![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ঢাকা, ২০০৪
বুবুনের সাথে আমার প্রথম দেখা, যখন ওর বয়স মাত্র ২০ দিন। ঢাকা মেডিকেল কলেজে। ফুটফুটে এক মেয়ে। ঐটুকু বয়সেও মুখের হাসি চোখে পড়ার মতো। ওকে বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার জন্যই আমার ঢামেক গমন। ট্রেনের টিকিট কাটাই আছে, শুধু যাওয়ার অপেক্ষা।
কমলাপুর পৌঁছে দেখি দু'ঘন্টা লেট। একে প্রচন্ড গরম তারপর সদ্যজাত এক শিশু। একটা ফ্যানের নিচে খালাকে বসিয়ে হাতপাখা দিয়ে বাতাস করতে থাকলাম। খালুকে দেখলাম কিছু খাবার কিনতে। ট্রেনে বসে খাওয়া যাবে। গরমের জন্যই এসি টিকেট। ওঠানামাও সোজা।
ট্রেন এলো পাক্কা ২ ঘন্টা পর। বুবুনকে সাবধানে তুলে দিয়ে নিজের সিটে বসলাম। সামান্য লাগেজ। এসি চালুর পর বুবুনকে শান্ত দেখলাম। মায়ের কোলে নিশ্চিন্তে ঘুমায়। আমি অপলক তাকিয়ে থাকি। নিজের তো বোন নেই, তাই এই বুবুনই আমার একমাত্র বোন!
একবারে দুধের বাচ্চা হওয়ার কারনে খালু ওকে মাঝে মাঝে নন এসি বগিতে নিয়ে যাচ্ছিলেন। না হলে শ্বাসপ্রশ্বাসে সমস্যা হতে পারত। খালা আগের থেকে শুকিয়ে গেছে। আমরা গল্প করেই সময়টা কাটালাম। বুবুনের ঘুমের জন্য মাঝেমধ্যে চুপচাপ থাকতে হলো।
এরপর, সময়ের কাঁটা ঘুরে চললো। ফাঁকা পেলেই চলে আসি খালার বাসায়। বুবুনের টানে। বুবুনটাও আমায় বড্ড ভালোবাসে। একবার আমার কোলে উঠলে নামতেই চায় না। সারাটাদিন আমার সাথেই থাকবে। ওর হাসিটা আরো মিষ্টি হয়েছে। ছোট্ট বোন আমার!
আমার চোখের সামনেই বুবুন হাঁটা শিখলো, কথা শিখলো। "ভাইয়া" ডাকটা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক মেয়েই ডাকে কিন্তু এ যে আমার একমাত্র বোন! ওর জন্য চকলেট, লজেন্স, পুতুল আনি। একদিন ও স্কুলে যাওয়া শুরু করলো। আমি থাকলে আমার উপরেই এই গুরুদায়িত্ব পড়তো। "বুবুনকে স্কুলে দিয়ে আয়"। খালার এই আদেশ হাসিমুখে পালন করতাম।
তারপর, আবারও সময় নদীতে জোয়ার এলো। বুবুন স্কুল কলেজ করে আজ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে। ঐ হাসিমাখা মুখটায় এখন মুক্তো ঝরে। আর আমার প্রতি ভালোবাসা? হাজারো গুণে বেড়েছে! সবকিছুই আমার সাথে শেয়ার করে। এমনকি বয়ফ্রেন্ডের কথাও। আমি খোঁজখবর রাখি। না... সরলতার সাথে ওর বুদ্ধিমত্তাও আছে।
একদিন ওর সাথে কথা হচ্ছিল, বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে। বিশ্ববিদ্যালয় কখন যে ওর ছোটবেলার কথায় রূপান্তরিত হলো বুঝলাম না। "তুই তখন একটা প্যাম্পাস পরে সারা বাড়িতে ঘুরিস। আমার জামায়...."। বুবুন আর বলতে দেয় না। " খালি ওসব বলো কেন? আমি আর ছোট্টোটি নই"। আমিও বলি, "তোর যেদিন বাচ্চা হবে সেদিনও তুই আমার কাছে সেই কুট্টি টুনটুনিই থাকবি। " বুবুন পালায়। আমি হাসতে থাকি।
ডায়েরির এটুকুই পড়তে পারলেন জুবায়ের কবির। আশ্চর্য! তারও একটা বোন ছিলো। বৃষ্টিসিক্ত এক দিনে একটা বেপরোয়া গাড়ি... । কবির সাহেবের দু-চোখ বেয়ে নেমে আসে নোনা জল।
২৬ শে জুন, ২০২০ সকাল ১১:০৪
আর্কিওপটেরিক্স বলেছেন: মতামতের জন্য ধন্যবাদ। শেষাংশ পাঠকই বিবেচনা করুক!
