নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অনিরুদ্ধ রহমান

[email protected]

অনিরুদ্ধ রহমান › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিশ্বকাপ কিংবদন্তী: জিউসেপ্পে মিয়াজ্জা

০৭ ই মে, ২০১৪ রাত ১২:২৬

মিয়াজ্জা সম্পর্কে তার বিশ্বকাপ বিজয়ী কোচ ভিত্তরিও পোজ্জো একবার বলেছিলেন--দলে মিয়াজ্জা থাকা মানে যেকোন ম্যাচই ১-০ তে এগিয়ে থেকে শুরু করা।



কোচের এই কথা থেকেই বোঝা যায় ইতালি তথা বিশ্ব ফুটবলে জিউসেপ্পে মিয়াজ্জার অবদান। ১৯৩৪ এবং ১৯৩৮ পরপর দু’বার ইতালিকে জিতিয়েছেন বিশ্বকাপ শিরোপা। প্রথমবার মাঠের নেতা হিসেবে বিশ্বকাপ শিরোপার জুলে রিমে ট্রফির পাশাপাশি সেরা খেলোয়াড়ের গোল্ডেন বল পুরস্কার জেতা মিয়াজ্জা দ্বিতীয়বার বিশ্বকাপ শিরোপটি জয় করেছিলেন দলনেতা হিসেবে।



১৯৩৪ এর বিশ্বকাপে ইতালি একটি রিপ্লে ম্যাচ সহ মাত্র ৫ টি ম্যাচ খেলোই জিতে নেয় বিশ্বকাপ। প্রথম রাউন্ডের উদ্বোধনী খেলায় ইতালি ৭-১ গোলে পরাজিত করে যুক্তরাষ্ট্রকে। মিয়াজ্জা করেন একটি গোল। তখনকার বিশ্বকাপের নিয়ম অনুযায়ী স্পেনের সাথে ১-১ এ ড্র হওয়া ম্যাচটি পরদিন আবার অনুষ্ঠিত হয়। মিয়াজ্জার একমাত্র গোলে এবার জয় পায় ইতালি। সেমিফাইনালে তৎকালীন ফুটবল পরাশক্তি অস্ট্রিয়ার বিপক্ষেও ১-০ গোলে জয় পায় ইতালি। বেশ কজন রক্ষণকে ফাকি দেয়া মিয়াজ্জার দুর্দান্ত আক্রমণ শেষ পর্যন্ত গোলরক্ষক রুখে দিলেও সেই বল থেকেই ম্যাচের একমাত্র গোলটি করেন এনরিক গোয়াইতা। চোকোস্লোভাকিয়ার বিপক্ষে অতিরিক্ত সময়ে গড়ানো ম্যাচে ২-১ গোলে জেতা খেলাতে ম্যাচ নির্ধারণী গোলেও ছিল মিয়াজ্জার অবদান। মিয়াজ্জা আসরের সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হন এবং আসরের সেরা একাদশে স্থান করে নেন।



মিয়াজ্জা ১৯৩৮ এর ফ্রান্স বিশ্বকাপে যান ইতালির অধিনায়ক হিসেবে। ইতালির ক্ষমতায় তখন স্বৈরশাসক বেনিতো মুসোলিনি। মুসোলিনি অধিনায়ক মিয়াজ্জাকে একটি টেলিগ্রাম পাঠান। কথিত আছে সেই টেলিগ্রামের সারসংক্ষেপ ছিল--উইন অর ডাই!



জীবন বাচাতে কিনা কে জানে, মিয়াজ্জারা দেশে ফিরেছিলেন টানা দ্বিতীয় শিরোপা নিয়েই। মাত্র ৪ টি ম্যাচ জিতেই বিশ্বকাপ শিরোপা। শিরোপার পথে ইতালি পরাজিত করে নরওয়ে, স্বাগতিক ফ্রান্স, শক্তিশালি ব্রাজিল এবং আসরের চমক হাঙ্গেরিকে। সেমিফাইনালে ব্রাজিলের বিপক্ষে ২-১ গোলে জেতা ম্যাচে মিয়াজ্জা করেন জয়সূচক গোলটি। এটিই ছিল ইতালির হয়ে মিয়াজ্জার শেষ আন্তর্জাতিক গোল। ফাইনালে হাঙ্গেরির বিপক্ষে ৪-২ গোলের জয়ে মিয়াজ্জা সহায়তায় হয় ২ টি গোল।



