নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

স্বপ্নচূড়া

ছায়ানীড়

লিখার মতো কিছুই নেই।

ছায়ানীড় › বিস্তারিত পোস্টঃ

তৃতীয় নয়নে ডা. জাকির নায়েক

২১ শে আগস্ট, ২০১৩ সকাল ১০:০৬

ইংরেজরা যখন এ উপমহাদেশের মানুষের স্বাধীনতা হরণ করে নিল , তখন তারা চাইল এই উপমহাদেশের মানুষের ঈমানকে হরণ করে নিতে । তাই এ উদ্দেশে তারা বৃটেন থেকে সফেদ সফেদ শ্বেত পোষাকধারী পাদ্রীদের নিয়ে এসে এ উপমহাদেশের মাঠে নামাল । তারা যুক্তি-উক্তি , লোভ-প্রলোভন দেখিয়ে এ দেশের মানুষের ঈমান হরণ করা শুরু করল ।

তখন তাদের বিরুদ্ধে কলম ধরলেন আল্লামা রহমতুল্লাহ কিরানবি রাহঃ । তিনি 'ইজহারে হক' নামে এক অমর গ্রন্থ লিখলেন ... সুনিপণভাবে বাইবেলের বিকৃত তাওরাত-ইঞ্জিল থেকে উদ্ধৃতি এনে এর অসারতা জনসম্মুখে তুলে ধরলেন । এভাবে তিনি পাদ্রীদেরকে যুক্তি-উক্তির ময়দানে নির্মমভাবে পরাজিত করলেন । এই অসাধারণ গ্রন্থ সম্পর্কে প্রয়াত পোপ জনপল(সম্ভবত) বলেছেন , খৃষ্টধর্মের বিনাশের জন্যে এই একটি গ্রন্থই যথেষ্ট !

পরবর্তীতে এই অমরগ্রন্থের আলোকেই দ্বীন প্রচারের ময়দানে নেমে আসলেন শায়খ আহমদ দীদাত রাহ: । তিনিও এই গ্রন্থ থেকে প্রাপ্ত সুত্র ধরেই খৃষ্ট ধর্মের মুখোশুম্মোচন শুরু করলেন ।

এই অমরগ্রন্থেরই অনন্য ব্যাখ্যা লিখেন , বর্তমান বিশ্বের অন্যতম বুদ্ধিজীবী , বিশিষ্ট ইসলামি স্কলার শায়খুল ইসলাম আল্লামা তাকী উসমানি দাঃবাঃ । যার নাম হচ্ছে বাইবেল ছে কুরআন তক ( বাইবেল থেকে কুরআন পর্যন্ত ) ।

নব্বই দশকের প্রারম্ভে ডা. জাকির নায়েক শায়খ আহমদ দীদাতের শিষ্যত্ব লাভ করেন । এবং তিনিও এ পথে হাটা শুরু করেন , ২০০৫ সাল (প্রায় ) পর্যন্ত !



এখন আমরা একটু বিরতি নেই । দেখুন , দাওয়াতের একটি অংশ হিসেবে খৃষ্টবাদসহ বিভিন্ন ধর্মের অসারতা তুলে ধরা কোনো মন্দ কাজ নয় , যদি এটা দ্বীন প্রচারের ক্ষেত্রে সহায়ক হয় তাহলে এটা আপত্তিকরও নয় । যদি আপত্তিকর হতো তাহলে উপরোল্লিখিত ব্যক্তিবর্গের বিরুদ্ধে আমরা অবশ্যই কিছু শুনতাম । যদি আপত্তিকর হতো তাহলে আল্লাহর রাসুল সা. বিশিষ্ট সাহাবী হযরত আব্দুল্লাহ বিন আমর বিন আস রা. কে তাওরাত পড়ার নির্দেশ দিতেন না ।

তাহলে ডা. জাকির নায়েককে নিয়ে এত আলোচনা কেনো ? জাকির নায়েককে নিয়ে প্রায় ২০০৫ সাল পর্যন্ত কোনো বিতর্ক ছিল না । কারণ তখন পর্যন্ত ডা. সাহেব উনার গুরুর অনুসৃত পথ থেকে বেড়িয়ে অন্য পথে পা বাড়ান নি । কিন্তু যেই মাত্র তিনি তাঁর নিজের সীমানার বাহিরে এসে দ্বীন প্রচারক থেকে দ্বীনবেত্তায় রূপান্তরিত হওয়ার ময়দানে আসলেন ,অর্থাত আদার বেপারি হয়ে জাহাজের খবর নেওয়া শুরু করলেন ( বুঝিয়ে বলার উদ্দেশে এই উদাহরণ টানা হলো ) এবং একের পর এক লালকার্ড পাওয়ার মত ফাউল করে চললেন তখুনি আলেমগণ অনুবীক্ষণ যন্ত্র নিয়ে তার দিকে যাচাই-বাছাইয়ের মনোভাব নিয়ে দৃষ্টি নিবদ্ধ করলেন । অতএব ডাক্তার সাহেবের তিল-তাল সব ধরা পড়ল ।

