নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জীবন যাচ্ছে চলে, জীবনের নিয়মে।

আরাফআহনাফ

আমি বাংলার গান গাই, আমি বাংলায় গান গাই...

আরাফআহনাফ › বিস্তারিত পোস্টঃ

আজ পল্লী কবি জসীম উদ্‌দীনের ১১৪তম জন্মবার্ষিকীতে - স্মরণ

০১ লা জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১০:১৮



আজ পল্লী কবি জসীম উদ্‌দীনের ১১৪তম জন্মবার্ষিকী

'এইখানে তোর দাদীর কবর ডালিম গাছের তলে
তিরিশ বছর ভিজায়ে রেখেছি দুই নয়নের জলে’।


এমন শত কবিতা, গল্প, নাটক আর গানের মাধ্যমে গ্রাম-বাংলার মানুষের সুখ-দুঃখের কথা তুলে ধরেছেন যে কবি, সেই পল্লী কবি জসীম উদ্‌দীনের আজ ১১৪তম জন্মবার্ষিকী। ১৯০৩ সালের আজকের এই দিনে ফরিদপুর শহরতলীর কৈজুরী ইউনিয়নের তাম্বুলখানা গ্রামে নানা বাড়িতে জন্ম গ্রহন করেন জসীম উদ্‌দীন। তাঁর পিতার নাম আনছার উদ্‌দীন, মাতার নাম আমেনা খাতুন।

কবির শিক্ষাজীবন শুরু হয় ফরিদপুর শহরের হিতৈষী স্কুলে। সেখানে প্রাধমিক শেষ করে তিনি ফরিদপুর জিলা স্কুল থেকে ১৯২১ সালে ম্যাট্রিক, ১৯২৪ সালে ফরিদপুর রাজেন্দ্র কলেজ থেকে এইচএসসি এবং একই কলেজ থেকে বি এ পাস করেন। তিনি ১৯৩১ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে হতে এমএ পাশ করেন। তিনি ১৯৩৯ সালে মমতাজ বেগমকে বিবাহ করেন এরপর তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতার চাকরিতে যোগ দেন। ১৯৬১ সালে চাকরি থেকে অবসর নেন কবি।

জসীমউদ্দীন সাহিত্যের নানা শাখায় কাজ করেছেন, যেমন গাথাকাব্য, খন্ডকাব্য, নাটক, স্মৃতিকথা, শিশুসাহিত্য, গল্প-উপন্যাস ইত্যাদি। তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ রাখালী প্রকাশিত হয় ১৯২৭ সালে। তাঁর প্রধান গ্রন্থগুলি হলো: নক্সী কাঁথার মাঠ (১৯২৯), সোজন বাদিয়ার ঘাট (১৯৩৩), রঙিলা নায়ের মাঝি (১৯৩৫), মাটির কান্না (১৯৫১), সুচয়নী (১৯৬১), পদ্মা নদীর দেশে (১৯৬৯), ভয়াবহ সেই দিনগুলিতে (১৯৭২), পদ্মাপার (১৯৫০), বেদের মেয়ে (১৯৫১), পল্লীবধূ (১৯৫৬), গ্রামের মায়া (১৯৫৯), ঠাকুর বাড়ির আঙিনায় (১৯৬১), জার্মানীর শহরে বন্দরে (১৯৭৫), স্মরণের সরণী বাহি (১৯৭৮), বাঙালীর হাসির গল্প, ডালিম কুমার ইত্যাদি। তাঁর রচিত বাঙ্গালীর হাসির গল্প (দুই খন্ড, ১৯৬০ ও ১৯৬৪) ও বোবা কাহিনী (১৯৬৪) উপন্যাসটি সুখপাঠ্য।

জসীমউদ্দীন জারীগান (১৯৬৮) ও মুর্শীদা গান (১৯৭৭) নামে লোকসঙ্গীতের দুখানি গ্রন্থ সংকলন ও সম্পাদনা করেন। ১৯৬৮ সালে তাঁর সম্পাদনায় কেন্দ্রীয় বাঙলা উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক প্রকাশিত হয় জারীগান। জারি গান একান্তভাবেই বাংলাদেশের নিজস্ব সৃষ্টি। এ গ্রন্থে জারি গানের মোট ২৩টি পালা সংকলিত হয়েছে। গ্রন্থের ভূমিকায় জসীমউদ্দীন জারি গানের উৎস এবং বিভিন্ন এলাকার জারি গানের বৈশিষ্ট্য তুলে ধরেন। দ্বিতীয় গ্রন্থটি তাঁর মৃত্যুর পরে প্রকাশিত হয়।

