![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমার যৌতুকে পাওয়া মা এই পর্বের “গ” আমার মাস্টার ডিগ্রী প্রদানের অনুষ্ঠানে
নিজের মায়ের কথা লিখতে শুরু করলে হয় শুরু হবে একগাদা অভিযোগ, অনুযোগ, প্রশংসা। চাই বা না চাই নিজের মা ভালোমন্দ মিলিয়ে মানুষ আর তার অবদান যতই বলবো ছোট করা হবে। হয়তো বলে শেষও করা যাবে না সে ভালই হোক আর খারাপ। অনেকে অনেক কথা লিখবেন হয়তো মাকে নিয়ে আমি স্বার্থপরের মতন তুলে রাখলাম নিজের জন্যে। আজকের পর্বে আমি এমন এক মায়ের কথা বলবো যাকে আমি জন্ম সূত্রে পাইনি, পেয়েছি যৌতুক হিসেবে। এই মা এমন একজন রমনী যার আছে নরম হৃদয় আবার প্রয়োজনে পাথরের থেকে কঠিন। একই সাথে মা, গৃহিণী, প্রিয়া, সাবলম্বী নারী সবকিছুর এক অদ্ভূত মিশ্রণ। তার জীবন কথা শুরু করার আগে একটা কথাই বলে রাখি তাদের জন্যে যারা নারীকে করুণা করেন আর সবক্ষেত্রে তাদের দোষ ছাড়া গুনের কিছু খুঁজে পান না তাদের স্বার্থে বলি। নারী মায়ের জাত কিন্তু মনে রাখবেন তাকে আমাদের হিন্দুসাস্ত্রে জ্ঞান, যুদ্ধ, গৃহ-ঐশ্বর্য, অন্যপুর্না সবকিছুর সাথেই তুলনা করা হয়েছে। মনে রাখবেন নারীকে যথাযত সন্মান দিতে না পারলে আপনার জন্ম কলঙ্কিত। যুগে যুগে নারী সয্য যেমন করেছে, প্রয়োজনে দুর্গার রূপ ও নিয়েছে। শুভো কামনা রইলো সেই সব পরুষদের জন্যে যাদের কারনে মায়েরা আজ মাথা তুলে দাড়িয়েছেন আর ধিক্কার সেই সব নারীদের যারা নানান ছুতোয় খালি অন্যায়-অবহেলা সয্য করেন আর নিজেদের অন্যের করুনার পাত্র হিসেবে প্রতষ্ঠিত করেন।
“গ”
আমি “গ” কে মা বলে ডাকি। যৌতুকে পাওয়া জার্মান মা আমার আজকের “গ”। ১৪ টা বছর আদর্শ গৃহিনী হিসেবে স্বামীর সংসার করেছেন তিনি। দত্তক নিয়েছেন ইথিওপিয়ার এক বালককে পুত্র হিসেবে যার বুদ্ধিমত্তা
সাধারণ আমাদের তুলোনায় ডাক্তারি শাস্ত্রমতে কিছুটা কম, সেই সাথে জন্ম দিয়েছেন আরো দুই কন্যা সন্তানের। তিনটি বছর তিনি চেষ্টা করেছেন স্বামীকে ফেরাতে অন্য নারীর মোহো থেকে, প্রশ্ন করছেন আমার কি কোনো ভুল হচ্ছে? প্রশ্ন করছেন আমি কি কোনোভাবে ভুল শুধরে নিতে পারি? তিনটি সন্তানের কথা চিন্তা করে কি আমরা অন্তত এই ব্যাপারে কথা বলতে পারিনা? তিন তিনটি বছর এভাবে চলে গেছে “গ” এর। খালি কলেজ পাস করা একজন রমনী যে ১৪টি বছর গৃহিনী হিসেবে ছিলেন বাইরের জগৎ সম্পর্কে কিছুই জানতেন না, যার জগৎ ছিল কেবলই স্বামী-সংসার; সেই “গ” একদিন মাথা তুলে দাড়ালেন। “গ” একদিন স্বামীকে ঘর থেকে বের হয়ে যেতে বললেন এই সাথে জানিয়ে দিলেন যে বাচ্চাদের দেখতে পাবেন তবে তারা বড় হবে মায়ের কাছে, বাড়ি পাবেন না কারন তার বাচ্চারা এই বাড়িতে জন্মেছে, বড় হয়েছে। জার্মানির