আসলে ডা. জাকির নায়েক এমন বিষয়ে পা বাড়ালেন যে বিষয়ে ইমাম বুখারি রা. 'র মতো হাদীস শাস্ত্রের আমীরও কুলিয়ে উঠতে পারেন নি । যখন ইমাম সাহেব রা. ফতোয়া দিলেন , যে যদি এক বকরির দুধ দুই অপরিচিত নারী-পুরুষ পান করেন তাহলে তাদের পারষ্পারিক বিয়ে হারাম হয়ে যাবে !

তখন এই ঘটনার কারণেই ইমাম সাহেবকে নিজ শহর ত্যাগ করতে হলো । দেখলেনতো ইমাম সাহেব রাহ. হাদীসের ক্ষেত্রে ইমাম থাকলেও ফতোয়ার ক্ষেত্রে অবস্থা কী ছিলো ! এজন্যইতো বিশিষ্ট হাদীসবিশারদ ইমাম আ'মশ রাহ. বলেছিলেন , আমরা (মুহাদ্দিসগণ ) হচ্ছি ফার্মেসী , আর আপনারা (মুফতিগণ ) হচ্ছেন চিকিতসক । সাহাবার যুগেও সব সাহাবি ফতোয়া দিতেন না বরং কিছু সংখ্যক সাহাবি ফতোয়া দিতেন । এমনকি হযরত আলী রা. এর সাথে হযরত মুয়াবিয়া রা. এর রাজনৈতিক পার্থক্য থাকলেও ফতোয়ার ক্ষেত্রে হযরত মুয়াবিয়া হযরত আলীর অনুসরন করতেন ।

ডা. জাকির নায়েক ফতোয়া দিয়ে যাচ্ছেনই , অথচ ফতোয়ার ক্ষেত্রে তার কোনো সনদ (কোনো আলেমের শিষ্যত্ব) নেই ! আর সনদ হচ্ছে দ্বীনের একটি অংশ । (দেখুন , সহীহ মুসলিম শরীফের মুকাদ্দিমা)

অনেকে বলবেন , রবীন্দ্র-নজরুলরা তো কারো শিষ্যত্ব লাভ করেন নি তাহলে তারা কীভাবে বড়ো হলেন ? আমি বলবো , উনারা সাহিত্যের ময়দানে অশ্বারোহী হলেও ধর্মের ক্ষেত্রে উনাদের কথা কে মানে ? এজন্যেইতো নজরুল হিন্দু প্রমিলাকে বিয়ে করলেন !

এখানে বলা হয়েছে দ্বীনের বিশারদ হওয়ার ক্ষেত্রে অর্থাত , তাফসীর , হাদীসব্যাখ্যা , ফতোয়ার ক্ষেত্রে অবশ্যই সনদ প্রয়োজন । যেটা মুসলিম শরীফের সুত্রে আগে উল্লেখ করা হল ।

অনেকে বলবেন , জাকির নায়েকের কথার মধ্যেতো অনেক ফায়েদা আছে । আমি বলব , মদের মধ্যেতো অনেক ফায়েদা আছে কিন্তু ফায়েদার চেয়ে ক্ষতি বেশি হওয়ার দরুন ইসলাম তা হারাম করেছে ।

অনেকে বলবেন , তার দ্বারাতো দ্বীনের অনেক লাভ হচ্ছে । আমি বলবো , উহুদ যুদ্ধেতো কুযমান নামক বাহাদুরের মাধ্যমে তো অনেক লাভ হয়েছিল । তারপরও সে কাফির অবস্থায় মারা গেলো । তখন নবীজী বলেছিলেন , আল্লাহ তাআলা এই দ্বীনকে কখনো পাপিষ্ঠ ব্যক্তির দ্বারা শক্তিশালী করেন । আমেরিকা ইসলামের প্রথম দুশমণ , কিন্তু ইরাকে সে সাদ্দামের মুর্তি ভেঙ্গে তো খারাপ কাজ করে নি !

