগানোর চেষ্টা করছে। তিতলি তার পাশে বসে বাচ্চা মেয়ের মত ছটফট করছে...
> এই আস্তে ধরো, বাঁকা হয়ে যাবে তো, হুকটা ভেঙে যাবে তো...
মিথুন মুচকি হাসতে হাসতে তিতলির দিকে তাঁকালো। আলতো করে তার গালে একটা চুমু দিয়ে বললো,
> my dear princess, trust me, I am an engineer.
> ইঞ্জিনিয়ার হলেই মনে হয় ঠিক করতে পারবা?
> আচ্ছা ঠিক না হলে same আরেকটা কিনে দিবো।
> এইটা একটাই ছিলো মার্কেটে
> আচ্ছা অর্ডার দিয়ে same একটা বানিয়ে দিবো.....
তাদের ছোট্ট টোনাটুনির সংসার এভাবে হেসে, খেলে কাঁটতে থাকলো.........
২০ শে নভেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:৪২
বনলতা মুনিয়া বলেছেন: হা হা হা
২| ২১ শে নভেম্বর, ২০১৩ রাত ৩:৩৪
পরিবেশ বন্ধু বলেছেন: বেশ সুন্দর গল্পকথা
২১ শে নভেম্বর, ২০১৩ ভোর ৪:২৮
বনলতা মুনিয়া বলেছেন: ধন্যবাদ
৩| ২১ শে নভেম্বর, ২০১৩ রাত ৯:২৫
কস্কি বলেছেন: যাক, একবছরে তাইলে শ্যাষ অইলো!!!!
আমিতো ধইরালচিলাম টু বি কান্টিনিয়ূড
শুরুর দিকে পাঁচ ছয় পর্ব পর্যন্ত ঠিকঠাক পড়া অইছিলো, তারপর আর .....চাম পাইলে বাকিগুলো ও পইড়া লমু নে!!
২২ শে নভেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:২৯
বনলতা মুনিয়া বলেছেন: জি অবশেষে শ্যাষ হইলো
বাঁইচা থাকলে ভবিষ্যতে আরো মেগা সিরিয়াল উপহার দিবো
৪| ২২ শে নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ৯:৩৯
এস এম কায়েস বলেছেন: ভালবাসার মানুষটার স্বভাবটা এমন হলে সত্যি অনেক কষ্ট লাগে।
২২ শে নভেম্বর, ২০১৩ রাত ৯:০৭
বনলতা মুনিয়া বলেছেন: হুম
৫| ২২ শে নভেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:১৪
শুকনোপাতা০০৭ বলেছেন: শেষ...শেষ...শেষ!!
২২ শে নভেম্বর, ২০১৩ রাত ৯:০৮
বনলতা মুনিয়া বলেছেন: শেষ
৬| ২৩ শে নভেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:০৩
অস্পিসাস প্রেইস বলেছেন:
কংগ্রাচুলেশন আপু। শেষ পর্যন্ত শেষ হয়েছে। এটা কি বইমেলায় পাব্লিশ হবে?
২৩ শে নভেম্বর, ২০১৩ রাত ৮:২৭
বনলতা মুনিয়া বলেছেন: ধন্যবাদ
যদি কখনো পাবলিশ করি, জানাবো
©somewhere in net ltd.
১|
২০ শে নভেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:২৬
ঘুড্ডির পাইলট বলেছেন: পর্বটা শেষ হয়ে গেলো