নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি স্বেচ্ছাচারী; করি মন যা চায়! শাসন কিংবা শঙ্কায় নয়, আমি স্থির হই ভালোবাসায়।

Biniamin Piash

প্রত্যেকটা মানুষের মতই সাধারণ হয়েও নিজেকে অসাধারণ মনে করি!

Biniamin Piash › বিস্তারিত পোস্টঃ

হানিমুন বিভ্রাট

৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১২:১৯

ছোটমামার সেই বিভ্রান্তকর বিয়ের পর একসপ্তাহ বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত থাকায় আর দেখা করতে পারলাম না।হঠাত করেই একদিন মামার সাথে দেখা হয়ে গেলো আবুলের চায়ের দোকানে,যেখানে আমি আর মামা প্রায়ই বসে আড্ডা মারতাম।আমাকে দেখেই মামা বললেন,
-“কিরে ভাগ্নে,বিয়ে করলাম আমি আর উধাও হলি তুই,ব্যাপারটা কি?”
-“দুঃখে মামা দুঃখে।যাও একজন আমার দুঃখ বুঝতো এখন সেও অন্যের সুখ-দুঃখের ভাগীদার হয়ে গেলো!এখন কি আর তার সময় হবে অন্যের বিপদে ত্রাতা হওয়ার।“
-“ও হো হো!!বিয়ের পর মামা কি পর হয়ে যায় নাকি!হ্যা,তোদের যা উদ্ভট ফ্যামিলি এরকম নিয়ম থাকতেও পারে।তবে তোকে তো আমি আলাদা ভাবতাম,তারমানে তুই সেই…”
-“আরে না না,আমি তো স্রেফ মজা করলাম।বিয়ের পর কি রসিকতাও ভুলে গেলে নাকি!”
-“আর রসিকতা!!”মামা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললেন।“হ্যারে,তুইও কক্সবাজার যাবি নাকি আমাদের সাথে?”
-“মানে??”
-“আরে তুই জানিসনা।হানিমুনে কক্সবাজার যাচ্ছি তো।“
-“আরে কি অদ্ভুত ব্যাপার,এবার তো মনে হচ্ছে তুমি সত্যি সত্যিই পাগল হয়ে গেছো।হানিমুন তোমার,আমি কেন কক্সবাজার যাবো?”
-“আরে তোর বাপ-মা,বড় মামা-মামি আমার শ্বশুর-শ্বাশুরি যেতে পারলে তুই পারবি না কেন!”কিছুটা ক্ষোভ নিয়েই মামা বললেন।
এবারে আমি ঘটনাটা বুঝতে পারলাম।আমাদের বিখ্যাত পাগলা ফ্যামিলির ‘বিয়ে বিভ্রাটে” মন ভরেনি।এবার তারা হানিমুন বিভ্রাটের আয়োজন করছে।মামা কিছুটা অসহায়ের মতই বললেন,
-“বিয়ের ঘটনাটা থেকে তোকে রক্ষা করেছিলাম,এবার তোর পালা।এই অসহায় মামাকে রক্ষা কর।“
-“চিন্তা করোনা মামা।জানোতো,মামা ভাগ্নে যেখানে আপদ নেই সেখানে।ব্যাবস্থা একটা হয়েই যাবে।“
আবুলকে দুটো চায়ের অর্ডার দিয়ে আমি ভাবতে থাকলাম কি করা যায়।অনেক ভেবেচিন্তে শেষে মামাকে বললাম,
-“মামা,তুমি বরং সবার সাথে ঘুরতে যেতেই রাজি হয়ে যাও।তারা সবাই মুরুব্বি মানুষ,একটা শখ করেছে সেটা তো আর ভেস্তে দেওয়া যায় না।“
মামা চা খাচ্ছিলো,আমার কথা শুনে তার মুখ থেকে চা পড়ে গেলো।রাগী রাগী ভঙ্গিতে আমার দিকে তাকিয়ে বললো,
-“তুই সারাজীবন গাধাই থাকবি,আর মানুষ হবি না।“
-“আরে মামা,রাগ করছো কেন।চলো মামীর সাথে কথা বলে দেখি সে কি বলে।“
মামা আমার কথায় কান ও দিলো না।হনহন করেই দোকান থেকে বেড়িয়ে গেলো।আমিও মামার পিছু পিছু ছুটলাম।


