নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

রাজীব নুর

আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।

রাজীব নুর › বিস্তারিত পোস্টঃ

কয়েকটি সহজ সরল ভূতের গল্প

২৮ শে মে, ২০২৫ দুপুর ১:০৩



১। তখন আমি নতুন বিয়ে করেছি।
এদিকে দেশের অবস্থা ভালো না। বিরোধী দল হরতাল দিয়েছে। বাসে আগুন দেওয়া হচ্ছে। অফিস আদালত বন্ধ। আমার মন মেজাজ চরম বিক্ষিপ্ত। সিদ্ধান্ত নিলাম কক্সবাজার যাবো। রাতেই বাসে উঠে পড়লাম বউ নিয়ে। বউ নিয়ে সমুদ্রের পাড়ে হাঁটবো। সমুদ্র গোছল করবো। যেই সিদ্ধান্ত, সেই কাজ। হোটেল সাগরিকায় উঠেছি। দুপুরে খেয়ে ঘুম দিয়েছি। সন্ধ্যায় ঘুম ভেঙ্গেছে। বউকে বললাম, রেডি হও বার্মিজ মার্কেটে যাবো। রিকশা নিয়ে বার্মিজ মার্কেটে গেলাম। বউ হাবিজাবি অনেক কিছু কিনলো। সমুদ্রের পাড়ে আমরা এলোমেলো অনেকক্ষন হাঁটলাম। রাতে খেয়ে হোটেলে ফিরলাম। রুমের দরজা খুলতেই দেখি বউ বিছানায় বসে আছে। বউ বলল, আমাকে একা রেখে এতক্ষন কোথায় ছিলেন?

২। আখাড়া রেলস্টেশন। রাত দেড়টা।
শীতের রাত। প্রচন্ড শীত। এত শীত যে ঠান্ডায় হাতের আঙ্গুল বাঁকা হয়ে যাচ্ছে। ট্রেন লেট। মেজাজ খুবই খারাপ লাগছে। ওয়েটিং রুম ভর্তি মানুষ। কেউ কেউ বিছানা পেতে ঘুমিয়ে আছে। আমি বাইরে একটা বেঞ্চে বসে আছি। শীতে কাঁপছি। একটা চায়ের দোকান খোলা। সেখানে দুবার চা খেয়েছি। চা খেয়ে মেজাজ আরো খারাপ হয়েছে। ফালতু চা। চা নয় যেন চিনির সিরাপ। তাও আবার ঠান্ডা। এমন সময়- কোথা থেকে একটা মেয়ে এলো। মেয়েটা সুন্দর। সাদা জামা পরা। চুলে বেলী ফুল। আমাকে এক কাপ চা দিলো। চিনি না, জানি না- অথচ হাতে এক কাপ চা ধরিয়ে দিলো। আমিও চা হাতে নিলাম। চুমুক দিলাম। চমৎকার চা। সবচেয়ে বড় কথা আগুন গরম চা। মেয়েটা আমার সাথে ট্রেনে উঠলো। আমাদের কামরায় আমি আর মেয়েটা ছাড়া আর কেউ নেই। আমরা গল্প করতে শুরু করলাম। এবং একসময় ঘুমিয়ে পড়লাম। সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি মেয়েটা নেই। বেলীফুল রয়ে গেছে।

