নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বুনোগান

বুনোগান › বিস্তারিত পোস্টঃ

সৃষ্টিতত্ত্ব

২৭ শে এপ্রিল, ২০২৩ দুপুর ১২:০৪


মানুষের চিন্তাজগত রুদ্ধ হয়ে যায় যখন সে ভাবতে থাকে এই বিশ্ব জগতের অস্তিত্ব কেন আছে? যদি অস্তিত্ব না থাকত তাহলে সেই কোন কিছুর অস্তিত্বহীন জগতের অস্তিত্বই বা কেন? একটু চোখ বন্ধ করে সেই ফাঁকা জগতের কথা চিন্তা করি। কল্পনায় ভেসে উঠবে এক অন্তহীন অন্ধকার জগতের ছবি। প্রশ্ন জাগবে এই অন্তহীন অন্ধকার জগতই বা কেন আছে? এই জগত না থাকার অবস্থাটাই বা কেমন? সেই অবস্থার কোন চিত্র আমরা কল্পনাতেও আনতে পারি না। এই অস্তিত্ব ও অনস্তিত্বের প্রশ্নটি আদিকাল থেকে মানুষকে ভাবিয়ে তুলেছে। এই আছে বা নাই এর প্রশ্নটি একটি দুষ্ট চক্র। এই চক্র থেকে বের হওয়ার কোন উপায় নেই। আছে এর অস্তিত্ব কি নাই থেকে? নাই এর অস্তিত্ব আবার কোন আছে এর গর্ভে?

এই প্রশ্ন অনুসন্ধানী মানুষদের কাছে, দার্শনিকদের কাছে এক বিরাট প্রশ্ন। কোন কিছু না থাকাটা কি স্বাভাবিক নাকি কোন কিছু থাকাটা স্বাভাবিক? এক্ষেত্রে কোন কিছু না থাকা অবস্থাটি কোন কিছু থাকার অবস্থা থেকে বেশী স্বাভাবিক মনে হয়। কারণ কোন কিছু না থাকা অবস্থা থেকে কোন কিছু থাকার অবস্থার উদ্ভব ঘটতে পারে। এখন এই উদ্ভব কি আপনা আপনি হতে পারে? অনেক দার্শনিক মনে করেন কোন কিছুর উদ্ভব আপনা আপনি ঘটতে পারে না। কোন পরম শক্তি এই উদ্ভবের ঘটনাটি ঘটিয়েছেন। এই চিন্তা থেকেই সৃষ্টি তত্ত্বের জন্ম।

আদিম যুগে মানুষ সম্পূর্ণরূপে প্রকৃতির উপর নির্ভরশীল ছিল।তাদের চিন্তার জগত সেখানেই সীমাবদ্ধ ছিল। প্রকৃতির বিভিন্ন শক্তিকে তারা পূজা করত। প্রকৃতির বিভিন্ন জীব জন্তু ও বস্তু ছিল তাদের দেবতা। এই দেবতাদের অবস্থান ছিল এই পৃথিবীতেই। এই দেবতারাই পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন এবং তাদের পূর্বপুরুষদের একটি টেরিটরি দিয়েছেন। এই চিন্তার অনুসারীদের বলা হয় প্রকৃতি পূজারী। পরবর্তীতে দার্শনিকরা যখন আকাশের গ্রহ নক্ষত্র নিয়ে চিন্তা ভাবনা শুরু করলেন তখন তারা বিভিন্ন গ্রহ নক্ষত্রের মধ্যে তাদের দেবতাদের খুঁজে পেলেন। তারও পরে দার্শনিকরা যখন বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ড নিয়ে চিন্তা শুরু করলেন তখন তারা ভাবলেন এই বিশ্ব জগত সৃষ্টির পেছনে নিশ্চয়ই একজন সৃষ্টিকর্তা রয়েছেন। এই চিন্তা থেকে প্রায় তিন হাজার বছর পূর্বে প্রথম জরাস্থ্রু এক ঈশ্বরবাদের জন্ম হোল। তাদের সৃষ্টিকর্তার থাকেন এই বিশ্ব জগতের বাইরে আর একটি জগতে। সেখানে অবস্থান করেই তিনি মানুষের জন্য এই বিশ্ব জগত সৃষ্টি করেছেন। পরবর্তীতে এই এক সৃষ্টিকর্তা ও দুই জগতের ধারণা নিয়ে আরও কিছু ধর্মের উৎপত্তি হয়েছে।