২| ২৪ শে জুন, ২০২০ সকাল ১১:০৩
বিজন রয় বলেছেন: আপনার এই পোস্টে আমি প্রথম মন্তব্যকারী হতে এসে দেখি নেট সমস্যা, তাই সম্ভব হয়নি!
বুবুন বা বুনু নাম আমার ভাল লাগে।
ভাল আছেন?
২৬ শে জুন, ২০২০ সকাল ১১:০৬
আর্কিওপটেরিক্স বলেছেন: ভালো আছি ☺
আপনার দেখি ইন্টারনেট সমস্যা লেগেই আছে! ইন্টারনেট প্রোভাইডারের সাথে যোগাযোগ করুন।
বুবুন বা বুনু নাম আমার ভাল লাগে।
কিছু নাম বড় আদরের!
ভালো থাকুন
৩| ২৪ শে জুন, ২০২০ সকাল ১১:২৯
সেলিম আনোয়ার বলেছেন: সুন্দর। আমার ও একটা ছোট বোন আছে। কোন পরিস্থিতি সহজ করে তোলে আমার জন্য। যেন আমার অভিভাবক। অথচ আমার কাছে ও ছোট্ট টিই থাকে। ভাবতে অঊ লাগে ওর একটি মেয়ে হয়েছে কয়দিন আগে। এখনো দেখিনি। সে আমার ছোট বোন বড় আদরের ছোট বোন।
২৬ শে জুন, ২০২০ সকাল ১১:১১
আর্কিওপটেরিক্স বলেছেন: আমার ছোটবোন নেই কিন্তু কাজিনের সংখ্যা প্রচুর। এই অদ্ভুত সময়ে বাবু এবং বাবুর মাকে দেখতে পারছেন না - কিছুই বলার নেই। আশাকরি এই সময়টা কেটে যাবে।
আপনার বোনের জন্য শুভকামনা এবং ছোট্ট সোনামণির জন্য একগাদা আদর রইলো
সঙ্গে পাঠে কৃতজ্ঞতা ...
৪| ২৪ শে জুন, ২০২০ দুপুর ১২:০৭
ভুয়া মফিজ বলেছেন: আমার ছোটবোন নাই, তবে খুবই শখ ছিল.......ইন ফ্যাক্ট, এখনও আছে। তাই ছোটবোন সংক্রান্ত কিছু পড়লে একটু বেশী আবেগতাড়িত হয়ে যাই। তবে, হতভাগ্য জুবায়ের কবীরের মতো অকালে যদি বোনকে হারাতে হয়, তাহলে বরং না থাকাই ভালো।
২৬ শে জুন, ২০২০ সকাল ১১:১৪
আর্কিওপটেরিক্স বলেছেন: সেইম হিয়ার! তবে কাজিনকূল সে দুঃখ ঘুচিয়েছে।
আপনার মতোই বলি, জুবায়ের কবিরের মতো অকালে বোনকে হারাতে হলে - বরং না থাকাই ভালো!
পড়ার জন্য ধন্যবাদ। ভালো থাকুন
৫| ২৪ শে জুন, ২০২০ দুপুর ১:১৭
পদ্মপুকুর বলেছেন: শেষ দুই লাইনের আগে বুঝতেই পারলাম না যে এটা একটা গল্প ছিলো.... না কি আর্কিওপটেরিক্সের আড়ালে যুবায়ের কবিরই আছেন? যেটাই হোক, সুন্দর।
আপনার একটা ব্লগজনিত গবেষণার কথা বলেছিলেন বছর দুয়েক আগে, কি খবর হে প্রাগঐতিহাসিক প্রাণী?
