আমি বলদ-গোড়ায় গলদ!!!

০৭ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ১২:৩৪

অনিয়মে- নিয়মের বেড়াজালে আমরা শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থায় ও দিব্যি শ্বাস নিচ্ছি। এত ভেজালে ও আজো স্ক্রুলিং করে জীবন কাটাচ্ছি কিন্তু এভাবে আর কত চলবে.................................................!



কিন্তু চলছে হাওয়ায় বেগে- গুন গুন গানের সুরে- হেলমেট সহ আমার পাল্‌সার- আগ্রাবাদ এক্সেস রোডে- স্বভাবত’ই ঘন্টায় ৫০/৬০ কিঃ মিঃ গন্তব্য চট্রগাম রেল ষ্টেশন।

হটাৎ আচমকা এক রিক্সা কোনরকম হাতের ইসারা-ইংগিত-সিগন্যাল ছাড়াই সোজা রাস্তা থেকে বাক নিলো................!

ধুম……………..............................................!!!!!!

মাই গুডনেস! যদি তড়িৎ বেগে খুব সতর্ক ও সুকৌশলে ব্রেক কস্তে না পারতাম তবে সেদিন আমার ও যাত্রী সহ রিক্সা চালকের কি পরিনতি হতো আল্লাই মালুম!



দূর্ঘটনা থেকে রক্ষা হলে ও মেজাজ বিগড়ে গেল কিন্তু ক্ষনিকে নিজেকে শান্ত করলাম, গায়ের জোড়ে দু-চার থাপ্পর দিলে সেটা তো সমাধান নয় উল্টো বেআইনী, “গলদ তো গোড়ায়”!- কি ই বা করার আছে আমার! বেটা’র কাছে তো ড্রাইভিং লাইসেন্স থাকার কোন আইন নেই,! থাপ্পর যেখানে দেয়া দরকার সে “হেডম” তো আর আমার নেই !



তাই শান্ত ভাবে যাত্রী সহ রিক্সা রাস্তার একপাশে নিয়ে কিছু ওয়াজ নছিয়ত করলাম এই শান্তনা, অন্তত যাত্রীসহ একজন রিক্সার ড্রাইভার কে সজাগ করি- বুঝালাম কি করে পিছনে গাড়ি দেখে সময় নিয়ে সিগন্যাল দিতে হয় আর যাত্রীকে রিক্সার অনভিজ্ঞ চালক দের ব্যাপারে অন্তত নিজের জীবনের জন্য হলে ও কি ভুমিকা নিতে হয়।



লাইসেন্স অথারেটির নিয়মে ইঞ্জিন বিহীন কোন বাহনের রুট পারমিট বাদ- চালকের জন্য ও ড্রাইভিং লাইসেন্সের প্রয়োজন হয়না!!! যদিও তা চলছে তা কত ব্যাস্ততম সড়কে!!! সম্পূর্ন আনকোরা-অনভিজ্ঞ চালক নূন্যতম সিগন্যাল - হাতের ইশারা এমনকি কোন আইন সম্পর্কে যার কোন ধারনা নেই। এ রিক্সা তার চালকের জন্য- বহন কারী যাত্রীর জন্য এবং ইঞ্জিন চালিত গাড়ির জন্য কত ভয়াবহ মর্মান্তিক দূর্ঘটনা সৃষ্টি করতে পারে যা বলাই বাহল্য।



আবার ছুটছে পালসার দেওয়ান হাট ওভার ব্রীজ পেড়িয়ে প্রাকৃতিক শোভা মন্ডিত টাইগার পাস, পাস করার মুহুর্তে’ই আচমকা র‌্যাব সিগ্‌ন্যাল! ভদ্রলোকের মতো দাঁড়িয়ে গেলাম।

পাশে দেখলাম এক গাড়ী র‌্যাব, এরিমধ্যে প্রায় ২০/২২ টি মোটর সাইকেল পাকড়াও করেছে আর একজন মাত্র ভীত সন্ত্রস্ত সার্জেন্ট! কাগজ পত্র পরীক্ষা করছেন। বুঝলাম কপালে শনি লেগেছে! অনেক সময়ের ব্যাপার! আমার সিরিয়াল আসতে আসতে আজ নাইটে ট্রেনের (usa.dv- লটারীর) মতো টিকেট আমার কপালে নেই আর থাকলে ও ১৬৫ টাকার টিকেট কালোবাজারীর কাছ থেকে ডাবল দিয়ে কিনতে হবে তাই একটু এগিয়ে র‌্যাবে'র এক সদস্যকে আমার টিকেট কাটতে তাড়া আছে অনুরোধ করলে উনি সদয় হয়ে আমার গাড়ীর ডকুমেন্টস্‌ সহ সার্জেন্টকে আগে করে দিতে বললেন।



