![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
পায়ের নিচে ফুঁসছে পানি। চারপাশে ঘনিয়ে আসছে কুয়াশা। পানির শব্দে কান পাতা দায়। বাতাসের ঝাপটায় সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা মুশকিল। তার ওপর সময়টা সন্ধ্যা। এ এক আশ্চর্য অভিযান নায়াগ্রা জলপ্রপাতে। তবে হেলিকপ্টার বা মেইড অব দ্য মিস্ট বোটে চড়ে নয়, দুই ইঞ্চি ব্যাসের এক তারে চেপে নিক ওয়ালেন্ডা ঘুরে এলেন পুরো নায়াগ্রা জলপ্রপাত।২০১২ সালের ১৫ জুন। Untitled-11এই প্রথম কোনো মানুষ সরাসরি জলপ্রপাতের ওপর দিয়ে এভাবে পার হলো। নায়াগ্রার কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রের দুই প্রান্তের মানুষই সাক্ষী হলো অসম সাহসী মানুষটির এই যাত্রার। শুধু তারের ওপর হেঁটে তিনি পার হলেন পুরোটা পথ। এক হাজার ৮০০ ফুটের এই যাত্রায় শরীরের ভারসাম্য বজায় রাখতে হাতে কেবল ছিল একটা লম্বা লাঠি। আর পরনে তাঁর মায়ের বানানো বিশেষ জ্যাকেট ও জুতা। কানাডার প্রান্তে নেমেই নিককে দেখাতে হয় তাঁর পাসপোর্ট। তাঁকে জিজ্ঞেস করা হয়, এ যাত্রার উদ্দেশ্য কী? নিকের জবাব, ‘গোটা বিশ্বের মানুষকে অনুপ্রাণিত করা।’নিকের সাত পুরুষের পেশা দড়ির খেলা দেখানো। দ্য ফ্লাইং ওয়ালেন্ডাস বলা হয় তাঁর পরিবারকে। সাত পুরুষ ধরে এসব সাহসী খেলা দেখিয়ে আসছেন তাঁরা। পূর্বপুরুষ কার্ল ওয়ালেন্ডাকে নায়ক মানেন নিক। ৭৩ বছর বয়সে দড়ি থেকে পড়ে মারা যান কার্ল। পরিবারের সব সদস্যই দড়ির খেলা দেখান। ১৩ বছর বয়সে নিক দড়ির খেলা দেখানো শুরু করেন।কেন এই পথ বেছে নেওয়া, সরু দড়িতে সঁপে দেওয়া নিজের জীবন? ‘আমি কাজটা করি, কারণ এটা করতে ভালোবাসি...যদি কাল লটারি জিতে যাই, তাও এ খেলা দেখাব। দড়ির ওপর হাঁটাই আমার জীবন।’ বলেছেন নিক।তা বটে, ১৯৯৯ সালে নিজের জীবনসঙ্গী ইরেনডিরাকে এই দড়ির ওপর হাঁটু গেড়ে বসেই বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিলেন নিক। সাক্ষী ছিলেন দুই হাজার ৫০০ দর্শক। ইরেনডিরা নিজেও এক সার্কাস পরিবারের সদস্য, দড়ির খেলায় পটু। এক সপ্তাহ বাদেই বিয়ে করেন তাঁরা। তিন সন্তান নিয়ে সুখের জীবন তাঁদের।নায়াগ্রার এ বছরের জুনে গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন পার হন তিনি দড়ির ওপর দিয়ে। স্কাইওয়ায়ার লাইভ নামে ডিসকভারি চ্যানেল সরাসরি সম্প্রচার করে এটি। ক্রাইসলার বিল্ডিং আর এম্পায়ার স্টেট বিল্ডিংয়ের মাঝের পথটুকু দড়ি বেয়ে পেরোনোর পরিকল্পনা এখন নিকের। তবে বয়স ৫০ বছর হলেই নাকি অবসর নেবেন তিনি।
l রুহিনা তাসকিন
সূত্র: হাফিংটন পোস্ট
©somewhere in net ltd.