নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

kamrulsomewhereinblog

মত প্রকাশে আপোষহিন।

কামরুল বিডি

আমি একজন সাধারন মানুষ। এবং পেশায় স্টুডেন্ট, পড়া লেখার পাশাপাশি বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিশ্লেষণ করতে ভালবাসি।

কামরুল বিডি › বিস্তারিত পোস্টঃ

পাকিস্তান থেকে কেন এই দেশ স্বাধীন করলাম?

১৬ ই এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১:৪৮

গত ৬ এপ্রিল বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি নতুন পৃষ্ঠা সংযোজিত হলো। বর্তমান আওয়ামী সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় Vision-21-এর ও Internet-13-এর ডিজিটাল ফসল নাস্তিক ব্লগার বাহিনীর আল্লাহ্ রাসুলের প্রতি কুত্সা রটানোর দুঃসাহস এবং পাক কোরআন-হাদিসের প্রতি অবমাননাকর উচ্চারণের কঠিন জবাব দিতে এবং ইসলাম হেফাজত করার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করতে মাওলানা আল্লামা শফীর আহ্বানে লাখো-কোটি হেফাজতে ইসলামী সাংগঠনিকভাবে লংমার্চ করল। অবশ্য সরকার দ্বিমুখী আচরণ করল। একদিকে ঢাকার শাপলা চত্বরে গণজমায়েতের অনুমতি দিল অন্যদিকে সারা বাংলাদেশ থেকে আসা দূরপাল্লার পরিবহনগুলো বন্ধ করে দিল লংমার্চের একদিন আগে থেকেই। তবু ধর্মের জন্য মৃত্যুশপথকারী মুসল্লিদের দমানো গেল না, দূরবর্তী জেলা-বিভাগে সরকারের ক্যাডার বাহিনী দ্বারা বাধা দেয়ার প্রেক্ষিতে হেফাজতে ইসলামীরা সেখানেই অবস্থান করে সমাবেশ করল। ঢাকার কাছাকাছি অঞ্চলের সদস্যরা পদব্রজে লংমার্চ করে শাপলা চত্বরে যোগ দিলেন। তাতেই ভিত নড়ল সরকারের। যদিও দীর্ঘ দীর্ঘ বছর ধরে আওয়ামী সরকার ও দলের পোষ্য ঘাদানি, সেক্টর কমান্ডার ফোরাম ও সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের মাধ্যমে ছুটির দিন শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে শনিবার পর্যন্ত এক অদ্ভুত উদ্ভট হরতাল আহ্বান করল। জনগণ সেটাকে নাম দিল ‘সরকারের হরতাল’। তবুও শেষ রক্ষা হয়নি। হেফাজতে ইসলামের গণজোয়ার সব বাধার প্রাচীর ভেঙে শাপলা চত্বরে এসে জড়ো হলো। ইসলামের শত্রু বলে চিহ্নিত মুনতাসির মামুন, শাহরিয়ার কবিররা প্রাণ নিয়ে পলায়নপর হলেন, বাংলাদেশ সরকারের সমান্তরালে স্বঘোষিত আর এর সরকার ডা. এমএইচ সরকার দলছুট মুষ্টিমেয় ব্লগারদের নিয়ে আবার ঘোষণা দিল হেফাজতে ইসলামের আহূত হরতাল প্রতিহত করবে এবং জাতীয় পতাকা মিছিল করতে সারা বাংলাদেশের মানুষের প্রতি আহ্বান জানাল। আমরা জানি একমাত্র গণতান্ত্রিক নির্বাচিত বাংলাদেশ সরকারের নির্বাহী আদেশে জাতীয় পতাকা সারা বাংলাদেশে ব্যবহৃত হয়। সেই পতাকা এই সরকার সারা জাতিকে ব্যবহারের হুকুম করে কোন্ ইঙ্গিতে। তার এ ধরনের স্পর্ধা রাষ্ট্রীয় বেয়াদবি, রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল। কিন্তু সেই অপরাধীর প্রতি সরকার নীরব।

