![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ঐ দূর থেকে দূরে, যেতে চাই অজানাতে...........। খুঁজে ফিরি তোমায়। কখনো পাই, কখনো হারাই........... তবুও আকাশ ছোঁয়া স্বপ্ন বুনে যাই............... ফেবুতে আমি, www.facebook.com/bonolota.sen.7923
''বাবু খেতে আয়''
এই নিয়ে ১৭ বার হলো রাতের খাবার খেতে ডাকছেন মা। অন্যান্য দিন কখনো এমন হয় না।
আহসান খুব শান্ত একটা ছেলে, কখনো কোনো উচ্চবাচ্য করে না। কখনো তাকে এভাবে বারবার ডাকতে হয় না। এক ডাকেই চলে আসে। আজ হঠাৎ কি হলো ছেলেটার!
আহসান ছোটবেলা থেকেই খুব চুপচাপ, শান্ত-শিষ্ট একটা ছেলে। জীবনের সবচেয়ে স্বর্নালি সময়টাই কেঁটেছে তার ক্যাডেট কলেজের কড়া শাষন আর নিয়ম-কানুনের মাঝে। তার শৈশব জুড়ে আছে কুমিল্লা ক্যাডেট কলেজ।
একজন ক্যাডেট হিসেবে যতটুকু গর্ব, অহংকার নিজের মাঝে থাকা দরকার, সেটার অর্ধেকও তার মাঝে নেই। সে গর্ব বা অহংকারের জায়গাটা দখল করে রেখেছে বহুদিনের জমে থাকা পাহাড় সমান অভিমান।
যে সময়ে তার পরিবারের সাথে হেসে খেলে থাকার কথা, সে সময় তার থাকতে হয়েছে ক্যাডেট কলেজের হোস্টেলে। যে সময়ে মার হাতে ভাত খাবার কথা, মার সাথে আহ্লাদ করার কথা, সে সময় ডাইনিং হলে বসে বৃটিশ জেন্টেল ম্যান এর ভাব ধরে তাকে ফর্ক আর নাইফ নিয়ে খাবারের সাথে যুদ্ধ করতে হয়েছে। যখন তার সমবয়সী অন্য ছেলেরা হৈহৈ করে মাঠে ফুটবল খেলে বেড়ায়, তখন তাকে প্রখর রোদে প্যারেড করতে হয়েছে। আর দশটা ছেলের জ্বর হলে তাদের মা রাতজেগে তাদের মাথার কাছে বসে থাকে, আর ক্যাডেট আহসান অসুস্থ হলে কাউকে কিছু না বলে নিরবে চুপচাপ সহ্য করে যেত। ছোট ছোট ভুলের জন্য তাকে পেতে হয়েছে বিশাল বিশাল শাস্তি......
এরকম অজস্র কারনে একটু একটু করে তার ভিতর জন্ম নেয় অভিমানের বিশাল এক হিমালয়......
এ নিয়ে কখনো সে কাউকে কিছু বলে নি, কোনো প্রতিবাদ করেনি। নিজের কষ্ট নিজের মাঝেই চেপে রেখেছে সবসময়।
সে যখন ক্যাডেট কলেজে ছিল তখন প্রায়ই ভীষন অভিমান করে ভাবতো, কলেজ পাসিং আউট এর পর সে অনেক দূরে কোথাও চলে যাবে সবাইকে ছেড়ে। সে আর ঘরে ফিরবে না, যে ঘর তাকে পর করে পাঠিয়ে দিয়েছিল এই বন্দিশালায় সেখানে সে আর ফিরবে না।
এই ভাবনা থেকেই সে স্বপ্ন দেখতো মেরিন ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার। স্বপ্ন দেখতো, জাহাজের ডেকে দাঁড়িয়ে বাইনোকুলার দিয়ে বহুদূরের কোনো দ্বীপ দেখার.........
ভাগ্য এখানেও তার সাথে দাবা খেললো। তার মেরিন ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার স্বপ্ন পূরন হলো না।
এইচএসি শেষে বিভিন্ন ভার্সিটিতে এডমিশন টেস্ট দিলো। মেরিনেও পরীক্ষা দিলো। বুয়েট ভর্তি পরীক্ষায় সে টিকে গেলো, প্রথম পঞ্চাশজনের মধ্যেই সে ছিল। অথচ BMA এর পরীক্ষায় সে টিকলো না।
তারপর ভেবেছিল ঢাকার বাইরে কোনো পাবলিক ইউনিভার্সিটিতে সে ভর্তি হবে। সেখানেও বাঁধা, তার বাবার কড়া নিষেধ। যেহেতু বুয়েটে চান্স পেয়েছে সেহেতু সেখানেই তাকে পড়তে হবে। এরপর ভর্তি হয়ে গেলো বুয়েটের EEE তে। তার আর ঘর ছেড়ে যাওয়া হলো না........
