নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

চা বিস্কুটের ব্লগ

চা-বিস্কুট

মানুষ হওয়ার চেষ্টায়

চা-বিস্কুট › বিস্তারিত পোস্টঃ

আজকের কাপড়িয়া ছিল যেন এক টুকরো স্বর্ণের খন্ড।

০১ লা জুলাই, ২০১৬ বিকাল ৩:০৩



বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। এর উৎকৃষ্ট উদাহরণ ঢাকার গেন্ডারিয়া। আজ কাপড়িয়া জামে মসজিদে হাজার হাজার মুসুল্লীর উপস্থিতিতে জুমআর নামাজ আদায় হয়েছে আলহামদুলিল্লাহ। নামাজ আদায় করতে আসা মুসুল্লীদের অজু করার সুবিধার্থে পার্শ্ববর্তী হিন্দু ধর্মাবলম্বী প্রতিবেশীদেরকে পানি সরবরাহ করতে দেখা যায়।

আমরা সারাজীবন দেখেছি এরকমই ছিল আমাদের সম্প্রীতি। কিন্তু কিছু চিহ্নিত ভারতীয় দালাল এই সম্প্রীতি নষ্ট করে আমাদের রাষ্ট্রকে দূর্বল করে দিতে চায়। তারা শুধু শুধুই মামলা করে পরিস্থিতি উত্তপ্ত করে। জমি নিয়ে এলাকার হিন্দুদের কোন আপত্তি নেই। আপত্তি করতে আসছে কাপড়িয়া এলাকার বাইরের কিছু চক্রান্তকারী।



শান্ত এলাকা কেন হটাত এমন হয়ে গেলো? যেখানে হিন্দু মুসলমান মিলেমিশে ছিলো সেই শান্তিপূর্ণ পরিবেশ কেন এমন অশান্ত হয়ে গেলো? কে হিন্দু আর মুসলমানদের মুখোমুখি দাড় করালো? এইসব প্রশ্নের উত্তর খুজতে গিয়ে বের হয়ে এসেছে কিছু অবাক করা তথ্য। তৃতীয় পক্ষের স্বার্থ উদ্ধারের ষড়যন্ত্রের কিছু ভয়াবহ নীল নকশা।

গেন্ডারিয়া থানা লাগোয়া এলাকা কাপড়িয়া লেন। এখানে ৭ ঘর হিন্দু আর প্রায় ৫০ ঘর মুসলমানের বাস। হিন্দুদের একটি অনুমোদিতসহ একাধিক মন্দির থাকলেও ছিলোনা কোন মসজিদ। ফলে নামাজের জন্য তাদের অনেক দূরে যেতে হতো। এই ভোগান্তি লাঘবের জন্য সরকারী লিজ নেয়া জায়গায় এলাকাবাসী সম্মিলিত সিদ্ধান্তে মসজিদ নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয়। নির্মাণ কাজ চলছে, সেই সাথে চলছে নির্মাণাধীন মসজিদে নামাজ আদায়ের কাজও। এটা নিয়ে হিন্দু-মুসলিম দলমত নির্বিশেষে কারো কোন আপত্তি ছিলো না।

একদিন হটাৎ পুলিশ এসে অস্ত্রের মুখে মুসল্লিদের মসজিদ থেকে বের করে দেয়। সেই ঘটনার ছবি ও সংবাদ এর আগে অনলাইন ও প্রিন্ট মিডিয়ায় প্রকাশিত হয়েছে। সেইদিন গেণ্ডারিয়া থানার ওসির উদ্ধত আচরণে এলাকাবাসী হতবাক হয়ে যায়। তখন জানা যায় স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের অভিযোগে নাকি পুলিশ এসে মসজিদ থেকে সবাইকে বের করে নামাজ না পড়ার জন্য বলে যায়। পরে দেখা যায় হিন্দু-বৌদ্ধ-খৃষ্টান ঐক্য পরিষদ এর গেণ্ডারিয়া থানা সেক্রেটারি পরিতোষ কুমার রায় এর অভিযোগের প্রেক্ষিতে পুলিশ এই আদেশ দেয়। আর এই পরিতোষের ঠিকানা ৪৫/২ শরৎ গুপ্ত রোড, গেন্ডারিয়া, যা ওই বিবাদমান এলাকায় অবস্থিত নয়। ওই আলোচিত জায়গায় আগে হিন্দুদের মন্দির ছিলো এমনই গুজব তুলে প্রশাসনকে ব্যবহার করে বন্ধ করে দেয়া হয় মসজিদ নির্মাণের কাজ।এই চলমান বিতর্কের মধ্যে হটাত কিছু সংবাদ প্রচার হয়, প্রশাসনের সাথে মিটিং করে স্থানীয় জনগন নাকি সিদ্ধান্ত নিয়েছে ওই মসজিদে নামাজ না পরার। কিন্তু বাস্তবে গিয়ে দেখা যায় সেখানে এখনো নামাজ নিয়মিত আদায় করছে মুসল্লিরা।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, ১৯৭১ এর পর আজ পর্যন্ত কেউ ওখানে মন্দির দেখেনি। এই জমিতে প্রথম দিকে ছাত্রাবাস ছিলো, পরবর্তীতে ৩০ বছর যাবৎ মিল ব্যারাক সমাজ কল্যাণ সংসদ নামক সামাজিক সংগঠনটি ওই জমি দেখাশোনা করে আসছে। অন্যদিকে পরিতোষ রায়ের দাবী স্বাধীনতার পূর্বে ওখানে কালী চরণ সাহা এলাকার ৩১ নং হোল্ডিং এর ৩৮৪ অযুতাংশ জায়গার মালিক ছিল রাধারানী নামের একজন হিন্দু মহিলা।

