নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
-শুধু প্রফাইল পিকচার চেঞ্জ করলেই সমাজ চেঞ্জ হয়না ভাই। প্রতিবাদ করা হয় না।
-আমি সমাজ চেঞ্জ করতে চাই কে বললো?
-তাহলে আড্ডায়, অফিসে, বাসায় এত বড় বড় লেকচার দেন কেন? পারলে একদিন রাজপথে নেমে দেখান।
- সবাই কি প্রতিবাদী হতে পারে? সবার কাজ কি রজপথে? কেউ মাঠে কাজ করবে কেউ সংসদে করবে, কেউ অফিসে, আদালতে…
-আপনাদের মতন তথাকথিত শিক্ষিত সমাজের কারনেই দেশটার আজ এ অবস্থা।
পোলাপানকে কি করে বলি, আমিও একদিন প্রতিবাদী হয়েছিলাম।
ওরা তখন ছোট। কিংবা অনেকের জন্মই হয়নি তখন। সেই সময় একবার অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছিলাম আমি। একা।
ক্লাস টু-তে পড়ি। বার্ষিক পরীক্ষার সময়। এক রুমে সিট পরেছে ক্লাস টু, আর ক্লাস এইট-এর।
পরীক্ষার হলে বসে আছি, পরীক্ষা শুরু হতে কিছু সময় বাকি আছে। হঠাৎই পরীক্ষা হলের বাইরে হুটোপটি, মারামারি। এক ছাত্র আরেক ছাত্রকে মেরে রক্তাক্ত করে দিল।
মার খাওয়া ছাত্রটি কোন ক্লাসের জানিনা কিন্তু মার দেওয়া ছাত্রটি ক্লাস এইটের বোঝা গেল। কারন তার সিটও পরেছে আমাদের রুমেই। আমার পেছনের সিটেই।
পরীক্ষা সবে শুরু হয়েছে। এমন সময় প্রধান শিক্ষক মোটা বেত নিয়ে আমাদের হলে আসলেন ঘটনার তদন্তে--এই মারামারি করেছে কে, ভালোয় ভালোয় বেঞ্চের উপর উঠে দাড়া।
কেউ কোন উত্তর দিচ্ছে না। না পরীক্ষার খাতায়, না স্যারের কথার। পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক একবার হেডমাস্টারের কথার প্রতিধ্বনি করলেন, কী হলো, স্যারের কথা কানে যাচ্ছে না?
সবাই তখনও চুপ।
এই পর্যায়ে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের সাক্ষীর মতন নিজের জীবন বিপন্ন করে উঠে দাঁড়িয়ে আমি অপরাধীকে ধরিয়ে দিলাম--স্যার, এইযে, এই ভাইয়াটা মারামারি করেছে।
দেখিয়ে দেওয়ামাত্র প্রধানশিক্ষক হামলে পড়লেন সেই ভাইয়াটার উপর--বদমাশ, আমার স্কুলে সন্ত্রাসী করিস, আবার উঠে দাড়াতে লজ্জা লাগে? আজ তোর…
স্যার সেই “সন্ত্রাসী” ভাইটিকে গ্রেফতার করে নিয়ে গেলেন।
যথা সময়ে পরীক্ষা শেষ করে সবাই বের হলো। প্রত্যক্ষদর্শীরা সবাই বিপ্লবীকে ভুলে গেল, কিন্তু সেই ভাইটি আমাকে ঠিকই মনে রাখলেন।
স্কুলের গেটের বাইরেই অপেক্ষা করছিল আমার জন্য। দেখা মাত্রই কাছে ডাকলেন, এই, এদিকে আয়।
এমন আহ্বান উপেক্ষা করার শক্তি আমার ছিলনা। মৃত্যু নিশ্চিত জেনেও ধীর পায়ে এগিয়ে গেলাম আততায়ীর দিকে। কাছে যাওয়া মাত্রই হর্স পাওয়ারের একটা চড় কষালেন। ছেলে হোক মেয়ে হোক, ওরকম চড় একটাই যথেষ্ট।
নিজের পারফরম্যান্সে তৃপ্ত হয়েই হোক আর আমার বয়সটা একটু কম থাকার কারনেই হোক, এক চড়েই ছেড়ে দিলেন।
তখন আমার গায়ের রংটাও একটু ফর্সার দিকে ছিলো। আমার গালে আরেক জনের চার-পাঁচ আঙুলের দাগ নিয়ে বাসার দিকে রওনা দিলাম।
কে যেন বলেছিলেন, শৈশবের অর্জিত শিক্ষাই বিশুদ্ধতম শিক্ষা। আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি, শৈশবের সেই বিশুদ্ধ শিক্ষায় আজও এতটুকু খাদ নেই। আর তাছাড়া, ন্যাড়াই কেবল একবার বেলতলায় যায় কথাটা ঠিক নয়, আমার মতন ঘন কেশবান অনেক মানুষও মাত্র একবারই বেল তলায় যায়।
ছোট ছোট ভাই-বোনকে এই ইতিহাস কিভাবে বোঝাই।
২| ০৯ ই আগস্ট, ২০১৮ রাত ৯:২১
রাজীব নুর বলেছেন: এক এক সময় মনে হয়, বেঁচে থেকে আর লাভ নেই
এক এক সময় মনে হয়, সব কিছু ভেঙেচুরে লন্ডভন্ড করে ফেলি
আবার কোনো কোনো বিরল মুহূর্তে ইচ্ছে হয়-
কিছু একটা তৈরি করে গেলে মন্দ হয় না।
৩| ১০ ই আগস্ট, ২০১৮ রাত ২:২২
আরণ্যক রাখাল বলেছেন: বাড়িতে গিয়ে কেঁদেকেটে মাকে বলেননি কেন? কিংবা পরদিন কোন শিক্ষককে?
ঐ বড়ভাইয়ের শিক্ষা হয়ে যেত।
©somewhere in net ltd.
১| ০৯ ই আগস্ট, ২০১৮ দুপুর ২:০৪
বিজন রয় বলেছেন: মারামারি মাঝে মাঝে ভাল।