![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ল্যাম্পোস্টের অস্পষ্ট হলুদ বাতির ঝাপসা আলোয় ছেয়ে গেছে নগরীর রাজপথগুলো! বেলাশেষে কর্মব্যস্ত মানুষগুলো যে যার নীড়ে পৌছতে আরো একবার ব্যাস্ত!
কর্মব্যস্ত জনাব রজব আলী তাদেরই একজন। রোজকার মত করে অফিসের কর্মব্যাস্ততা কাটিয়ে অন্য আটদশজনের মত উনিও বাসার উদ্দেশ্যে বের হলেন। উনি একা নন।
উনার সাথে উনার প্রতিবেশী/অফিস কলিগ জনাব সাইফুল বারীও আছেন।
অফিসে গূরুত্বপূর্ণ একটা মিটিং থাকায় সেদিন বাসায় একটু লেট করেই ফিরছিলেন...
অস্পষ্ট হলুদ সোডিয়াম বাতিগুলো ফুটপাতের একপাশে ময়লার স্তুপে না খেতে পেয়ে ক্ষুধার যন্ত্রনায় পাগলপ্রায় হয়ে অস্বাভাবিকভাবে হাত পা ছোড়াছুড়ি মানুষটি অকষ্মাৎ জনাব রজব আলীর নজর কারলো।
চলার পথে হঠাৎ থমকে দাড়ালেন জনাব রজব আলী! তার কলিগ সাইফুল বারী বলছেন...
-কি ব্যাপার রজব ভাই? হঠাৎ এভাবে দাঁড়িয়ে গেলেন যে?
সাইফুল ভাই দেখুন না ডাষ্টবিনের উপর ছেলেটা কিভাবে অস্বাভাবিকভাবে হাত পা ছুড়ছে! আমার তো মনে হচ্ছে ওর প্রচন্ড ক্ষিধে পেয়েছে!
-আরে ধুর কি যে বলেন না রজব ভাই! এটাতো ওদের রোজকার কাজ। :/
হতে পারে কোনো ড্রাগ এডিক্টেড হবে, চলুনতো দেরী হয়ে যাচ্ছে! :3
কি আশ্চর্য দেখছেন না ছেলেটা এখানে খুব একা তার প্রচন্ড ক্ষিধেও পেয়েছে বটে। এককাজ করুন আপনি বাসায় চলে যান, আমি আসছি।
-কেন যে যেসে গিয়ে নিজের উপর ঝামেলা ডেকে আনছেন! আচ্ছা ঠিকাছে আপনি থাকুন আমি চললাম।
আস্তে আস্তে রজব সাহেব ছেলেটির কাছে গিয়ে তার পরিচয় জিজ্ঞেস করছেন,কিন্তু ক্ষুধার মাত্রা এতই ছিলো যে ক্ষুধা যন্ত্রনায় মূখে কথা আসছেনা। রজব সাহেব বুঝতে পেরে তড়িঘড়ি করে কাছেই একটা রেস্তোরায় নিয়ে গিয়ে আহার করালেন।
অনেকদিন না খেতে পেয়ে ছেলেটির অবস্থা শারিরীকভাবে খুবই দূর্বল ছিলো। রজব সাহেব ব্যাপারটা আঁচ করতে পেরে বুঝতে পারেন তার ভালো চিকিৎসার প্রয়োজন।
উন্নত চিকিৎসার জন্য রজব সাহেব বুদ্ধিকরে একটা প্রাইভেট হাস্পাতালেই ছেলেটির চিকিৎসার জন্য নিয়ে গেলেন।
ডাক্তারঃ আপনি রোগীর কে হোন?
-আসলে আমি ওকে রাস্তায় অসুস্থ অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে খুব খারাপ লাগছিলো তাই ভাবলাম ওর ভালো চিকিৎসার দরকার যার কারণে সরকারী হাসপাতালে না নিয়ে আপনাদের এখানেই নিয়ে আসা। যতটাকা লাগবে আআমিই দিবো, দয়া করে যদি একটু...
ডাক্তারঃ দেখুন রজব সাহেব আপনি যে কাজটি করেছেন এটা আসলে মানবিক দিক দিয়ে খুবই ভালো কাজ কিন্তু আমাদের এই হাসপাতালে যে পরিচয় ছাড়া কোনো রোগী এডমিট করা হয় না... দুঃখিত!
-দেখুন ডাক্তার বাবু ওর সুস্থ হয়ে উঠার জন্য এখন ইমার্জেন্সীভাবে খুব ভাল চিকিৎসার প্রয়োজন! যা কিছু লাগবে আমিই দিবো,যেখানে যেখানে স্বাক্ষর করতে হবে আমি করবো, তবুও একটু দেখুন না...! -_-
ডাক্তারঃ রজব সাহেব আপনি বোঝার চেষ্টা করুন আমাদের এই হসপিটাল কোম্পানীর একটা রুলস আছে, এর বাইরে আমরা কিছুই করতে পারছি না!
অতঃপর হাসপাতালের রুলস এর কাছে মানবতাটা মাথা নিচু করেই থমকে দাড়ালো!
১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সকাল ৯:২২
বোরহাান বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ জনাব!
©somewhere in net ltd.
১|
১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সকাল ৯:০৪
মো:সাব্বির হোসাইন বলেছেন: অসাধারণ লেখা!! ভালো লেগেছে।
নতুন ব্লগে স্বাগতম। এগিয়ে যান।