নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অনিরুদ্ধ রহমান

[email protected]

অনিরুদ্ধ রহমান › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিশ্বকাপ কিংবদন্তী: ফেরেঙ্ক পুসকাস

২১ শে মে, ২০১৪ রাত ২:২১





১৬ বছরের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে মেক্সিকোর আন্তোনিও কারবাহাল খেলেন পাঁচ-পাঁচটি বিশ্বকাপে, আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের ১৪ বছরে পেলেও অংশগ্রহণ করেন চারটি বিশ্বকাপে। সেখানে ১৯৪৫ থেকে ১৯৬২ পর্যন্ত দুই পর্ব মিলিয়ে ১৭ বছর ব্যাপ্ত ফুটবলার জীবনে পুসকাস অংশ গ্রহণ করেন মাত্র ২ টি বিশ্বকাপে। তাও আবার দুটি বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করেন দুটি ভিন্ন দলের হয়ে।



দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে বিধ্বস্ত বিশ্বে ১৯৪৬ সালে অনুষ্ঠিত হয়নি কোন বিশ্বকাপ। ১৯৫০ বিশ্বকাপ থেকে নিজেদের নাম প্রত্যাহার করে নেয় পুসকাসের মাতৃভূমি হাঙ্গেরি। এভাবেই ১৯৫৪ সালে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করতে করতে জাতীয় দলের হয়ে অভিষেকের পর ৯টি বছর পার হয়ে যায় পুসকাসের।



১৯৫৪র বিশ্বকাপে হৈ চৈ ফেলে দেয়া পুসকাসের ’মাইটি ম্যাগিয়ার্স’ হাঙ্গেরি ১৯৫৮র পরের বিশ্বকাপেও অংশগ্রহণ করলেও আবার দৃশ্যপটের বাইরে ’দ্যা গ্যালোপিং মেজর’ পুসকাস। ১৯৫৬ সালে সোভিয়েত আগ্রাসনের কারনে আরও অনেকের মতো দেশ ছাড়তে বাধ্য হন পুসকাসও। ১৯৫৪ বিশ্বকাপের রানার-আপ সেই বিখ্যাত মাইটি ম্যাগিয়ার্স দলের মাত্র ৪ জন খেলোয়াড়কে নিয়ে গড়া ১৯৫৮র হাঙ্গেরি দলটির প্রথম রাউন্ড থেকেই বিদায় নেয়। ফেরারি জীবনে দুর থেকে বসে বসে খবর নেয়া ছাড়া আর কিছুই করার ছিলনা পুসকাসের।



মাঝে ১৯৫৮ বাদ দিয়ে ১৯৬২ সালে আরও একবার বিশ্বকাপে খেলেছিলেন পুসকাস। এবার গায়ে চড়ান আশ্রয়দাতা দেশ স্পেনের জার্সি। ইনজুরির কারণে শেষ মুহুর্তে ছিটকে পড়ায় আরেক যাযাবর ডি স্টেফানোর বদলি হিসেবে ১৯৬২র বিশ্বকাপে মাঠে নামেন পুসকাস। তিনটি ম্যাচ খেলেও গোলশুন্য থাকেন পুসকাস। এই প্রথমবারের মতো গোলের রাজা পুসকাস নিরাশ করেন সমর্থকদের। স্পেনের হয়ে আরও একটি ম্যাচ খেললেও সেটিতেও গোলশূণ্যই ছিলেন পুসকাস। বুদাপেস্ট হনভেডের হয়ে ৩৪১ ম্যাচে ৩৫২ গোল, রিয়ালমাদ্রিদের হয়ে ১৮০ ম্যাচে ১৫৬ গোল কিংবা হাঙ্গেরি জাতীয় দলের হয়ে ৮৪ ম্যাচে ৮৫ গোল করা পুসকাসের জন্য গোলশূন্য থাকা এই পৃথিবীর বিরল ঘটনাগুলোর একটি।