ভার্সিটির অনেক মেয়েই তাকে পছন্দ করে, এককথায় তার জন্য পাগল! সে ওসব ব্যাপারে কখনো কোনো পাত্তাই দেয় না। সে চুপচাপ তার মত থাকে, তার নিজের জগৎ নিয়ে........
আজ দুপুরের ছোট্ট একটা ঘটনা যেন তার সবকিছু ওলটপালট করে দিয়েছে.........
ক্লাস শেষে গিয়েছিলো ঢাকা ভার্সিটিতে কার্জন হলে, এক বন্ধুর পেনড্রাইভ দেয়ার জন্য। মাঠে বসে কয়েক বন্ধু মিলে গল্প করছিল তারা। হঠাৎ ফিজিক্স ডিপার্টমেন্টের নিচতলায় দাঁড়ানো একটা মেয়ের দিকে চোখ আটকে গেল তার। মেয়েটা সুন্দর তবে খুব একেবারে আহামরি সুন্দর না। কিন্তু এর মাঝে অদ্ভুত কিছু হয়তো আছে, যার কারনে চোখ ফেরানো যায় না। হঠাৎ চোখ পড়লে মনে হবে মেয়েটা বোধহয় ফরেনার, তবে কিছুক্ষন ভালো করে দেখলে বোঝা যাবে এর মাঝে বাঙালিয়ানা আছে। মেয়েটা ফরেনারদের মত ফর্সা, চুল সোনালি, তবে চেহারা অনেকটা বাঙালি মেয়েদের মত। তবে ভার্সিটির আর দশটা মেয়ের মত হয়তো সে রোজ রোজ একইরকম গেটআপে আসে না, মেয়েটাকে দেখে তাই মনে হলো আহসানের। মেয়েটা তখন একটা সাদা রঙের স্কার্ট আর আকাশী রঙের টপস পড়া ছিল, গলায় একটা কালারফুল স্কার্ফ ঝুলছিল। মেয়েটা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে খুব মনযোগ সহকারে খাতায় কি যেন লিখে যাচ্ছিল।
তার পাশ দিয়ে অনেক ছেলেই হেঁটে যাচ্ছিল। কেউ কেউ তাকে দেখে টিজ করছিল, আজেবাজে কমেন্ট পাস করছিল। সেদিকে মেয়েটা কোনো পাত্তাই দিচ্ছিল না, সে তার কাজ করে যাচ্ছিল। অন্য কোনো মেয়ে হলে নির্ঘাত মন খারাপ করে ওখান থেকে সরে পড়তো অথবা কাঁদতে কাঁদতে চলে যেত।
এই ব্যাপারটা দেখে আহসানের খুব ভালো লাগলো। কেন যেন মেয়েটাকেও তার বেশ ভালো লেগে গেলো.........
সেই দুপুর থেকে মেয়েটার চেহারা তার চোখের সামনে ভাসছে। কোনভাবেই মেয়েটার চিন্তা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলা যাচ্ছে না, আহসান আসলে ঝেড়ে ফেলতে চাচ্ছেও না। মেয়েটার কথা ভাবতে তার বেশ ভালো লাগছে। তার মাঝে অন্যরকম এক আনন্দ, অন্যরকম এক ভালোলাগার সৃষ্টি হয়েছে যা আগে কখনো হয়নি।
তার মনে হচ্ছে এই মেয়েটার মাঝে নিজেকে ডুবিয়ে দেয়া যায়, এই মেয়েটার মাঝে হারিয়ে যাওয়া যায়। এই মেয়েটার হাত ধরে যেখানে খুশি সেখানে হারিয়ে যাওয়া যায়.........
(চলবে...)
২২ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ৩:৫৩
বনলতা মুনিয়া বলেছেন: হুম
২| ২২ শে জুলাই, ২০১৪ দুপুর ২:৩৩
Kawsar Siddiqui বলেছেন: ভালো লাগল। চলবে...