এই পর্যায়ে এসে দার্শনিকদের এই ভাবনা তখনি সত্যে পরিণত হোল যখন সৃষ্টিকর্তা মানুষের সাথে নিজেই যোগাযোগ স্থাপন করলেন কয়েকটি ঐশী গ্রন্থের মাধ্যমে। প্রতিটি সম্প্রদায়ের মানুষ তাদের স্ব স্ব গ্রন্থের উপর বিশ্বাস স্থাপন করল এবং এভাবে মানুষ তাদের সৃষ্টি তত্ত্বের জিজ্ঞাসার উত্তর পেয়ে যায়। সম্প্রদায়-গত সামাজিক জ্ঞানে সৃষ্টিতত্ত্ব প্রতিষ্ঠা পেয়ে গেল। সাধারণ মানুষ হোল মূলত অনুসরণকারী। তার সম্প্রদায় থেকে সে যে জ্ঞান লাভ করেছে সে সেই জ্ঞানেরই অনুসরণ করছে। এই জ্ঞানের বাইরে তারা আর কিছু গ্রহণ করতে পারে না।

কিন্তু অনুসন্ধানী মানুষ তথা দার্শনিকরা এখানেই সন্তুষ্ট হতে পারেন নাই। তাদের প্রশ্ন এই বিশ্ব জগত সৃষ্টি হয়েছে অন্য এক জগত থেকে অর্থাৎ এই বিশ্ব জগতের অস্তিত্বের জন্য দায়ী অন্য এক জগত, তাহলে কি সেই জগতেরও উৎপত্তির কারণ অন্য আর এক জগত? কোন কিছু যদি আপনা আপনি উৎপত্তি না হতে পারে তাহলে সব উৎপত্তির পিছনেই তো আর একটি উৎপত্তিগত কারণ থেকে যায়? এই জগতের উৎপত্তির কারণ আর একটি জগত এবং তার উৎপত্তির কারণ অন্য আর একটি জগত, এভাবে জগতের অসীম এক চেইন তৈরি হয়ে যায়। তাহলে তো কোন কিছু নাই বলে কোন অবস্থা নাই। কোন কিছু নাই থাকাটা যেখানে স্বাভাবিক ছিল সেখানে কোন কিছু থাকাটাই স্বাভাবিক অবস্থা। তাহলে নাই থেকে উৎপত্তির কোন কারণ থাকে না, কোন কিছু আছে এবং সর্ব অবস্থাতেই সেটা আছে।

এই ধারণা মেনে নিলে আবার সৃষ্টিতত্ত্ব থাকে না। কারণ কোন কিছু নাই এর জগত না থাকলে সৃষ্টি হবে কোথায়? কারণ সবটুকু জগতই তো কোন কিছু আছে জগত দ্বারা পরিপূর্ণ। সৃষ্টিতত্ত্ব অনুযায়ী স্রষ্টা সর্বব্যাপি বিরাজমান। অর্থাৎ অসীম জগতে এমন কোন স্থান নাই যেখানে স্রষ্টার অস্তিত্ব নাই। অসীম জগতে স্রষ্টা নিজেই নিজের সৃষ্টি। সুতরাং স্রষ্টাকে সৃষ্টি করার জন্য অসীম জগতের বাইরে যেমন কোন জগত থাকতে পারে না তেমনি স্রষ্টার অস্তিত্ব পূর্ণ কোন জায়গায় নতুন কোন জগতের সৃষ্টিও সম্ভব নয়।

অনুসন্ধানী যুক্তিবাদী দার্শনিকরা এই জায়গায় এসে থেমে যান। কারণ আপাতত যুক্তির সবকটি পথ তারা যাচাই করে দেখে ফেলেছেন। কিন্তু অনুসন্ধানী বস্তুবাদী দার্শনিকরা আরও কিছুদূর এগুতে চান। তাদের পদ্ধতি হোল ধারণাকে তত্ত্বে রূপ দেয়া এবং সেই তত্ত্বের সত্যতা পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে যাচাই করা। গণিত ও পদার্থ বিজ্ঞান হোল তাদের পর্যবেক্ষণের হাতিয়ার।