তাইতো ফেরেঙ্ক পুসকাসের কথা বললেই সবার মনে যে ছবি ভেসে উঠে সেই পুসকাস বুদাপেস্ট, রিয়াল মাদ্রিদ কিংবা স্পেনের পুসকাস নয়, সেই পুসকাস ১৯৬২র পুসকাস নয়; সেই পুসকাস হাঙ্গেরির, সেই পুসকাস ১৯৫৪র। ১৯৫৪র বিশ্বকাপে পুসকাসরা শুধু শিরোপা জয় ছাড়া করেছিলেন সম্ভাব্য সবকিছুই। বিশ্বকাপের আগের পাঁচ বছরে ৩২ম্যাচে অপরাজিত হাঙ্গেরি বিশ্বকাপেও তাদের এই ধারা অব্যহত রাখে। ফাইনালের পথে তারা পরাজিত করেন উরুগুয়ে, পশ্চিম জার্মানি, ব্রাজিলের মতো দলকে। এর মধ্যে প্রথম রাউন্ডে দক্ষিণ কোরিয়াকে ৯-০ এবং পশ্চিম জার্মানিকে ৮-৩ গোলে বিধ্বস্ত করেন পুসকাসরা। নিয়তির নির্মম পরিহাস ফাইনালে সেই পশ্চিম জার্মানির সাথেই ৩-২ গোলে পরাজিত হয়ে শেষ হয় পুসকাসের স্বপ্নের পথচলা। অথচ ম্যাচের মাত্র ৮ মিনিটের মধ্যেই পসুকাস এবং চিবরের গোলে ২-০ তে এগিয়ে গিয়েছিল হাঙ্গোরি। বার্ন-এর ওয়াঙ্কডর্ফ স্টেডিয়ামের ফাইনালে পুসকাসরা কেন সেবার বিশ্বকাপটি জিততে পারলো না সেটি আজও এক রহস্য--বিশ্ব ফুটবলে যা ”ডাস ওন্ডার ভন বার্ন” বা ”মিরাকল অব বার্ন” নামেই বিখ্যাত হয়ে আছে।



বলা হয়ে থাকে হাঙ্গেরির ফুটবল পুরোটাই পুসকাসময়। পুসকাসের আগেও তেমন কিছু নেই, নেই পুসকাসের পরেও। ১৯৫২ সালে অলিম্পিকে সোনা জেতা পুসকাসের হাঙ্গেরি তার সময়ই টানা ৩২ ম্যাচ অরাজিত থাকার রেকর্ড গড়েছিল। জিতেছিল ইউরোপীয়ান কাপও। হাত ছোয়া দুরত্বে চলে গিয়েছিল বিশ্বকাপ শিরোপারও। তবে ফুটবল ইতিহাসের গোল্ডেন টিম নিয়েও পুসকাসরা সেবার রানার আপ-এর স্বান্তনা নিয়েই দেশে ফিরেছিলেন। ১৯৫৪র বিশ্বকাপে রানার আপ হওয়াটাই ফুটবল ইতিহাসের অন্যতম সেরা এক চরিত্র, জাতীয় দলের হয়ে ৮৪ ম্যাচে অবিশ্বাস্য ৮৫ গোল করা ফেরেঙ্ক পুসকাসের সেরা বিশ্বকাপ সাফল্য। ১৯৬২র বিশ্বকাপতো খেলে পুসকাসের ছায়া।



তবে ইতিহাস যে কেবল সকল প্রকার প্রাপ্তিতে ভরপুর রোমান্টিক হিরোদেরই মনে রাখে তা নয়, কখনো কখনো মনে রাখে সকল প্রতিভা নিয়েও চির বঞ্চিত ট্র্যাজিক হিরোদেরও। ভাগ্য এবং রাজনীতিতে জর্জরিত অমিত প্রতিভাধর পুসকাস তেমনি একজন যার গোল করার প্রতিভা নতুন প্রজন্মকে স্মরণ করিয়ে দিতে ২০০৯ সালে ফিফা চালু করে প্রতিবছর সবচেয়ে সুন্দর গোলের জন্য ফিফা পুসকাস অ্যাওয়ার্ড।



