নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অনিরুদ্ধ রহমান

[email protected]

অনিরুদ্ধ রহমান › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিশ্বকাপ কিংবদন্তী: ফ্রাঞ্জ বেকেনবাওয়ার

২১ শে মে, ২০১৪ রাত ৯:০০





বেকেনবাওয়ার বিশ্বকাপকে মহিমান্বিত করেছেন নাকি বিশ্বকাপ বেকেনবাওয়ারকে মহান করেছে তা নিয়ে প্রশ্ন চলতে পারে। তবে সন্দেহাতীতভাবে বিশ্বকাপ ফুটবলের এক অন্যতম চরিত্র কাইজার ফ্রাঞ্জ বেকেনবাওয়ার। নিজের ব্যাক্তিগত প্রতিভার ঐশ্বর্য বা জার্মান ফুটবলে তার অর্জন সব মিলিয়েই তাকে ডাকা হয় কাইজার বা সম্রাট নামে। দুটি বিশ্বকাপ লেখা তার নামের পাশে। প্রথমবার ১৯৭৪-এ অধিনায়ক হিসেবে এবং ১৯৯০এর দ্বিতীয়টি জেতেন ম্যানেজার হিসেবে। ব্রাজিলের মারিও জাগালোর সাথে যৌথভাবে এই মর্ত্যরে মাত্র দ্বিতীয় ব্যাক্তি হিসেবে খেলোয়াড় এবং কোচ উভয় ভূমিকায় বিশ্বকাপ বিজয়ের এক বিরল অর্জন কাইজারের। তবে অধিনায়ক এবং কোচ হিসেবে এই রেকর্ড-এর এক এবং অদ্বিতীয় মালিক বেকেনবাওয়ার।



দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষ দিকে জার্মানির মিউনিখে জন্মগ্রহণ করেন বেকেনবাওয়ার। মাত্র ২০ বছর বয়সেই ১৯৬৫ সালের বেকেনবাওয়ারের আন্তর্জাতিক অভিষেক হয় ততদিনে ভেঙ্গে দু’টুকরো হয়ে যাওয়া মাতৃভূমির পশ্চিম অংশে। তিনটি বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করেন পশ্চিম জার্মানির হয়ে। একই দলের হয়ে দুটি বিশ্বকাপে ছিলেন কোচ হিসেবেও। বার্লিন দেয়ালের পতন আর জার্মানির একীভুত হওয়ার কিছুদিন আগে জার্মানদের আরো একটি বিশ্বকাপ উপহার দেন কোচ হিেিসবে। পশ্চিম জার্মানী তথা জার্মানীর ইতিহাসের ৩ টি বিশ্বকাপ জয়ের দুটিতেই আছে তার প্রত্যক্ষ অবদান।



মিডফিল্ডার হিসেবে ক্যারিয়ার শুরু করা বেকেনবাওয়ার শেষ পর্যন্ত নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন রক্ষণভাগের একজন অদ্বিতীয় সেনাপতি হিসেবে। রক্ষণের খেলোয়াড় হিসেবে বিপ্লব ঘটান রক্ষণের পেছনের রক্ষাকবচ নামে পরিচিত আধুনিক ফুটবলের সুইপার বা লিবেরো ধারার। পেছনে থেকে দলের নেতৃত্ব দিতে হলেও আক্রমনে সময় ছুটে চলে যেতেন সামনে। ১৯৬৬র প্রথম বিশ্বকাপেই বেকেনবাওয়ার একজন মিডফিল্ডার হিসেবে চার গোল করে সবার নজর কারেন। স্বাগতিক ইংল্যান্ডের কাছে ওয়েম্বলির ঐতিহাসিক ফাইনালে অতিরিক্ত সময়ের গোলে পরাজিত হলেও তরুণ বেকেনবাওয়ার মাথা উচু করেই দেশে ফেরেন।



১৯৭০-এর পরের বিশ্বকাপের দ্বিতীয় রাউন্ডে ইংল্যান্ডের সাথে ম্যাচে ২-০ তে পিছিয়ে থেকেও ৬৯ মিনিটে বেকেনবাওয়ারের গোলে জার্মানি ঘুরে দাড়ায়। নির্ধারিত সময়ে ২-২ এ সমতার ম্যাচে পশ্চিম জার্মানি শেষ পর্যন্ত অতিরিক্ত সময়ের গোলে জিতে যায়, শোধ নেয় গত বিশ্বকাপের পরাজয়ের। তবে সেমিফাইনালে ইতালির বিপক্ষে সেই ’গেম অব দ্যা সেঞ্চুরি’র ম্যাচে অতিরিক্ত সময় মিলিয়ে বেকেনবাওয়াররা ৪-৩ গোলে পরাজিত হয়ে যায়। ম্যাচে আঘাত পেয়ে বেকেনবাওয়ারের হাত নড়ে যায় কাধ থেকে। কিন্তু অনুমোদিত দুইজন খেলোয়াড় ইতিমধ্যেই বদল করে ফেলায় সেই স্থানচ্যুত হাতকে কাধের সাথে ঝুলিয়ে রেখেও খেলা চালিয়ে যান কাইজার। কিন্তু শেষ রক্ষা আর হয়নি। এই বিশ্বকাপ থেকেও বেকেনবাওয়ার মাথা উচু করেই ফেরেন। তবে এবারও খালি হাতেই।