তারা শুরু করেন বাস্তব বস্তু জগত পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে। তারা দেখেন প্রকৃতিতে যা কিছুর বা রূপের অস্তিত্ব রয়েছে সেগুলো পূর্বাপর এক বা একাধিক রূপের রূপান্তরিত ফল। পূর্বাপর রূপের মধ্যে পরবর্তী রূপে রূপান্তরিত হওয়ার উপাদান ও সম্ভাবনা থাকে বলেই পরবর্তি রূপে রূপান্তর হওয়া সম্ভব হয়। এই সম্ভাবনা আবার কিছু শর্তের অধীন। যেমন বাষ্পের পূর্বাপর রূপ জল। জলের মধ্যে বাষ্পের সকল উপাদান রয়েছে এবং কিছু শর্তাধীনে জল বাষ্পে রূপান্তরিত হতে পারে। প্রকৃতির অনেক রূপান্তরই চক্রাকার। আবার এই চক্রাকার রূপান্তরই এক অবস্থা থেকে অন্য অবস্থায় রূপান্তরিত হচ্ছে। প্রকৃতিতে রূপান্তর একটি সরল অবস্থা থেকে ক্রমশ জটিল অবস্থায় রূপান্তরিত হচ্ছে। বিজ্ঞানের ভাষায় যাকে এনট্রপি বলা হয়। আবার সকল অবস্থা বা রূপের মূল উপাদান হোল অণু পরমাণু এবং রূপান্তর ঘটে কয়েকটি বল বা শক্তির দ্বারা। মহা বিশ্বের সকল গ্রহ নক্ষত্র, ছায়াপথ সকল কিছুই অসংখ্য অণু পরমাণু নিয়ে গঠিত। প্রতিটি পরমাণু আবার কিছু ইলেকট্রন, প্রোটন, নিউট্রন নিয়ে গঠিত। ইলেকট্রন, প্রোটন, নিউট্রনের পূর্বাবস্থা হোল এক সেট কণা। এগুলো কোন ধারণা নয়। বৈজ্ঞানিক পর্যবেক্ষণ দ্বারা এগুলো প্রমাণিত সত্য বলে গৃহীত হয়েছে।

কিন্তু বৃহৎ বস্তুগুলির আচরণ পরমাণু জগতের আচরণ থেকে ভিন্ন। প্রতিটি একই ধরণের রূপ বা অবস্থার নিজস্ব গুনাগুণ বা আচরণ বিধি রয়েছে। এই মহা বিশ্বের সর্বত্র আমারা যে অসংখ্য গ্রহ, নক্ষত্র, নক্ষত্রপুঞ্জ, সৌর জগত, ছায়াপথের দেখা পাই সেগুলো হোল বৃহৎ বস্তুপিণ্ড। মহাবিশ্বের এই অবস্থায় দেখা যায় সকল ছায়াপথগুলো পরস্পর থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। অর্থাৎ যে স্পেস টাইমে ছায়াপথগুলো অবস্থান করছে সেই স্পেসটাই অতীত থেকে সম্প্রসারিত হয়ে বর্তমান অবস্থায় এসেছে এবং ভবিষ্যতের দিকে আরও সম্প্রসারিত হচ্ছে। এই সম্প্রসারিত বিশ্বের একটি ক্ষুদ্র অংশই আমরা দেখতে পাই এবং পর্যবেক্ষণ করতে পারি। কিন্তু সকল গ্রহ, নক্ষত্র ও ছায়াপথগুলোর গতিপথ ও পরিবর্তন যেহেতু নির্দিষ্ট কিছু নিয়ম বিধি মেনে চলে, সেই নিয়ম বিধি অনুসরণ করে আমরা মহাবিশ্বের অতীত ও ভবিষ্যৎ অবস্থা জানতে পারি। বস্তু জগত কখনো তার নিয়ম বিধির ব্যত্যয় ঘটায় না। বস্তু জগতের যে ক্রম বিবর্তন সেটার সম্ভাবনা ও নিয়ম বিধি পূর্ব অবস্থাতেই রয়েছে তাই সেই নিয়ম বিধি তাকে পরবর্তী রূপান্তর অবস্থায় যেতে সহায়তা করে। এর জন্য বাইরের কোন হস্তক্ষেপের প্রয়োজন হয় না। সম্প্রসারিত মহা বিশ্বের আদি অবস্থার পরিসর ছিল অতি ক্ষুদ্র। শক্তির সংরক্ষণ নীতি অনুযায়ী বর্তমান বিশ্বের সকল শক্তি সেই সংকুচিত অবস্থার ক্ষুদ্র পরিসরে কেন্দ্রীভূত ছিল। সেগুলো প্রচণ্ড তাপীয় অবস্থায় বিরাজ করছিল। বর্তমান বিশ্বের সকল বস্তু, অণু পরমাণু, কোয়ার্ক পার্টিকেলগুলোর অস্তিত্ব সেই প্রচণ্ড তাপীয় অবস্থায় সম্ভব ছিল না। কিন্তু সেই তাপীয় অবস্থায় পরবর্তীতে বস্তু জগত গঠনের সম্ভাবনা লুকায়িত ছিল। বিশ্ব সম্প্রসারণের ফলে প্রচণ্ড তাপীয় অবস্থা শীতল হতে থাকে। তাপীয় অবস্থা যখন কোয়ার্ক বা কণা গঠনের শর্তে পৌঁছায় তখন সকল পার্টিকেল ও বলের উদ্ভব ঘটে। পার্টিকেল ও বলের পারস্পরিক ক্রিয়া প্রতিক্রিয়া নিয়ম বিধির অধীন হয়ে পরে। এই পর্যায় থেকে কসমিক বিজ্ঞানীগণের বস্তুর আচরণের সূত্রগুলো কার্যকর হয়ে উঠে।