তাঁর নক্সী কাঁথার মাঠ কাব্যটি দি ফিল্ড অব এমব্রয়ডার্ড কুইল্ট এবং বাঙালীর হাসির গল্প গ্রন্থটি ফোক টেল্স অব ইষ্ট পাকিস্তান নামে ইংরেজিতে অনূদিত হয়েছে। বাংলা কবিতার ধারায় জসীমউদ্দীনের স্থানটি বিশিষ্ট। তাঁর কবিতা অনাড়ম্বর কিন্তু রূপময়। গ্রামবাংলার ঐতিহ্য ও লোকজীবন জসীমউদ্দীনের কবিতায় নতুন রূপ লাভ করেছে। বাংলাদেশের মানুষের সুখ-দুঃখ, হাসিকান্না ও জীবন সংগ্রামের কাহিনীই তাঁর কবিতার প্রধান উপজীব্য। তাঁর কবিতায় দেশের মাটির সাক্ষাৎ উপলব্ধি ঘটে। এজন্য ‘পল্লীকবি’ হিসেবে তাঁর বিশেষ ও স্বতন্ত্র পরিচিতি রয়েছে। তাঁর গদ্য রচনাও বিশেষ আকর্ষণীয়; সরল, সরস, গভীর ও আন্তরিকতার স্পর্শে তা মন ছুঁয়ে যায়।

জসীমউদ্দীন ছিলেন প্রগতিশীল ও অসাম্প্রদায়িক চেতনার অধিকারী এবং এ ধরণের সাংস্কৃতিক আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা। এরূপ মানসিকতার কারণেই ষাটের দশকে পাকিস্তান সরকার রেডিও ও টেলিভিশন থেকে রবীন্দ্রসঙ্গীত প্রচার বন্ধের উদ্যোগ নিলে অনেকের মতো তিনিও এর তীব্র প্রতিবাদ জানান। তিনি বাঙালির জাতিসত্তা বিকাশের আন্দোলন (১৯৬৬-১৯৭১) এবং সমাজতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থার একজন দৃঢ় সমর্থক ছিলেন।

জসীম উদ্‌দীন পল্লীর মানুষের সংগ্রামী জীবন-জীবিকার কথা সাহিত্যের পাতায় তুলে ধরে তিনি বাঙলা সাহিত্যকে বিশ্বের দরবারে উঁচু করে রেখে গেছেন। ১৯৭৬ সালের ১৩ মার্চ তিনি ঢাকায় মারা যান।

আজ, গ্রামবাংলার মাটির এ কবিকে, তাঁর ১১৪তম জন্মদিনে জানাই গভীর ভালোবাসাসহ সশ্রদ্ধ সালাম।





কৃতজ্ঞতা-
তথ্য - বাংলাপিডিয়া
ছবি - ইন্টারনেট।

মন্তব্য ১৬ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১৬) মন্তব্য লিখুন

১| ০১ লা জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১০:৩০

সৈয়দ ইসলাম বলেছেন: আমার এ ঘর ভাঙ্গিয়াছে যেবা, আমি বাধি তার ঘর,
আপন করিতে কাঁদিয়া বেড়াই যে মোরে করেছে পর।
যে মোরে করিল পথের বিবাগী;
পথে পথে আমি ফিরি তার লাগি;
দীঘল রজনী তার তরে জাগি ঘুম যে হয়েছে মোর;
আমার এ ঘর ভাঙ্গিয়াছে যেবা, আমি বাধি তার ঘর।

আমার একুল ভাঙ্গিয়াছে যেবা আমি তার কুল বাধি,
যে গেছে বুকেতে আঘাত হানিয়া তার লাগি আমি কাঁদি;
সে মোরে দিয়েছে বিষ ভরা বান,
আমি দেই তারে বুক ভরা গান;
কাটা পেয়ে তারে ফুল করি দান সারাটি জনম ভর,
আপন করিতে কাদিঁয়া বেড়াই যে মোরে করেছে পর।
মোর বুকে যেবা কবর বেধেছে আমি তার বুক ভরি,
রঙ্গীন ফুলের সোহাগ জড়ান ফুল মালঞ্চ ধরি।
যে মুখে সে নিঠুরিয়া বাণী,
আমি লয়ে সখী, তারি মুখ খানি,
কত ঠাই হতে কত কি যে আনি, সাজাই নিরন্তর,
আপন করিতে কাদিয়া বেড়াই যে মোরে করিয়াছে পর।


সেই পাঠশায় মুখস্থকরা কবিতাটি এখনো সেই রকম আছে।
আমার প্রিয় কবিদের সারিতে জসিম উদ্দিন একজন।

