নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জীবন থেকে এক একটি আনন্দ কুঁড়িয়ে নিতে চাই...

বৃষ্টি'র জল

সহজ সরল, সত্য স্বীকারোক্তিতে বিশ্বাসী। বর্তমানে আনন্দ খুঁজে নিয়ে সামনের দিনে এগিয়ে যাই।

বৃষ্টি'র জল › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমার আম্মাজানেরা

০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:৫৫

"মা" এই শব্দটার উপকারিতা,অপকারিতা,প্রয়োজনীয়তা সব কিছু আমার কাছে একটু ঘোলাটে ধরনের ছিল কয়েক মাস আগ পর্যন্তও । আর এই ঘোলাটে ভাবের পিছনে অনেক কারণ অকারণও আছে। মা বলতে আমার সামনে দুজন নারীর মুখ চোখের সামনে ভেসে উঠে।







আমার শৈশব কেটেছে আম্মার(খালা) সাথে।জীবনের ১৪টা বছর কেটেছে তাঁর আঁচল ধরে রেখে।তাঁকে জড়িয়ে ধরে,তাঁর শরীরে মা গন্ধ শুকে শুকে। যেহেতু আমাদের জয়েন ফ্যামিলি এবং আম্মুর অতিব অল্প বয়সে বিয়ে হয়ে যায় আম্মার দেবরের(আমার জন্মদাতা বাপজান :P) এর সাথে।এবং আমিও চলে আসি আম্মুর ঐ কিশোরি কলে শিশু হয়ে । তখন আমার লালন পালনের ভার নেন আম্মা।কারণ আম্মুর বয়স কম,সে নিজেই তখনও শিশু,তিনি প্রপারলি পারবেন না আরেক শিশুকে লালন পালন করতে। এরই মধ্যে আম্মু ssc দেয়ার জন্য গ্রামে যান আমাকে আম্মার কাছে রেখে,তখন আমার ১বছর বয়স মে বি।



আমি আছি আম্মার কাছেই,তাকেই মা বলছি।সেই থেকে আমি আম্মার সাথে সুপার গ্লু এর মত লেগে রইলাম । আম্মাকে ছাড়া আমার দুনিয়া তখন অন্ধকার।তাঁকে ছাড়া তখন ফ্যামিলির সবাইকে আমার পর মনে হয়।একটি রাতও আমি আম্মাকে ছাড়া ঘুমাতে পারতাম না।তাকে জড়িয়ে না ধরলে আমার ঘুম আসতো না।কিছুইনা,শুধু উনার আঁচলও যদি ধরতে পারতাম তাতেই আমি শান্তি পেতাম আম্মাও আমাকে ছাড়া থাকতে পারতেন না।সে যেখানেই যেত সাথে আমি যেতাম।তখন গ্রামে বাড়ির বিভিন্ন কাজে গ্রামে বেশি থাকতে হত আম্মা পাপা কে।সাথে আমিও থাকতাম দিনের পর দিন,মাসের পর মাস,কোথায় পড়া লেখা কোথায় কি? মাঝে মাঝে ঘুম ভেঙ্গে আম্মাকে পাশে না পেলে মা মা করে চিৎকার করে কান্না করতাম ছাগলের মত , বড় হওয়া পর্যন্তও এই অভ্যাস ছিল আমার।জীবনের পুরোটা শৈশব জুড়েই শুধু আম্মা পাপা।কত যে স্মৃতি আছে তাদের সাথে,যা বলে শেষ হবার নয়।



যখন ক্লাস এইটে,তখন কোন এক অজানা কারণে আম্মাকে ছেড়ে আম্মুর কাছে চলে আসি আমি।যদিও সবাই একই সাথে থাকি দুটা ফ্ল্যাটে,শুধু একটা দেয়ালের পার্থক্য,তারপরেও...