প্রথম আলো অনলাইনে মাঝে মাঝে আমার কিছু লেখা প্রকাশিত হয়। সেই ভালোলাগা অন্যদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে কখনও কখনও ব্লগেও তা শেয়ার করি। কিন্তু এখানেই ঘটে বিপত্তী। অনেকেই সঙ্গত কারণেই বিভ্রান্ত হন, 'পুরোটাই কপি করার দায়ে' তেড়ে আসেন। বিভ্রান্ত হবেন না, এটি তেমনই একটি প্রয়াস

মন্তব্য ১৫ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (১৫) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে মে, ২০১৪ রাত ২:৪৭

নাজমুল হাসান মজুমদার বলেছেন: সুন্দর পোস্ট

২১ শে মে, ২০১৪ রাত ৯:০৫

অনিরুদ্ধ রহমান বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ।

২| ২১ শে মে, ২০১৪ রাত ২:৫৭

আছিফুর রহমান বলেছেন: গতানুগতিক লেখা, পুসকাসকে নিয়ে বিস্তারিত লেখা আশা করেছিলাম, কিন্তু পোস্টে এসে হতাশ হলাম তেমন নতুন কিছু নেই বলে

২১ শে মে, ২০১৪ রাত ৯:০৯

অনিরুদ্ধ রহমান বলেছেন: হতাশ হবেন না, যদি মমিন হন...

চিন্তার কিছু নাই, পুসকাস এমন একজন খেলোয়াড়, যাকে নিয়ে প্রচুর লেখা হয়। কোথাও না কোথাও ভালো কিছু পাবেনই।

লেখাটা 'বিশ্বকাপ কিংবদন্তী' সিরিজের হওয়ায় ফোকাসটা বিশ্বকাপেই রাখার চেষ্টা করা হয়েছে।

৩| ২১ শে মে, ২০১৪ রাত ৩:১৭

প্লিওসিন অথবা গ্লসিয়ার বলেছেন: ১৯৫৪ এর ফাইনালের ভিডিও দেখেছিলাম। প্রথম ১৮ মিনিটেি ২-২। তারপর শুধু গোল মিস আর মিস। অদ্ভুত সব মিস। মিরাকল অব বার্ন নাম যথার্থই বটে। #:-S

২১ শে মে, ২০১৪ রাত ৯:১০

অনিরুদ্ধ রহমান বলেছেন: আসলেই মিরাকল।

৪| ২১ শে মে, ২০১৪ সকাল ৮:২৮

মামুন রশিদ বলেছেন: ভালো লেগেছে ।

২১ শে মে, ২০১৪ রাত ৯:১১

অনিরুদ্ধ রহমান বলেছেন: আমারো ভালো লাগলো।

৫| ২১ শে মে, ২০১৪ সকাল ১০:৪৪

শরৎ চৌধুরী বলেছেন: চমৎকার পোস্ট।

২১ শে মে, ২০১৪ রাত ৯:১১

অনিরুদ্ধ রহমান বলেছেন: আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

৬| ২১ শে মে, ২০১৪ দুপুর ১:০৭

স্বপ্নবাজ অভি বলেছেন: চমৎকার পোস্ট।

২১ শে মে, ২০১৪ রাত ৯:১২

অনিরুদ্ধ রহমান বলেছেন: আপনাকেও।

৭| ২১ শে মে, ২০১৪ বিকাল ৫:০৮

বঙ্গভূমির রঙ্গমেলায় বলেছেন: সাবলীল লেখায় চমৎকার পোস্ট।

২১ শে মে, ২০১৪ রাত ৯:১৩

অনিরুদ্ধ রহমান বলেছেন: ফাকা মাঠে একটা গোল দিয়ে দিলেন!

অনেক ধন্যবাদ।

৮| ২২ শে মে, ২০১৪ রাত ১২:২৭

সুমন কর বলেছেন: শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ। গুড পোস্ট।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.