পরিতোষের রায়ের দাবীর প্রেক্ষিতে সমস্যা সমাধানে গেন্ডারিয়া থানায় উভয় পক্ষের উপস্থিতিতে বিরোধ ‍নিস্পত্তির লক্ষ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। তবে বৈঠকে প্রকৃত বাদী বিবাদীরা কেউই উপস্থিত ছিলেন না। শুধুমাত্র জেলা প্রশাসকের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সাথে কিছু স্থানীয় ব্যক্তি উপস্থিত ছিলেন ।

স্থানীয় যুবলীগ নেতা জাফর আহমদ জানান, আমার ৫০ বছরের জীবনে এখানে কোন মন্দির দেখিনি। আশে পাশে কিছু মন্দির আছে। ওগুলোতে সব সময় তাদের উৎসব হয়। এই এলাকায় তাদের সাতটা মন্দির আছে, অথচ আমাদের একটি মসজিদও নেই। আমরা অনেক কষ্ট করে অন্য এলাকায় গিয়ে নামাজ পড়ি। সাহা নামে একজন হিন্দু বলেন, এখানে তাদের কোন মন্দির ছিল না। স্থানীয় স্কুলশিক্ষক বলেন, এখানের অধিকাংশ হিন্দু পরিবারে আমার ছাত্র রয়েছে। কিন্তু যে যায়গায় মসজিদ নির্মাণ হচ্ছে সেখানে কখনো মন্দির ছিল না। কোন হিন্দু পরিবার বসবাস করতো তা আমি দেখিনি।

একজন স্থানীয় মুসলিম যুবক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এই এলাকার গলিগুলো খুব সরু। এখানে হিন্দুদের বিভিন্ন উৎসবে আমরা সহযোগিতা করি। তাদের সাথে মুসলমানদের কোন বিরোধ নাই , এমনকি তাদের কেউ মারা গেলে মুসলমান ছেলেরা বিশেষ করে এই মিল ব্যারাক সমাজ কল্যাণ সংসদ নামক সামাজিক সংগঠনের কর্মীরা লাশ শ্মশানে নিয়ে যাওয়ার কাজেও সহায়তা করে থাকে। আর সাম্প্রদায়িক বিভেদ লাগানোর জন্য কিনা বেছে নেয়া হলো এই জায়গা?

আজ ফেসবুকের একটি ইভেন্টের উদ্যোগে ঢাকার হাজার হাজার মুসল্লি যোগ দেন কাপড়িয়ার সেই ছোট্ট মসজিদে। এত মুসল্লি সামাল দেয়ার আয়োজন ছিল না ঐ মসজিদের। এগিয়ে আসেন এলাকার মুসলিমদের সাথে প্রচুর হিন্দু ধর্মাবলম্বি মানুষ। আজকের কাপড়িয়া ছিল যেন এক টুকরো স্বর্ণের খন্ড। আজ এই এলাকায় হিন্দু মুসলিম একত্রিত হয়ে ষড়যন্ত্রকারীদের উচিত জবাব দেয়

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ০১ লা জুলাই, ২০১৬ বিকাল ৩:৫০

আহলান বলেছেন: বাহ! জুমাতুল বিদাহর দিনে এমন সংবাদ ... ভালো লাগলো

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.