নিয়ম মাফিক বাড়ি তৈরির খরচের অর্ধেক টাকা ফিরিয়ে দেবেন এই শর্তে তালাক এর জন্যে কোর্ট এ আর্জি দাখিল করলেন। একা শিক্ষাগত যোগ্যতা ছাড়া একজন মা কিভাবে সংসার চালাবেন জানেন না। শুরু হলো “গ” এর নতুন জীবন সংগ্রাম। কম্পিউটার কোর্সএ ভর্তি হলেন সেক্রেটারী পদের জন্যে যতটুকু জানা প্রয়োজন তা শেষ হওয়ার পরে এক অফিসে ছোট্ট একটা চাকরি নিলেন। এক এক করে সব দেনা শোধ করে দিলেন প্রাক্তন স্বামীকে, ছেলে-মেয়েদের মানুষ করলেন চালিয়ে গেলেন জীবন সংগ্রাম। প্রাক্তন স্বামী সেই পরকীয়ার নায়িকা নারীর সাথে ২টি বছর ঘর করেছেন তারপর আবার অন্য এক রমনীর সাথে আরো ২ বছর...টিকতে পারেনি কোনো নারীর সাথেই। “গ” করুণা করে খোজ খবরও নেন প্রাক্তন স্বামীর তবে জীবনে ফেরত আনেননি সেই নেমকহারাম পুরুষটিকে। “গ” এর জীবন সংগ্রাম চলে যাচ্ছে তারমতন করে, ঘুরে বেড়াতে ভালোবাসেন তিনি। গতবছর চাকরি থেকে অবসর নিয়েছেন, বাকি জীবনটা ঘুরে বেড়াতে চান তিনি। সাথে আছে তার নানান দান অনুদান দেশ-বিদেশের অনেক চ্যারিটি প্রতিষ্ঠানে। আমার মতন আরো কতো নাম না জানা সন্তান রয়েছে তার আমার জানা নেই। কতজন যে এই রমনীকে “মামা”(মা) বলে ডাকে আমি জানিনা তবে তিনি আমার মা। আমার সাথে আমার এই মায়ের দেখা হয় বাংলাদেশে ২০১০ সালে। আমাকে বলেন চারটা বছর আগে বাংলাদেশে যে গিয়েছিলাম তাতে মনে হয় তোমার দেশটা ঠিকমতন দেখা হয়ে ওঠেনি আবার যাবো চলো। আমিও বলি হ্যা মামা তোমার সাথেই দেশে যাবো।
জুন মাসের ম্যাগাজিনের থিম: "জার্মানি - জীবন যেখানে যেমন"
আসছে জুন মাসের ম্যাগাজিন আপনাদের মনের কথা দিয়ে সাজাতে চাই। আপনারা যারা জার্মানিতে রয়েছেন চলতি পথে তাদের রয়েছে নানা অভিজ্ঞতা। কখনো তা তিক্ত কখনো মজার আবার কখনো বা আপ্লুত করার মত নানা ঘটনা। সব মিলিয়ে আপনার মনের কথাগুলো গুছিয়ে লিখে ফেলুন। পাঠিয়ে দিন আমাদের কাছে।
অপরদিকে বাংলাদেশে যারা জার্মানিতে আসার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন তাদের থেকেও আমরা লেখা আহ্বান করছি। আপনি জার্মানিকেই কেন বেছে নিলেন, পড়ালেখা শেষ করে আপনার পরিকল্পনা কি ঝটপট লিখে ফেলুন ৫০০ থেকে ১০০০ শব্দের মধ্যে।
ডেডলাইন : ২৬ শে মে, ২০১৪
লেখা পাঠানোর ইমেইলঃ [email protected]
অথবা পেজের ইনবক্সে পাঠানঃ Click This Link
যেকোন প্রশ্ন থাকলে সরাসরি কমেন্ট করুন অথবা আমাদের পেইজে বা ইমেইলের মাধ্যমে মেসেজ পাঠাতে পারেন।
------------------------------------------------------------
"জার্মান প্রবাসে - মে ২০১৪" - মা দিবস বিশেষ সংখ্যা
ডাউনলোডঃ http://goo.gl/ZFFpQp
------------------------------------------------------------
©somewhere in net ltd.