২২ শে জুলাই, ২০১৪ দুপুর ২:৫৪
বনলতা মুনিয়া বলেছেন: ধন্যবাদ
৩| ২২ শে জুলাই, ২০১৪ দুপুর ২:৩৫
Kawsar Siddiqui বলেছেন: প্লাস দিলাম এবং প্রিয়তে নিলাম।
২২ শে জুলাই, ২০১৪ বিকাল ৪:২৩
বনলতা মুনিয়া বলেছেন:
৪| ২২ শে জুলাই, ২০১৪ বিকাল ৪:৩০
হিমেল হাসান কাগজের খেয়া বলেছেন: খুব সাধারণ ভাষায় লেখা অসাধারণ কিছু পেলেই আমার অনেক ভালো লাগে। খুব ভালো লাগল। আপনার ব্লগটা আজ প্রথম দেখতে এলাম লেখার প্যাটার্ন দারুন।
এখন মনে হচ্ছে সময় পেলেই আস্তে হবে আপনার লেখা পড়তে। ভালো থাকবেন। নতুন দিনের আশায় রইলাম
২২ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ১১:২৫
বনলতা মুনিয়া বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ। আসবেন আমার লেখা পড়তে
৫| ২২ শে জুলাই, ২০১৪ বিকাল ৪:৫৮
ইরফান আহমেদ বর্ষণ বলেছেন: চলুক ...
২২ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ১১:২৭
বনলতা মুনিয়া বলেছেন: ইনশাআল্লাহ্,
আমি বেঁচে থাকতে.... ডট ডট ডট....
৬| ২৪ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ১:৫৩
মোহাম্মদ তুহিন১৫ বলেছেন: আমার অনেক হিংসে হচ্ছে
এই গল্পটা আমাকে লেখা দরকার ছিল
কারণ একজন ছেলে আর আমার বড়ি ও কুমিল্লায়
আপনি মেয়ে হয়ে কেন ছেলেদের গল্প লিখেছেন
তাই রাগে ফাইট্র্যা যাইতাছি
২৫ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ১২:১৯
বনলতা মুনিয়া বলেছেন: আহেম আহেম!
রাগে ফাইট্র্যা যাবেন না প্লিজ, ইহা সংযমের মাস
৭| ০৬ ই আগস্ট, ২০১৪ সকাল ৯:০৮
মৃদুল শ্রাবন বলেছেন: সে স্বপ্ন দেখতো মেরিন ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার। স্বপ্ন দেখতো, জাহাজের ডেকে দাঁড়িয়ে বাইনোকুলার দিয়ে বহুদূরের কোনো দ্বীপ দেখার........
মেরিন ঈঞ্জিনিয়ারর কিন্তু ডেকে দাড়িয়ে বাইনোকুলার দিয়ে দুরের দ্বীপ দেখে না। মেরিন ইঞ্জিনিয়ার থাকে থাকে জাহাজের ইঞ্জিনরুমে। বাইরের আলো বাতাস থেকে দূরে। আর বাইনোকুলার দিয়ে নেভিগেশন করে মেরিন অফিসার।
প্রফেশনাল জ্ঞান দিয়ে ফেললাম। গল্পের প্লটটা ভালো লেগেছে। মেরিনারদের সম্পর্কে বেশী কিছু জানতে আমার ব্লগটা ঘুরে আসতে পারেন।
০৬ ই আগস্ট, ২০১৪ রাত ৮:৪৮
বনলতা মুনিয়া বলেছেন: প্রথম কথা, আমার মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং স্বমন্ধে খুব বেশি ধারনা নাই।
দ্বিতীয় কথা, গল্পের নায়ক যে বয়সে মেরিন ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার স্বপ্ন দেখতো, সে বয়সের একটা ছেলের মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং স্বমন্ধে এতো ধারনা থাকার কথা না।
যাই হোক, ধন্যবাদ
৮| ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ৮:৩২
বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: ৩য় পর্ব পড়ে ১ম পর্ব পড়তে এলাম।
শুরুটা খুব সাদামাটা ছিল, এখন জমে উঠছে। যাই ২য় পর্ব পড়ে আসি।
০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ৯:১৮
বনলতা মুনিয়া বলেছেন: ধন্যবাদ, পড়তে থাকুন
৯| ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১২:৫৪
মাহবু১৫৪ বলেছেন: ভাল লাগলো
আস্তে আস্তে জমে উঠছে লেখাটা
চলতে থাকুক
+++++
০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৪:০৮
বনলতা মুনিয়া বলেছেন: ধন্যবাদ
১০| ১৪ ই জুন, ২০১৫ রাত ৯:২৬
নীল ফিউজিটিভ বলেছেন: হুম...বেশ ভালো,,,
©somewhere in net ltd.
১|
২২ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ৩:২৪
টানিম বলেছেন: হুম ।অনেক বড়...