এই চলে আসা,ফ্ল্যাট বদল,খাট বদল,জায়গা বদল,পড়ার টেবিল বদল,মা বদল করার সময়টা ছিল ঐ বয়সে ঐ সময়ে খুবই অসহ্যকর,অসহনীয়,দোটানা,ইন্ডিসিশনে ভোগার মত বাজে অবস্থা। সে যাই হোক,আম্মুর কাছে আসার পর মনে হতে লাগলো আমরা দুজন দুই মেরুর বাসিন্দা আমি পারছিলাম না আম্মুর সাথে সহজে মিশতে,পারছিলাম না আমার ছোট দুই বোনের মত আম্মুকে জড়িয়ে ধরতে,প্রাণ খুলে হাসতে,কথা বলতে।কোথায় যেন একটা বাধা,লজ্জা,ভয় কাজ করতো । আম্মুও যেন পারছিলনা এমনটা করতে।

খুব চাইতাম আম্মু আমাকে আদর করুক বোনদের মত,মাথায় হাত বুলাক,আমিও তাকে জড়িয়ে ধরি,কিন্তু কিছুই হত না। এর মধ্যে আম্মাকে ছেরে আসার কষ্টটাও ছিল মনের মধ্যে প্রকট,যা কাউকে প্রকাশ করতামনা।যেখানে আমি আম্মাকে জড়িয়ে না ধরে ঘুমাতে পারতামনা,সেখানে আমি বোনদের সাথে ঘুমাই আম্মাকে ছাড়া।অনেক চেষ্টা করেও আমি পারছিলাম না আম্মুর সাথে নরমাল হতে,আর আম্মুও না।হয়তো ১৪ বছরের মা-মেয়ের গ্যাপটা খুব বেশিই বড় গ্যাপ ছিল ।

যাই হোক,মজার ব্যাপার হল আমি আর আম্মু যখন কোথাও বের হতাম,সবাই ভাবতো আমরা দু বোন,আমার স্যার টিচাররাও তাই ই ভাবতো। আম্মুর সাথে আমার মতের মিল কখোনোই কোন বিষয় হয়না,পছন্দেরও খুব একটা মিলেনা।



এতসব ঝামেলা থাকতেও ইদানিং মনে হয়,আমি আম্মুকে অনেক ভালবাসি।আমার কোন কাজে তাকে খুশি করতে পারলে আমি অনেক বেশি খুশি হই,তাকে কোন কিছুতে কষ্ট দিলে আমি অনেক বেশি কষ্ট পাই।ইদানিং আরও একটা জনিস ফিল করলাম যে,তার কান্না আমার সহ্য হয়না,তাও যদি সেটা হয় আমার কারনে।সে কান্না করলে আমার বুকেও ব্যথা হয়। আরও মজার ব্যাপার হল,এরা দু বোন আগে সবসময় এমন কিছু কাজ করতো যে আমি বিপদে পড়তাম।দেখা যেত আজ আম্মা বলেছেন তার সাথে দুপুরে বা রাতে খেতে যেতে,তা করলে আম্মু মন খারাপ করতো।আবার না গেলে আম্মা। আজ যদি আম্মু একটা কিছু তৈরি করে এর আম্মার কাছে গিয়ে বলি মজা হয়ছিল,পরদিন আবার আম্মা তৈরি করে খাওয়াবে। তাদের মন রক্ষা করতে করতে আমি অস্থির ছিলাম তবে,স্টিল আমি আম্মাকেও অনেক ভালবাসি।উনার জন্য আমার যে ভালবাসা তা আজীবন থাকবে,সেই ভালবাসা,মায়া,টান টা কখনোই আবার আম্মুর জন্য হবেনা। এ এক অন্যরকম ভালবাসা।



দুজনকেই আমি মারাত্মক ভালবাসি।দুঃখের বিষয় হল আমি কখোনই তা প্রকাশ করতে পারিনি,পারিনা।আমার এই দুই মায়ের মধ্যে এক জনকেও বলা হয়নি কখনো "আমি তোমাকে অনেক ভালবাসি।" একজনকে ছাড়া আমি একা,নিঃস্ব,আরেকজনকে ছাড়া আমার পৃথিবী অন্ধকার,আমি যেন তাকে ছাড়া কিছুইনা,



তোমাদের অনেক অনেক অনেক ভালবাসি মা জননীরা......

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ২০ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:২৮

ইখতামিন বলেছেন:
সুন্দর লিখেছেন। আরও লিখুন।

২| ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ দুপুর ২:৪৪

সেলিম আনোয়ার বলেছেন: সুন্দর। ভাল হয়েছে। হ্যাপী ব্লগিং ।

৩| ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৩:২৫

স্বপ্নবাজ অভি বলেছেন: শুভকামনা রইলো !

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.