![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বোদলেয়ারের আশ্চর্য্য মেঘমালা দেখে থমকে দাঁড়ানো জীবনানন্দের সোনালী ডানার চিল...
এইরকম বৃষ্টিভেজা সন্ধ্যায়, চানাচুর-মুড়ি ঠাঙায় আর আদা-লাল চা। আছরোপ চাচার ভারি গলায় শুরু হয় মুন্ডুকাটা ঘোড়ার গল্প। বড়পুকুরের ঐ পাশে গাবগাছে বাদুরের পাখা ঝুটোপুটি করছে।
হঠাৎ কারেন্ট চলে যায়। মোমবাতি জ্বালায় মহিব্বুল চাচা। বৃষ্টি আরও বেড়ে যায়। সাপিকুল ভাই লুঙ্গির ভাজ থেকে ইন্তাজ বিড়ির প্যাকেট বের করে, লাইটারের জন্য হাত বাড়ায়।
একটা শীতল বাতাস হাড় কাঁপিয়ে বৃষ্টির ঝাপটায় উত্তর দিকে ধেয়ে যায়। বড়লতা আমগাছটা দুলছে—নানার কবরের উপরে নুয়ে পড়া সাদা সাদা ফুলে ভেজা কামিনী ফুলের গাছ যেন তারাফুলের বাথান!
গল্প বলতে বলতে আছরোপ চাচা গলা খাঁকারি দেন।
বুলবুল আমার কানে ফিসফিসিয়ে বলে, “এসব গাঁজাখুরি গল্প তুই বিশ্বাস করিস!”
শাহাজান মুচকি হাসে আধো আলোছায়ায়—ওর চুলের টেরি অন্ধকারেও তেল চিকচিক করছে। হঠাৎ বৃষ্টি ভেদ করে জ্বলে ওঠে একটা টর্চ, আর সাইকেলের বেলের সাথে সালাম! মাওলানা বাড়ির খোকন ভাই ফিরছে। ভিজে পাঞ্জাবি নিয়ে সাইকেল থামায় কাঠের পাটাতনের সামনে। মহিব্বুল চাচা এগিয়ে দেয় গামছাটা।
একটু থেমে যায় গল্প।
বৃষ্টি একটু কমছে মনে হচ্ছে।
দাড়াশ ফজলুর লম্বা অবয়ব অন্ধকার ঠেলে মোমবাতির আলোয় স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
একটা ভ্যান ভেঁপু দেয়, তার টেমির আলোয় দেখি—বুলবুল লাফ দিয়ে সামনে উঠে পড়ছে।
মনুভাই, মুনতা চাচার সাইকেলের রডে বসে, এসে দাঁড়ায় টং-এর সামনে।
“ক’টাকা হলো?” জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকাই মহিব্বুল চাচার দিকে। দুটো দু’টাকার নোট বাড়িয়ে দিই।
মনুভাই তাড়া লাগায়, “ভাত ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে! তোর ভাবী ওলের সাথে বড় বড় পার্সিমাছ রান্না করেছে।”
আমি উঠে দাঁড়াই।
চারপাশটা যেন দুলে ওঠে।
হঠাৎ একটা তীব্র আলোর ঝলক আমাকে বাস্তবে ফিরিয়ে আনে।
দেখি, আমি স্ট্যাটফোর্ড ইন্টারন্যাশনাল রেলস্টেশনে বসে আছি।
সিটিংবর্ণগামী হাইস্পিড ট্রেনের অটোমেটিক দরজা খুলে যায়।
ভেতরে পা বাড়াই।
ট্রেনের জানালায় টুপটাপ বৃষ্টি পড়ছে।
কিন্তু কাঁচের প্রতিফলনে হঠাৎ দেখি—পেছনে দাঁড়িয়ে আছে মহিব্বুল চাচা। এক হাতে গামছা, অন্য হাতে চা।
হালকা হেসে বলে, “তুমি তো একেবারে ভিজে গেছ!”
ট্রেন চলতে শুরু করে।
জানালার ধারে বসে আমি কাঁপতে থাকা আঙুলে চায়ের কাপটা আঁকড়ে ধরি।
হাতের উষ্ণতা ঠিক বুঝতে পারি না।
শুধু জানালার ওপাশে একটানা ঝরে পড়ছে পুকুরপাড়ের বৃষ্টি।
——-
কামরুল বসির
স্ট্যার্টফোর্ড, লন্ডন
২০ শে এপ্রিল, ২০২৫ ভোর ৪:০০
সোনালী ডানার চিল বলেছেন: শেষ হয়েও হলো না শেষ, এইটুকু রেশ ছড়িয়ে থাকুক পাঠকের অন্তরে, শুভেচ্ছা নিন।
২| ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৫ বিকাল ৫:২২
রাজীব নুর বলেছেন: সুন্দর লেখা।
২০ শে এপ্রিল, ২০২৫ ভোর ৪:০১
সোনালী ডানার চিল বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ। কেমন আছেন? মনে রেখেছেন?
©somewhere in net ltd.
১|
১৮ ই এপ্রিল, ২০২৫ রাত ১:৩৪
এইচ এন নার্গিস বলেছেন: গল্প কি চলবে ? ভালো লাগলো ।