বিশ্বকাপ জয়ের পরের বছর জাতীয় দলের হয়ে শেষ ম্যাচটি খেলেন মিয়াজ্জা। জাতীয় দলের হয়ে ৫৩ ম্যাচ খেলে করেন ৩৩ গোল, পরাজিত হন মাত্র ৬ টি ম্যাচে। বিশ্বকাপের ইতিহাসে ৪র্থ সেরা খেলোয়াড় মিয়াজ্জা। জাতীয় দলের হয়ে ৫৩ ম্যাচে ৩৩ গোল করা এই ফরওয়ার্ড এখনও ইতালির দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গোলদাতা।



ইতালিয়ানদের মধ্যে প্রথম বিশ্বব্যপি তারকাখ্যাতি এবং ব্যক্তিগত স্পনসর পাওয়া ফুটবলার মিয়াজ্জা। নারী এবং মদের প্রতি অধিক আসক্তি কোন গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের আগের রাতে এমনকি ম্যাচ শুরুর আগমূহুর্ত পর্যন্তও হয়তো আবিষ্ট করে রাখতো জাতীয় দলের একমাত্র খেলোয়াড় হিসেবে ধুমপানের অনুমতিপ্রাপ্ত মিয়াজ্জাকে। কিন্তু লোক পাঠিয়ে ’খুঁজে এনে’ মাঠে নামিয়ে দিলেই সেই যাদুকরী মিয়াজ্জা। কেবল সমালোচকদের মুখবন্ধ করাই নয়, খেলায় নিয়মিত নাস্তানাবুদ করতেন প্রতিপক্ষের রক্ষণ কিংবা গোলরক্ষককে। গোলপোস্টের বাইরে চলে যেতে যেতে বলের শেষ মূহুর্তে গোলে ঢুকে পড়া 'ডেড লিফ টেকনিক’ বা গোলরক্ষককে পোস্টের বাইরে ডেকে এনে ফাকি দিয়ে গোল দেয়ার ’এ্যাড ইনভিতো’ বা ’আমন্ত্রণমূলক গোল’ সহ আরও অনেক পদ্ধতিই কিংবদন্তী হয়ে আছে ফুটবল ইতিহাসে।



মিয়াজ্জার ইতালির পর পর দু’বার বিশ্বকাপ জয়ের রেকর্ডে ২৪ বছর পর ব্রাজিল ভাগ বসালেও গত অর্ধশতাব্দীতে এর ধারে কাছে যাওয়া হয়নি আর কারও। মাত্র ২৯ বছর বয়সে ১৯৩৯ সালে জাতীয় দলের হয়ে শেষ ম্যাচ খেলা মিয়াজ্জা ক্লাব ক্যারিয়ার চালিয়ে যান ১৯৪৭ পর্যন্ত। পরপর দুটি বিশ্বকাপ জয়ের পর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ডামাডোলে সবকিছু ওলটপালট হয়ে না গেলে, ১৯৪২ কিংবা ১৯৪৬ এ দু দুটি বিশ্বকাপ আয়োজন স্থগিত না হলে মিয়াজ্জা আরও একটি বিশ্বকাপে খেলতেন কিনা, জয় করতেন কিনা আরও একটি বিশ্বকাপ কে জানে।



প্রথম আলো অনলাইনে মাঝে মাঝে আমার কিছু লেখা প্রকাশিত হয়। সেই ভালোলাগা অন্যদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে কখনও কখনও ব্লগেও তা শেয়ার করি। কিন্তু এখানেই ঘটে বিপত্তী। অনেকেই সঙ্গত কারণেই বিভ্রান্ত হন, 'পুরোটাই কপি করার দায়ে' তেড়ে আসেন। বিভ্রান্ত হবেন না, এটি তেমনই একটি প্রয়াস।

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই মে, ২০১৪ রাত ১২:৩৫

হাসান মাহবুব বলেছেন: ভালো লেখা।

২| ০৭ ই মে, ২০১৪ সকাল ৯:২৯

কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:


+++

৩| ০৭ ই মে, ২০১৪ সকাল ৯:৫০

ক্লান্ত তীর্থ বলেছেন: ভালো লেগেছে!

৪| ০৭ ই মে, ২০১৪ সকাল ১০:৫৮

রাতুলবিডি৫ বলেছেন: বিশ্বকাপের ইতিহাসে ৪র্থ সেরা খেলোয়াড় মিয়াজ্জা

প্রথম - দ্বিতীয় - তৃতীয় কে ?

৫| ০৮ ই মে, ২০১৪ বিকাল ৪:৫৭

আছিফুর রহমান বলেছেন: ১৯৩৮ এর অস্ট্রিয়া ফুটবল দল সম্পর্ক এ লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.