নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অনিরুদ্ধ রহমান

[email protected]

অনিরুদ্ধ রহমান › বিস্তারিত পোস্টঃ

ব্লোয়িং ইন দ্যা উইন্ড

২০ শে নভেম্বর, ২০১৬ রাত ২:৫৫

ট্রাফিক সিগন্যাল ছেড়ে দিয়েছে। সবার মধ্যে এগিয়ে যাবার একটা তীব্র বাসনা। আমিও রাস্তা পার হচ্ছিলাম।

হঠাৎ দেখি বেশ একটা উত্তেজনা। “সব্যসাচী” এক যুবক মাঝবয়সী এক রিকশাওয়ালার দুই গালে ক্রমাগত চড় মেরে চলেছে। আর রিকশাওয়ালা তার ভুলের জন্য কর জোড়ে ক্ষমা চেয়েই চলেছে--ভাই ভুল হয়ে গেছে, মাফ করে দেন, রিকশায় ওঠেন। রিকশাওয়ালার ঠোট ফেটে রক্ত বের হচ্ছে। কিন্তু যুবক ক্ষমাহীন, প্রমাণ করে চলেছে, এখন যৌবন যার…

আমি আমার গন্তব্যে এগিয়ে যাব নাকি ঘটনার দিকে এগিয়ে যাব ভাবতে ভাবতে শেষ পর্যন্ত ঘটনার দিকেই এগিয়ে গেলাম। রাস্তাঘাটে দুপক্ষের হাতাহাতি দেখার একটা আকর্ষণ আছে, গ্ল্যাডিয়েটরের লড়াই দেখা রোমান সম্রাট-রোমান সম্রাট একটা আকর্ষণ। তার উপর পক্ষ দুটি যখন রিকশাওয়ালা এবং যুব সমাজের প্রতিনিধি, তখন দর্শকদের জন্যেও তা সর্বৈব নিরাপদ।

ঘটনার বিবরণ থেকে জানা যায়, যুবকটি তার মাস ছয়েকের সন্তান সম্ভাবা স্ত্রী কে নিয়ে ডাক্তারের কাছে যাচ্ছিল। জ্যামের অবসরেই তারা এই রিকশাটি ঠিক করেছে। রিকশায় উঠতে যাবে এমন সময় সবুজ বাতি জ্বলে ওঠায় পেছনের গাড়ি ক্রমাগত হর্ন দিচ্ছিলো। রিকশাওয়ালা তাড়াহুড়া করতে যাওয়ায় যুবকের সন্তান সম্ভাবা স্ত্রী রিকশায় উঠতে গিয়ে রাস্তায় পড়ে গেছেন। দেখলাম তরুণীটি ফুটপাথে বসে কাতরাচ্ছে।

কোন বীর্যবান যুবক এর প্রতিবাদ না করে থাকতে পারে না। এমন অবস্থায় যুবকটির তার স্ত্রীর প্রতি দায়িত্ববোধ, অনাগত সন্তানের প্রতি মমত্ববোধ মর্তে প্রতিফলিত হতে থাকলো, বর্ষিত হতে থাকলো রিকশাওয়ালার উপর।

ছয় মাসের সন্তান পেটে নিয়ে রিক্সা থেকে পড়ে যাওয়া মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে। কিন্তু রিকশাওয়ালাকে মেরে স্ত্রী বা অনাগত সন্তানের সেই অপূরণীয় ক্ষতির ক্ষতিপূরণ পাওয়ার সম্ভবনা শূন্য । সে কথা যুবককে স্মরণ করিয়ে দেবার মত “সুধী সমাজ” এখনও হয়ে উঠিনি। তাই রিকশাওয়ালার দোষ স্বীকার করেই তার প্রাণ ভিক্ষা চাইলাম যুবকের কাছে—ভাই মাফ করে দেন এবারের মতন।

এতক্ষণ প্রহার করে যুবকটির রাগ পড়ে আসছিলো, হাফিয়েও উঠেছিলো নিশ্চই। তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপে সেও হাফঁ ছেড়ে বাঁচলো, রিক্সাওয়ালাকেও পালিয়ে বাচার সুযোগ করে দিল।

আমিও বাড়ির পথে হাটা ধরলাম। হাটতে হাটতেই ভাবছিলাম ‘কতটা পথ পেরুলে মানুষ হুওয়া যায়।‘ দোষ কী রিকশাওয়ালারই ছিল? অবশ্য রিকশাওয়ালা হওয়াটাই একটা দোষ। তারপরও ভাবলাম আমার স্ত্রী-আমার সন্তানের ক্ষেত্রে একই ঘটনা ঘটলে আমি কী করতাম?

The answer, my friend, is blowin' in the wind.

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২০ শে নভেম্বর, ২০১৬ সকাল ১১:২২

সামিয়া বলেছেন: এখন সবাই সবার প্রতি অন্যায় করে কে কাকে ঠকিয়ে কতটা লাভবান হতে পারে সেই প্রতিযোগিতা, আবার নিজের অক্ষমতা হতাশা অপরজনের উপর ছড়িয়ে দেয়ার জন্য ও অন্যায় করে, কেউ অন্যায় করে কেউ সহ্য করে। তবে এটাও ঠিক গরীবদের একটু বেশিই সহ্য করতে হয়।
কিছু কিছু রিকশাওয়ালা মেয়েদের সাথে অশালীন আচরণ করে, ভাড়া ডাবল নেয়, এটা অফেন হয়ত হয়না তবে হয়,

২৩ শে নভেম্বর, ২০১৬ রাত ১২:৫১

অনিরুদ্ধ রহমান বলেছেন: কিছু কিছু রিকশাওয়ালা অশালীন আচরণ করে, কিছু কিছু বস অন্যায় আচরণ করে, কিছু বিত্তবান, কিছু কিছু ক্ষমতাবান অগ্রহণযোগ্য আচরণ করে। বাস্তবতা হল এই যে, এদের মধ্যে কেবল প্রথম জনকেই তার কর্মফল ইহকালে ভোগ করতে হয়।

২| ২০ শে নভেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১:৪৫

সুমন কর বলেছেন: অনেক দিন পর, আপনার লেখা পড়লাম। কেমন আছেন? লেখা এবং লেখার মেসেজটা চমৎকার লাগল।
দোষ যে কার, সেটা আসলেই মাঝে মাঝে বোঝা দুষ্কর !

২৩ শে নভেম্বর, ২০১৬ রাত ১২:৫৩

অনিরুদ্ধ রহমান বলেছেন: এক্ষেত্রে দোষটা কার বোঝা মুশকিল। তবে বেশীরভাগ সময়ই দোষটা গরীবের।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.