নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অন্বেষন

শাহরিয়ার সরোয়ার

কল্পনাপ্রবন একজন

শাহরিয়ার সরোয়ার › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমার স্কুল জীবন-২

১৮ ই অক্টোবর, ২০১৪ রাত ১:২৯

মর্নিং সান স্কুল এ আমার ২য় স্কুল জীবন শুরু হোল। বাসা থেকে দূরে। আমার বাসা সল্টগোলা ক্রসিং। আর নুতন স্কুল ছিল আগ্রাবাদে। সেখানে গিয়ে ভর্তি হলাম ক্লাস ওয়ানে। নতুন স্কুল। কাউকেই চিনি না। আসা যাওয়ার জন্যে তাদের নিজস্ব গাড়ি আছে। বাবা মায়ের আর কোন চিন্তা নেই।

কিন্তু আমার জন্যে তা কাল হয়ে দাড়ালো। স্কুল ছুটি হোত সাড়ে এগারোটায় বা বারো টায়। কিন্তু স্কুলের গাড়িতে করে আসাতে বাসায় পৌছুতে বেজে যেত দুইটা বা একটা। ফলস্বরূপ কাজিন্দের সাথে খেলাধুলাটা মাটি হয়ে গেলো। বাসায় পৌছেই মাত্র মা গোসল করিয়ে খাবার খাইয়ে ঘুমুতে পাঠাতেন। বিকালে স্যার আসতেন। গনিত আর ইংরেজী বিষয় গুলো দেখতেন। সন্ধ্যার আগে এক বা আধা ঘন্টা সময় পেতাম কাজিন দের সাথে খেলাধুলা বা দেখা করার।

সেই মর্নিং সান স্কুলের প্রতি আমার বিতৃষ্ণা এসে গেলো। কিন্তু স্কুলে প্রচুর বন্ধু পেয়েছিলাম। ইচ্ছেমতো দুষ্টুমি করতাম। বন্ধু তাহজীব এর বসার সময় কলম খাড়া করে রেখে ছিলাম। বস্তে গিয়ে তাহজীব খুব ব্যাথা পেয়ে ছিল। পরের দিন তার মা এসে প্রিন্সিপাল ম্যাডাম কে কমপ্লেইন। ম্যাডাম তো ওত পেতে থাকতেন কিভাবে আমাকে শাস্তি দেয়া যায়। যা হোক ম্যাডামের স্কেলের বারি এখনো মনে আছে। পরে কলেজে ২য় বর্ষে পড়ার সময় মর্নিং সানের এক মেয়ে সহপাঠির সাথে দেখা হয়। সে জানালো তাহাজীবের আম্মু ক্যান্সারে মারা গেছেন। খুব খারাপ লেগেছিলো। সেকথা পরে আলোচনা করব।

এরপর আরো বহুবার বহু কারনে মার খেয়েছিলাম। ফাস্টবয় এজাজ কে মারার কারনে, নাজমুল কে টেবিল থেকে ফেলেদিয়ে, শাওন কে খামচি মারার কারনে, জিয়াদ কে ঘুশি দিয়ে নাক ফাটিয়ে ফেলার কারনে। আরো অনেক কারন আমার পরিষ্কার মনে নেই।

নোমান নামের একটা ছেলে ছিল। সবাই ক্ষেপাতো তাকে। সে খুব সরল ধরনের ছেলে ছিল। জানিনা এখন কেমন হয়েছে।

সেই স্কুলে কয়েকজন বন্ধুর সাথে এখনো যোগাযোগ আছে। মৌ নামে একটা বন্ধু আছে যার সাথে কয়েক বছর পর পর হঠাত করে কথা হয়। বেষীরভাগ সময় সে ই ফোন করে। শাওন আর এঞ্জেলের সাথে আর কোন যোগাযোগ নেই। তারা কোথায় কেমন আছে তাও জানিনা। অনেক খুজেছি, পাই নি।
এজাজ, সামি, অভী এই ৩ জনের সাথে যোগাযোগ আছে। নিয়মিত না হলেও যোগাযোগ থাকার মতই।

যা হোক, মর্নিং সান স্কুলের মাইক্রো বাসটা প্রায়ই খারাপ হয়ে যেত। কখনও তেল শেষ তো কখনো ইঞ্জিনে সমস্যা। দুপুর গড়িয়ে যেত। অই সময়টা খুব খারাপ লাগত কারন পুরো গাড়ির সবচেয়ে শেষ যাত্রী ছিলাম আমি। তাই আমাকেই সবচেয়ে বেশী ভুগতে হোত এই যন্ত্রনা।

গাড়ির এসিস্ট্যান্ট আবু ভাইয়া ছিলেন চমতকার একজন মানুষ। সবাইকে খুব আদর করতেন। তার সাথে কলেজে ১ম বর্ষে একবার একটা বিয়েতে দেখা হয়েছিল।

সেই স্কুলে গিয়া আমি প্রথম যেটি আবিষ্কার করি সেটা হোল সেখানে ছেলে মেয়ে একটা আরেকটার সাথে কথা বলে না। শুধু তাই না, এমন অবস্থা যে যেন বহুকালের শত্রু।

বলাবাহুল্য, আমি আমার জীবনের প্রথম প্রেমপত্র পাই ১ম স্রেনীতে থাকা অবস্থাতেই। আমি খুব লজ্জা আর ভয়ে কান্না করে দিয়ে ছিলাম। যে মেয়েটি দিয়েছিল সেটি ছিল একটি চাকমা মেয়ে। তার নাম নাই বললাম। পরে শুনেছি মেয়েটির বাবাও নাকি মারা গিয়েছিলেন আমরা ক্লাস নাইনে পড়া অবস্থায়।

স্কুলে পরীক্ষার হলে কিছু লিখতে ইচ্ছে করত না। ভালো লাগতো না লিখতে। পরীক্ষার হলে অল্প কিছু লিখে বসে থাকতাম। পরিক্ষার খাতা দেয়ার পর দেখা যেতো আমি ডাব্বা মার্কা রেজাল্ট। আমার সমস্যাটা আমি এখনো বুঝতে পারিনা যে ঠিক কি কারনে আমি এমন করতাম। আমার সব মুখস্ত, তারপরেও লিকতে ইচ্ছে করত না। মা প্রশ্ন করলে উত্তর দিতাম বাসায় গিয়ে লিখব। অনেক জ্বালিয়েছি মাকে। মা বাসায় এসে মারতেন, বকাঝকা করতেন।টানতে টানতে সেই স্কুলে ক্লাস ফোর পর্যন্ত এনেছিলান আমাকে।

স্কুলে একবার ক্রীড়া প্রতীযোগিতা হয়েছিলো। সেখানে আমি মোরগ লড়াইয়ে ২য় স্থান অধিকার করেছিলাম। জ্যোতী নামের একটা মোটা ছেলে ছিল। সে ১ম আর ৩য় হয়েছিল সামী। জ্যোতী কথায় এখন জানি না কিন্তু সামি সিলেট শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছে।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.