নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অনিরুদ্ধ রহমান

[email protected]

অনিরুদ্ধ রহমান › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিশ্বাস করুন আর নাই করুন

০২ রা মে, ২০১৯ রাত ২:৩২

“মানুষের চোখের দিকে না তাকিয়া যারা ফোনের পর্দার দিকে তাকিয়ে থাকেন তারা ভুল করছেন।”

এমনিতেই বেশ সুন্দর কথা। তার উপর কথাটা যখন বলেন একজন অন্যতম মোবাইল ফোন বিক্রেতা তথা অ্যাপল ইনকর্পোরেটেড-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা টিম কুক, তখন কথাটা আরও মধুর শোনায়।

তবে মধু একটা কমে আসলে আপনি উপলব্ধি করবেন, টিম কুকের এই কথার সাথে একজন তামাক বিক্রেতার “ধূমপান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর” বা “ধূমপান মৃত্যু ঘটায়” ধরনের মায়া কান্নার আসলে কোন পার্থক্য নেই।

কারন তারা খুব ভালো করেই জানেন, যেই ‘একটা চাবি মাইরা’ তারা আমাদের দিছেন ছাইড়া, তা নিজে নিজেই জনম ভইরা চলতে থাকবে।

বিশ্বের সর্ববৃহৎ ইনসুলিন প্রস্তুতকারক নভো নরডিস্ক-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকেই সম্ভবত একবার বলতে শুনেছিলাম, সারা বিশ্ব ডায়াবেটিস মুক্ত হয়ে যেদিন তার কোম্পানি দেওলিয়া হয়ে যাবে, সেদিন তিনি হবেন পৃথিবীর সবচেয়ে সুখি মানুষ!

আহা! বুকটা ভরে যায়। মনে হয়, এই মানুষগুলো আছে বলেই হয়তো আজও মানবতা বেঁচে আছে।

মানুষগুলো হয়তো এই কথাগুলো সত্যিই আন্তরিক ভাইবেই বলেন, বিশ্বাস করেন। আমরা পোড় খাওয়া দেশের মানুষেরাই হয়তো কথাগুলো সরল ভাবে গ্রহণ করতে পারিনা।

অবশ্য এসব কথা যে পুরোপুরি ভিত্তিহীন তাও বলা যায় না। কখনো আইনগত বাধ্যবাধকতা থেকে হয়তো তাদের বলতে হয়, কখনো নিজেকে, নিজের দলকে অনুপ্রাণিত করতে বলতে হয়, কখনো ব্যবসায়িক কৌশলের অংশ হিসেবে বলতে হয়, কখনো দিন শেষে নিজের দ্বিধা-গ্লানি ঝেড়ে ফেলতে বলতে হয়। নিজে বিশ্বাস করুন আর নাই করুন, দলনেতাকে, একজন কান্ডারিকে, সত্য হোক মিথ্যা হোক, কখনও কখনও এধরনের কথা পেশাগত দায়িত্বের অংশ হিসেবেও বলতে হয়।

দলকে অনুপ্রাণিত করতে যুদ্ধে পর্যুদস্ত হয়ে ফিরে আসার পরও দলনেতাকে বলতে হয়--উই হ্যাভ লস্ট দ্যা ব্যাটল, নট দ্যা ওয়ার।
যুদ্ধে পাকিস্তানি বাহিনীর গোলার আঘাতে কর্নেল তাহেরের একটা পা উড়ে যায়। হতোদ্যম সৈনিকদের মনোবল ফেরাতে কর্নেল তাহের বললেন--তোমাদের আগেই বলেছিলাম, পাকিস্তানিরা আমার মাথায় গুলি করতে পারবে না। বড়জোর আমার পায়ে গুলি করতে পারবে। তোমরা তোমাদের দায়িত্বে ফিরে যাও।

ব্যাবসায়িক কৌশল হিসেবে বলতে শুনেছিলাম জার্মানির এক দামী গাড়ি প্রস্তুতকারীকে। এই শতকের শুরুর অর্থনৈতিক মন্দায় বিপাকে পড়ে গিয়েছিল বিশ্বের বড় বড় প্রতিষ্ঠান। বন্ধও হয়ে গিয়েছিল বেশকিছু। এমন সময় ভালো কিছু প্রতিষ্ঠানকে আর্থিক সহায়তা দিয়ে রক্ষা করতে চেয়েছিল জার্মান সরকার।
অনেকে সেই সুযোগ গ্রহণ করলো। একজন সরকারের সেই আর্থিক সহায়তা ফিরিয়ে দিয়ে বললেন, আমরা বিলাসবহুল গাড়ি নির্মাতা। আর্থিক সহায়তার টাকায় গাড়ি প্রস্তুত করে আমাদের ক্রেতাদের ছোট করার চেয়ে আমরা বন্ধ হয়ে যেতে প্রস্তুত।

আহা!
এই কথাগুলো শোনার পর পৃথিবীতে আরও অনেকদিন বেঁচে থাকতে ইচ্ছে করে।

এই কথাগুলো শোনার পর আমারো ওদের মতন বক্তা হতে ইচ্ছে করে। আপনাদেরকে বলতে ইচ্ছে করে, ভাই, মনে যাই থাকনা কেন, অফিসে থেকে বাসায় ফেরার পথে একটা বেলী ফুলের মালা নিয়ে যান, জীবনে সৌরভ ছড়াবেই।

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা মে, ২০১৯ সকাল ৯:১৩

আর্কিওপটেরিক্স বলেছেন: সুন্দর লেখা...

২| ০২ রা মে, ২০১৯ রাত ৯:১৬

মাহমুদুর রহমান বলেছেন: সহমত।

৩| ০২ রা মে, ২০১৯ রাত ১০:২০

রাজীব নুর বলেছেন: একটা শান্তির পোষ্ট দিয়েছেন ভাই সাহেব।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.