নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

রাসেল আহমেদ

একজন গাঙ্গচিল

লেখলেখি করি একটু আধটু যদিও লেখার হাত ভালো না। অবশ্য লেখালেখির চেয়ে বড় পরিচয় আমি একজন বড় পাঠক। মুক্তিযুদ্ধ আমার সবচেয়ে বড় অহংকার। সবসময় স্বপ্ন দেখি একটা সুন্দর বাংলাদেশের। ইমেইল[email protected]

একজন গাঙ্গচিল › বিস্তারিত পোস্টঃ

নান্দনিকতা ফিরে পেল কুঠিবাড়ি

২২ শে আগস্ট, ২০১৪ দুপুর ১২:০২

প্রশাসনের হস্তক্ষেপে নয় বছর পর দখলমুক্ত হলো রবিঠাকুরের স্মৃতিবিজড়িত কুষ্টিয়ার শিলাইদহ কুঠিবাড়ির সামনের অধিগ্রহণ করা ছয় একর জমি। জমি দখলমুক্ত করতে গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে সাতটা থেকে বেলা দুইটা পর্যন্ত উচ্ছেদ অভিযান চলে।



প্রশাসনের এ অভিযানকে সাধুবাদ জানিয়েছেন রবীন্দ্রভক্তসহ এলাকার সব শ্রেণি-পেশার মানুষ। এর মধ্য দিয়ে ঐতিহাসিক এ নিদর্শন জৌলুশ ও নান্দনিকতা ফিরে পেয়েছে বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন তাঁরা।



জেলা প্রশাসক সৈয়দ বেলাল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, কুঠিবাড়ির সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছিল। আলাউদ্দিন নামের এক ব্যক্তি এর বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে রিট আবেদন করেন। রিট আবেদনটি খারিজ হওয়ায় জমির দখল নিয়ে অবৈধ স্থাপনাগুলো উচ্ছেদ করা হয়েছে।



প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এ উচ্ছেদ অভিযানে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মো. মনজুরুর রহমান, খুলনা প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের আঞ্চলিক পরিচালক মো. আমিরুজ্জামান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আবু হেনা মোস্তফা কামাল, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) সোহেল রেজা, কুমারখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাহেলা আক্তার, শিলাইদহ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সালাউদ্দিনসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।



ঐতিহাসিক নথিপত্র থেকে জানা গেছে, রবীন্দ্রনাথের পিতামহের মালিকানাধীন জমিদারি দেখাশোনার জন্য রবীন্দ্রনাথ ১৮৮৯ সালের নভেম্বরে প্রথম শিলাইদহে আসেন। এই কুঠিবাড়ি ও পদ্ম বোটে বসে তিনি লিখেছেন বহু কালজয়ী কবিতা, ছোটগল্প ও উপন্যাস। এখানে বসেই কবি গীতাঞ্জলির ইংরেজি অনুবাদ শুরু করেন। প্রায় ১১ একর জমির এই কুঠিবাড়ি প্রাচীরে ঘেরা।



জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, ২০০০ সালে শিলাইদহ রবীন্দ্র কুঠিবাড়ি সম্প্রসারণ প্রকল্পের আওতায় কুঠিবাড়ির মূল সীমানার বাইরে প্রধান ফটকের সামনের আরও ছয় একর জমি সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় থেকে অধিগ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়। কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অধিগ্রহণের জন্য একটি মামলা করা হয়। অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া চলাকালীন ২০০৫ সালে আলাউদ্দিন নামে স্থানীয় এক শিল্পপতি উচ্চ আদালতে এর বিরুদ্ধে একটি রিট আবেদন করেন। রিট মামলার পরিপ্রেক্ষিতে উচ্চ আদালত থেকে মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত উভয় পক্ষকে সব ধরনের কার্যক্রম স্থগিত রাখার নির্দেশ দেন। প্রশাসন উচ্চ আদালতের নির্দেশ মেনে কার্যক্রম স্থগিত রাখলেও স্থানীয় প্রভাবশালীরা সরকারের অধিগ্রহণ করা জমিতে বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণকাজ অব্যাহত রাখেন।



কুঠিবাড়ির জন্য অধিগ্রহণ করা ওই জমিতে প্রভাবশালীরা ২৮টি দোকান, দুটি বাড়ি ও দুটি বেসরকারি সংস্থার (এনজিও) কার্যালয় নির্মাণ করেন। এতে বাড়িটি ঢাকা পড়ে যায়। ২০১২ সালের ১৫ অক্টোবর উচ্চ আদালত ওই রিট আবেদনটি খারিজ করে দেন। সম্প্রতি আদালত থেকে রিট খারিজের কপি প্রশাসনের হাতে এলে গত ২৭ মে ওই ছয় একর জমির দখল নেওয়া হয়। এরপর অবৈধ স্থাপনা গড়ে তোলা মালিকদের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসন মামলা করে। মামলার পর অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে নিতে কুমারখালীর ইউএনও নোটিশ পাঠান। জেলা প্রশাসক সৈয়দ বেলাল হোসেন দখলকারীদের স্থাপনা সরিয়ে নিতে নোটিশ দেন। কিন্তু নোটিশ পাওয়ার পরও স্থাপনা না সরিয়ে উল্টো জেলা প্রশাসককে চাপ সৃষ্টি করেন প্রভাবশালী ব্যক্তিরা।



গতকাল সকালে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে অভিযান শুরু করে জেলা প্রশাসন। সকাল সাড়ে সাতটার দিকে ৪০০ শ্রমিক ও বিভিন্ন যন্ত্রপাতি এনে স্থাপনা ভাঙার কাজ শুরু হয়। বেলা দুইটার দিকে সব অবৈধ স্থাপনা ভেঙে অধিগ্রহণ করা ছয় একর জমি দড়ি দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়।



উচ্ছেদ অভিযানের ব্যাপারে সুশীল সমাজ ও সংস্কৃতিমনা ব্যক্তিরা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষক আবুল আহসান চৌধুরী বলেন, ‘কুঠিবাড়ির আংশিক সুরক্ষা হলো। এখন কুঠিবাড়ির চারপাশে নোটিফাইড এলাকা করে জমি চাষ করতে পারবে। কিন্তু স্থায়ী স্থাপনা করতে পারবে না—এমন ব্যবস্থা করা উচিত। কুঠিবাড়ি রক্ষা সংগ্রাম কমিটির সদস্য ও জাতীয় রবীন্দ্রসংগীত সম্মিলন পরিষদের কেন্দ্রীয় সদস্য শিল্পী অশোক সাহা বলেন, ‘আমাদের আন্দোলনের জয় হয়েছে। অশুভ শক্তি থাকবেই, আর শুভ কাজে জয় হবেই।’



কুষ্টিয়া অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) সোহেল রেজা বলেন, উচ্ছেদ অভিযানে স্থানীয় লোকজনও সহযোগিতা করেছেন। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে কুঠিবাড়ি এলাকায় প্রশাসনের কর্মকর্তারা ছাড়াও ১০০ পুলিশ ও ১৬ জন র্যাব সদস্য নিয়োজিত ছিলেন।



সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মো. মনজুরুর রহমান বলেন, পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে বড় একটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হচ্ছে





Click This Link

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.