সুতরাং মহাবিশ্বকে জানার ক্ষেত্রে বিজ্ঞানীদের দুইটি সীমা রয়েছে। এক, মহা বিশ্বের আদি অবস্থা যেখানে বিশ্ব অতি ক্ষুদ্র পরিসরে প্রচণ্ড তাপীয় অবস্থায় ছিল। এই অবস্থায় এখন পর্যন্ত জানা বিজ্ঞানীদের কোন সমীকরণ কাজ করে না। কারণ সমীকরণগুলি বস্তু ও বলের উপর কার্যকর। স্পেস টাইমের যাত্রা সেখান থেকেই শুরু। সুতরাং মহাবিশ্বের আদি অবস্থার পূর্বে কি অবস্থা ছিল সেটা জানা সম্ভব হয়ে উঠেনি। দুই, অন্যদিকে মহা বিশ্বের সম্প্রসারিত বর্তমান অবস্থায় মহা বিশ্বের সীমানার বাইরে কি আছে সেটা জানাও সম্ভব হয় না। কারণ দূরবর্তী কোন অবস্থা পর্যবেক্ষণ করতে হলে আলো বা রেডিয়েশনের উপর নির্ভর করতে হয়। যেহেতু আলো, রেডিয়েশন বা গ্রেভিটেশনাল ওয়েভ চলে স্পেস টাইমের পথ ধরে সেহেতু স্পেস টাইমের বাইরে কোন পর্যবেক্ষণ সম্ভব নয়।

তাই মেটা-ফিজিক্স দার্শনিকদের জানার পরিধি এই মহাবিশ্বর সীমানার মধ্যেই সীমাবদ্ধ। মহা বিশ্বের উৎপত্তি কোথা থেকে হয়েছে এবং মহাবিশ্ব কোথায় সম্প্রসারিত হচ্ছে এই সম্পর্কে মেটা-ফিজিক্স দার্শনিকরা অজ্ঞ। তবে তারা দেখেছেন এই মহাবিশ্ব শুরু থেকে এ পর্যন্ত কিছু নিয়ম বিধি অনুসরণ করেই রূপান্তরিত হয়েছে এবং এই রূপান্তরের পিছনে বাহ্যিক কোন কিছুর অবদান নেই। মেটা-ফিজিক্স দার্শনিকরা বিজ্ঞান ভিত্তিক তথ্যের বাইরে কোন ধারণা দিয়ে কোন কিছুর সিদ্ধান্তে আসেন না। তবে তারা সব সময় প্রচেষ্টা করে যান সত্য জানার পদ্ধতিগুলো আবিষ্কার করতে।