সার্জেণ্ট সাহেব আমার ডকুমেন্টস্‌ দেখে- ড্রাইভিং লাইসেন্স চাইলে আমার হেভি ড্রাইভিং লাইসেন্স’টা বের করে দিলাম, উনি বললেন “এটাতে তো মোটর সাইকেল চালাতে পারবেন না”, বলে একটা ফর্মে কি যেন লিখলেন এবার ইন্সুরেন্সের কাগজ দেখে বললেন “এর মেয়াদ ও তো চলে গেছে”!-বলে’ই আরো কি কি লিখে আমার একটা ডকুমেন্টস্‌ রেখে বাকী’গুলোর সাথে একটা স্লিপে কয়েক দিন পরের একটা ডেট দেখিয়ে ট্রাফিক অফিসে যোগাযোগ করার পরামর্শ দিলেন।



আমি ঐ স্লিপ দেখে অনুমান করলাম আমাকে জরিমানা করা হয়েছে, সার্জেন্ট বেচারা গলদ ঘর্ম তাই উনাকে কোন প্রশ্ন না করে র‌্যাব ঐ সদস্য কে বললাম এটা আমাকে কেন করা হলো- আমি কি গাড়ী চালাতে পারিনা?! আপনারা আমার পরীক্ষা নিন নিয়ম-কানুন সহ আমি কেমন চালাতে পারি দেখিয়ে দি!

শুধু মোটর বাইক নয় কার-মাইক্রো সবি’ই, শুধু ট্রাক ছাড়া কিন্তু আমার মোটর বাইক ছাড়া বাকী সব গুলোর ১০ বছরের অভিজ্ঞতা সম্পর্ন লাইসেন্স আছে।



ঃ ও সরকারী নিয়মে তো পারিনা!, যদি ও আমার হেভী লাইসেন্সে ট্রাক-ট্যাং- লরী চালানোর অনুমতি আছে কিন্তু আমি সেটা না পারলে ও লাইসেন্স থাকার কারনে কোন সমস্যা নেই!!!!

কারন ঐ হেভী অরিজিন্যাল লাইসেন্স’টা আমি দালাল দিয়ে ঘুষে'র মাধ্যমে বানিয়েছিলাম বলেই ড্রাইভিং না জানা সত্ত্বে ও আমার কোন সমস্যা নেই অথচ মোটর সাইকেলের একজন সুদক্ষ চালক হয়ে ও ঘুষ দিয়ে লাইসেন্স না বানানো আমার অপরাধ হলো?!!!!!!!!!



আমরা কি বি,আর,টি,এ থেকে ঘুষ ছাড়া ড্রাইভিং লাইসেন্স বানাতে পারি???

ঘুষ ছাড়া মোটর সাইকেলের ড্রাইভিং লাইসেন্স কেউ বানাতে পেরেছে বলে আমার অন্তত জানা নেই।!

তাই আপনারা উদ্যোগ নিন- এমন করে চালকদের ধরে ড্রাইভিং এর পরীক্ষা নিন যদি না পারে তখন জরিমানা করুন

তবেই তো উদ্দেশ্য সফল হবে। আর আমরা মোটর সাইকেলের জন্য ২০০ টাকা দিয়ে যে ইন্সুরেন্স করি তার কাজ’টা কি দয়া করে ব্যাখ্যা করবেন?

উনি আমার প্রশ্নের কোন সদুত্তর দিতে পারেননি।



সেদিন টিকেট কাটতে গিয়ে ৩ ঘন্টা লাইনে দাঁড়িয়ে হতাশ হয়ে শেষ পর্যন্ত কালো বাজারীর কাছ থেকে ও নিলামে(!)

রী ডবল দামে ৩টি টিকেট ক্রয় করেছিলাম আরো মজার ব্যাপার!- ঘর থেকে ২ ঘন্টা আগে গন্তব্যে রওনা দিয়ে ও রাস্তায় জ্যামের কারনে সে ট্রেন মিস হয়েছে অগত্যা বাসের টিকেট ছিলো শেষ সম্বল !!!



দিন কয়েক পর ট্রাফিক আফিসে খোঁজ নিয়ে জানতে পারলাম আমার জরিমানা- লাইসেন্সের জন্য ১০০০ ও ইন্সুরেন্স (যার মুল্য ২০০ টাকা) তার জন্য ১০০০ মোট ২০০০ টাকা!!!!!!!!!!!!!!!



অথচ নির্দেশ না মানলে ২৫০ টাকা জরিমানা!!!!!!!!!!!



নিজেকে ভৎসনা করলাম- কেন যে সেদিন অমন ভদ্রতা দেখাতে গেলাম! চ্যালেঞ্চ করে বলতে পারি, আমি

না থামলে আমাকে ধরা মোটেই সহজ কম্ম ছিলোনা। আর কোন বাপের বেটা ধরতে পারলে ২৫০ টাকা জরিমানা হতো! তারপর ও তো চেষ্টা করা ফরজে আইন ছিলো।



সেদিন থেকে পণ করেছি আর কখনো এমন সিগ্‌ন্যালে ভদ্রতা দেখাবো না, বাপের বেটা হলে আমাকে ধরে ২৫০ টাকা জরিমানা করবেন...........

৪ টি +৬/-০