নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
তুরানের বয়স হলো সাড়ে তিন।
সারাদিন যেমন-তেমন, কিন্তু রাতে ঘুমাতে গিয়ে সে বাবার ঘুম হারাম করে ছাড়ে--বাবা, গল্প শোনাও, গল্প শোনাও, গল্প শোনাও। এবং কোন রেডিমেড গল্প হলে চলবে না, কাস্টম মেড হতে হবে। কারণ গল্পের পাত্র-পাত্রী এবং বিষয়বস্তু সে নিজে নির্বাচন করে দেবে। আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি, সেই পাত্র-পাত্রীর সাথে দক্ষিণারঞ্জন মিত্র মজুমদার বা উপেন্দ্র কিশোর রায়ের পাত্র-পাত্রীর কোন মিল নেই। যদি কোন মিল খুঁজে পাওয়া যায় তবে তা একান্তই কাকতাল মাত্র। কোনদিন তার পাত্র-পাত্রী হলো একটা মা সিএনজি আর একটা বেবি সিএনজি, কোনদিন বাবা ফ্যান আর বেবী ফ্যান, কোনদিন স্পাইডারম্যান আর ব্যাটম্যান।
গল্পগুলি জমিয়ে রাখছি তুরানের ত্রিশ বছর বয়সের জন্য, কোনদিন যদি তার পুত্রও ঘুমাতে গিয়ে শুনতে চায় একটা মা সাইকেল আর একটা বেবি সাইকেল কিংবা একটা মা টেম্পু আর একটা বেবি টেম্পুর গল্প।
আমাদের আজকের গল্প একটা স্পাইডারম্যান আর একটা ব্যাটম্যানের গল্প:
এক দেশে ছিল এক স্পাইডারম্যান আর এক ব্যাটম্যান। এরা দুজনই তুরানের বাসায় থাকতো। একদিন স্কুল শেষে দুজনের দেখা হয়ে গেল। কিছুক্ষণ দুজন মিলেমিশে ভালই খেলাধুলা করলো। কিন্তু একটু পরেই দুজনের লেগে গেল দ্বন্দ-- কার বেশী শক্তি, কার বেশী বুদ্ধি।
স্পাইডারম্যান বলে আমার, ব্যাটম্যান বলে আমার।
দুজন তুমুল ঝগড়া লেগে গেল। কেউ কারো কথা শোনেনা, শুধু নিজেরটাই বলতে থাকলো--আমার শক্তি বেশী, আমার বুদ্ধি বেশি।
তুরানেরও ছুটি হয়েছিল। তুরান পাশ দিয়ে যাচ্ছিলো। ওদের ঝগড়া শুনে তুরান ওদের জিজ্ঞেস করলো--তোমরা ঝগড়া করছো কেন? তোমরা জানোনা ঝগড়া করলে সবাই তোমাদের পচা বলবে?
এ কথা শুনে ওরা দুজনেই ভাবলো, তাইতো। তখন ওরা ঝগড়াঝাটি থামিয়ে তুরানকে বললো তাহলে তুমিই বলো আমাদের কার বেশী শক্তি আর বুদ্ধি?
তুরান বললো, তোমারা বাসায় চলো, দাদু বলতে পারবে তোমাদের কার বেশী বুদ্ধি আর শক্তি।
বাসায় যেয়ে তুরান তার দাদুকে সব কথা খুলে বললো। সব শুনে দাদু বললো আমি বলতে পারবো, তবে তার আগে তোমাদেরকে তিনটা পরীক্ষা দিতে হবে। পরীক্ষার ফলাফল দেখেই আমি বলতে পারবো। তোমরা রাজি?
দুজনেই বললো, রাজি।
দাদু বললো, দেখি, এক নাম্বার পরীক্ষা, কে আগে নিজ হাতে সব ভাত খেয়ে শেষ করতে পারে। দাদু ওদের প্লেটে ভাত দিলেন, শাক দিলেন, ডাল দিলেন, মাছ দিলেন। স্পাইডারম্যান, ব্যাটম্যান দুজনেই সুন্দর করে সব ভাত খেয়ে ফেললো।
দাদু দেখলেন, এই পরীক্ষাতে দুজনেই সমান। এবার তিনি বললেন, এবার তাহলে দুই নাম্বার পরীক্ষা, কে আগে ঘুমিয়ে পড়তে পারে।
বলা মাত্রই, দুজনেই সুন্দর করে বালিশ নিয়ে শুয়ে ঘুমিয়ে পড়লো।
বিকেলে ঘুম থেকে উঠে সবাই মাঠে খেলতে গেল। সন্ধায় বাড়ি ফিরে ওরা আবার জানতে চাইলো, বলো কে ফার্স্ট?
দাদু বললেন, ঠিক আছে, তিন নাম্বার পরীক্ষাটা তো এখনও বাকি। দেখি, কে আগে স্কুলের পড়া শেষ করতে পারে।
বলা মাত্রই দুজনই পড়তে বসে গেল। কোন দুষ্টুমি না করেই সব হোমওয়ার্ক শেষ করে ফেললো।
এবার দুজনেই দাদুকে ধরলো, এবার বলো, কার বুদ্ধি বেশী?
দাদু দেখলেন সব পরীক্ষাতেই দুজনেই সমান। কী আর করা, তিনি বললেন, তোমারা দুজনই শক্তিতে, বুদ্ধিতে সমান। দুজনই ফার্স্ট।
দুজনই বললো, এটা আবার কিকরে হয়?
দাদু বললেন, সব কাজ নিজে নিজে করলে, বড়দের সব কথা শুনলে, সব ভাত খেলে, সব পড়ালেখা করলে সবাই শক্তিতে, বুদ্ধিতে ফার্স্ট হয়ে যায়।
০৬ ই আগস্ট, ২০১৭ রাত ১:৩১
অনিরুদ্ধ রহমান বলেছেন: ধন্যবাদ মামা।
২| ১১ ই মে, ২০১৭ ভোর ৪:১১
কল্পদ্রুম বলেছেন: দোয়া করি তুরান এই নিষ্কলুষ গল্পগুলো শুনতে শুনতে একটা সুন্দর মনের মানুষ হয়ে উঠুক।
০৬ ই আগস্ট, ২০১৭ রাত ১:৩১
অনিরুদ্ধ রহমান বলেছেন: আমরা দোয়া প্রার্থী।
©somewhere in net ltd.
১| ১১ ই মে, ২০১৭ রাত ২:৩২
:):):)(:(:(:হাসু মামা বলেছেন: সুন্দর লেখছেন।