এই মহা বিশ্বের বাইরে কিছু আছে কি নাই এই প্রশ্নের উত্তর বিজ্ঞানীরা দিতে পারেননি। কিন্তু এই মহাবিশ্বের অভ্যন্তরেই আছে কি নাই এর একটি সংমিশ্রণ অবস্থা রয়েছে। গ্রহ নক্ষত্র এবং বৃহৎ বস্তু অবস্থায় প্রকৃতি যে আচরণ বিধি অনুসরণ করে, কণা এবং কোয়ার্ক অবস্থায় প্রকৃতির নিয়ম বিধি অন্য রকম। এই অবস্থাকে বস্তুর কোয়ান্টাম অবস্থা বলে। এখানে কোয়ান্টাম ফিল্ড বলে একটি ক্ষেত্র রয়েছে। এই ক্ষেত্রকে আমরা একটি জল ভর্তি চৌবাচ্চা হিসেবে কল্পনা করতে পারি। বৃষ্টি পড়লে জলের উপরি তল চঞ্চল হয়ে উঠে। বৃষ্টির প্রতিটি ফোঁটা জলের উপরি তলকে একবার নীচে নিয়ে যায় পরক্ষণে উপরে উত্থিত করে। জলের স্থির অবস্থা হোল কোয়ান্টাম ফিল্ডের ভেকিউম অবস্থা অর্থাৎ যেখানে কোন কণার অস্তিত্ব নাই। আর যেখানে জলের তল উত্থিত হচ্ছে সেটাই কোন কণার অস্তিত্ব। আর যেখানে জলের তল নীচে দেবে যাচ্ছে সেটা হোল এন্টি কণার অস্তিত্ব। কোয়ান্টাম পরিসরে কোন ভেকিউম অর্থাৎ নাই অবস্থা থাকতে পারে না। এখানে সর্বদা কণার অস্তিত্ব তৈরি হচ্ছে সাথে সাথে তার একটি এন্টি কণাও তৈরি হচ্ছে। এই দুই কণা পরক্ষনে একসাথে মিলিত হয়ে অস্তিত্বহীন হয়ে যাচ্ছে। এই অবস্থায় কণা কোয়ান্টাম ফিল্ডের ভাইব্রেশন বা তরঙ্গ ছাড়া আর কিছুই নয়। এখানে একই সাথে আছে বা নাই এর টানা পোড়ন চলছে। এই কণারই আর একটি অবস্থা হোল সকল বস্তু জগত বা মহা বিশ্ব। আমি আপনি সকলেই এই কণার বস্তুগত অবস্থা। মহা বিশ্বের আদিতে এই মেটার ও এন্টি মেটারের টানা পোড়ন চলছিল। এই টানা পোড়নে যে শক্তির প্রয়োজন হয় তা ই প্রচণ্ড তাপীয় অবস্থার কারণ। কোন কারণে এই মেটার ও এন্টি মেটারের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে গেলে এন্টি মেটারের তুলনায় মেটারের সংখ্যা বৃদ্ধি পায় এবং মহা বিশ্ব প্রচণ্ড গতিতে সম্প্রসারিত হতে থাকে।

সুতরাং এই মহাবিশ্বের অভ্যন্তরে প্রকৃতির যে নিয়ম বিধিগুলো দেখতে পাই তার মৌলিক দিকগুলো হল: এক, প্রকৃতিতে কোন ভেকিউম বা শূন্য অবস্থা থাকতে পারে না। শূন্য অবস্থা তৈরি হবার উপক্রম হলেই সেখানে কণার অস্তিত্ব জেগে উঠে। দুই, প্রকৃতিতে যা কছু আছে তার সবই কণা ও কয়েকটি বল দ্বারা গঠিত। তিন, প্রকৃতির প্রতিটি অবস্থা তার পূর্ববর্তী অবস্থার রূপান্তর। চার, প্রতিটি অবস্থার আচরণ তার পূর্ববর্তী অবস্থার আচরণ থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন।

প্রকৃতির এই নিয়মগুলো থেকে আমরা ধারনা করতে পারি এই মহা বিশ্বের প্রাকৃতিক অবস্থা অন্য একটি প্রাকৃতিক অবস্থার রূপান্তরিত ফল। এই দুই অবস্থার আচরণ সম্পূর্ণ ভিন্ন। এই মহাবিশ্বের আচরণগত নিয়ম বিধি দিয়ে অন্য অবস্থার আচরণ জানা সম্ভব নয়। সুতরাং এই মহাবিশ্বের বাইরের অবস্থা নিয়ে আমরা যাই কিছু ধারণা করি সেগুলোর সবটাই কল্পনা প্রসূত।

