![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
অমি-র দাদী পরতো খাদি মাখতো গায়ে কয়লা
ফর্সা হতো বদনখানি থাকতো না তায় ময়লা।
সন্ধ্যে হলে এখন যেমন পড়তে বসার তাড়া রোজ
তার সময়ে লেখা পড়ার কেঊ নিতো না এমন খোঁজ।
ঝুট-ঝামেলা অল্প ছিল, আটটা বাজার সাথেই ঘুম
ঘুমের ভিতর ফুল পরীরা মাখিয়ে যেতো মিষ্টি চুম।
কার্টুন ছবির রেশ ছিলনা চ্যাপ্টা টিভির বাক্সোটা
সেই আমলে জানতোনা কেউ বিষয়টা কী টকশোটা।
খালে-বিলে মাছের নিবাস টেংরা -পুটি -শোল-গজার
জাল ফেলে তো অমি-র দাদা ধরতো কত মাছ মজার।
এখন এসব যায়না দেখা , দেখা গেলেও ফর্মালিন
কিডনী ,লিভার নষ্ট করে ক্রমাগতই করছে ক্ষ্ণীণ।
নাম-বাহারি তেল ছিলনা ,চিনতো সবাই সর্ষে তেল
তাতেই দাদী তুষ্ট ছিলেন, কেশে ছিল রুপের খেল।
বুড়ো হলেই বাতের ব্যাথা ,ওষুধ ছিল তেল-মালিশ
বুকের ব্যাথার মহৌষধি ছিল গরম কোল-বালিশ
শীল-পাটাতে মরিচ ঘষে রান্না হতো তরকারি
পরিবারে বাবা ছাড়া কেউ ছিলনা দরকারি ।
অমি-র দাদীর সেকাল একাল -০২
================================
অমি-র দাদীর বয়স যখন বারোর কোটায় দেয়নি পা
তখনই তার বিয়ে নিয়ে চিন্তিত খুব ছিলেন মা ।
মেয়ের বয়স তেরো হলেই বলতো লোকে আইবুড়ো
কথায় কথায় খোঁচা কথা শুনতে হতো ছাঁই -গুড়ো।
ছয়টি ঋতুই স্পষ্ট ছিল , প্রধান ছিল গ্রীষ্ম শীত
হেমন্তে নবান্ন হতো বর্ষা এলেই গাজীর গীত।
শরৎ এলেই খালের চরে থাকতো ফোটে কাশের ফুল
যদিও সব কাব্য -গাঁথায় বসন্তটাই ছিল মূল।
এখন এসব বদলে গেছে দাদী খোঁজে পায়নি মিল
কাক-কবুতর অল্প আছে ,হারিয়ে গেছে শঙ্খ চিল।
ভাগ্যবতী গণ্য হতো যুক্ত ভুরু (ভ্রু) ছিল যার
এখন যেন এমন হলে প্লাক করাটা ফরয তার।
মোহন বাঁশি মন ভুলাতো এখন ভুলায় ফ্যাসবুকে
বুকের কথা মুখের ভাষায় মেইল করা হয় খুব সুখে।
কেরোসিনের দাম বাড়িলেই রাত্রি হতো অন্ধকার
এখনতো সব বিজলী বাতি নেই কেরোসিন গন্ধ তার।
মশলা পেতো মনের মতো বাড়ির পাশের ক্ষেত থেকে
থোকা থোকা থাকতো ঝুলে আমের গাছে আম পেকে।
কেঊ দিতো না বিষ ছিটিয়ে তাড়িয়ে দিতে আমের পোক
ফলন ছিল বেজায় রকম অল্প ছিল খাওয়ার লোক।
নেয়নি জনম তখন সেটি বিউটি পার্লার নামটি যার
প্রসাধনী বলতে ছিল আলতা-সাবান- স্নো পাউডার।
গ্রামের পাশেই চাখারবন্দ ঘোড়ার মেলা জমতো খুব
জোয়ান বুড়ো নির্বিশেষে সামলাতো না যাওয়ার লোভ।
অমি-র দাদীর সেকাল একাল -০৩
================================
ঈদের ভোরে তাল পুকুরে হল্লা করে চলতো স্নান
সবার আগে ডুব না দিলে মনটা হতো দারুন ম্লান।
পরিবারটা যৌথ ছিল, খোকা-খুকির সংখ্যা ঢের
খুশির মাঝেও মান-অভিমান,জামা জুতোয় রকম ফের।
কার যে কত ইনাম হল কদম বুসির ঈদীতে
দাদীর মত লম্বা হিসাব পারতো না তো কেউ দিতে।
ধর্মভেদে ভেদ ছিলনা উৎসবে কি পার্বনে
এখন এসব হচ্ছে বিলীন রেষারেষির কার্বনে।
বাড়ি থেকে দুমাইল দূরে রবিবারে বসতো হাট
সেথায় যেতে পাড়ি দিতে হতো দুটি খেয়া ঘাট।
শেয়াল-ডাকা রাত্রি ছিল বউকথা কও দিন দুপুর
কনুই অব্দি কাঁচের চুড়ি পায়ে প্রকৃতির নুপুর।
অমি-র দাদী আজও সুঠাম বয়স হবে আশি তার
ঝকঝকে তার বত্রিশ-দন্ত নেই যে সর্দি-কাঁশি আর।
এর পিছনে রহস্য কী? সহজ জবাব তার
ডানো-টানো খাইনি কিছূ ,দুধ খেয়েছি মা-র।
শেওড়া গাছে ভুতের বাসা অলক্ষুণে কাকের ডাক
জানার বড় ইচ্ছে হতো কী মন্ত্র যে ছিছিম ফাঁক ।
বাহন ছিল নৌকা ঘোড়া অল্প ছিল বাস -মটর
থাকলেও তা ভাঙ্গা রাস্তায় করতো যে লটর-ঘটর।
©somewhere in net ltd.
১|
১১ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:০০
প্রামানিক বলেছেন: এক কথায় চমৎকার। ধন্যবাদ