সকালে আমি বেশ আরাম করেই ঘুমাচ্ছিলাম,কিন্তু আমার সাধের ঘুমের বারোটা বাজালো মায়ের গগনভেদী চিৎকার।চিৎকার করতে করতে সে আমার রুমেই ছুটে আসলো।
-“এই মুখপোড়া,ঘুম থেকে ওঠ।সর্বনাশ হয়ে গেছে রে।“
-“তো?যা হওয়ার তা হয়েই গেছে,এখন আমি ঘুম থেকে উঠে কি করবো?”
-“ওরে হতচ্ছারা তোর ছোটমামীকে খুজে পাওয়া যাচ্ছে না।“
-“আরে,সে হয়তো ছোটমামার সাথে ঘুরতে বেরিয়েছে।এসে পড়বে,এত চিল্লাচিল্লির কি আছে।“
-“তোর মাথা,লক্ষীছাড়া।তোর মামাকে বেধে রেখে কারা যেন তোর মামীকে তুলে নিয়ে গেছে।তোর মামার সাথে নাকি তাদের কি বোঝাপরা বাকি আছে।‘
এবার আমি সত্যিই খুব চিন্তিত হলাম।বিষয়টা আসলেই সিরিয়াস।মা আরো বলতে লাগলো,
-“কিডন্যাপাররা তোর মামাকে একা গিয়ে তাদের সাথে দেখা করতে বলেছে।যদি অন্য কাউকে সাথে নিয়ে যায় তাহলে নাকি তোর মামীকে মেরে ফেলবে।“
-“খুবই সাংঘাতিক বিষয়।যাই আমি বরং ছোটোমামার সাথে কথা বলে দেখি।“
তারপর ছোটমামা,বড়মামাসহ সবাই আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হলো যে আমি আর ছোটমামা কীডন্যাপারদের দেয়া ঠিকানায় দেখা করতে যাবো।
দুপুরের দিকেই আমরা রওনা দিলাম।
পরদিন সকালে আমরা বাসায় ফোন দিয়ে বললাম,কিডোন্যাপাররা ত্রিশহাজার টাকা দাবি করছে।যত দ্রুত সম্ভব টাকা পাঠিয়ে দাও।আধাঘন্টার মধ্যে তারা টাকা পাঠিয়ে দিলো।


তিনদিন পর
ভয়ে ভয়ে মায়ের নাম্বারে কল দিলাম।মা যেন আমার কলের অপেক্ষাতেই ছিলেন।রিং হওয়ার সাথে সাথেই তিনি রিসিভ করে বললেন,
-“তোরা কই,কোথায় আছিস,তোর মামীকে পেয়েছিস,এতদিন কোথায় ছিলি,ফোন বন্ধ ছিলো কেন?”
-“সব জানতে পারবে মা।শুনেছি তোমরা নাকি ছোটমামার হানিমুন করতে কক্সবাজার আসার প্ল্যান করেছিলে।সবাই এখানেই চলে আসো।তারপর নাহয় সব ঘটনা বলবো।“
মাকে আর কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই কলটা কেটে দিলাম।
কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে বসে আমি,মামা আর ছোটমামী সূর্যোদয় দেখছিলাম আর নিজেদের অভিনয়ের প্রশংসা করছিলাম।
মামীঃ “আসলে তোমরা একটু বেশিই করে ফেলেছো মনে হয়।এই কটা দিন তারা কত চিন্তায় ছিল কে জানে!”
মামাঃ”আরে ধুর,সারাটা জীবন আমাদের কত জ্বালিয়েছে।তার তুলনায় এতো দুধভাত।“
আমিঃ”শুনেছি,সবাই নাকি কক্সবাজারের পথে রওনা দিয়েছে।যাই বলো মামা এবার কিন্তু জম্পেশ একটা ট্যুর হবে।“
মামাঃ”হ্যা,যেমন হানিমুনটা হলো।“
আমিঃ”সেটা কিন্তু তোমার এই গর্ধব ভাগ্নের জন্যই।প্ল্যানটা বাস্তবায়ন করা কিন্তু খুব সহজ ছিলো না।মামীও যথেষ্ট সাহায্য করেছে।তবে মামা,তুমি সেন্টিমেন্টাল পার্টে যে অভিনয় করলে তার তো কোন জওয়াব নেই।আমার প্ল্যান মতো এই অভিনয়টা না করলে আর হানিমুন হতো না,পয়জন মুন হয়ে যেত।“
মামাঃ”হ্যা তা তো ঠিকই।তারজন্যে তুই পুরস্কারও পাবি।তোর মামীর সেই দুঃসম্পর্কের ভাগ্নীও নাকি কক্ষবাজারে আসছে।তোর সময়টা মনে হয় একেবারে খারাপ যাবে না তাহলে।“
মামীঃ”হুম,তুমি চাওতো ওর বাবা-মায়ের সাথেও কথা বলে দেখতে পারি।“
আমিঃ”আরে মামী,তুমিও শুরু করলে”
মামা,মামী আর আমি তিনজনই হাসতে লাগলাম।সকালের সূর্যের উষ্ণতার সাথে আমাদের হাসি যেন এক অদ্ভুত মুগ্ধতার সৃষ্টি করলো।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৩:২৫

ভণ্ড বাবা বলেছেন: ভুয়া

০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১:৩৮

Biniamin Piash বলেছেন: বুঝিয়ে বলুন কি বলতে চাচ্ছেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.