![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
অথচ...দিনশেষে আমরা সবাই একা
এই আঁকাবাকা পথ চলে গেছে বহুদূর। মাঠের পর মাঠ পেরিয়ে এই পথ থেমেছে পুরনো নদীর কাছে। ঘোলাটে জলের নদী- আঁকাবাকা সাপের মত, কিশোরীর রুক্ষ চুলের মলিন ফিতের মত। নদীর ওপারে আমার গ্রাম- চিরচেনা সবুজ, ঘন বাঁশঝাড় আর মধ্যাহ্নে শালিকের ডাকে ঘেরা।
কখনো একটানা ডেকে চলে পাতিহাঁস, সদ্যস্নাত শরীরের জলটুকু ঝরাতে ঝরাতে। একটা মধ্যবয়সী দাঁড়কাক উঠোনের কোণায় হেটে চলে খাবারের খোজেঁ। উপরে সুনীল আকাশ আর পায়ের নিচের শীতল মাটি। পুকুরে স্বচ্ছ জলের নিচে বেড়ে ওঠা শ্যাওলা আর দ্বিপ্রহরের অতিথি হয়ে আসা সাদা বকের দল- এরাই আমার শৈশবের বন্ধু। দিগন্তের ওপার থেকে বেরিয়ে আসা একটা হাওয়াই মিঠাইওয়ালার অপেক্ষায় কতদিন উঠোনে বসে পথ চেয়ে থেকেছি। পিতলের ঘন্টার ক্রিং ক্রিং শব্দ আর মাটির ব্যাঙ্ক থেকে বহু কষ্টে তুলে আনা আট আনার একটা কড়ি।
শীতের ঝরাপাতা বিছানো গালিচা জুড়ে হেঁটেছি শৈশবের কতটা পথ। একটা অদ্ভুত মায়ার চাদরে জড়ানো কুয়াশাগুলোকে আপন করে গুটিসুটি হয়ে কাটতো বৈঠকঘরের অলস সকালগুলো। কোন ঝরে পরা সুপারির ডালের মাথায় চেপে ঘুরে আসা কিছুটা পথ আর লাটিমের মসৃণ গতিভরা ছিল দীর্ঘ বিকেলবেলা। কখনো বেলা পড়ে গেলে উঠোনে পাটি পেতে শুনতাম রূপকথার গল্প- গুলেবকাওলি আর আরব্য রজনীর নায়কেরা ছাপ ফেলে যেত মনের গহীনে। চারপাশে ঝি ঝি পোকার ডাক, বাতাসে হাস্নাহেনার ঘ্রাণ, আকাশে উজ্জ্বল চাঁদ আর দাদাভাইয়ের মুখে শোনা গল্পগুলোয় চড়ে ঘুরে আসতাম রূপকথার দেশ থেকে।
সেই দিনগুলোর স্মৃতি হাতড়ে খুঁজে পাওয়া একটা দুটো পুরনো স্মৃতির ঝাপি খুলে মাঝে মাঝে কোন অলস দুপুর আজো দিব্যি কেটে যায় এই বৃদ্ধাশ্রমের চারকোণা রেলিংয়ে ঘেরা বারান্দায়। কখনো কখনো ঝাপসা হয়ে আসে দৃষ্টি। বোধহয় নতুন চশমাটায় আজো খাপ খাওয়াতে পারেনি বৃদ্ধ চোখজোড়া।
©somewhere in net ltd.
১|
২১ শে নভেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৩৫
কস্কি বলেছেন:
লাইফটাই অদ্ভুতুরে চোরাবালি!!!