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৩ দুপুর ১২:২০

শূন্য সারমর্ম বলেছেন:


কিছু মানুষ যে কিউরিসিটি থেকে সৃষ্টিতত্ত্ব জানতে চেয়েছে,এটাই অনেক।

২| ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৩ দুপুর ১২:৫৬

নূর আলম হিরণ বলেছেন: মানুষ দ্রুত শিখছে। অনেক রহস্য দিনদিন ভেদ হবে।

৩| ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৩ দুপুর ১:১৫

রাজীব নুর বলেছেন: সব রহস্যের সমাধান আছে কোরআন এবং বিজ্ঞানে। এখন আপনার যার যেটা পছন্দ সেটা বেছে নিতে হবে।

৪| ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৩ দুপুর ২:৪৯

নতুন বলেছেন: এই পর্যায়ে এসে দার্শনিকদের এই ভাবনা তখনি সত্যে পরিণত হোল যখন সৃষ্টিকর্তা মানুষের সাথে নিজেই যোগাযোগ স্থাপন করলেন কয়েকটি ঐশী গ্রন্থের মাধ্যমে। প্রতিটি সম্প্রদায়ের মানুষ তাদের স্ব স্ব গ্রন্থের উপর বিশ্বাস স্থাপন করল এবং এভাবে মানুষ তাদের সৃষ্টি তত্ত্বের জিজ্ঞাসার উত্তর পেয়ে যায়।

জিনিসটা যে সত্য সেটা কি প্রমানিত? কিছু মানুষ দাবী করেছিলো যে তাদের কাছে সৃস্টিকর্তা বানী পাঠিয়েছে, এটা বিশ্বাস মাত্র।

প্রমানিত কিছু না। আর প্রমানিত না হলে সেটাকে কি সত্য বলা যায়?

২৭ শে এপ্রিল, ২০২৩ বিকাল ৩:৪৯

বুনোগান বলেছেন: সৃস্টিকর্তার বানী স্ব স্ব সম্প্রদায়ের কাছে একমাত্র সত্য।এই বানীর বিরোধী কোন জ্ঞান তারা গ্রহণ করেন না। তাদের প্রমানের উৎস স্রষ্টার বানী, বিজ্ঞান নয়।

৫| ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৩ রাত ৮:০৫

নতুন বলেছেন: লেখক বলেছেন: সৃস্টিকর্তার বানী স্ব স্ব সম্প্রদায়ের কাছে একমাত্র সত্য।এই বানীর বিরোধী কোন জ্ঞান তারা গ্রহণ করেন না। তাদের প্রমানের উৎস স্রষ্টার বানী, বিজ্ঞান নয়।

আপনি যেটা বলছেন সেটা হলো তাদের কাছে বিশ্বাস = সত্য

এটা আপনি যদি মানেন তবে আপনার কথা আমি সত্য বলে বিশ্বাস করে নিলাম। B-)

এতো কিছু ভাবার আগে, কোনটা প্রমানিত সত্য এবং কোনটা বিশ্বাস সেটা বুঝতে হবে. তারপরে বাকি জিনিস নিয়ে চিন্তা করা যাবে...

৬| ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৩ রাত ৮:১১

কামাল১৮ বলেছেন: মহা বিস্ফোরণের পর আজ পর্যন্ত যা যা হয়েছে সেটা বিজ্ঞানীরা ব্যাখ্যা করতে পেরেছেন।এটা বিজ্ঞানের বই পড়ে জানা যায়।তার আগে কি ছিলো তথ্য উপাত্তের অভাবে অভাবে তা জানা যায় না।
ঈশ্বর,দেবতা ফেবতা এগুলি অসহায় মানুষের কল্পনার ফসল।

৭| ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৩ রাত ৮:৫৮

বুনোগান বলেছেন: ঠিক।

৮| ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৩ রাত ১২:৪৬

জ্যাক স্মিথ বলেছেন: সৃষ্টিকর্তা ঐশী গ্রন্থের মাধ্যমে মানুষের সাথে যোগাযোগ করেছে LMAO, এ কথা এই যুগে কি হাস্যকর নয়?

২৮ শে এপ্রিল, ২০২৩ ভোর ৬:২৬

বুনোগান বলেছেন: বিশ্বাসীদের কাছে হাস্যকর নয়।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.