৩। গ্রামের বাড়ি গিয়েছি।
দুপুরবেলা পুকুরঘাটে বসে আছি। শান্ত পুকুরঘাট। কাঁচের মতো স্বচ্ছ রোদ উঠেছে। কিন্তু আমার গায়ে রোদ লাগছে না। কারণ আমার মাথার উপর বিশাল বট ও পাকুর গাছ মিলেমিশে একাকার। দুপুরবেলাও কিছু পাখি মিহি সুরে গান গাইছে। পুকুরঘাটে একা বসে থাকতে ভালো লাগছে। কলেজ জীবনের কথা মনে পড়ছে। মেয়েটার নাম ছিলো- নাবিলা। সহজ সরল সুন্দর মেয়ে। আমাদের কলেজে একটা পুকুর ছিলো। সেই পুকুরঘাটে আমি আর নাবিলা বসে গল্প করতাম। জীবনের প্রথম চুমুটা কি নাবিলাকেই দিয়েছিলাম! নাবিলার কথা ভাবতেই আমার দারুন লাগছে। কিন্তু এমন সময় আমার বন্ধু এসে হাজির। বন্ধুর নাম জাহাঙ্গীর। জাহাঙ্গীর বলল, কিরে খবর কি? কেমন আছিস? মেজাজ কিছুটা খারাপ হলো। এখন নাবিলাকে নিয়ে ভাবছি। আর বন্ধু চলে এসেছে। জাহাঙ্গীর বলল, আমি আসাতে তুই মনে হয় খুশি হোস নাই। আমি চলে গেলাম। বাই। জাহাঙ্গীর চলে গেলো। হঠাত আমার মনে পড়লো- জাহাঙ্গীর তো বেঁচে নেই। তিন বছর আগে সে সৌদিতে স্ট্রোক করে মারা গেছে।

৪। তখন বইমেলা চলছিলো।
'আমার ব্লগ' এর স্টলে বসি। স্টল বন্ধ করে বাসায় ফিরতে ফিরতে রাত ১১টা বেজে যায়। কারন, স্টল বন্ধ করে আবার টিএসসিতে আড্ডা দেই। সেদিন মন ভরে আড্ডা দিতে পারলাম না। আকাশে মেঘ করেছে। বিজলি চমকাচ্ছে। গুড়িগুড়ি বৃষ্টি পড়তে শুরু করেছে। তাই বাসায় রওনা দেই। রিকশা নিয়ে বাসায় ফিরছি। শুরু হলো তুমুল বৃষ্টি। রিকশা মালিবাগ এসে বলল, গলির ভিতরে আমি যাবো না। আপনি হেটে যান। রিকশাওলার দোষ দিয়ে লাভ নাই। কোমর পর্যন্ত পানি। আমি পানিতে নেমে পড়লাম। বৃষ্টি আরো বেড়েছে। যাইহোক, গলির মুখে আসতেই দেখি এক বুড়ো লোক। হাতের নখ বড় বড়, মাথার চুল লম্বা, শার্লক হোমসের মতো কোট পরা, মাথায় ওয়েস্টার্ন টুপি। লোকটা বলল, একটা বই কিনবে? আমার খুবই মেজাজ খারাপ লাগছে। আমি পুরো ভিজে একাকার। আর এই লোক বলছে- একটা বই কিনবে? আমি রাগ চোখে লোকটার দিকে তাকালাম। লোকটা আমাকে সম্পূর্ন অগ্রাহ্য করে বলল- বইটা পড়লে তোমার জীবন বদলে যাবে। তুমি অলৌকিক ক্ষমতার অধিকারী হবে।

