নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
অন্তু, ভাবলেশহীন আনাড়ী মধ্য বয়সী এক যুবক। জীবনের নানা বাঁকে তার নানান রকম প্রতিবন্ধকতা। ইদানিং বউ এর সাথে তার তেমন একটা যাচ্ছে না। প্রায়শই বিবাদ লেগেই আছে। বিশেষ করে অর্থনৈতিক কারনে বাগড়াটা বেশি। চাহিদা যদিও সামান্য তবু করোনার কারনে আয় ইনকাম বন্ধ। কখনো ঘরের বিদ্যুৎ বিল কখনোবা বাচ্চার দুধ কেনার টাকা নিয়ে দহরম মহরম!
- অন্তু, সারাক্ষণ আর ভেনভেনাইও না তো।
- রিতু, তোমার তো মাথা গেছে, আয় ইনকামের তো কোন ধান্ধা নাই, ভাদাইমার মতো ৫ টাকা দিয়ে হলিউড ফুকো!
- অন্তু, দেখো বারবার এক কথা কবা না, খাওয়ার মতো তো একটা জিনিষই খাই, সিগারেট, তাতে তোমার কি সমস্যা?
- রিতু, হায় ভগবান, পোড়া কপাল আমার এমন অকর্মা স্বামী কেন জুটাইলা, আমার জীবনটা শেষ!
রিতু কাঁদতে থাকে। ফুপিয়ে ফুপিয়ে কাঁদে, মাঝে মাঝে লাগেজ গোছায় বাপের বাড়ি চলে যাবে বলে। কিন্তু কেন জানি যায় না!
করোনায় অন্তু তার চাকুরী হারিয়ে একেবারে পকেট শুন্য। কিছুদিন আগে সে একটা ফ্লাটে উঠেছে জমাতিয়া যা টাকা ছিল সব শেষ করেও সেই ফ্লাটের টাকা শোধ হচ্ছে না। উপায় না পেয়ে সেটাও বিক্রি করার প্রক্রিয়ায় আছে।
অন্তুর ফ্যামিলি এক আজব পরিবার। সে পরিবারে যদি কেউ একবার নেছুরে ( বিপদে, এটা আঞ্চলিক শব্দ ) পরে তবে তাকে সব দিক থেকে আরও কেমনে বিপদে ফেলা যায় সেটারই বন্দোবস্ত করে তারা। না কোন হেল্প না কোন টাকা দিয়ে সাহায্য। অন্তু চাকুরী খুজছে, কিন্তু করোনা পরবর্তী দেশে চাকুরীরর যে হাল তবে সেটা না বলাই ভালো।
দিন সাতেক আগে অন্তু তার একমাত্র একটি ফোন সেটাও নষ্ট হয়ে গেছে। চার্জ নেয় না। যমুনা ফিউচার পার্কে গেছে ঠিক করতে কিন্তু যেয়ে দেখে ১ হাজার টাকা চায়! অন্তু কি করবে ভেবে পাচ্ছে না। ঠিক করবে কি করবে না। দোকানী বলল যে দেখেন আপনি আমার বনি কাস্টমার। অন্য জায়গায় তো ঠিক করবেনই তাদের চাপাচাপিতে ফোন দিয়ে দিলো। বাথরুমে যাবে নাম করে সে চলে আসে বাসায়।
বাসায় এসে ফেসবুকে ঐ দোকানের কন্টাক নম্বর বের করে কল দিল, দোকানীকে বললাম বিশেষ কাজে একটু বাসায় আসতে হয়েছে। ঘরের মানুষের কাছে এসে টাকার ফন্দি করছে সে কিন্তু টাকার কথা শুনে রিতু তো তেলে বেগুনে জ্বলে উঠলো...
রিতু - তোমার তো খেয়েদেয়ে কোন কাজ নাই, যত সব আকাজ!
অন্তু - দেখো তুমি এভাবে আর আমাকে নর্দমায় ফেলো না।
রিতু - তোমাকে নর্দমায় না ফেলে তো বুড়িগঙ্গায় ফেলে আসা উচিৎ।
অন্তু - রাগে ক্ষোভে বের হয়ে পকেটে ৫ টাকা ছিল ওটা দিয়ে এবার রয়েল সিগারেট পান করে, আর চিন্তা করতে থাকে কোথা থেকে টাকা ম্যানেজ করে অন্তত ফোন টা নিয়ে আসা যায়। তা না হলে ফোনটাও যদি হাতছাড়া হয়ে যায়?
মনে মধ্যে নানান চিন্তা এসে ভিড় জমাচ্ছে তার। এই দিকে বউ এর যন্ত্রনা আবার ঐদিকে পোলাপানের ঘ্যানঘেনী। পোলাপান গুলোরে নিয়ে বাইরে গেলেই দোকানের দিকে টানা হ্যাচড়া করে। এটা ওটা কিনে চায়, অন্তু নানান রকম বোঝ দিয়ে ওদের কে ঘরে নিয়ে আসে।
এভাবেই চলতে থাকে অন্তুর বিৎছিরি সময়গুলো। মাঝে মাঝে সে দূরে কোথাও চলে যেতে চায়, সংসারের ঘানি তার আর টানতে ভালো লাগে না। চাকুরীরর পেছনে ছুটে ভালো কোন লিংক না পেলে আজকাল চাকুরীও হয় না। সবমিলে সে নানান রকম চিন্তা মাথায় নিয়ে সারাক্ষণ বসে থাকে। খাদ্যগ্রহনও তার ভালো লাগে না।
মনের অজান্তে সে বিড়বিড় করে
" ও ভগবান আমায় তুমি কেন পাঠাইলা ভবে
পকেট ভর্তি টাকা হায়রে কবেইবা আর হবে?"
চলবে...
২৭ শে মার্চ, ২০২২ বিকাল ৫:৫৩
মাকার মাহিতা বলেছেন: সময় অতি সুক্ষ এক প্রতিদানের নাম। খারাপ সময়ে কেউ পাশে থাকে না। হায়রে জীবন।
২| ২১ শে মার্চ, ২০২২ রাত ১:৫৯
রাজীব নুর বলেছেন: চলুক-----
২৭ শে মার্চ, ২০২২ বিকাল ৫:৫৪
মাকার মাহিতা বলেছেন: ধন্যবাদ রাজীব ভাই।
সামনের পর্ব আসবে শিঘ্রই
শুভকামনা
৩| ২৭ শে মার্চ, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:২৬
মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন: একেবারে বাস্তব কথা ।
১৩ ই এপ্রিল, ২০২২ দুপুর ২:২৫
মাকার মাহিতা বলেছেন: ধন্যবাদ
©somewhere in net ltd.
১| ২০ শে মার্চ, ২০২২ রাত ৮:০২
প্রতিদিন বাংলা বলেছেন: সময়ে ঠিক হয়ে যাবে সব ,কিছু মনোমালিন্য থাকেই