![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
জগন্নাথ হলের সামনে দিয়ে যখন যাচ্ছিলাম তখন দেখলাম কয়েক জন যুবক তরুণ রং নিয়ে একজন অন্যজনকে তাড়া করেছে । রং এর কারনে কারো মুখ চেনা সম্ভব নয় । হঠাৎ মনে হল আজতো হোলি । মনটা আমার আনন্দ বেদনায় ভোরে উঠল । হয়তো ভাববেন কেন? কারন হোলি নিয়ে আমার দু ধরনেরই অভিজ্ঞতা রয়েছে । দীর্ঘদিন শান্তিনিকেতনে থাকার কারনে আমার হোলি নিয়ে সুখকর অভিজ্ঞতার পাল্লাটাই ভারী। আর বেদনার ঘটনা একবারই ঘটেছে । যদিও একবার বেদনা দায়ক ঘটনা ঘটলেও সেই ঘটনায় আমাকে বেশী পিড়া দেয় । তার কারন আমরা সুখের কথা মনে রাখিনা । অথচ দুঃখ কম হলেও সেটা আমাদের বেশি নাড়া দেয় ।
শান্তিনিকেতনে হোলি মুলতঃ বসন্ত উৎসব নামে পরিচিত । আর এই বসন্ত উৎসবে রয়েছে আনন্দ আর আনন্দ । শান্তিনিকেতনের দোল উৎসবের সুখানুভুতি লিখে প্রকাশ করা সম্ভব হবেনা । কারন সেই উৎসব শুধুই অনুভবের । আমরা বসন্ত উৎসবে অংশ গ্রহন করবো বলে প্রায় এক মাস আগে থেকে চলত তার প্রস্তুতি । উৎসবের আমেজে আমরা প্রায় নাওয়া খাওয়া ভুলে যেতাম । উৎসবের দিন সকালের অনুষ্ঠান শেষে যখন আবির খেলা শরু হতো তখন বাহারি আবিরে রঙিন হয়ে উঠত শান্তিনিকেতনের আকাশ ।লক্ষ লক্ষ মানুষের এক সাথে গেয়ে উঠত " আজি বসন্ত জাগ্রত দারে " ।গুরুদেব রবীন্দ্র নাথের বসন্তের গানে মুখরিত শান্তিনিকেতনের আকাশ বাতাস ।
অপর দিকে বেদনা দায়ক হলো , আমি বসন্ত উৎসবের পরের দিন , শান্তিনিকেতন থেকে কোলকাতা এসেছি । রবীন্দ্রনাথের বাড়ী জোড়াসাঁকোতে আমার ক্লাশ আছে । এম জি রোডে মেট্রো থেকে নেমে আমি একটি গলির মধ্যে দিয়ে জোড়াসাঁকোর দিকে হেটে যাচ্ছি। এমন সময় একটি ছয় তলা বাড়ির ছাদ থেকে আমার মাথার ওপর ফেলা হলো এক বালতি বালতি রং মেশানো জল । আমার হাতে একটি ডাইরী ছিল । রং আর জলে সেটা নষ্ট হয়ে গেল । পান্জাবিতো নষ্ট হলোই । এরপর কিছুদুর যেতেই ছাদের ওপর থেকে কারা যেনো আমার মাথায় নিক্ষেপ করলো দুরগন্ধ যুক্ত কি যেন পদার্থ । জোড়াসাঁকোর কাছাকাছি যেতে আরো কয়েক বালতি রং আমার মাথায় পড়ল। যে রং সহজে ওঠার নয় । এরপর জোড়াসাঁকোর গেটের কাছাকাছি দেখলাম কয়েকজন যুবক সবাই কে রং দিচ্ছে । আমায় দেখে তাদের কেন জানি মায়া হলো তারা আমাকে আর রং দিলনা । নাকি আমাকে আর রং দেবার জায়গা ছিলনা তাই ।
©somewhere in net ltd.