নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অনিরুদ্ধ রহমান

[email protected]

অনিরুদ্ধ রহমান › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিশ্বকাপ কিংবদন্তী: ইয়োহান ক্রুইফ

০৫ ই মে, ২০১৪ রাত ১১:২৬



নেদারল্যান্ডস প্রথম বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করে ১৯৩৪ এর ইতালি বিশ্বকাপে। ১৯৩৮ এর ফ্রান্স বিশ্বকাপেও খেলে তারা। কিন্তু এর পরই রূপকথার দৈত্যের মতন বিশ্বকাপ ফুটবলে এক অন্তবিহীন ঘুম তাদের। এই ঘুম ভাঙ্গতে ভাঙ্গতেই মাঝে পেরিয়ে যায় ৩৬ টি বছর। ক্রুইফের চোখের সামনে দিয়ে চলে যায় ১৯৬৬ এবং ১৯৭০ এর বিশ্বকাপ। কিন্তু চেয়ে চেয়ে দেখা ছাড়া আর কিছুই করার ছিল না ফুটবল ইতিহাসের অন্যতম সেরা খেলোয়াড়, তিনবার ব্যালন ডি’অর বিজয়ী এবং ফুটবল দর্শনে বিপ্লব ঘটানো ”টোটাল ফুটবল”-এর অন্যতম রূপকার ইয়োহান ক্রুইফের।



ক্রুইফ বিশ্বকাপ চেয়ে চেয়ে দেখা ছাড়াও কিছু করে দেখানোর প্রথম এবং একমাত্র সুযোগ ১৯৭৪ সালে। এবং আক্ষরিক অর্থেই ’করেই দেখান’, স্মরণীয় করে রাখেন দীর্ঘ বিরতীর পর এই প্রত্যাবর্তনকে। ওলট পালট করে দেন ফুটবল নিয়ে প্রথাগত ধ্যান-ধারনার। ফিফার কোচ অব দ্যা সেঞ্চুরিখ্যাত নেদারল্যান্ডস জাতীয় দলের তৎকারীন কোচ রাইনাস মিশেলের মস্তিষ্কপ্রসূত 'টোটাল ফুটবল’ কে মাঠে বাস্তবায়িত করে দেখান ক্রুইফরা। একটি মাত্র বিশ্বকাপে অংশ নিয়েই ক্রুইফ হয়ে যান বিশ্বকাপ ফুটবলের এক অন্যতম চরিত্র।



১৯৫৪র পুসকাসের হাঙ্গেরির সাথে অনেক দিক দিয়েই মিল ছিল ১৯৭৪ এর ক্রুইফের নেদারল্যান্ডস এর। সেবারের পুসকাসদের মতো এবার পুরো আসরে দাপটের সাথে খেলা ক্রুইফরা ফাইনালের পথে একে একে পরাজিত করে উরুগুয়ে (২-০), বুলগেরিয়া (৪-১), আর্জেন্টিনা (৪-০), পূর্ব জার্মানি (২-০) এবং ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিলের (২-০) মতো দলকে। ক্রুইফ ২ গোল করেন আর্জেন্টিনার সাথে, ব্রাজিলের সাথেও করেন ১ টি গোল। পুসকাসদের মতো ক্রুইফরাও ফাইনাল পর্যন্ত ছিলেন অপরাজিত। কাকতালীয়ভাবে হাঙ্গেরির মতন নেদারল্যান্ডসও ফাইনালে প্রথমে গোল করেও শেষ পর্যন্ত সেই পশ্চিম জার্মানির কাছেই পরাজিত হন। ক্রুইফের কল্যাণে পাওয়া পেনাল্টি থেকে গোল করে মাত্র ২ মিনিটেই নেদারল্যান্সডকে এগিয়ে দিয়েছিলেন সতীর্থ ইয়োহান নেসকেন। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। ২-১ গোলে পরাজিত হয় ক্রুইফরা। তবে ১৯৫৪র পুসকাসের মতন এবার আসরের সেরা খেলোয়াড়ের গোল্ডেন বল জেতেন ক্রুইফ।



টোটাল ফুটবল দর্শন অনুযায়ী প্রয়োজনমতো যে কোন পজিশনে খেললেও ক্রুইফ মূলত ছিলেন মাঝমাঠের খেলোয়াড়। মাঝ মাঠের খেলোয়াড় হলেও ক্রুইফকে বিপক্ষ দলের রাখতে হতো কড়া নজরদারীতে। যে কোন মুহুর্তে গোল করে ফেলতে পারতেন তিনি। আর ক্রুইফ গোল করতে পারলেই কেল্লা ফতে। কেননা ক্রুইফ গোল পেয়েছেন এমন ম্যাচে কখনোই হারেনি নেদারল্যান্ডস। ক্রুইফ জাতীয় দলের হয়ে ৪৮ ম্যাচ খেলে করেন ৩৩ গোল।



১৯৭৮ এর পরের বিশ্বকাপের আগে আগে ১৯৭৭ সালে মাত্র ত্রিশ বছর বয়সে জাতীয় দল থেকে অবসর নেন ক্রুইফ। অবসরের আগে অবশ্য জাতীয় দলকে পার করিয়ে দিয়ে যান বাছাইপর্বের বাধা। অবসরের কারণ নিয়ে ভিন্ন কথা বললেও ২০০৮ সালে ক্রুইফ স্বীকার করেন ১৯৭৭ এ তিনি এবং তার পরিবার অপহরণের হুমকির মুখে ছিলেন। এবং ক্রুইফের নিজের ভাষ্য মতে--"বিশ্বকাপে খেলতে হলে আপনাকে ২০০% ঠিক থাকতে হবে। কিন্তু কখনো কখনো এমন মুহুর্ত আসে যখন জীবনে ফুটবলের চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ অনেক কিছুই থাকে।”



১৯৭৮ বিশ্বকাপেও রানার আপ হয় নেদারল্যান্ডস। দেশবাসী আফসোস করতেই পারেন, ১৯৭৪ বিশ্বকাপের ফাইনালে ক্রুইফের কল্যাণে পাওয়া পেনাল্টি শটটি কেন ক্রুইফ নিজেই না নিয়ে নেসকেনকে দিলেন। গোলটি ক্রুইফ করলেইতো না পাওয়ার বেদনায় এতদিন পুড়তে হয়না দেশবাসীকে। ক্রুইফের গোল করা ম্যাচে কখনোই যে হারেনি নেদারল্যান্ডস!



--প্রথম আলো অনলাইনে মাঝে মাঝে আমার কিছু লেখা প্রকাশিত হয়। সেই ভালোলাগা অন্যদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে কখনও কখনও ব্লগেও তা শেয়ার করি। কিন্তু এখানেই ঘটে বিপত্তী। অনেকেই সঙ্গত কারণেই বিভ্রান্ত হন, 'পুরোটাই কপি করার দায়ে' তেড়ে আসেন। বিভ্রান্ত হবেন না, এটি তেমনই একটি প্রয়াস।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.