অধম্মের বেসাতি।।

০২ রা জুন, ২০১৫ সকাল ১০:৩৩

কথা ছিল-
এবারের চৈত্রের শেষ গোধূলি লগ্নের আগেই,
বাসন্তী'কে চওড়া পেড়ে লাল শাড়ি'তে সিঁদুর পরাবে,
মুসলিম কোলে জন্ম নেয়া এক প্রেমিক পুরুষ;
প্রভুর দরবারে মাথা নত করে সকাল সন্ধ্যা,
ভক্তি'তে জোর বিশ্বাস রেখেই আর্জি পেশ করে,
এতই প্রেম যদি দিলে মনে তবে দেহের মাংসপিণ্ড
পার্থক্য কেন করে রাখলে জাত বিচারে?
বাসন্তী, এই জনমে তোকে পাওয়া বুঝি হলোনা আর,
ক্ষমা করে দিস, যদি পরের জনম থাকে,
কথা দিচ্ছি বৌ বানিয়ে আনবোই তোকে ঘরে।
বুড়ো বাপ বড্ড ক্যাচাল করে রে পাগলী,
জন্ম দিয়েছে না?কি করে বাপের অবাধ্য হই বল তো?
তাই বলে ভাবিস না, এহেন মতে আমিও সামিল।
স্বর্গীয় প্রেমের নাম শুনেছিস রে বাসন্তী?
আত্মার সাথে আত্মার মিলন হয় শুদ্ধ পবিত্রতায়!!
বাসন্তী ক্রুদ্ধ দৃষ্টি অবনত করে পায়ের নখ খোঁটে,
সদ্য নিকানো ঘরের দাওয়ায় বসে ফোঁস ফোঁস করে
হঠাৎই বিড়বিড় করে বলে বসে,
হ্যাঁ রে মুসলিম এর বাচ্চা তোর বাপে জানে,
তোর কৌমার্য্য আমার কাছে বন্ধক দেয়া আছে?
কোথায় ছিল সেদিন তোর সেই ধম্মপরায়ণ বাপ?
শুধু আমাদের বেলায় জাত যাবে, ধম্ম অধম্ম হবে?
ঘরের বেড়া কেটে যেদিন ডাকাতি করে নিয়ে গেলি
এই নিচু জাতের মানইজ্জত এমনকি ঠুনকো সম্ভ্রম,
খুব করে বলেছিলি সেদিন, গেরস্ত বাড়ির বৌ বানাবি;
দিনের আলোয় এখন আসছিস আত্মার শুদ্ধি করতে?
পচন ধরা মাংস পিণ্ডে বাসন্তী থুথু ছিটায়, শুনছিস?
এত বেশী তড়পাচ্ছিস কেন রে বাসন্তী?
এইজন্যেই বাপে বলেছিল নিচু জাতের মেয়েছেলে,
পায়ের কাছেই রাখবি, মাথায় তুলতে চাইলেই
ঘাঁটি গেঁড়ে বসার পাকাপোক্ত মতলব আঁটবে।
শোন বাপের ছেলে- তোর বাপকে বাড়ি গিয়ে বলিস
বাসন্তী'রা ধম্মের নামে অধম্ম করে বেড়ায় না;
শুধু এইটুকু বলে যা, পেটের মধ্যিখানে তিল তিল করে
বেড়ে ওঠা তোর অধম্মের ফসল সে-কি তোদের
ধম্মেই বড় হবে,না-কি মৃতদের মিছিলে নাম লিখাবে?

০ টি +০/-০