০১ লা জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১০:৫৩

আরাফআহনাফ বলেছেন: "আমার এ ঘর ভাঙ্গিয়াছে যেবা, আমি বাধি তার ঘর,
আপন করিতে কাঁদিয়া বেড়াই যে মোরে করেছে পর। "

আপনার প্রিয় কবিদের একজন জসিমউদ্দিন - জেনে ভালো লাগলো।

আপনার জন্য নববর্ষের শুভেচ্ছা।

২| ০১ লা জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১০:৪৭

রাজীব নুর বলেছেন: নতুন বছরের অনেক শুভেচ্ছা ---

০১ লা জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১০:৫৪

আরাফআহনাফ বলেছেন: আপনার জন্যও নববর্ষের অনেক অনেক শুভেচ্ছা রইলো।

ভালো থাকুন -সবসময়ই।

৩| ০১ লা জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১০:৫৮

নুরুন নাহার লিলিয়ান বলেছেন: নতুন বছরের শুভেচ্ছা । পল্লী কবি কে নিয়ে লেখার জন্য অনেক ধন্যবাদ । ভাল থাকুন নিরন্তর ।

০১ লা জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১১:১৬

আরাফআহনাফ বলেছেন: অন্তরের কিছু কবি আছেন যাদের মধ্যে মাটির ঘ্রাণ যেন পাই - জসীমউদ্দিন আর জীবনানন্দ দাশ তেমনই কবি।

মন্তব্য করাতে কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানবেন।

নতুন বছরের শুভেচ্ছা আপনার জন্যও।

৪| ০১ লা জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১১:২৩

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: কবি জসীমউদ্দিনকে তার প্রতিভার অনুপাতে একজন আন্ডাররেটেড কবি বলে মনে হয় আমার কাছে। তাঁর অসামান্য প্রতিভার যথাযথ মুল্যায়ন হয়নি কখনো। হয়তো রবীন্দ্রনাথ ও নজরুলের তারকাসম উজ্জ্বল আলোয় ঢেকে গিয়েছিল তাঁর কীর্তি।


গ্রাম বাংলার মাটির সাথে মিশে যাওয়া মহান কবি জসীমউদ্দিনের ১১৪তম জন্মদিনে গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি।

০১ লা জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১১:২৮

আরাফআহনাফ বলেছেন: গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি এ ক্ষণজন্মা কবিকে।

আপনার মূল্যায়নটা খুবই যুক্তিযুক্ত।

ভালো থাকুন অযুত, নিযুত - নববর্ষের শুভেচ্ছা রইলো।

৫| ০১ লা জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১১:২৮

কামরুননাহার কলি বলেছেন: পল্লী কবি জসীম উদ্দীন উনি আমার প্রিয় কবি।

০১ লা জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১১:৩৭

আরাফআহনাফ বলেছেন: আমারও প্রিয় কবিদের মধ্যে একজন।
মাটি ও মানুষের কবি ছিলেন তিনি।

কামরুননাহার কলি - আপনার মন্তব্যের জন্য নববর্ষের শুভেচ্ছাসহ ধন্যবাদ জানবেন।

৬| ০১ লা জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১১:৪০

মোস্তফা সোহেল বলেছেন: কবর কবিতাটি মন দিয়ে পড়লে আমার চোঁখে জল এসে যায়।
পল্লী কবির প্রতি রইল গভীর শ্রদ্ধা।

০১ লা জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১১:৫৬

আরাফআহনাফ বলেছেন: মা, মাটি, দেশের প্রতি আকুলতায় তাঁর জুড়ি মেলা ভার আর তাইতো আমাদের পল্লী কবি তিনি।
নববর্ষের শুভেচ্ছাসহ ধন্যবাদ জানবেন - মোস্তফা সোহেল ভাই।
ভালো থাকুন - অজস্র।

৭| ০১ লা জানুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১:১০

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
পল্লী কবি কে নিয়ে লেখার জন্য
অনেক অনেক ধন্যবাদ ।
নববর্ষের শুভেচ্ছা জানবেন।

০১ লা জানুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১:৩০

আরাফআহনাফ বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ ।
নববর্ষের শুভেচ্ছা জানবেন আপনিও।

৮| ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ২:৪২

মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: প্রিয় কবিকে নিয়ে লিখাটি একটু দেরী করে চোখে পড়লেও পড়ে ভাল লাগলো। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ পোস্টের জন্য।

০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ২:৪৮

আরাফআহনাফ বলেছেন: সুজন ভাই, আপনাকেও ধন্যবাদ পাঠ ও মন্তব্যের জন্য।

কবি আপনারও প্রিয় জেনে ভালো লাগলো।

ভালো থাকুন সবসময়।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.