হেফাজতে ইসলামের মহা মহা মহা সমাবেশ লংমার্চ দেখে আমার কেবল মনে হচ্ছিল কবি আল্লামা ইকবালের সেই কালজয়ী কবিতার কলি—‘ইসলাম জিন্দা হ্যায় হরকারবালাকি বাদ’। এই অনুভব হয়তো সেদিন প্রধানমন্ত্রীরও হয়েছিল। যার জন্য সরকার নীরব ছিল। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শান্তিপূর্ণভাবে লংমার্চ করার জন্য ধন্যবাদ জানান আয়োজনকারীদের। আসলে সরকারই তো এইসব সমাবেশে অশান্তি তৈরি করে। একজন নিরপেক্ষ রাজনৈতিক বিশ্লেষক বলেছেন, বিএনপি রাজনৈতিক দল ও সরকারের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী। ওরা দশজনের একটা মিছিল বা সমাবেশ করলেই বিপদ, আতঙ্ক। সরকারের পুলিশসহ সব ধরনের জঙ্গি নিরাপত্তা সদস্য বিএনপির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। ওরা জানে হেফাজতে ইসলাম রাজনৈতিক দল নয়। ক্ষমতায় আসার দৌড়ে প্রধান প্রতিযোগী বিএনপি, হেফাজতে ইসলাম নয়। অতএব বিএনপি ঠেকাও। বিএনপির অস্থায়ী মহাসচিব, ব্যারিস্টার মওদুদসহ সব শীর্ষস্থানীয় নেতাকে হাস্যকর ঠুনকো মামলায় জড়িয়ে গ্রেফতার করে কারাগারে রাখা হচ্ছে। একদিন হয়তো বেগম খালেদা জিয়াকেও গ্রেফতার করবে। কারণ ওরা চায় পুনর্বার যেনতেন প্রকারে ক্ষমতায় আসতে। নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের লাগাতার আন্দোলনের স্বরূপ লাগাতার বিএনপির হরতাল, লংমার্চ, মহাসমাবেশ, বিক্ষোভ, মানববন্ধনের মতো গণদাবি ওরা তোয়াক্কা করছে না। ওরা বিএনপিকে নেতাশূন্য করে গৃহপালিত দলগুলো নিয়ে আগামী নির্বাচন করতে চায়।

এরই মধ্যে আন্দোলনে যুদ্ধাপরাধী মামলায় অভিযুক্তদের স্বচ্ছ সঠিক নিরপেক্ষ রায় হচ্ছে না বলে জামায়াতে ইসলামী, ছাত্রশিবিরও শরিক হয়েছে। সেই সব সাংঘর্ষিক আন্দোলনে শতাধিক মানুষের লাশ পড়েছে। যাকে গণহত্যা বলা যায়। এছাড়া প্রতিটি অনিয়মিত হরতাল, গণসমাবেশ, মিছিলে দু’একজনের মৃত্যু হচ্ছে অনিবার্য। রাজনৈতিক সংঘাত-সংঘর্ষে স্বদেশ আমার ধ্বংসের মুখোমুখি। সরকার স্বীকার করুক আর না করুক, এদেশের অর্থনীতিতে খরা লেগেছে, ধস নেমেছে, উন্নয়নে পড়েছে ভাটা, সাংস্কৃতিক গতিপ্রবাহে এসেছে স্থবিরতা। এ শুধু রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে নয়, এর সঙ্গে পূর্ব থেকেই যোগ হয়েছে সরকারের সর্বক্ষেত্রে দলীয়করণ, প্রশাসনে স্বজনপ্রীতি, আকাশ-ছোঁয়া দুর্নীতি। এমতাবস্থায় সুশীল সমাজ শান্তিপ্রিয় নাগরিকরা চাইলেন দুই দলের সংলাপে-সমঝোতা। আওয়ামী লীগের দ্বিতীয় মুখপাত্র যুগ্ম সম্পাদক বললেন, ‘জামায়াত ছাড়েন! তাহলেই আলোচনা।’ জনাব হানিফ তো বিএনপির নীতিনির্ধারণী কমিটির একজন সদস্য হলে চেয়ারপার্সনকে এ ধরনের উপদেশ দিতে পারতেন। তিনি বরং মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর একজন বিশেষ সহকারী হিসেবে তাকে বলতে পারেন, ‘বাম ছাড়েন’। কেননা, আওয়ামী লীগ দল ও সরকারের নিয়ন্ত্রণ এখন মেনন-ইনু-বাদলের হাতে।

তারাই তো চায় না বিএনপির নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের দাবি সরকার মানুক। অথচ দুই দলে সমঝোতা না হলে হরতাল হবে প্রতিদিন। মৃত্যুর মিছিল হবে নিয়মিত। জনগণের অশান্তি হবে পর্যাপ্ত। আর এ জন্যই কি দেশটা স্বাধীন হয়েছিল? পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশ হয়েছিল? স্বাধীনতার পক্ষের শক্তির একমাত্র দাবিদার আওয়ামী লীগ ও সরকার সেই প্রশ্নের জবাব দেবে কি?

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.