২৬ শে জুন, ২০২০ সকাল ১১:২১
আর্কিওপটেরিক্স বলেছেন: না ভাই!! একে নিজের ছোটবোন নেই তারপর আবার যদি জুবায়ের কবিরের মতো অবস্থা হয় - তাহলে আর রক্ষা হবে না!
শেষ দুই লাইনের আগে বুঝতেই পারলাম না যে এটা একটা গল্প ছিলো - এমনটাই আমার মাথায় ছিলো গল্পটা লেখার সময়।
কি খবর হে প্রাগঐতিহাসিক প্রাণী?
মনে হলো অরণ্যদেব বা ফ্যান্টম পড়ছি। চলমান অশরীরী
ব্লগের উপর গবেষণা চলতেই আছে। এখন আর পোস্ট করি না। সরাসরি জানার কাছে জানাই। আর, চাদগাজি রিলেটেড গবেষণা? উহা পর্যাপ্ত চিকিৎসার অভাবে আইসোলেশনে আছে
পড়ার জন্য ধন্যবাদ। ভালো থাকুন
২৬ শে জুন, ২০২০ সকাল ১১:৩৬
আর্কিওপটেরিক্স বলেছেন: আর জুবায়ের কবির নামটা মাসুদ রানার ভিলেন খায়রুল কবিরের নাম থেকে নিয়েছি
মাসুদ রানা তুমি কার? কার আবার সোহানার
৬| ২৪ শে জুন, ২০২০ দুপুর ২:০৯
রাজীব নুর বলেছেন: প্রথমে ভেবেছিলাম নিজের কথা বলছেন। শেষে দেখলাম অন্য কাহিনি!
২৬ শে জুন, ২০২০ সকাল ১১:২২
আর্কিওপটেরিক্স বলেছেন: এটাই চেয়েছিলাম রাজীব ভাই! ভালো থাকুন।
৭| ২৪ শে জুন, ২০২০ দুপুর ২:৩২
নেওয়াজ আলি বলেছেন: খুব সুন্দর লিখেছেন ।
২৬ শে জুন, ২০২০ সকাল ১১:২৩
আর্কিওপটেরিক্স বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই
৮| ২৪ শে জুন, ২০২০ রাত ৯:২৮
আহমেদ জী এস বলেছেন: আর্কিওপটেরিক্স,
সেদিনের নেমে আসা বৃষ্টির তোড়ে ভেসে ওঠা এক বোনের স্মৃতি.................
গল্পটা এই দু'লাইনেই!
২৬ শে জুন, ২০২০ সকাল ১১:২৫
আর্কিওপটেরিক্স বলেছেন: আহমেদ জী এস,
এই দুলাইন না লিখলেই ভালো করতাম বোধহয়!
পড়ার জন্য ধন্যবাদ। ভালো থাকুন
৯| ২৪ শে জুন, ২০২০ রাত ১০:৩৩
মনিরা সুলতানা বলেছেন: এত মিষ্টি এগুচ্ছিলো ...।
বৃষ্টি দিনের মত মনে মেঘ জমা হল।
২৬ শে জুন, ২০২০ সকাল ১১:২৮
আর্কিওপটেরিক্স বলেছেন: ভাইবোনের সম্পর্ক এতোটাই মিষ্টি এবং সত্যিকারের হয়!