আসলে এটা অবাক হওয়ার মতো বিষয় যে , ডা. জাকির নায়েকের প্রায় ৯০% ভক্ত তারাই , যাদের তেলাওয়াত ডাক্তার সাহেবের মতো , যাদের লেবাস ডাক্তার সাহেবের মতো , যাদের মধ্যে কারো দাড়ি ডক্টর মুরসির মতো আবার কারো থুতনি এরদোগানের মতো । এককথায় মডারেট মুসলিম নামধারী সুবিধাবাদীরা ডাক্তার সাহেবকে ইমাম বানিয়ে নিয়েছে ।

ডাক্তার সাহেবের দ্বারা অনেক মানুষ মুসলমান হয়েছে ঠিক , কিন্তু তার দ্বারা মুমিন তাকওয়াবান হয়েছে কয়জন ? এরকম কয়জন আছে যারা ডাক্তার সাহেবের ওয়াজ শুনে তেলাওয়াত শুদ্ধ করেছে ? এরকম কয়জন পাবেন ? যারা তার নসিহত শুনে দু'রাকাত নামাজ বেশি পড়েছে !

ঈমানের সংজ্ঞায় বলা হয়েছে , নবীজী যা নিয়ে এসেছেন , তা বিনা বাক্যে মেনে নেওয়া । এই কাজটি করেছিলেন হযরত আবু বকর রা. সহ সব সাহাবায়ে কেরাম রাযি. । নবীজী যখন মেরাজের কথা বললেন , তখন আবু বকর রা. তা বিনা বাক্যে মেনে নিলেন । তখন থেকেই তিনি সিদ্দীক উপাধিতে ভূষিত হলেন । কিন্তু ডাক্তার সাহেব বলেন , তোমরা আগে বিজ্ঞানের সাথে মিলাও । যুক্তি খাটাও !

অর্থাত, কুরআনকে যাচাই করবে বিজ্ঞান !

অথচ হযরত আলী রা. বলেন , যদি দ্বীন যুক্তি দ্বারা হত তাহলে মোজার উপরের চেয়ে নিচে মাসেহ করা অধিকতর উত্তম হতো ।

কুরআনের একাধিক আয়াতে সাধারণ পাবলিকের চেয়ে আলেমদের শ্রেষ্টত্বের কথা বলা হয়েছে । অসংখ্য হাদীসে আলেমদেরকে সম্মান করার কথা বলা হয়েছে । কিন্তু ডাক্তার সাহেবের বক্তব্য শোনার পর তার ভক্তরা কুরআন-হাদীসের এই নির্দেশের সরাসরি বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে আলেমদেরকে অসম্মান করা শুরু করে !

আমি ডাক্তার সাহেবের অনেক বক্তব্য শুনেছি , উইলিয়াম ক্যাম্বেলের সাথে তার বিতর্ক , শ্রী শ্রী রবি শঙ্করের সাথে বিজয় আমি কয়েক দেখেছি । ২০০৪ সাল থেকে তার নাম শুনেছি । তাই আমি মনের আক্রোশে এসব বলি নাই বরং বাস্তবতাকে উপলদ্ধির পরই বলছি ।

এখন হয়তো অনেকে বলবেন , দ্বীনের বৃহত স্বার্থে কি এসব বাদ দেওয়া যায় না ? আমি বলবো , দ্বীনের বৃহত স্বার্থে আমরা অনেক বিষয় ছোটখাট বিষয় আলেমগণ বাদ দিয়েছেন । যেমন - প্রাচ্যের কবি ইকবাল ... উনার চেহারা সুরততো ডাক্তার সাহেবের চেয়ে কোনোভাবে উত্তম নয় । কিন্তু আলেমগণই তাকে আল্লামা উপাধিসহ ডাকেন ।শায়খ আহমদ দীদাতের ক্ষেত্রেও একথা প্রযোজ্য ।

কিন্তু যারা দ্বীনের মৌলিক বিষয়ে আঘাত হানছে তাদেরকে কোনোভাবেই ছাড় দেওয়া যায় না । যেমন- জবাব মওদুদি সাহেব এবং ডাক্তার সাহেব !

যদি দ্বীনের বৃহত স্বার্থে কিছু মৌলিক পরিবর্তন মেনে নেওয়া যেত তাহলে কেনো হযরত উমর রা. গাসসানের বাদশাহের কাছ থেকে কেসাস নেওয়ার ব্যাপারে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ হলেন ? কেনো হযরত আবু বকর রা. যাকাত অস্বীকার কারীদের বিরুদ্ধে অস্ত্র উঠালেন ?

ডা. জাকির নায়েকের ভুল কী কী ? তা আলেমগণ বলে দিয়েছেন । এখানে মৌলিক কিছু বিষয় তুলে ধরা হলো ।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৫ শে আগস্ট, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৪৪

যে শহর চোরাবালি বলেছেন: খুবই ভাল লেখা ভাই। সেফ হলে এই লেখাটা আবার রিপোস্ট করবেন ।

২৫ শে আগস্ট, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৫৪

ছায়ানীড় বলেছেন: ইনশাআল্লাহ! :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.