নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অনিরুদ্ধ রহমান

[email protected]

অনিরুদ্ধ রহমান › বিস্তারিত পোস্টঃ

দুটি গল্প

২৬ শে অক্টোবর, ২০১৭ রাত ৮:৩৪



অনেক অনেক অনেক কাল আগের কথা।

ইরানের বোস্তম শহরে এক বালক বাস করতো। নাম ছিল তার বায়েজিদ। বায়েজিদ ছিল খুব শান্ত-শিষ্ট, মাতৃভক্ত ছেলে।

এক রাতে বায়েজিদের মা’র শরীর খুব অসুস্থ। মা জ্বরে অচেতন। বায়েজিদ মা’র বিছানার পাশে বসে আছে। মাঝরাতে মা হঠাৎ ঘুম ভেঙে বললেন--পানি, পানি। মা পানি পান করতে চাইলেন। বায়েজিদ গ্লাস হাতে কলসির কাছে গিয়ে দেখে কলসির পানি শেষ। পানির জন্য রাতের অন্ধকারে যেতে হবে অনেক দূরের পথে। বালক বায়েজিদ অন্ধকার পথের কথা ভেবে প্রথমে ভয় পেয়ে গেলেও মায়ের তৃষ্ণার কথা মনে করে সব ভয়কে জয় করে কলসি নিয়ে অন্ধকার পথে নামলো পানি নিয়ে আসার জন্য।

পানি নিয়ে ঘরে ফিরে দেখলো ততক্ষণে মা আবার গভীর ঘুমে অচেতন। বায়েজিদ মার ঘুম ভাঙ্গালো না। পানির গ্লাস হাতে নিয়ে মার বিছানার পাশে দাঁড়িয়ে রইলো--মা কখন আবার ঘুম ভেঙে পানি চান।

এভাবেই কেটে গেল সারা রাত। শেষ রাতে ঘুম ভেঙ্গে মা দেখেন বায়েজিদ এক গ্লাস পানি হাতে তার বিছানার পাশে দাঁড়িয়ে আছে। মা’র মনে পড়ে যায় রাতে কখন যেন তিনি পানি চেয়েছিলেন। আর তার পর থেকেই পুত্র পানি হাতে করে সারারাত দাঁড়িয়ে আছে! পুত্র বাৎসল্যে মার মন ভরে যায়। তিনি পুত্রের মঙ্গল কামনায় দোয়া করেন, আল্লাহ যেন পুত্র বায়েজিদকে একদিন অনেক বড় মানুষ করেন।

মায়ের দোয়া বিফলে যায় না। বড় হয়ে বায়েজিদ অনেক বড় মানুষ হন। বায়েজিদ বোস্তামির নাম সারা বিশ্ববাসী জানেন।

পৃথিবীতে তিনজন বিজ্ঞ ব্যাখ্যাকারী আছেব। তারা প্রত্যেকেই স্বীকার করলেন আল্লাহ সর্বশ্রেষ্ঠ বিচারক।

*******

বায়েজিদ বোস্তামীর অনেক অনেক কাল পরের কথা।

মায়ানমারের রাখাইনের মংডুতে মোহাম্মাদ জহার মিয়ার বাস। বাবার মৃত্যুর পর মা’ই একমাত্র সম্বল জহার মিয়ার। মা’কে নিয়ে সুখে শান্তিতেই বসবাস করছিল জহার মিয়া।

কিন্তু সেই সুখের দেশে একদিন যমদূতের মতন হাজির হয় সেনাবাহিনী। গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দেয়, হত্যা করা হয় সামনে যাকে পাওয়া যায় তাকেই। যে যেদিকে পারে রাতের আধারে দিগ্বিদিক পালায়। পালায় জহার মিয়াও।

কিন্তু প্রাণ ভয়ে পালানোর সময়ও বৃদ্ধা মা’র কথা ভুলে যায়নি জহার মিয়া। মা’কে কাধে নিয়েই হাঁটতে থাকে জীবনের টানে। দিনের পর দিন হাঁটতে হাঁটতে একদিন তারা পৌছায় পার্শ্ববর্তী দেশ বাংলাদেশে। সরকারী ক্যাম্পে আশ্রয়ও পায় তারা। তখনকার মতন প্রাণে বাঁচে। প্রাথমিক ভাবে প্রাণে বাঁচার পর জহার মিয়ার শুরু হয় প্রাণ বাচানোর লড়াই।

বৃদ্ধা মা আল্লাহর কাছে হাত জোর করে দোয়া করেন। আল্লাহ যেন তার সন্তানকে অনেক অনেক বড় করেন।

আল্লাহ জহার মিয়াকে বড় করতে থাকেন। বয়সে বড় করতে থাকেন। জহার মিয়ার বয়স বাড়তে থাকে--বাইশ, বত্রিশ, বিয়াল্লিশ…

পৃথিবীতে এখনও তিনজন বিজ্ঞ ব্যাখ্যাকারী আছেন। তারা অপেক্ষা করতে লাগলেন আল্লাহ কখন জহার মিয়াকে অনেক অনেক বড় করবেন আর তখন তারা তাদের ব্যাখ্যা দেবেন।

শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশের এক প্রত্যন্ত প্রান্তে শেষ হয় জহার মিয়ার জীর্ণ জীবন।

************
তিন জ্ঞানী আবার ব্যাখ্যা করলেন।
প্রথম জ্ঞানী: আল্লাহ যা করেন ভালোর জন্যই করেন।
দ্বিতীয় জ্ঞানী: একই ভালো কাজের ফলাফল ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে।
তৃতীয় জ্ঞানী: সব ভালো কাজের ফলাফল ইহকালে পাওয়া যায় না।

কেউই ব্যাখ্যা করলেন না, সেই মায়ের দোয়াই আল্লাহ কবুল করেন তিনি নিজে যাকে মহৎ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
সেই ব্যাক্তির মহৎ কাজই বিধাতা কবুল করেন, যাকে তিনি আগে থেকেই মহৎ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ২৬ শে অক্টোবর, ২০১৭ রাত ৮:৫২

আবু তালেব শেখ বলেছেন: খুব ভাল লিখেছেন। তবে লেখাটা দুইবার পেষ্ট হয়েছে। এডিট করুন

২৬ শে অক্টোবর, ২০১৭ রাত ৯:২৮

অনিরুদ্ধ রহমান বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই।

২| ২৬ শে অক্টোবর, ২০১৭ রাত ১০:৩১

বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: এটা কি কোন রিভার্স গেম? মুক্তমনার গন্ধ পাচ্ছি...

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.