আমার মনেও মেঘ জমেছিল। গল্পটা লেখার পরে
পড়ার জন্য ধন্যবাদ রইলো। ভালো থাকুন
১০| ২৫ শে জুন, ২০২০ রাত ৩:০০
শের শায়রী বলেছেন: আপনার যে কোন লেখার একজন ভক্ত আমি।
২৬ শে জুন, ২০২০ সকাল ১১:৩০
আর্কিওপটেরিক্স বলেছেন: কথাটি জেনে খুবই খুশি হলাম। অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই
১১| ২৫ শে জুন, ২০২০ সকাল ১১:০২
কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: অনেক ভালো লাগলো ভাইয়া
বিজি নাকি মন্তব্যের উত্তর পড়ে আছে যে
২৬ শে জুন, ২০২০ সকাল ১১:৩১
আর্কিওপটেরিক্স বলেছেন: ধন্যবাদ আপু
হ্যাঁ। একটু ব্যস্ত ছিলাম।
ভালো থাকো।
১২| ২৬ শে জুন, ২০২০ দুপুর ১২:১৯
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: ফেসবুকে আগেই পেয়ে যাই তো
ব্লগে তাই লাম সাম মিসিং হই যায় ভাইডি
লাব্বাইক
সে আমার ছৌট বোন-- আদরের ছৌট বোন গানটাই গুনগুনিয়ে উঠলো মনে
+++
২৬ শে জুন, ২০২০ দুপুর ১২:২৪
আর্কিওপটেরিক্স বলেছেন: তাহলে ফেবুর সঙ্গে আড়ি
এসেছেন এজন্য খুউব খুশি হলাম । উঁকিকে সাবমেরিনে ফিরে আসতে বলা হলো
ধন্যবাদ
১৩| ২৬ শে জুন, ২০২০ দুপুর ১২:১৯
জুন বলেছেন: দুখের সমাপ্তি আমার ভালো লাগে না। মনটা ভীষণ খারাপ হয়ে যায় যা বেশ কিছুদিন থাকে। অনেক ভালোলাগা রইলো আর্কিও।
+
২৬ শে জুন, ২০২০ দুপুর ১২:২৮
আর্কিওপটেরিক্স বলেছেন: তুমি আসায় খুবই খুশি হলাম। উপরের কমেন্টে দেখো ভৃগু ভায়াও এসেছেন।
দুঃখের সমাপ্তি আমারো ভালো লাগে না। কিন্তু সবকিছু আমাদের হাতে নেই
লাইকের জন্য ধন্যবাদ। ভালো থাকো
১৪| ৩০ শে জুন, ২০২০ রাত ৮:৩৮
আহমেদ জী এস বলেছেন: আর্কিওপটেরিক্স,
সম্ভবতঃ আমার আগের মন্তব্যটি বুঝতে কোথাও ভুল হয়েছে আপনার।
শেষের ঐ দু'লাইন একদম ঠিকই আছে। বলতে চেয়েছি, ঐ দু'লাইনেই গল্পের সব কাঠামো ঠাসা আছে। তাই বলেছি -" গল্পটা এই দু'লাইনেই!"
ভালো থাকুন আর নিরাপদে।
শুভেচ্ছান্তে।
৩০ শে জুন, ২০২০ রাত ১০:২০
আর্কিওপটেরিক্স বলেছেন: প্রথমবার আসলেই বুঝতে পারিনি। ব্যাখ্যা করার জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
ঐ দু'লাইনেই গল্পের সব কাঠামো ঠাসা আছে- সহমত।
শুভকামনা রইলো
১৫| ২৩ শে জুলাই, ২০২২ দুপুর ১২:৩৫
মিরোরডডল বলেছেন:
বুবুন নামটা অনেক আদর মাখানো ।
অকালে কাউকে হারানোর কষ্ট ভীষণ !
আমিও আমার বোনকে অকালে হারিয়েছি ।
রিক্সকে দেখিনা অনেকদিন ।
আবার আসবে এরকম গল্প নিয়ে ।
১৬| ২৩ শে জুলাই, ২০২২ দুপুর ১:১৫
রানার ব্লগ বলেছেন: আমার নিজের সন্তান নাই তেমন কোন আফসোস ছিলো না কিন্তু আপনার বোন কে নিয়ে ডায়েরি পড়ে একটা ছোট্ট মেয়ের জন্য বুকের ভেতর হাহাকার অনুভব করছি।
©somewhere in net ltd.
১|
২৪ শে জুন, ২০২০ সকাল ১০:২৬
এম ইসলাম বলেছেন: সুন্দর গল্প । ...... তবে গল্পের শেষাংশ মনে ভাবনা জাগায়, জুবায়ের কবির কি নিজের লেখা ডায়রী-ই পড়লেন বহুদিন পর, নাকি অন্য কারও লেখা ডায়রী খুঁজে পেয়ে পড়লেন !