নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আস্তিকও নই -নই নাস্তিক

বুলবুল আহমেদ সোহেল

আস্তিকও নই-নই নাস্তিক

বুলবুল আহমেদ সোহেল › বিস্তারিত পোস্টঃ

দমন-পীড়ন ও হিংসাত্মক রাজনীতিরও অবসান চাই

০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৫ ভোর ৪:০৬

নির্বাচনের প্রথম বর্ষপূর্তিতে সোমবার অবরুদ্ধ ছিল সারা দেশ। বড় দুই দলের ক্ষমতার লড়াইয়ে সাধারণ মানুষের প্রাণ আজ ওষ্ঠাগত হয়ে উঠেছে। ৫ জানুয়ারি এক পক্ষ ‘গণতন্ত্র রক্ষা দিবস’ এবং অন্য পক্ষ ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ ঘোষণা করে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি দেয়। এ দিবসটিকে কেন্দ্র করে রাজপথে বিরোধী দলের কর্মসূচিকে ঠেকাতে সরকারের তৎপরতায় রাজধানীর সঙ্গে সারা দেশের স্থল ও নৌ যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। ফলে সারা দেশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে ঢাকা। রাজধানীসহ সারা দেশে দেখা দেয় চরম উত্তেজনাকর পরিস্থিতি। এ অবস্থায় পুলিশের পক্ষ থেকে সভা-সমাবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয় এবং নিরাপত্তা বাড়ানোর কথা বলে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে তাঁর গুলশানের অফিসে কার্যত অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পুলিশ এবং সরকারি দলের সঙ্গে বিএনপি ও জোটের নেতাকর্মীদের মধ্যে দফায় দফায় তুমুল সংঘর্ষ হয়। সারা দেশে চারজন নিহত, সাত শতাধিক আহত ও আট শতাধিক নেতাকর্মীকে আটক করে পুলিশ। এসবের প্রতিবাদে চট্টগ্রাম, রাজশাহী, নাটোর ও চাঁপাইনবাবগঞ্জে আজ হরতালের ডাক দিয়েছে স্থানীয় বিএনপি। এছাড়া অবরুদ্ধ অবস্থায় খালেদা জিয়া টানা অবরোধের ঘোষণা দেন। পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত দেশজুড়ে সড়ক, নৌ ও রেলপথ অবরোধের কর্মসূচি সফল করার জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
অন্যদিকে গোয়েন্দা সূত্রের বরাত দিয়ে পত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা যায়, গত বছর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতের সমাবেশকে ঘিরে যে ধরনের নাশকতা করা হয়েছিল, তারই আদলে গতকালও রাজধানীতে ব্যাপক নাশকতার ছক করা হয়েছিল এবং এই ছকে হুজি, জেএমবিসহ বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠন ও ভারতীয় বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন উলফারও সম্পৃক্ততা ছিল। গোয়েন্দা তথ্য সত্য হলে তা নিঃসন্দেহে উদ্বেগজনক। আগের দিন অর্থাৎ ৪ জানুয়ারি এক ডজনেরও বেশি গাড়ি পোড়ানো হয়েছে। আর বোমায় আহত হয়েছে রিকশাচালকসহ বেশ কিছু নিরীহ মানুষ। অন্যদিকে ৫ জানুয়ারি দিবাভাগের শুরুতেই নাটোরে প্রাণ গেছে দুজনের। সংঘর্ষ হয়েছে আরো বেশ কিছু জায়গায়। পুলিশসহ আহত হয়েছে বহু মানুষ। গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে কোনো দলের প্রধানের চলাচলে বাধা সৃষ্টি করা যেমন অন্যায়, তেমনি নাশকতা সৃষ্টির অপচেষ্টাও গ্রহণযোগ্য নয়।
দুঃখজনক হলেও সত্য, আমাদের রাজনৈতিক দলগুলো মুখে গণতন্ত্রের কথা বললেও তাদের আচার-আচরণে গণতন্ত্রের প্রতি ন্যূনতম শ্রদ্ধাবোধের প্রকাশ দেখা যায় না। বিরোধী দলের ওপর সরকারি দলের দমন-পীড়ন কিংবা সরকারের বিরোধিতার নামে বিরোধী দলগুলোর সহিংস আচরণ করা- কোনোটাই গণতান্ত্রিক রীতিগ্রাহ্য নয়। অথচ বছরের পর বছর আমরা তাই দেখে আসছি। বিএনপির নেতৃত্বে যখন চারদলীয় জোট ক্ষমতায় ছিল তখন আওয়ামী লীগের আন্দোলন-সমাবেশ দমনের জন্য যা যা করা হয়েছে, আওয়ামী লীগও এখন তা-ই করছে। তাই গণতন্ত্রের নামে দেশে এখন যা হচ্ছে তা কোনোক্রমেই গণতন্ত্র নয়, ক্ষমতার লড়াই মাত্র। এক দল ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য, আরেক দল ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য যার যার মতো চেষ্টা করে যাচ্ছে। মাঝখানে দেশের অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, মানুষের জীবন-জীবিকা বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে, জনজীবনে চরম দুর্ভোগ নেমে আসছে। আমরা যেমন দমন-পীড়নের অবসান চাই, তেমনি হিংসাত্মক রাজনীতিরও অবসান চাই।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.