১৯৭৪ এর পরের বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হয় বেকেনবাওয়ারের পশ্চিম জার্মানিতেই। দান দান তিন দানে হয়তো বিশ্বাস রেখেছিলেন বেকেনবাওয়ার। নিজেদের মাটিতে বিশ্বকাপ, দেশবাসীর সমর্থন, উপর মুলার, নেশতা, সেপ মায়ারদের নিয়ে গড়া শক্তিশালী দল সর্বোপরি ২৯ বছর বয়সীর হয়তো নিজের সেরাটা দেবার সেটাই শেষ সুযোগ। এবার আর কোন ভুল হয়নি। এবার কেবল মাথা উচু করেই ক্ষান্ত হননি বেকেনবাওয়ার, দুহাতে উচু করে ধরেছিলেন বিশ্বকাপ ট্রফিটিই। বিশ্বকাপ জয়ের পথে বেকেনবাওয়ারদের রক্ষণ শিরাপার অন্যতম দাবিদার ইয়োহান ক্রুইফের টোটাল ফুটবলকে বাক্সবন্দীকরে রেখে ২-১ এ জয় ছিনিয়ে নেয় নেদারল্যান্ডস-এর বিপক্ষে।



তিনবার বিশ্বকাপ জিতে জুলে রিমে ট্রফিটি ব্রাজিল রেখে দেবার পর নতুন বিশ্বকাপ বিজয়ী প্রথম দলনেতা বেকেনবাওয়ার। শুধু তাই না তার নেতৃত্বেই ইউরো এবং বিশ্বকাপ জেতা প্রথম দলের গৌরব অর্জন করে পশ্চিম জার্মানি। ফুটবল বিশ্বকাপের ইতিহাসের নিয়ে ফিফা যে ’ড্রিম টিম’ করে তাতে বেকেনবাওয়ার নির্বাচিত হন একজন গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হিসেবে। দুইবারের ইউরোপীয়ান বর্ষসেরা ফুটবলার বেকেনবাওয়ার পশ্চিম জার্মানির হয়ে ১০৩ টি ম্যাচ খেলেন, প্রথম জার্মান ফুটবলার হিসেবে শততম ম্যাচের মাইল ফলক অর্জণ করেন।



বেকেনবাওয়ারের হাত ধরেই আসে পশ্চিম জার্মানির তৃতীয় বিশ্বকাপ শিরোপা। ১৯৯০এর সেই শিরোপা বেকেনবাওয়ার জেতান কোচ হিসেবে। তার অধীনে ১৯৮৬র বিশ্বকাপের ফাইনালও খেলে জার্মানি। তবে ১৯৮৬র বিশ্বকাপে অতিমানবীয় ম্যারাডোনার আর্জেন্টিনার কাছে ফাইনালে পরাজিত হলেও ১৯৯০ বিশ্বকাপের ফাইনালে সেই ম্যারাডোনার আর্জেন্টিনাকে হারিয়েই বিশ্বকাপ ইতিহাসে নিজের অমরত্ব নিশ্চিত করেন বেকেনবাওয়ার।



প্রথম আলো অনলাইনে মাঝে মাঝে আমার কিছু লেখা প্রকাশিত হয়। সেই ভালোলাগা অন্যদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে কখনও কখনও ব্লগেও তা শেয়ার করি। কিন্তু এখানেই ঘটে বিপত্তী। অনেকেই সঙ্গত কারণেই বিভ্রান্ত হন, 'পুরোটাই কপি করার দায়ে' তেড়ে আসেন। বিভ্রান্ত হবেন না, এটি তেমনই একটি প্রয়াস

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে মে, ২০১৪ রাত ৯:২৬

রেজওয়ানা আলী তনিমা বলেছেন: কিংবদন্তী খেলোয়ার সম্পর্কে অনেক কিছু জানলাম।

কিন্তু অনুমোদিত দুইজন খেলোয়াড় ইতিমধ্যেই বদল করে ফেলায় সেই স্থানচ্যুত হাতকে কাধের সাথে ঝুলিয়ে রেখেও খেলা চালিয়ে যান কাইজার।

ক্রীড়াবীর বটে!

ভালো লাগলো লেখাটা :)

২| ২২ শে মে, ২০১৪ সকাল ৯:৫০

বঙ্গভূমির রঙ্গমেলায় বলেছেন: অনেক সুন্দর লিখেছেন।

৩| ২২ শে মে, ২০১৪ রাত ৮:৪০

আছিফুর রহমান বলেছেন: দারুন পোস্ট ++++++

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.