৫। কোনো এক বিচিত্র কারণে আমি পুকুরে গোছল করতে পারি না।
পুকুরে নামলেই আমার পা ডেবে যায়। পুকুরের মাটি নরম। মা ডেবে যায়। কিছুতেই দাঁড়িয়ে থাকতে পারি না। তখন আমার মনে হয়- কেউ যেন আমার পা টেনে নিয়ে যাচ্ছে। আমাকে মেরে ফেলবে ডুবিয়ে। জানি না সাঁতার। ঘটনা চক্রে যে ক'বার আমি পুকুরে নেমেছি, প্রায় ডুবে গেছি। ডুবে গিয়ে বেশ কয়েকবার পুকুরের পানি খেয়েছি। অথচ ছোট ছোট বাচ্চারা পুকুরে লাফালাফি করে গোছল করে। যাইহোক, মতিঝিল সেন্ট্রাল গভঃ স্কুলের খেলার মাঠ।
ছোটবেলা এই মাঠে আমি ফুটবল খেলতাম নিয়মিত। একদিন বিকেলে ফুটবল খেলছি। আকাশে মেঘ করলো। চারপাশ কালো হয়ে গেলো মুহুর্তে। সবাই মাঠ ছেড়ে চলে গেলো। দ্রুত বাসায় যেতে হবে। নইলে বৃষ্টিতে ভিজতে হবে। সেই সময় মতিঝিল স্কুলের মাঠে একটা পুকুর ছিলো। নোংরা পুকুর, লতাপাতা দিয়ে ভরা। পুকুর না বলে বদ্ধ জলাশয় বলা যেতে পারে। সেই জলাশয়ে আমার বল পড়েছে। কিন্তু আমি বল আনতে পারছি না। বলটা পুকুরের মাঝখানে চলে গেছে। এদিকে পুরো মাঠ খালি। চারপাশ অন্ধকার হয়ে গেছে। সাহস করে পুকুরে নামলাম এবং ডুবে গেলাম। তারপর যা হলো- অবিশ্বাস্য। সুন্দর মতো একটা মেয়ে আমাকে পুকুর থেকে বাচালো। বলল, ভয় নেই। এই নাও তোমার বল। এখন বাড়ি যাও। আমি বললাম, তুমি কে? মেয়েটা হাসলো। বললাম, তুমি কি মৎস্যকন্যা? মেয়েটা আবারও হাসলো। সহজ সরল সুন্দর হাসি।

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে মে, ২০২৫ বিকাল ৪:৩৮

ফেনিক্স বলেছেন:



মানুষের মন কোন কোন সময় ফ্যান্টাসীর জন্ম দেয়, মানুষকে কল্পনার জগতে নিয়ে যায়।

২৯ শে মে, ২০২৫ সকাল ৯:৫৬

রাজীব নুর বলেছেন: একদম সঠিক।

২| ২৮ শে মে, ২০২৫ রাত ১০:১২

শায়মা বলেছেন: মেয়েটা মনে হয় মৎস্যকন্যাই ছিলো......

সাবধান ভাইয়া দেখো আবার পানির তলের জড়িবটি বুড়িকে ধরে মানুষের মত পা লাগিয়ে তোমার বাসায় চলে আসতে পারে.....

২৯ শে মে, ২০২৫ সকাল ৯:৫৭

রাজীব নুর বলেছেন: মানুষের চাইতে জড়িবটি বুড়ি ভালো।

৩| ২৮ শে মে, ২০২৫ রাত ১০:২২

কামাল১৮ বলেছেন: আখাউড়া রেলস্টেশনে রাতে এমন অনেক ভুত থাকে।মাইনুল চেয়ারম্যান আমার বন্ধু মানুষ।৮০/৯০ এর দিকে ঢাকা থেকে দল বেধে ফেন্সি খেতে যেতো আখাউড়া।আমি যেতাম কাস্টমের মাল কিনতে।এই সুত্রের চেয়ারমযানের সাথে পরিচয়।

২৯ শে মে, ২০২৫ সকাল ৯:৫৮

রাজীব নুর বলেছেন: আপনি অভিজ্ঞ মানুষ।
ওস্তাদ লোক।

৪| ২৯ শে মে, ২০২৫ রাত ১:০৮

কামাল১৮ বলেছেন: মাইনুল আখাউড়ার চেয়ারম্যান ছিলো।

২৯ শে মে, ২০২৫ সকাল ৯:৫৯

রাজীব নুর বলেছেন: সে এখন নাই। তার অনেক বছর আগেই মৃত্যু হয়েছে।

৫| ২৯ শে মে, ২০২৫ রাত ১:৩৯

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: এগুলি আসলে ভুত না, জীন বা পরী হবে। মেয়ে হলে পরী আর ছেলে হলে জীন। জীন মানুষের মস্তিষ্ক দখলে নিয়ে ফেলে।

২৯ শে মে, ২০২৫ সকাল ১০:০০

রাজীব নুর বলেছেন: জ্বীন ভূত বলে আসলে কিছু নেই। এগুলো মূলত অবচেতন মনের কারসাজি

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.